ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি

ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি (Yamnaya culture), ইয়াম্না সংস্কৃতি (Yamna culture), পিট গ্রেইভ সংস্কৃতি (Pit Grave culture) বা অকার গ্রেইভ সংস্কৃতি (Ochre Grave culture), ইয়াম্নায়া দিগন্ত (Yamnaya Horizon)[২] নামে পরিচিত। এটি তাম্র যুগের শেষ পর্যায় থেকে ব্রোঞ্জ যুগের প্রথম পর্যায় পর্যন্ত একটি নৃতাত্ত্বিক সংস্কৃতি ছিল। (তাম্রযুগ বা চ্যালকোলিথিক যুগ বা এনিওলিথিক যুগ হচ্ছে কোন অঞ্চলে নব্যপ্রস্তরযুগ বা নিওলিথিক যুগ থেকে ব্রোঞ্জযুগে পদার্পণের মধ্যবর্তী একটি যুগ। এই সময়ে প্রথম তামা হিসেবে ধাতব বস্তুর ব্যবহার দেখা যায়।) এই সংস্কৃতির অবস্থান ছিল বর্তমান ইউক্রেনের দক্ষিণ বাগ (Southern Bug), বর্তমান ইউক্রেন ও মলদোভা এর নিস্তার (Dniester) এবং বর্তমান রাশিয়া ও কাজাখস্তানের ইউরাল (Ural) নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে (পন্টিক-কাস্পিয়ান স্তেপ), এবং খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ অব্দ পর্যন্ত এটি বর্তমান ছিল।[৩][৩] এই নামটি এসেছে এদের সমাধি দেবার ঐতিহ্যের বৈশিষ্ট্য থেকে। Ямная (ল্যাতিন অক্ষরে yamnaya, বাংলা অক্ষরে ইয়াম্নায়া ) হচ্ছে একটি রুশ বিশেষণ, যার অর্থ হল কূপ (pit, রুশ ভাষায়া yama) সম্পর্কিত। এই সংস্কৃতির লোকেরা একটি ঘরের মত সরল কূপ খনন করে সেখানে মৃতদেহকে রেখে মাটি বা পাথরের ঢিপি (Tumulus বা Kurgan) বানিয়ে সমাধিস্ত করত।

Yamnaya culture
Alternative names
  • Pit Grave culture
  • Yamna culture
  • Ochre Grave culture
ভৌগলিক সীমাEurasia
সময়Bronze Age
তারিখc. 3300–2600 BC
পূর্বসূরীSredny Stog culture, Khvalynsk culture, Dnieper–Donets culture, Maykop culture
উত্তরসূরী
  • West: Catacomb culture
  • East: Poltavka culture, Srubnaya culture
  • North: Corded Ware culture (derived from Yamnaya culture)[১]
এই সংস্কৃতির আনুমানিক ব্যাপ্তি, প্রায় খ্রি.পূ. ৩০০০ - ২৬০০ অব্দ

ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির লোকেরা ছিল পূর্ব ইউরোপীয় শিকারী-সংগ্রাহক বা পূর্বাঞ্চলীয় শিকারী সংগ্রাহক (EHG) [ক] এবং ককেশীয় শিকারী-সংগ্রাহকদের (CHG) সাথে সম্পর্কিত লোকেদের মধ্যকার জিনগত মিশ্রণের ফল।[৪] এই পূর্বপুরুষীয় উপাদান যুক্ত জনগোষ্ঠীকে পশ্চিমাঞ্চলীয় স্তেপ চারণজীবী (Western Steppe Herders বা WSH) বলা হয়।[৫] আফানাসিয়েভো সংস্কৃতির (Afanasievo culture) (খ্রি. পূ. ৩৩০০ - ২৫০০ অব্দ) সাথে তাদের বস্তুগত সংস্কৃতির খুব মিল ছিল। প্রাথমিকভাবে তারা যাযাবর হিসেবে জীবন যাপন করত, তাদের সরদারি ব্যবস্থা ছিল, আর ছিল চাকাযুক্ত ঠেলাগাড়ি যা দিয়ে তারা বিশাল পশুর পালকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত।

তারা পরবর্তীকালের অন্তিম নব্যপ্রস্তরযুগীয় সংস্কৃতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত ছিল যা ইউরোপমধ্য এশিয়া জুড়ে ছড়িয়ে গিয়েছিল। এই অন্তিম নব্যপ্রস্তরযুগীয় সংস্কৃতিগুলোর মধ্যে বিশেষ করে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি (Corded Ware culture) (প্রায়. খ্রি. পূ. ২৯০০ - ২৩৫০ অব্দ), বেল বিকার সংস্কৃতি (Bell Beaker culture) (প্রায়. খ্রি. পূ. ২৮০০ - ২৩০০ অব্দ), সিন্তাশতা সংস্কৃতি (Sintashta culture) (খ্রি. পূ. ২১০০ - ১৮০০ অব্দ), অ্যান্ড্রোনোভো সংস্কৃতি (Andronovo culture) (প্রায় খ্রি. পূ. ২০০০ - ৯০০ অব্দ), এবং স্রুবনায়া সংস্কৃতিতে (Srubnaya cultures) (খ্রি.পূ. ১৮শ শতক থেকে ১২শ শতক) ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় উপস্থিত ছিল।[খ] জিনগত গবেষণাগুলো বলছে, ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির লোকেদের জিনের একটা বিশাল অংশ এসেছে তাদের স্তেপ অঞ্চলে পূর্বপুরুষদের থেকে।[৬][৭][৮][৯]

ইয়াম্নায়া সংস্কৃতিকে পরবর্তি প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়দের সাথে সম্পর্কিত করা হয়, অর্থাৎ মনে করা হয় এই সংস্কৃতির লোকেরাই শেষের দিকের প্রোটো-ইন্দো-ইউরোপীয় বা প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়-ভাষায় কথা বলত। আর এরাই হল প্রোটো ইন্দো ইউরোপীয় ভাষার উওরহাইমাট (Urheimat) হবার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী। কোন প্রোটো ল্যাংগুয়েজ বা আদি ভাষার উওরহাইমাট বলতে বোঝায় সেই ভৌগোলিক এলাকা যেখানে সেই ভাষার ভাষাভাষীদের উৎপত্তি হয়েছিল।

উৎপত্তি

সংস্কৃতি

ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির উৎপত্তি ডন-ভোলগা অঞ্চলে (ডন নদী ও ভলগা নদীর অববাহিকায়), এবং এই সংস্কৃতি খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ অব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।[১০][web ১] ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির প্রাথমিক আঞ্চলিক পর্যায়কে মিখায়লভকা সংস্কৃতি (Mikhaylovka culture) (খ্রিস্টপূর্ব ৩৬০০ - ৩০০০ অব্দ) নাম দেয়া হয়। এর পূর্বে ছিল ভোলগা ভিত্তিক খ্‌ভালিন্‌স্ক সংস্কৃতি (Khvalynsk culture) (প্রায় খ্রি.পূ. ৪৯০০ - ৩৫০০ অব্দ) এবং ডন ভিত্তিক রেপিন সংস্কৃতি (Repin culture) (প্রায় খ্রি. পূ. ৩৯৫০ - ৩৩০০ অব্দ)[web ১][১১] এই দুই সংস্কৃতির শেষের দিককার মৃৎপাত্রগুলোর সাথে প্রাথমিক ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির মৃৎপাত্রের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায় না।[১২] এছাড়া ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির সাথে এর পূর্বের সামারা সংস্কৃতির (Samara culture) (খ্রি.পূ. পঞ্চম সহস্রাব্দ) মধ্যে অবিচ্ছিন্নতার সম্পর্ক ছিল, অর্থাৎ একই অঞ্চলে সামারা সংস্কৃতির পরপরই খ্‌ভালিন্‌স্ক সংস্কৃতি আসে, ও তার পরপরই ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি আসে। এই তিন সংস্কৃতি অবিচ্ছিন্ন ছিল। এই সামারা সংস্কৃতিও ছিল তাম্রযুগীয় ও এর বেশিরভাগ মানুষই ছিল শিকারী সংগ্রাহক। আবার ইয়াম্নায়া সংস্কৃতিতে কাছাকাছি অঞ্চলেরই পূর্বের নিপার-ডনেটস সংস্কৃতি (Dnieper–Donets culture) (খ্রি.পূ. ৫ম থেকে ৪র্থ সহস্রাব্দ) প্রভাব রয়েছে। এই নাইপার-ডনেটস সংস্কৃতি ছিল মধ্যপ্রস্তরযুগীয়, এবং সামারা সংস্কৃতির তুলনা অধিক পরিমাণে কৃষিভিত্তিক। এনথনি (২০০৭) গবেষণাটি অনুসারে, প্রাথমিক ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি প্রায় খ্রি.পূ. ৩৪০০ থেকে ৩২০০ অব্দের মধ্যে দ্রুত পন্টিক-কাস্পিয়ান স্তেপ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।[১৩]

ইয়াম্নায়া দিগন্তের ছড়িয়ে পড়া বলতে বোঝায় শেষ প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষীদের পন্টিক-কাস্পিয়ান স্তেপ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার বস্তুগত প্রকাশ।[১৪] [...] ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির দিগন্ত হল একটি উচ্চ গতিশীল অবস্থায় অভ্যস্ত হবার সামাজিক অভিযোজনের দৃশ্যমান নৃতাত্ত্বিক প্রকাশ, যেখানে স্তেপ অঞ্চলের ভ্রাম্যমাণ বাসস্থান থেকে আসা মানুষের বৃহৎ গোষ্ঠীকে ব্যাবস্থাপনা করার জন্য রাজনৈতিক অবকাঠামোর উদ্ভব হয়।[১৫]

পাভেল দোলুখানভ এর মতে, ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির বা পিট-গ্রেইভ সংস্কৃতির উদ্ভব বিভিন্ন স্থানীয় ব্রোঞ্জযুগের সংস্কৃতির সামাজিক উন্নয়নের প্রতিনিধিত্ব করে। এখানে প্রকাশ দেখা যায় "সামাজিক স্তরবিন্যাস এবং দলপতিকেন্দ্রিক যাযাবর সমাজকাঠামোর" যা অসমসত্ত্ব বা ভিন্ন ভিন্ন স্থানের সামাজিক গোষ্ঠীসমূহের মধ্যকার আন্তর্গোষ্ঠীয় সংযোগের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়।[১৬]

এর পশ্চিম অঞ্চলে ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির পর আসে ক্যাটাকম্ব সংস্কৃতি (Catacomb culture) (খ্রিস্টপূর্ব ২৮০০ - ২২০০ অব্দ), এবং পূর্বাঞ্চলে মধ্য ভোলগায় ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির পর আসে পলতাভকা সংস্কৃতি (Poltavka culture) (খ্রি.পূ. ১৮শ শতক থেকে ১২শ শতক)। এই দুই সংস্কৃতির পর আসে স্রুবনায়া সংস্কৃতি (Srubnaya culture) (খ্রি.পূ. ১৮শ শতক থেকে ১২শ শতক)।

জনগোষ্ঠী

জোনস এট আল. (২০১৫) এবং হাক এট আল. (২০১৫) এর গবেষণাগুলোতে অটোজোম নিয়ে পরীক্ষাগুলো নির্দেশ করে, ইয়াম্নায়া জনগোষ্ঠী ছিল দুটো ভিন্ন শিকারী-সংগ্রাহক জনগোষ্ঠীর জিনগত মিশ্রণের ফল: একটি হল "পূর্ব ইউরোপীয় শিকারী-সংগ্রাহক" জনগোষ্ঠী যাদের সাথে মালটা-বুরেট সংস্কৃতি অথবা সাইবেরিয়া থেকে আসা লোকেদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত অন্য কোন জনগোষ্ঠীর যেমন আফনতোভা গোরা কমপ্লেক্স এর জনগোষ্ঠীর উচ্চ মাত্রায় সম্পর্ক আছে[৬]; আরেকটি জনগোষ্ঠী হল "ককেশীয় শিকারী-সংগ্রাহক" যারা খুব সম্ভব ককেশাস থেকে এসেছে।[১৭][১৮] এই দুটি ভিন্ন জনগোষ্ঠীই ইয়াম্নায়া ডিএনএ-তে অর্ধেক করে অবদান এখেছে।[৭][১৮] গবেষণার সহ-লেখক কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এর আন্দিয়া মানিকা বলেন:

ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির লোকেরা কোথা থেকে এল তা এখনও পর্যন্ত রহস্যমণ্ডিত হয়ে ছিল... এখন আমরা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি, কারণ আমরা বের করেছি যে তাদের জেনেটিক মেক-আপ হচ্ছে পূর্ব ইউরোপীয় শিকারী-সংগ্রাহক এবং ককেশাস অঞ্চলের শিকারী-সংগ্রাহক যারা শেষ বরফ যুগের অনেক সময় জুড়েই বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল।[১৮]

২০১৫ সালের পরে হওয়া বিভিন্ন জিনগত গবেষণা মারিয়া গিম্বুটাস (Marija Gimbutas) এর ইন্দো-ইউরোপীয় উওরহাইমাট সম্পর্কিত কুরগান অনুকল্পের পক্ষে যায়, যে তত্ত্ব অনুসারে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহ ইউরেশীয় স্তেপ অঞ্চল থেকে ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে গিয়েছে এবং ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি ছিল প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়দের। এই গবেষণাগুলো অনুসারে, ইউরোপের যে হ্যাপ্লোগ্রুপটি সবথেকে বেশি পাওয়া যায়, সেই হ্যাপ্লোগ্রুপ R1a এবং R1b (হ্যাপ্লোগ্রুপ R1a দক্ষিণ এশিয়াতেও সাধারণ) পন্টিক-কাস্পিয়ান স্তেপ থেকে ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাকে সাথে নিয়ে ছড়িয়ে গেছে। গবেষণায় আধুনিক ইউরোপীয়দের মধ্যে একটি অটোজোমীয় উপাদানও পাওয়া গেছে যা নব্যপ্রস্তরযুগীয় ইউরোপীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিল না, এটি ব্রোঞ্জ যুগে R1a ও R1b এর পিতৃগত বংশধারার সাথেই ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা নিয়ে ইউরোপীয়দের মধ্যে প্রবেশ করেছে।[৬][৮][১৯]

পূর্ব ইউরোপীয় শিকারী সংগ্রাহক

হাক এট আল. (২০১৫) গবেষণাটি অনুসারে, আজকের রাশিয়াতে বসবাস করা "পূর্ব ইউরোপীয় শিকারী-সংগ্রাহকগণ" (EHG) একটি সুনির্দিষ্ট শিকারী-সংগ্রাহক জনগোষ্ঠী ছিল যারা মালটা-বুরেট সংস্কৃতি নামে প্রায় ২৪,০০০ বছর পূর্বের প্রাচীন সাইবেরীয় ব্যক্তির সাথে উচ্চমাত্রার জ্ঞাতিত্ব দেখায়, যে ফিনোটাইপগতভাবে আবা আকারগতভাবে সাইবেরিয়ার মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠী,[২০] যেমন আফনতোভা গোরা এর সাথে সাদৃশ্য দেখায়।[৬][৪] এই পূর্ব ইউরোপীয় শিকারী সংগ্রাহকদের অবশেষ পাওয়া যায় বর্তমান রাশিয়ার কেরেলিয়া ও সামারা ওব্লাস্ট নামক মধ্যপ্রস্তরযুগীয় বা প্রাথমিক নব্যপ্রস্তরযুগীয় সাইটে। কেরেলিয়ার অবস্থান হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম রাশিয়ার যে দিকটায় রাশিয়া-ফিনল্যান্ড বর্ডার আছে সেদিকে, আর সামারা ওব্লাস্টের অবস্থান হচ্ছে দক্ষিণ রাশিয়ার যে দিকটায় কাজাখস্তান-বর্ডার আছে সেদিকে। এই শিকারী-সংগ্রাহক জনগোষ্ঠীর তিনজন পুরুষ অবশেষ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তাদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। দেখা যায় এদের তিনজন তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ওয়াই-ডিএনএ হ্যাপ্লোগ্রুপ এর: একজন R1a, একজন R1b, আরেকজন J হ্যাপ্লোগ্রুপের।[৭] R1b হচ্ছে ইয়াম্নায়া এবং বর্তমান পশ্চিম ইউরোপীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাপ্ত হ্যাপ্লোগ্রুপ।[৬][৮]

নিকট প্রাচ্য জনগোষ্ঠী

নিকট প্রাচ্য জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই ককেশাস এর শিকারী সংগ্রাহক (CHG) ছিল,[১৭] যদিও একটি গবেষণা বলছে তারা তাম্রযুগের সময়কার কৃষক ছিল যেখান থেকে বলা যায়, আজকের ইরানের লোকেদের ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির নিকট প্রাচ্য উত্তরাধিকারী হবার বেশি সম্ভাবনা রয়েছে।[২১]

জোনস এট আল. (২০১৫) গবেষণাটিতে ককেশাস অঞ্চলের পশ্চিম জর্জিয়ায় পাওয়া দুজন পুরুষের জিনোম নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে যাদের একজন উচ্চ প্রস্তরযুগের অন্তিম পর্যায়ের (১৩,০০০ বছর পূর্বের) এবং আরেকজন মধ্যপ্রস্তরযুগীয় (৯,৭০০ বছর পূর্বের) ছিল। এই দুই পুরুষের মধ্যে ওয়াই-ডিএনএ হ্যাপ্লোগ্রুপ: J* এবং J2a পাওয়া গেছে। গবেষকগণ বের করেন, এই ককেশীয় শিকারী সংগ্রাহকগণ সম্ভবত ইয়াম্নায়া এর নিকট প্রাচ্য ডিএনএ এর উৎস্য।[৪] তাদের জিনোম দেখায় যে ২৫,০০০ বছর পূর্বে ককেশীয় এবং মধ্য প্রাচ্যের জনগোষ্ঠীর মধ্যে অবিরত সংমিশ্রন ঘটেছিল, যখন শেষ বরফ যুগের শীতলতম কালের সূচনা ঘটে।[৪]

ল্যাজারাইডিস এট আল. (২০১৬) গবেষণা প্রস্তাব করছে, সম্ভবত ইরান থেকে আসা একটি ভিন্ন জনগোষ্ঠী ইয়াম্নায়া জনগোষ্ঠীর মধ্য প্রাচ্যভিত্তিক পূর্বপুরুষত্বের উৎস্য। সেখানে বলা হয়, "ইরানের তাম্রযুগের জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত একটি জনগোষ্ঠী স্তেপের জনসংখ্যার প্রাথমিক ব্রোঞ্জ যুগীয় পূর্বপুরুষের জিনের ক্ষেত্রে প্রায় ৪৩% অবদান রেখেছে।"[২১] সেই গবেষণাতি অনুসারে এই ইরানীয় তাম্রযুগীয় জনগোষ্ঠী "পশ্চিম ইরান, লেভান্ত ও ককেশাস এর নব্যপ্রস্তরযুগীয় শিকারী সংগ্রাহক" ছিল।[২১][২২][২৩] এদিকে, গলেগো-লরেন্তে এট আল. (২০১৬) গবেষণার একটি ভিন্ন বিশ্লেষণ বলছে, ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির "দক্ষিণাঞ্চলীয়" উপাদানের উৎস্য হবার সম্ভাবনা ইরানীয় জনসংখ্যার তুলনায় ককেশীয় শিকারী সংগ্রাহকদের ক্ষেত্রে বেশি।[২৪]

বৈশিষ্ট্যসমূহ

প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়

ভলগোগ্রাদ ওব্লাস্টে ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি সংস্কৃতির সমাধি

মারিয়া গিম্বুটাস এর কুরগান অনুকল্প অনুসারে ইয়াম্নায়া সংস্কৃতিকে শেষ প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়দের (PIE) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পূর্ববর্তী স্রেডনি স্টগ সংস্কৃতি (Sredny Stog culture) (প্রায় খ্রি.পূ. ৪৫০০ - ৩৫০০ অব্দ) সহ ইয়াম্নায়া সংস্কৃতি হচ্ছে প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার উওরহাইমাট (জন্মভূমি) এর জন্য সবচাইতে শক্তিশালী প্রার্থী, বর্তমানে এই সংস্কৃতি এবং এগুলোর অভিপ্রায়ণের নৃতাত্ত্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ ভাষাগত[২] এবং জিনগত[৬][২৫] সাক্ষ্যপ্রমাণ এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ইয়াম্নায়া সংস্কৃতিতে মানুষকে সমাধিস্থ করার সময় গরু, ভেড়া, ছাগল, ঘোড়াকেও সাথে সমাধিস্থ করত,[গ] আর এই বৈশিষ্ট্যটি কেবল প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়দের সাথেই সম্পর্কিত।[২৬] এদের সংস্কৃতি ছিল প্রধাণত যাযাবর, তবে নদীর তীরে এবং পাহাড়ি গিড়িদুর্গের মাঝে এরা কৃষিকাজও করত।[২৭] এরা ঘরের মত একটা কূপ খনন করে তাতে মৃতদেহ রেখে তার উপর মাটির ঢিপি (কুরগান বা টুমুলি) তৈরি করে মৃতদেহকে সমাধিস্ত করত। এদের দেহকে পিঠের উপর ভর দিয়ে চিৎ করে শুইয়ে হাঁটু ভাঁজ করে দেয়া হত এবং অকার দিয়ে ঢেকে দেয়া হত। অকার হচ্ছে একরকম প্রাকৃতিক মাটি। কুরগানগুলোর মধ্যে একাধিক সমাধিও পাওয়া গেছে, যেগুলোতে প্রায় ক্ষেত্রেই একটি সমাধির উপর আরেকটি সমাধি বানানো হয়েছে। ইউক্রেনে "স্তোরোঝভা মহিলা" কুরগানে[ঘ] একটি চাকার তৈরি মালবাহী গাড়ির প্রাচীনতম অবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে যা ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত।

দৈহিক বৈশিষ্ট্য

ইয়াম্নায়া জনগোষ্ঠীর লোকেদের অনেকগুলো দৈহিক বৈশিষ্ট্যের জিনগত ভিত্তি সম্পর্কে হাক এট আল. (২০১৫), ওয়াইল্ড এট আল. (২০১৪), এবং ম্যাথিয়েসন এট আল. (২০১৫) - এই প্রাচীন ডিএনএ সম্পর্কিত গবেষণাগুলো নিশ্চিত করে। তারা জিনগতভাবে লম্বা ছিল (আকৃতগত উচ্চতা জিন ও পরিবেশ উভয়ের দ্বাআই নির্ণিত হয়), তাদের চোখ ছিল কৃষ্ণাভ (খয়েরি), তাদের চুল ছিল কালো রঙ এর, এবং তাদের গায়ের রঙ ছিল মধ্যমমানের শ্বেত, যদিও গড়পড়তায় আধুনিক ইউরোপীয়দের তুলনায় তারা একটু কালো ছিল।[২৮][৭] তাদের চারণজীবী জীবনযাপনের পরও (এরা মেষ পালন করত), তারপরও এদের মধ্যে ল্যাকটেজ পারসিস্টেন্স থাকে (এরা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পরও ল্যাক্টেড এনজাইম নিসৃত হয় যা দুধ হজম করে, যার ফলে এরা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায়ও দুধ খেতে পারত)।[৬]

ইয়াম্নায়া সম্পর্কিত অভিপ্রায়ণ

পশ্চিম ইউরোপ

হাক এট আল. (২০১৫) গবেষণাটিতে ইউরোপ ও রাশিয়ার ৬৯টি প্রাচীন কঙ্কাল নিয়ে একটি জিনোম সংক্রান্ত গবেষণা করেন। তারা উপসংহার টানেন যে, ইয়াম্নায়া অটোজোমগত বৈশিষ্ট্যসমূহ কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির সাথে খুব ঘনিষ্ঠ। জার্মানিতে যে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির লোকেদের কঙ্কাল পাওয়া গেছে, সেই কঙ্কালের ডিএনএ এর ৭৩% অবদান এসেছে ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির জনগোষ্ঠীর ডিএনএ থেকে। একই গবেষণায় হিসাব করে পাওয়া গেছে যে, ইয়াম্নায়া ডিএনএ এর অবদান আধুনিক পশ্চিম, মধ্যউত্তর ইউরোপীয়দের ডিএনএ-তে ৩৮.৮% থেকে ৫০.৪% আছে, এবং আধুনিক দক্ষিণ ইউরোপীয়দের ডিএনএ-তে ১৮.৫% থেকে ৩২.৬%। ইয়াম্নায়া ডিএনএ এর অবদান তুলনামূলকভাবে কম পরিমাণে পাওয়া যায় সার্দিনীয় ও সিসিলিয়দের মধ্যে। ইয়াম্নায়া ডিএনএ এর অবদান সার্দিনীয়দের মধ্যে ২.৪% - ৭.১% এবং সিসিলীয়দের মধ্যে ৫.৯% - ১১.৬%।[২৯][২৫][৩০] হাক এট আল. গবেষণাটির ফলাফল আরও বলে, খ্রিস্টপূর্ব ৩,০০০ অব্দের পূর্বে পূর্ব থেকে হ্যাপ্লোগ্রুপ R-M269 ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।[৩১] যেসব গবেষণা আয়ারল্যান্ড এবং পর্তুগালের প্রাচীন মানুষের অবশেষকে বিশ্লেষণ করেছে সেগুলো এই থিসিজকে সমর্থন করে যে, পূর্ব ইউরোপীয় স্তেপ থেকে এইসব অঞ্চলে অটোজোমাল ডিএনএ সহ হ্যাপ্লোগ্রুপ R-M269 প্রবেশ করেছিল।[৩২][৩৩]

অটোজোমগত পরীক্ষাগুলো এটাও নির্দেশ করে যে, ইয়াম্নায়ারাই ইউরোপের "প্রাচীন উত্তর ইউরেশীয়" (Ancient North Eurasian) মিশ্রণের বাহক।[৬] "প্রাচীন উত্তর ইউরেশীয়" নামটির দ্বারা সেই জিনগত উপাদানটিকে বোঝায় যা মালটা-বুরেট সংস্কৃতি (Mal'ta–Buret' culture)[৬] বা তাদের সাথে সম্পর্কিত জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত। এই জিনগত উপাদানটি ইয়াম্নায়া জনগোষ্ঠীর লোকেদের মধ্যে পরীক্ষার দ্বারা ধরা পড়ে,[৬] আবার আধুনিক ইউরোপীয়দের মধ্যেও এটি দেখা যায়, কিন্তু ব্রোঞ্জ যুগের পূর্বের ইউরোপে এটি দেখা যায় না।[৩৪]

পূর্ব ইউরোপ এবং ফিনল্যান্ড

বাল্টিক অঞ্চলে জোনস এট আল. (২০১৭) আবিষ্কার করেন নব্যপ্রস্তর যুগীয় রূপান্তর (শিকারী-সংগ্রাহক অর্থনীতি থেক কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তর) ঘটে সেখানে ইয়াম্নায়া সদৃশ পূর্বপুরুষের আগমনের সাথে সাথেই। পশ্চিম ও দক্ষিণ ইউরোপে যা ঘটেছিল তার থেকে এটি ভিন্ন, সেখানে নব্যপ্রস্তরযুগ প্রবেশ করেছিল নিকট প্রাচ্যের জনগোষ্ঠীর আগমনের মধ্য দিয়ে, পন্টিক স্তেপ অঞ্চলের পূর্বপুরুষেরা (ইয়াম্নায়া) সেখানে আরও অনেক পর, নব্যপ্রস্তরযুগের শেষ পর্যায়ে প্রবেশ করে।[৩৫]

হাক এট আল. (২০১৫) গবেষণাটি অনুসারে, ইয়াম্নায়া অবদান পূর্ব ইউরোপের আধুনিক জনসংখ্যার মধ্যে রাশিয়ায় ৪৬.৮%, ইউক্রেনে ৪২.৮%। সমগ্র ইউরোপে ফিনল্যান্ডে সর্বোচ্চ পরিমাণে ইয়াম্নায়া অবদান দেখা যায়, যা হচ্ছে ৫০.৪%।[৩৬][ঙ]

মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া

দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান রাষ্ট্রসমূহে ইয়াম্নায়া উত্তরাধিকারের শক্তিশালী উপস্থিতি দেখা যায়। এটি বিশেষ করে তাদের মধ্যে বেশি যায় যারা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহে কথা বলে।[৩৭][৩৮]

পাঠক এট আল. (২০১৮) গবেষণা বলছে, "উত্তর-পশ্চিম ভারতীয় ও পাকিস্তানি" জনসংখ্যা (North-Western Indian & Pakistani" populations - PNWI) এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মধ্য-অন্তিম ব্রোঞ্জ যুগীয় স্তেপ পূর্বপুরুষত্ব (Middle-Late Bronze Age Steppe or Steppe_MLBA) পাওয়া যায়, আবার এদের মধ্যে ইয়াম্নায়া প্রাথমিক-মধ্য ব্রোঞ্জ যুগীয় স্তেপ পূর্বপুরুষত্বও (Yamnaya Early-Middle Bronze Age or Steppe_EMBA) পাওয়া যায়। কিন্তু গাঙ্গেয় সমভূমির ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী এবং দ্রাবীড়িয় ভাষাভাষীগণ কেবল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইয়াম্নায়া পূর্বপুরুষত্ব (স্তেপ_ইএমবিএ) পাওয়া যায়, কিন্তু কোন স্তেপ এমএলবিএ পূর্বপুরুষত্ব পাওয়া যায় না। এই গবেষণাটি এও বলে যে, প্রাচীন দক্ষিণ এশীয় নমুনায় স্তেপ_ইএমবিএ বা ইয়াম্নায়া পূর্বপুরুষত্বের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উচ্চ মাত্রায় স্তেপ-এমএলবিএ পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ পরিমাণে স্তেপ_ইএমবিএ (ইয়াম্নায়া) পূর্বপুরুষত্ব পাওয়া যায় হরিয়ানা রর ও জাটদের মধ্যে এবং এটি সর্বনিম্ন পরিমাণে পাওয়া যায় পানিয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে।[৩৮][৩৯]

ল্যাজারাইডিস এট আল. (২০১৬) গবেষণায় পাওয়া গেছে, "দক্ষিণ এশিয়ার স্তেপ সম্পর্কিত জনসংখ্যার প্রভাব উল্লেখযোগ্য, যেমন "ইন্ডিয়ান ক্লাইন" বরাবর সর্বনিম্ন পূর্বপুরুষগত উত্তর ভারতীয়ত্ব (Ancestral North Indian or ANI) রয়েছে দক্ষিণ ভারতীয় দলিত সম্প্রদায় মালা বর্ণের, যাদের মধ্যে প্রায় ১৮% স্তেপ-সম্পর্কিত পূর্বপুরুষত্ব রয়েছে, অন্যদিকে পাকিস্তানের কালাশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ৫০% স্তেপ সম্পর্কিত পূর্বপুরুষত্ব রয়েছে।"[৪০] ল্যাজারাইডিস এট আল. এর ২০১৬ গবেষণাটি অনুসারে দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে ৬.৫% থেকে ৫০.২% স্তেপ সম্পর্কিত পূর্বপুরুষত্ব রয়েছে।[৪১][চ]

ল্যাজারাইডিস এট আল. (২০১৬) গবেষণাও আরও বলা হয়েছে, "ভবিষ্যৎ গবেষণার একটি উপযোগী নির্দেশনা হচ্ছে স্তেপ অঞ্চল ও মধ্য এশিয়ার (ইরানের পূর্বাঞ্চল এবং স্তেপের দক্ষিণাঞ্চল) জনসংখ্যার প্রাচীন ডিএনএ নিয়ে আরও ব্যাপক নমুনায়ন, যা পূর্বের তুলনায় এএনআই এর আরও সুনির্দিষ্ট উৎস্য আমাদের সামনে নিয়ে আসবে, এবং যার দ্বারা দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যার পরিবর্তনের গতিপথ আরও সুনির্দিষ্ট ও প্রত্যক্ষভাবে নির্ধারণ করা যাবে।[৪২]

উন্টারল্যান্ডার এট আল. (২০১৭) গবেষণা অনুসারে, দক্ষিণ ইউরাল অঞ্চল, পূর্ব কাজাখস্তান এবং তুভা অঞ্চলের লৌহযুগ সিথিয়ান জনগোষ্ঠীকে ইয়াম্নায়া সম্পর্কিত পূর্বপুরুষত্ব ও পূর্ব এশীয় উপাদানের একটি মিশ্রণ হিসেবে সবচেয়ে ভালভাবে বর্ণনা করা যায়। (বর্তমান চীন, জাপান, মঙ্গোলিয়া, উভয় কোরিয়া রাষ্ট্রসমূহ পূর্ব এশীয় অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত) এদের মধ্যে পূর্ব এশীয় জিনগত উপাদান খুব কম পরিমাণে পাওয়া যায়, আর প্রাথমিক স্তেপ অধিবাসীদের সাথেই এই মিশ্রণ হয়ে থাকতে পারে।[৪৩]

নিদর্শনসমূহ

আরও দেখুন

  • কুরগান
  • কুরগান স্টিলি
  • কুকুটেনি-ট্রাইফিলা সংস্কৃতি
  • ভিনকা সংস্কৃতি
  • বিকার সংস্কৃতি
  • বাদেন সংস্কৃতি
  • বোটাই সংস্কৃতি
  • মামাই-হোরা
  • সামারা সংস্কৃতি
  • সিন্তাশতা সংস্কৃতি
  • ইয়েরসিনিয়া পেস্তিস
  • প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়

ফুটনোট

তথ্যসূত্র

বহিঃস্থ সূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ