উত্তর কোরিয়ার ইতিহাস

উইকিমিডিয়া ইতিহাস নিবন্ধ

উত্তর কোরিয়ার ইতিহাস শুরু হয় ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে। যুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের ফলে ৩৮তম উত্তর প্যারালেল বা ৩৮° উত্তর অক্ষরেখা বরাবর কোরিয়ার বিভাজন পরিচালিত হয়। এতে সোভিয়েত ইউনিয়ন উত্তর অংশের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ অংশের দখল নেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশ দুটিকে একত্র করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়, এবং ১৯৪৮ সালে দুটি পৃথক সরকার প্রতিষ্ঠা করে – সোভিয়েত-সমর্থিত উত্তর কোরিয়া এবং পশ্চিমা-সমর্থিত দক্ষিণ কোরিয়া। যদিও দুটি সরকারই নিজেদেরকে সমগ্র কোরিয়ার বৈধ সরকার হিসেবে দাবি করে।

১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধ শুরু হয়। ধ্বংসযজ্ঞের ফলে একটি অচলাবস্থার মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ শেষ হয়। ৩৮তম উত্তর প্যারালেল এর স্থলে কোরীয় অসামরিকীকৃত অঞ্চল দুই কোরিয়াকে বিভক্তকারী সীমানারূপে গৃহীত হয়। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকে। ধ্বংসাবশেষ এর মধ্য থেকে উত্তর কোরিয়া একটি শিল্প নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি গড়ে তোলে।

কিম ইল-সাং ১৯৯৪ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব দেন। তিনি সেখানে এমন এক বিশেষ ব্যক্তিত্বের সংস্কৃতি গড়ে তোলেন যেন জনগণ তাদের শাসককে অন্ধভাবে শ্রদ্ধা করতে থাকে। তিনি স্বনির্মিত জুচে (আত্মনির্ভরতা) নীতি অনুসারে স্বাধীনভাবে দেশ পরিচালনা করেন। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ঐক্যের পতনের ফলে অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয় ও উত্তর কোরিয়ার দুর্ভিক্ষ এর সূচনা ঘটে। কিম ইল-সাং এর পর তার পুত্র কিম জং-ইল ক্ষমতাগ্রহণ করেন, এবং পর্যায়ক্রমে তার পুত্র কিম জং উন ক্ষমতালাভ করেন। আন্তর্জাতিক সতর্কতাবাণী সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। ২০১৮ সালে, কিম জং-উন আকস্মিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শান্তি প্রস্তাব করেছিলেন।

বিভাজনের পূর্বে

১৯১০ সাল থেকে ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত কোরিয়া জাপানি শাসনের অধীনে ছিল। বেশিরভাগ কোরিয়ান জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষিকাজের সাথে জড়িত ছিল। [১] ১৯৩০-এর দশকে, জাপান কোরিয়ার উত্তর অংশ এবং প্রতিবেশী মাঞ্চুরিয়াতে খনি, জলবিদ্যুৎ বাঁধ, ইস্পাত মিল ও শিল্পকারখানা বিকশিত করে। [২] কোরিয়ান শিল্প শ্রমিকশ্রেণি দ্রুত বাড়তে থাকে, এবং অনেক কোরিয়ান মাঞ্চুরিয়াতে কাজ করতে চলে যান। [৩] ফলস্বরূপ, উত্তর অংশে কোরিয়ার ভারী শিল্পের ৬৫% গড়ে ওঠে, কিন্তু, রুক্ষ ভূখণ্ডের কারণে, কেবলমাত্র ৩৭% কৃষি এখানে তৈরি হয়। [৪]

কোরিয়ার অভ্যন্তরীন পাহাড়ী অঞ্চল ও মঞ্চুরিয়াতে একটি কোরিয়ান গেরিলা আন্দোলন গড়ে ওঠে যারা জাপানী সাম্রাজ্য কর্তৃপক্ষকে হয়রানি করতে থাকে। গেরিলা নেতাদের মধ্যে লক্ষণীয় ছিলেন কমিউনিস্ট কিম ইল-সাং[৫]

উত্তর কোরিয়ায় আধুনিক, পশ্চিমা ধারণা খুবই সামান্য প্রভাব বিস্তার করেছিল। [৬] তবে এর আংশিক ব্যতিক্রম ছিল খ্রিস্টধর্মের অনুপ্রবেশ। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে মিশনারিদের আগমনের পর, কোরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে এবং বিশেষত পিয়ংইয়ংএ খ্রিস্টধর্মের একটি ঘাটি গড়ে ওঠে। [৭] ফলস্বরূপ, পিয়ংইয়ংকে "পূর্বের জেরুজালেম" বলা হত। [৮]

কোরিয়া বিভাজন

পিয়ংইয়ংয়ের লাল সেনাবাহিনীর জন্য স্বাগতম উৎসব। ১৪ অক্টোবর ,১৯৪৫ সাল।

১৯৪৩ সালের নভেম্বরে তেহরান সম্মেলনে এবং ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইয়াল্টা সম্মেলনে, সোভিয়েত ইউনিয়ন ইউরোপ বিজয়ের তিন মাসের মধ্যে তার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগীদের সঙ্গে যোগ দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এর তিন মাস পর ১৯৪৫ সালের ৮ আগস্ট, সোভিয়েত ইউনিয়ন জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে[৯] সোভিয়েত সৈন্যরা দ্রুত অগ্রসর হয়, এবং মার্কিন সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে যে তারা সমগ্র কোরিয়া দখল করে নেবে। ১০ আগস্ট, মার্কিন সরকার ৩৮তম উত্তর প্যারালেল৩৮তম উত্তর প্যারালেল কে উত্তরের সোভিয়েত অঞ্চল এবং দক্ষিণের মার্কিন অঞ্চল এর মধ্যবর্তী বিভাজন সীমানা হিসাবে প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সীমানাটি নির্বাচিত হয়েছিল কারণ এটি রাজধানী সিওলকে মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় স্থাপন করবে। [১০] আমেরিকানদের অবাক করে দিয়ে, সোভিয়েত ইউনিয়ন অবিলম্বে এই সীমানা বিভাগটি গ্রহণ করে। চুক্তিটি জাপানের আত্মসমর্পণের জন্য সাধারণ আদেশ নং ১ (১৭ আগস্ট ১৯৪৫ এ অনুমোদিত) এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। [১১] বিভাগটির ফলে আমেরিকান অঞ্চলে ১৬ মিলিয়ন কোরিয়ান এবং সোভিয়েত অঞ্চলে ৯ মিলিয়ন কোরিয়ান নাগরিক বিভক্ত হয়েছিল। [১২]

সোভিয়েত বাহিনী ১৪ আগস্ট নাগাদ কোরিয়াতে স্থল ও জলপথে অধিগ্রহণ শুরু করে এবং দ্রুত উত্তরপূর্বাঞ্চল দখল করে নেয়। এরপর ১৬ আগস্ট তারা উইনসনে অবতরণ করেছিল। [১৩] ২4 আগস্ট রেড আর্মি পিয়ংইয়ং পৌছায়। [১১] মার্কিন বাহিনী ৮ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণে পৌঁছায়নি। [১২]

আগস্ট মাসে, কোরিয়া জুড়ে পিপলস কমিটি উত্থিত হয়েছিল, যারা কোরিয়ান স্বাধীনতা প্রস্তুতি কমিটির সাথে সংযুক্ত ছিল। এরা সেপ্টেম্বরে পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিল। যখন সোভিয়েত সৈন্যরা পিয়ংইয়ংয়ে প্রবেশ করেছিল, তখন তারা সেখানে প্রতিষ্ঠিত একটি স্থানীয় পিপলস কমিটি খুঁজে পায়, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রবীণ খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদী চে ম্যান-সিক । [১৪] সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ পিপলস কমিটিকে স্বীকৃতি দেয় ও তাদের সাথে কাজ করে, যা তাদের আমেরিকান প্রতিপক্ষের কর্মকাণ্ডের বিপরীত। [১৫][১৬] কিছু মাধ্যমে জানা যায় যে, চে ম্যান-সিক উত্তর কোরিয়া নেতৃত্বের জন্য সোভিয়েত সরকারের প্রথম পছন্দ ছিল। [১৭][১৮]

১৯শে সেপ্টেম্বর, কিম ইল-সাং এবং অন্যান্য ৬৬ জন কোরিয়ান রেড আর্মি অফিসার ওয়ানসনে পৌঁছান। ১৯৩০-এর দশকে তারা মাঞ্চুরিয়াতে জাপানীদের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন কিন্তু পরে সোভিয়েতে বসবাস করে ১৯৪১ সাল থেকে রেড আর্মিতে প্রশিক্ষণ লাভ করেছিলেন। [১৯] ১৪ই অক্টোবর সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ কিমকে গেরিলা নায়ক হিসাবে উত্তর কোরিয়ার জনগণের সম্মুখে উপস্থাপন করেছিল। [১৯]

১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরে, মস্কো সম্মেলনে, সোভিয়েত ইউনিয়ন কোরিয়ার স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী একটি ট্রাস্টিশিপের জন্য মার্কিন প্রস্তাবের ব্যাপারে একমত হয়েছিল। বেশিরভাগ কোরিয়ানরা অবিলম্বে স্বাধীনতা দাবি করে, কিন্তু কিম ও অন্যান্য কমিউনিস্টরা সোভিয়েত সরকারের চাপের অধীনে ট্রাস্টিশিপকে সমর্থন করে। Cho Man-Sik একটি পাবলিক সভায় ৪ঠা জানুয়ারি, ১৯৪৬ এ প্রস্তাবটি বিরোধিতা করেন এবং গৃহবন্দী হয়ে অদৃশ্য হয়ে যান। [২০][২১] 1946 সালের 8 ফেব্রুয়ারি পিপলস কমিটিগুলিকে কমিউনিস্টদের দ্বারা প্রভাবিত অন্তর্বর্তীকালীন জনগণের কমিটি হিসেবে পুনর্গঠিত করা হয়। [২২] নতুন সরকার জমি পুনঃপ্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় নীতি, শিল্প জাতীয়করণ, শ্রম আইন সংস্কার, এবং মহিলাদের জন্য সমতা প্রতিষ্ঠা করে। [২৩]

১৯৪৮ সালে কিম কু এর সাথে কিম ইল-সাং

১৯৪৯ সাল নাগাদ, উত্তর কোরিয়া একটি পরিপূর্ণ কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছিল। সমস্ত দল এবং গণ সংগঠন পিতৃভুমি একীভূতকরণের উদ্দেশ্যে গণতান্ত্রিক ফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল। দৃশ্যত, এটি ছিল একটি জনপ্রিয় ফ্রন্ট, কিন্তু এটি কমিউনিস্টদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। সরকার কোরিয়ার শ্রমিক পার্টির একচেটিয়া রাজনৈতিক ক্ষমতার সঙ্গে আংশিক সোভিয়েত পদ্ধতিতে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত কাজ শুরু করে।

কোরিয়ার যুদ্ধ (১৯৫০-১৯৫৩)

মার্কিন বিমানের বোমাবর্ষণ ওয়ানসান, উত্তর কোরিয়া, ১৯৫১
২০১২ সালে পিয়ংইয়ংয়ের বিজয় দিবসের মহড়া। যুদ্ধের সমাপ্তি নির্দেশক।

ক্লাইম্যাক্স এবং সংকট

১৯৮৯ সালে পিয়ংইয়ং
Juche টাওয়ার

টানাপোড়েন এবং বৈরিতার অবসান

Kim and Moon meet at the DMZ in 2018

কিম জং-ইল ডিসেম্বর ১৭, ২০১১ সালে মারা যান [২৪] এবং তার পুত্র কিম জং-উন তার উত্তরাধিকারী হন। ২০১৩ সালের শেষ দিকে কিম জং-উনের চাচা জাং সং-থেক গ্রেপ্তার হন এবং বিচারের পর তাকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার মতে, কিম ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রায় ৩০০ মানুষকে হত্যা করেছেন। [২৫] ২০১৪ সালে, জাতিসংঘ তদন্ত কমিশন তার সরকারকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে। [২৬]

In 2015, North Korea adopted Pyongyang Standard Time (UTC+08.30), reversing the change to Japan Standard Time (UTC+9.00) which had been imposed by the Japanese Empire when it annexed Korea. As a result, North Korea was in a different time zone than South Korea.[২৭] In 2016, 7th Congress of the Workers' Party of Korea was held in Pyongyang, the first party congress since 1980.[২৮]

In 2017, North Korea tested the Hwasong-15, an intercontinental ballistic missile capable of striking anywhere in the United States of America.[২৯] Estimates of North Korea's nuclear arsenal at that time ranged between 15 and 60 bombs, probably including hydrogen bombs.[৩০]

In February 2018, North Korea sent an unprecedented high-level delegation to the Winter Olympics in South Korea, headed by Kim Yo-jong, sister of Kim Jong-un, and President Kim Yong-nam, which passed on an invitation to South Korean President Moon to visit the North.[৩১] In April the two Korean leaders met at the Joint Security Area where they announced their governments would work towards a denuclearized Korean Peninsula and formalize peace between the two states.[৩২] North Korea announced it would change its time zone to realign with the South.[৩৩]

On June 12, Kim met American President Donald Trump at a summit in Singapore and signed a declaration, affirming the same commitment.[৩৪] Trump announced that he would halt military exercises with South Korea and foreshadowed withdrawing American troops entirely.[৩৫] In September, South Korean President Moon visited Pyongyang for a summit with Kim.[৩৬] In February 2019 in Hanoi, a second summit between Kim and Trump broke down without an agreement.[৩৭]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Korea topicsটেমপ্লেট:History of Asia

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ