ওরহান পামুক

সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী

ফেরিত ওরহান পামুক (সাধারনত ওরহান পামুক নামে পরিচিত; জন্ম ৭ জুন ১৯৫২) একজন তুর্কি ঔপন্যাসিক, চিত্রণাট্য সম্পাদক, শিক্ষক এবং ২০০৬ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। তিনি তুরস্কের অন্যতম প্রধান লেখক,[১] বিশ্বের ৬০টিরও অধিক ভাষায় তার ১১ মিলিয়নের (১কোটি ১০ লক্ষ) বেশি বই বিক্রি হয়েছে,[২] যার ফলশ্রুতিতে তিনি পরিণত হয়েছেন তুরস্কের সবচেয়ে প্রচারিত কথাসাহিত্যকে।[৩]

ওরহান পামুক
২০০৯ সালে ওরহান পামুক
২০০৯ সালে ওরহান পামুক
জন্মফেরিত ওরহান পামুক
(1952-06-07) ৭ জুন ১৯৫২ (বয়স ৭১)
ইস্তাম্বুল, তুরস্ক
পেশাঔপন্যাসিক,
চিত্রসম্পাদক,
তুলনামূলক সাহিত্য এবং রচনার অধ্যাপক (কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়)
জাতীয়তাতুর্কি
সময়কাল১৯৭৪ - বর্তমান
ধরনউপন্যাস
বিষয়সাহিত্য, চিত্রকর্ম, প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সম্পর্ক
সাহিত্য আন্দোলনউত্তরাধুনিক সাহিত্য
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি
  • Karanlık ve Işık (ডার্ক এন্ড লাইট; প্রথম)
  • দ্য হোয়াইট ক্যাসল
  • দ্য ব্ল্যাক বুক
  • দ্য নিউ লাইফ
  • মাই নেম ইজ রেড
  • স্নো
  • ইস্তাম্বুল: মেমোয়ার এন্ড দ্য সিটি
  • দ্য মিউজিয়াম অফ ইনোসেন্স
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারআন্তর্জাতিক IMPAC ডাবলিন সাহিত্য পুরস্কার
২০০৩
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
২০০৬
সনিং পুরস্কার
২০১২
ওয়েবসাইট
www.orhanpamuk.net
ওরহান পামুক
পামুক লেখার সময়ে

ইস্তাম্বুল এ জন্ম নেয়া পামুক দ্য হোয়াইট ক্যাসল, দ্য ব্ল্যাক বুক, দ্য নিউ লাইফ, মাই নেম ইজ রেড, স্নোদ্য মিউজিয়াম অফ ইনোসেন্স এর রচয়িতা।

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ছাড়াও (নোবেল প্রাপ্ত প্রথম তুর্কি) পামুক অজস্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। মাই নেম ইজ রেড ২০০২ সালে অর্জন করে Prix du Meilleur Livre Étranger, Premio Grinzane Cavour এবং ২০০৩ সালে International IMPAAC Dublin Literary Award.

ইউরোপীয়ান রাইটার্স পার্লামেন্ট (ইউরোপীয় লেখকদের সংসদ) পামুক এবং হোসে সারামাগো এর যৌথ প্রস্তাবনার ফসল।[৪] অটোমান সাম্রাজ্য-এ আর্মেনিয় গণহত্যা সম্পর্কে মন্তব্য করায় ২০০৫ সালে তুরস্কে তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়। পামুকের নিজস্ব বক্তব্য, জন্মভূমিতে বাক-স্বাধীনতা এর অভাবের প্রতি আলোকপাত করাই তার উদ্দেশ্য ছিল। এর ফলশ্রুতিতে মিছিলে তার বই পোড়ানো হয়। তাকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়[৫]

প্রথম জীবন

পামুক ১৯৫২ সালে ইস্তাম্বুল-এ জন্ম নেন এবং একটি বিত্তবান কিন্তু পতনরত উচ্চশ্রেনীর পরিবারে বড় হন, যে অভিজ্ঞতা চিত্রিত হয়েছে তার দ্য ব্ল্যাক বুক এবং ছেফদাত বে ও তাঁর ছেলেরা উপন্যাসে। এ অভিজ্ঞতা আরো পুংখানুপুংখ ভাবে উঠে আসে তার আত্মজীবনী, ইস্তাম্বুল-এ। তিনি পড়াশোনা করেন রবার্ট কলেজ-এ এবং স্থাপত্য অধ্যায়নের জন্যে ভর্তি হন ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি-তে, কারণ তিনি ভেবে ছিলেন স্থাপত্য তার প্রকৃত স্বপ্ন চিত্রশিল্পী হওয়ার পথ সুগম করবে।[৬] কিন্তু ৩ বছর পর তিনি স্থাপত্য পড়া বাদ দিয়ে ১৯৭৬ সালে University of Istanbul এর সাংবাদিকতা ইন্সটিটিউট থেকে স্নাতক পাশ করেন। ২২ থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত পামুক তার মায়ের সাথে বসবাস করেন এবং তার প্রথম উপন্যাস লেখার পাশাপাশি প্রকাশক খুঁজতে থাকেন। তিনি নিজেকে সাংস্কৃতিক মুসলিম সাংস্কৃতিক মুসলিম বলে পরিচয় দেন অর্থাৎ ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে তিনি একাত্ব অনুভব করেন।[৭]

সাহিত্যকর্ম

১৯৭৪ থেকে পামুক নিয়মিত লেখা শুরু করেন। তার প্রথম উপন্যাস আলো ও আঁধার(Karanlık ve Işık) ১৯৭৯ সালে যৌথ ভাবে মিলিয়েত প্রেস উপন্যাস প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় যা ১৯৯৮২ সালে Cevdet Bey ve Oğulları(ছেফদাত বে ও তাঁর ছেলেরা) নামে প্রকাশিত হলে ১৯৮৩ সালের Orhan Kemal পুরস্কার লাভ করে। এ লেখায় উঠে আসে একই পরিবারের তিন প্রজন্মের উপাখ্যান।

তার প্রথম দিকের লেখায় স্বতঃস্ফুর্তা দেখা গেলেও পরবর্তী লেখায় তিনি উত্তরাধুনিক রচনাশৈলী প্রয়োগ করতে থাকেন।

১৯৯০ সালে প্রকাশিত Kara Kitap (The Black Book)(কালো পুস্তক) উপন্যাস তাকে এনে দেয় জনপ্রিয়তা। বইটি আলোচিত হয়ে ওঠে এর জটিল রচনাশৈলী ও প্রাচুর্যতা জন্যে। এ উপন্যাস অবলম্বনে একটি ছায়াছবি চিত্রায়িত হয় যা পরিচালনা করেন বিখ্যাত তুর্কি পরিচালক Ömer Kavur(ওমর কাফুর)।

১৯৯৫ এ প্রকাশিত পামুকের ৫ম উপন্যাস Yeni Hayat(নতুন জীবন) তুরস্কে আলোড়োন সৃষ্টি করে এবং সবচেয়ে দ্রুত বিক্রি হওয়ার রেকর্ড করে।

ইতিমধ্যে তিনি আলোচিত সমালোচিত হতে থাকেন কুর্দি জনগণের পক্ষে কথা বলার জন্যে।

মাই নেইম ইজ রেড

২০০০ সালে প্রকাশিত আমার নাম লাল পামুককে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। উত্তরাধুনিক রচনাশৈলীতে এ উপন্যাসে বিধৃত হয় চিত্রকলা,রহস্য,দর্শন ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের দ্বন্দ্ব এবং বর্ণিত হয় ১৬ শতকের অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান মুরাট তৃতীয়েরSultan Murat III রাজত্বের তুষারাচ্ছন্ন ৯টি দিন। পাশ্চাত্যের রেঁনেসার প্রভাবে প্রাচ্যের শিল্পের অস্তিত্ব সংকট পাঠককে চলমান প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের অস্থিরতার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

২৩টি ভাষায় অনূদিত বইটি ২০০৩ সালে জিতে নেয় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থমূল্যের সাহিত্য পুরস্কার International Dublin Literary Award।

"আপনার জীবনে IMPAAC পুরস্কার (বর্তমানে ১,২৭,০০০$ মূল্যমানের) কেমন প্রভাব ফেলেছে?",প্রশ্নের জবাবে পামুক বলেনঃ

আমার জীবনের কিছুই পালটে যায়নি,কারণ আমি সব সময় কাজে ব্যস্ত থাকি। আমি আমার জীবনের ৩০ বছর সাহিত্য সাধনায় ব্যয় করেছি। এর প্রথম ১০ বছরে আমি টাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম এবং কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করতো না আমি কত উপার্যন করি। দ্বিতীয় দশকে আমি টাকা ব্যয় করেছি এবং কেউ এ সম্পর্কে জানতে চায়নি। শেষ দশকটাতে সকলে জানতে চাইছে আমি কীভাবে টাকা খরচ করি যা আমি কখনই বলব না।[৮]

তুষার

পামুকের পরবর্তী উপন্যাস Kar,(তুষার)Snow বাজারে আসে ২০০২ সালে। এ উপন্যাসে সীমান্তবর্তী শহর কারসেরKars ইসলামিক ও পাশ্চাত্যের দ্বন্দের পরিবেশ চিত্রিত হয়েছে। প্রবাসি তুর্কি কবি কা এ শহরে হিযাব পরিহিত নারীদের ঘন ঘন আত্মহত্যার ঘটনা উদ্ঘাটনের উদ্দেশ্যে এসে মুখোমুখি হয় পুরাতন প্রেমিকার,উগ্র আদর্শে বিশ্বাসী মাওলানা ও নেতার,দূর্নীতি-গ্রস্থ প্রশাসনের,নাস্তিকতার এবং মৌলবাদি ও উদারপন্থিদের সংঘর্সের মধ্যে পড়ে যায়।

নিস্পাপের জাদুঘর

২০০৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পাওয়ার পর ২০০৮ এর গ্রীষ্মে তিনি প্রকাশ করেন নিস্পাপের জাদুঘরMuseum of Innocence নামক উপন্যাস।

এ উপন্যাসের সাথে সম্পর্কিত দৈনন্দিন সামগ্রি নিয়ে পামুক ইস্তাম্বুলে একটি সত্যিকার জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন।[৯]

ইস্তাম্বুল-একটি শহরের স্মৃতি

২০০৩ সালে প্রকাশিত হয় İstanbul—Hatıralar ve Şehir (ইস্তাম্বুল-একটি শহরের স্মৃতি)

উল্লেখযোগ্য বই

  • শুভ্র দূর্গ (Beyaz Kale বেয়াজ় কালে)
  • কালো বই (Kara Kitap কারা কিতাপ)
  • আমার নাম লাল (Benim Adım Kırmızı বেনিম আদ্যিম ক্যির্ম্যিজ়্যি)

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ