গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন

অ্যারিজোনার কলোরাডো নদীর পার্শ্ববর্তী খাড়া গিরিখাদ

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত একটি গিরিখাত। এই গিরিখাতের মধ্য দিয়ে কলোরাডো নদী বয়ে গেছে। এর বেশিরভাগ অংশই গ্রান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্ক এর ভেতর পরেছে যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমদিককার জাতীয় উদ্যান। এই গিরিখাতের দৈর্ঘ্য ২৭৭ মাইল (৪৪৬ কি.মি.) এবং প্রস্থে ০.২৫ থেকে ১৮ মাইল পর্যন্ত এবং প্রায় ১৮০০ মিটার গভীর। প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট এই গিরিখাতের সংরক্ষণে একটি বড় ভূমিকা পালন করেন। তিনি প্রায়ই এখানে শিকার এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আসতেন।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
The Colorado River flowing through the Grand Canyon
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অ্যারিজোনা-এ অবস্থিত
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
Location within Arizona##Location within the United States##Location within North America
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এ অবস্থিত
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
Location within Arizona##Location within the United States##Location within North America
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন উত্তর আমেরিকা-এ অবস্থিত
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
Location within Arizona##Location within the United States##Location within North America
তল থেকে উচ্চতাapprox. ২,৬০০ ফুট (৮০০ মি)
দৈর্ঘ্য২৭৭ মাইল (৪৪৬ কিমি)
প্রস্থ৪ থেকে ১৮ মাইল (৬.৪ থেকে ২৯.০ কিমি)
ভূতত্ত্ব
বয়স5 – 6 million years[১]
ভূগোল
অবস্থানঅ্যারিজোনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
স্থানাঙ্ক৩৬°১৮′ উত্তর ১১২°৩৬′ পশ্চিম / ৩৬.৩° উত্তর ১১২.৬° পশ্চিম / 36.3; -112.6
নদীসমূহColorado River

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দৈর্ঘ্যে ২৭৭ মাইল, প্রস্থে সর্বোচ্চ ১৮ মাইল এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ১ মাইলেরও অধিক। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গঠনের ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া এবং সময় ভূতাত্ত্বিকদের নিকট বিতর্কের বিষয়। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা যায় যে কলোরাডো নদী এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু করে কমপক্ষে ১৭ মিলিয়ন বছর আগে। তখন থেকে কলোরাডো নদী তার প্রবাহ এবং ভূমি ক্ষয়ের মাধ্যমে এই ক্যানিয়নের বর্তমান রূপ দিয়েছে।প্রাকৃতিক যে সব বিস্ময় মানুষকে যুগে যুগে মুগ্ধ করেছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন তারই একটি। ৪৪৬ কিলোমিটার লম্বা, ৬.৪ থেকে ২৯ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসস্থ আর ১.৮৩ কিলোমিটার গভীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর ২০০ কোটি বছরের ইতিহাসকে সামনে তুলে আনছে। ভূগর্ভস্থ টেকটনিক প্লেটের নানান ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী হয়ে রয়েছে এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

টেকটনিক প্লেটগুলো ভূঅভ্যান্তরের উত্তপ্ত ও গলিত ম্যাগমার উপরে ভাসমান অবস্থায় বিদ্যমান। এগুলোর স্থান পরিবর্তনের ফলেই তৈরি হয়েছে মহাদেশ ও সাগর। টুকরো টুকরো এই সব প্লেট গুলোর অবস্থান সর্বদাই পরিবর্তীত হচ্ছে।

ক্রটেশাস পিরিয়ডে ১৩০ মিলিয়ন বছর আগে ভূগর্ভস্থ দুটি টেকটনিক প্লেট -ওশিয়ানিক প্লেটের সাথে নর্থ আমেরিকান প্লেটের পশ্চিমাংশের সংঘর্ষ ঘটে। ওশিয়ানিক প্লেটের পুরুত্ব হলো ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার অন্য দিকে নর্থ আমেরিকান প্লেট ছিল অপেক্ষাকৃত হালকা। নর্থ আমেরিকান প্লেট হালকা বলে ওশিয়ানিক প্লেটের উপর উঠে যায় আর ওশিয়ানিক প্লেট নর্থ আমেরিকান প্লেটের তলায় ঢুকে যেতে শুরু করে। ওশিয়ানিক প্লেটের এই চাপের ফলে হালকা আমেরিকান প্লেট সংকুচিত ও ঘনীভূত হতে শুরু করে এবং এক সময় পশ্চিম আমেরিকার পুরোটাই উপরের দিকে ফুলে উঠতে শুরু করে। মাটি উপরের দিকে ওঠার ফলে পানির নিচে থাকা সাগরের অংশ গুলো থেকে পানি সরে যায় আর নানান সামুদ্রিক প্রানীগুলোরর দেহাবশেষ রয়ে যায় উপরে উঠে যাওয়া মাটির উপর। এ ভাবেই উত্তরে তৈরি হয় পাহাড় আর দক্ষিণে প্রাচীন পর্বত মোগোলান হাইল্যান্ডস আরও উঁচু হয়ে ওঠে সমুদ্র পৃষ্ঠথেকে ২১০০ মিটার পর্যন্ত।

এরপর ৭০ মিলিয়ন বছর আগে কলোরাডো নদী বরফ গলা পানি সহ মোগোলান হাইল্যান্ডস এর উপর প্রবাহিত হতে শুরু করে। এর ফলে সেখানে শুরু হয় ভূমিক্ষয়। পুরোনো সেই নদীর অস্তিত্ব এখনও বোঝা যায়। যদিও নদীতে এখন আর কোন পানির অস্তিত্ব নেই।

বর্তমান কলোরাডো নদী পূর্বের পাহাড়ী অঞ্চল হতে দক্ষিণ-পশ্চিমে গলফ অব ক্যালিফোর্নিয়া দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু পুরোনো কলোরাডো নদীর উপর প্রাপ্ত পাথরের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায় নদীটি দক্ষিণের সেন্ট্রাল আরিজোনা হতে উত্তরে প্রবাহিত হয়েছে। অর্থাৎ পুরোনো কলোরাডো নদী উত্তর-পূর্ব দিকে বহমান ছিল, যা ছিল বর্তমান কলোরাডো নদীর ঠিক উল্টো দিকে। কি করে এই বিপরীত মুখী শ্রোতের উদ্ভব হলো?

এরপর আরও অনেক গবেষণায় দেখা গেল সুউচ্চ মোগোলান হাইল্যান্ড হঠাৎ প্রায় ৮০০০ মিটারের মত দেবে গেছে। ফলে তৈরি হলো এক বিশালকায় বেসিন। দক্ষিণাঞ্চল দেবে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চল উঁচু হয়ে গেল। ফলশ্রুতিতে উত্তর-পূর্বে ধাবমান কলোরাডোর গতিপথ পাল্টে দক্ষিণ পশ্চিম মুখী হয়ে গেল।

পুরোনো কলোরাডো নদী হতে বর্তমান কলোরাডো নদীর ব্যবধান প্রায় ৬ কিলোমিটার। এটা কেমন করে ঘটলো? বর্তমান কলোরাডো নদী অনেক খাড়া ভাবে নিচে নেমে এসেছে। ফলে পুরোনো নদী তার গতি পথ পরিবর্তন করে ফেলেছে।

কলোরাডো নদী সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭০০ মিটার উঁচু, যা প্রতি ৮০০ মিটারে ৩ মিটার নেমে গেছে। এতটা খাড়া ভাবে নেমে আসাতে এখানে ভূমিক্ষয়ের পরিমাণ অন্যান্য নদীর তুলনায় অনেক অনেক গুন বেশি। মিসিসিপি নদী কলোরাডোর দশগুন পানি বহন করলেও তা প্রতি ৮০০ মিটার দুরত্বে মাত্র ৩ সেন্টিমিটারের মত নেমে গেছে, এর ফলে মিসিসিপি নদীর দ্বারা গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মত গভীর গিরিখাতের জন্ম হয়নি।

গ্রান্ড ক্যানিয়নে কলোরাডো নদীর এই নেমে আসার ধারাটি এখনও সম্পুর্নরূপেই বিদ্যমান। এ ভাবেই যদি চলতে থাকলে আগামী ২০ লাখ বছরে গ্রান্ড ক্যানিয়নের গভীরতা আরও অনেক গুন বৃদ্ধি পাবে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে হয়ে উঠবে আরও বেশি গ্র্যান্ড আরও বেশি মহিমান্বিত।

নদীপৃষ্ঠ হতে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

ইতিহাস

ভ্রমণ এবং সাইট

মাল্টিমিডিয়া

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ