তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র

তাপগতিবিদ্যার সূত্র যা পরম শূন্য তাপমাত্রার নিকটবর্তী তাপযুক্ত ব্যবস্থাকে/সিস্টেমকে সূত্রের

তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র তাপগতিক ভারসাম্যে বদ্ধ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপে বিবৃত করে:

তাপমাত্রা যখন পরম শূন্যের নিকটবর্তী হয়, তখন ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলা মাত্রা ধ্রুব মানের নিকটবর্তী হয়।

এক্ষেত্রে বদ্ধ ব্যবস্থায় কোনোরকম পরামিতিক মানদণ্ডের (যেমন- চাপ কিংবা চৌম্বকক্ষেত্র) উপর ধ্রুব মান নির্ভর করে না। পরম শূন্য তাপমাত্রায় ব্যবস্থাটিতে অবশ্যই কিছু পরিমাণ শক্তি থাকতে হবে। বিশৃঙ্খলা মাত্রা মাইক্রোদশার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। সাধারণত এ দশাকে ন্যূনতম শক্তিসম্পন্ন অনন্য দশা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[১]এক্ষেত্রে, পরম শূন্য তাপমাত্রায় বিশৃঙ্খলা মাত্রা শূন্য। ব্যবস্থাটি যদি কোনো সুসংবদ্ধ নিয়ম মেনে না চলে, সেক্ষেত্রে অতি কম তাপমাত্রার প্রভাবে সসীম বিশৃঙ্খলা মাত্রা বিরাজ করবে। দুইটি কারণে এরূপ হতে পারে - প্রথমত, অ-ন্যূন শক্তি ব্যবস্থাটির উপর ক্রিয়া করে; অথবা "ন্যূনতম শক্তি দশা" অনন্য নয়। এক্ষেত্রে ধ্রুব মানটিকে বলা হয় "উদ্বৃত্ত বিশৃঙ্খলা মাত্রা"(Residual entropy)। বিশৃঙ্খলা মাত্রা হলো মূলত বিভিন্ন প্রকার অণু, পরমাণু কিংবা অন্যান্য কণিকার অবস্থা প্রকাশকারী ফাংশন। সুনির্দিষ্ট ও নিম্ন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে নার্নস্ট-সাইমনের প্রদত্ত তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্রের অনুসিদ্ধান্ত নিম্নরূপ:

কোনো ঘনীভূত দশায় বিশৃঙ্খলা মাত্রার পরিবর্তন সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় শূন্য হয়,যদি তাপমাত্রা শূন্য কেলভিনের নিকটবর্তী হয়।

এখানে তাঁরা ঘনীভূত ব্যবস্থা বলতে তরল অথবা কঠিনকে বুঝাচ্ছেন। নার্নস্ট পরবর্তীতে আরো বলেন,

"একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলা মাত্রা সসীমসংখ্যক প্রক্রিয়া সম্পাদনের মাধ্যমে কখনো পরম শূন্যে উন্নীত করা যায় না। "

এছাড়াও সুনির্দিষ্ট শক্তির ধর্ম বিবেচনায় এনে তৃতীয় শক্তিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়:

দুইটি তাপগতিক ব্যবস্থার সম্মিলনে যদি বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে এদের মধ্যে বিনিময়কৃত শক্তির মান একটি নির্দিষ্ট পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকে। [২]

তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন

ইতিহাস

রসায়নবিদ ভাল্টার নার্নস্ট ১৯০৬-১৯১২ সালে "তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র" উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তাই একে অনেক সময় নার্নস্টের উপপাদ্য বা নার্নস্টের স্বীকার্য বলা হয়। তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী, পরম শূন্য তাপমাত্রায় কোনো ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলা মাত্রা একটি সুসংজ্ঞায়িত ধ্রুবক। যেহেতু সবচেয়ে নিম্নশক্তির দশায় (গ্রাউন্ড স্টেট) তাপমাত্রা শূন্য হয়, তাই ঐ অবস্থার সমশক্তি-বৈশিষ্ট্য বা ডিজেনারেসি পরিমাপের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

১৯১২ সালে নার্নস্ট বলেন, সসীমসংখ্যক ক্রিয়া সম্পাদনের ফলে কোনো ব্যবস্থায় সমোষ্ণ t=০ হতে পারে না।

১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে গিলবার্ট এন লুইস ও মার্লে র‍্যান্ডাল বলেন,

যদি নিখুঁত স্ফটিকীভূত দশায় ও পরম শূন্য তাপমাত্রায় পদার্থ গঠনকারী প্রতিটি উপাদানের বিশৃঙ্খলা মাত্রা শূন্য হয়, তাহলে পদার্থের বিশৃঙ্খলা মাত্রার মান "সসীম ধনাত্মক" হবে। কিন্তু পরম শূন্য তাপমাত্রায় পদার্থের বিশৃঙ্খলা মাত্রা সসীম ধনাত্মক না হয়ে শূন্য হতে পারে ;তবে সেক্ষেত্রে নিখুঁত স্ফটিকীভূত পদার্থের বিশৃঙ্খলা মাত্রা যেকোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই শূন্য হয়।"

অর্থাৎ, শুধু যে ΔS এর মান শূন্য কেলভিন হবে, তা নয়, তদুপরি S এর মানও শূন্য হবে- তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখা বাঞ্ছনীয়, স্ফটিকটির সবচেয়ে নিম্নশক্তির দশা বা গ্রাউন্ড স্টেট বিরাজ করছে এবং ঐ দশার গঠন এক রকম। কিছু কিছু স্ফটিকের গঠন নিখুঁত না হয়ে ত্রুটিযুক্ত হয়। ত্রুটিযুক্ত স্ফটিকের ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত বিশৃঙ্খলা মাত্রা সৃষ্টি হয়। তবে নিম্নশক্তির দশায় উত্তরণের জন্য গতির বাধা দূরীভূত করতে পারলে উদ্বৃত্ত বিশৃঙ্খলা মাত্রাও দূর হয়ে যায়। [৩]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ