নরোদম রানারিধ

কম্বোডীয় রাজনীতিবিদ

নরোদম রানারিধ (খ্‌মের: នរោត្តម រណឫទ្ធិ; ২ জানুয়ারি, ১৯৪৪ - ২৮ নভেম্বর ২০২১) ছিলেন নম পেনে জন্মগ্রহণকারী কম্বোডিয়ার রাজপুত্র, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ মেয়াদে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কম্বোডিয়ার প্রয়াত রাজা নরোদম সিহানুকের দ্বিতীয় পুত্র ও বর্তমান রাজা নরোদম শিয়ামনি’র সৎ ভাই।

মহামান্য
সামডেচ ক্রম প্রেহ
নরোদম রানারিধ
នរោត្ដម រណឫទ្ធិ
জাতীয় পরিষদের ৩য় সভাপতি
কাজের মেয়াদ
২৫ নভেম্বর, ১৯৯৮ – ১৪ মার্চ, ২০০৬
প্রধানমন্ত্রীহুন সেন
উপরাষ্ট্রপতিহেং সামরিন
গুন হেল
পূর্বসূরীচি সিম
উত্তরসূরীহেং সামরিন
কম্বোডিয়ার ৩৫তম প্রধানমন্ত্রী
প্রথম কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২ জুলাই, ১৯৯৩ – ৬ জুলাই, ১৯৯৭
সার্বভৌম শাসকনরোদম সিহানুক
পূর্বসূরীহুন সেন
উত্তরসূরীআং হুত
ফুনকিনপেক পার্টির সভাপতি
কাজের মেয়াদ
১৯ জানুয়ারি, ২০১৫ – ২৮ নভেম্বর ২০২১
পূর্বসূরীনরোদম অরুণরশ্মি
কাজের মেয়াদ
ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ – ১৮ অক্টোবর, ২০০৬
পূর্বসূরীহায়েক তিওলং
উত্তরসূরীকিও পুথ রশ্মি
নরোদম রানারিধ পার্টির সভাপতি
কাজের মেয়াদ
নভেম্বর, ২০০৬ – অক্টোবর, ২০০৮
পূর্বসূরীপদ সৃষ্ট
উত্তরসূরীচিম সিক লেং
কাজের মেয়াদ
ডিসেম্বর, ২০১০ – আগস্ট, ২০১২
পূর্বসূরীচিম সিক লেং
উত্তরসূরীফেং হেং
কমিউনিটি অব রয়্যালিস্ট পিপলস পার্টির সভাপতি
কাজের মেয়াদ
১৬ মার্চ, ২০১৪ – ১৭ জানুয়ারি, ২০১৫
পূর্বসূরীপদ সৃষ্ট
উত্তরসূরীপদ বিলুপ্ত
কেমপং চামের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
২ জুলাই, ১৯৯৩ – ১২ ডিসেম্বর, ২০০৬
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৪৪-০১-০২)২ জানুয়ারি ১৯৪৪
নম পেন, কম্বোডিয়া
মৃত্যু২৮ নভেম্বর ২০২১(2021-11-28) (বয়স ৭৭)
প্যারিস, ফ্রান্স
রাজনৈতিক দলফুনকিনপেক পার্টি (১৯৮৩-২০০৬; ২০১৫-২০২১)
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
কমিউনিটি অব রয়্যালিস্ট পিপলস পার্টি (২০১৪-১৫)
নরোদম রানারিধ পার্টি (২০০৬-০৮; ২০১০-১২)
দাম্পত্য সঙ্গীইং ম্যারি
(বি. ১৯৬৮; বিচ্ছেদ. ২০১০)
ওক ফালা
(বি. ২০১০– ২০২১)
সন্তাননরোদম চক্রবুত
নরোদম সিহরিদ
নরোদম রত্না দেবী
নরোদম সথিয়ারিধ
নরোদম রানাভং
পিতামাতানরোদম সিহানুক
ফাত কানহোল
প্রাক্তন শিক্ষার্থীপ্রভেন্স বিশ্ববিদ্যালয়
ধর্মবৌদ্ধ ধর্ম
বংশনরোদম বংশ
ওয়েবসাইটOfficial website

প্রারম্ভিক জীবন

সিহানুকের প্রথম স্ত্রী[১] ও ব্যালে নর্তকী ফাত কানহোলের গর্ভে রানারিধের জন্ম।[২][৩] তিন বছর বয়সে ১৯৪৭ সালে তার মা পুণঃবিবাহ চাপ হুত নামের এক মেজরকে বিয়ে করলে নরোদম কেতকানায়া ও নরোদম সোভানা’র কাছে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন।[৪] নরোদম স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনান্তে নম পেনের লিস ডেকার্টসে অধ্যয়ন করেন।[৫] এ সময় তিনি রাজা সুরামারিত ও রাণী কোসামাকের সাথে নৈকট্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখেন কিন্তু বাবার কাছ থেকে দূরে রাখেন নিজেকে।[৬] প্রভেন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। আইন গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ও ফ্রান্সে বক্তব্য দেন।

রাজনৈতিক জীবন

১৯৮১ সালে সিহানুক ফুনকিনপেক দল গঠন করেন। কিন্তু, খেমার রুজদের সাথে সম্পর্ক থাকায় তিনি পিতার অনুরোধকে অস্বীকার করেন।[৭] পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে ফুনকিনপেক নামীয় ঐ রাজনৈতিক দলে যোগ দেন ও সিহানুকের ব্যক্তিগত প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত হন।[৮] ১৯৮৫ সালে আর্মি ন্যাশিওন্যাল সিহানুকিস্তের ইন্সপেক্টর জেনারেল হন।[৯] পরবর্তীতে চিফ-অব-স্টাফ এবং কমান্ডার-ইন-চিফের পদোন্নতি পান।[১০] ১৯৮৯ সালে ফুনকিনপেকের মহাসচিব হলে সিহানুক সভাপতির পদ থেকে নিজেকে দূরে রাখেন।[১১] ১৯৯১ সালে প্যারিসে কম্বোডিয়া-ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিষয়ে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে কম্বোডিয়ার সুপ্রিম ন্যাশনাল কাউন্সিলের পক্ষে তিনিও অন্যতম স্বাক্ষরদাতা হন।[৯] ১৯৯২ সালে দলের সভাপতির দায়িত্ব পান রানারিধ।[১২]

প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ

১৯৯৩ সালের কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচনে দল অধিকসংখ্যক আসন পাওয়া স্বত্ত্বেও জোট সরকার গঠন করতে হয়।[১৩][১৪] ঐ সরকারে তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও হুন সেনকে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন।[১৫]

১৯৯৬ থেকে রানারিধ ও হুন সেনের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা বৃদ্ধি পেতে থাকে।[১৬][১৭] আগস্ট, ১৯৯৭ সালে সেনা সমর্থিত কম্বোডিয়ান পিপলস পার্ট (সিপিপি) ও ফুনকিনপেকের মধ্যে সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে উৎখাত হন।[১৮] চোরাচালান ও খেমার রুজদের সাথে যোগসাজসে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির কারণে ৩৫ বৎসরের কারাদণ্ডে দোষীসাব্যস্ত করা হয়। পরবর্তীতে সিহানুকের সাধারণ ক্ষমায় মার্চ, ১৯৯৮ সালে কম্বোডিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন।[১৯][২০]

১৯৯৮ সালের নির্বাচনে ফুনকিনপেককে নেতৃত্ব দেন ও সিপিপি’র কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনের ফলাফলকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।[২১] এরপর সিপিপি’র সাথে জোট সরকার গঠন করেন। নভেম্বর, ১৯৯৮ সালে জাতীয় পরিষদের সভাপতি হন।[২২]

রাজ সিংহাসন বিতর্ক

সিহানুকের ক্যান্সারের[২৩] চিকিৎসা শেষে নভেম্বর, ১৯৯৩ সালে উত্তরাধিকারী নিয়ে বিতর্কের সূচনা ঘটে।[২৪] ২০০১ সালের পূর্ব-পর্যন্ত কম্বোডিয়ার রাজা হিসেবে সিহানুকের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসেবে তাকে গণ্য করা হতো। দুইটি প্রতিবেদনে জানা যায়, সিংহাসনে বসার তার আগ্রহ ছিল না।[২৪][২৫] জাতীয় পরিষদের সভাপতি হিসেবে সিংহাসন কাউন্সিলের নয় সদস্যের একজন ছিলেন। কিন্তু শিয়ামনিকে সিহানুকের স্থান দেয়া হয়।[২৬][২৭]

অবসর ও প্রত্যাবর্তন

মার্চ, ২০০৬ সালে জাতীয় পরিষদের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। অক্টোবর, ২০০৬ সালে ফুনকিনপেকের সভাপতি থেকেও তিনি দূরে সরে যান। পরের মাসেই রানারিধ নিজস্ব দল নরোদম রানারিধ পার্টি (এনআরপি) গঠন করেন। দুইটি ফৌজদারী অপরাধে ৩৫ বৎসরের কারাদণ্ডে দোষীসাব্যস্ত করায় তিনি মালয়েশিয়া চলে যান।[২৮] মার্চ, ২০০৭ সালে তাকে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালে শিয়ামনি তাকে দোষমুক্ত ঘোষণা করেন। কম্বোডিয়ায় ফিরে আসার পর রাজনীতি থেকে নিজেকে অবসরের ঘোষণা দেন।[২৯] ডিসেম্বর, ২০০৮ সালে সুপ্রিম প্রিভি কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন।[৩০] ডিসেম্বর, ২০১০ সালে অবসর ভেঙ্গে এনআরপিকে নেতৃত্ব দেন।[৩১] এরপর তিনি ফুনকিনপেকের সাথে এনআরপিকে একীভূত করার চেষ্টা চালান। এতে ব্যর্থ হয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো অবসর নেন।[৩২] মার্চ, ২০১৪ সালে অবসর ভেঙ্গে কমিউনিটি অব রয়্যালিস্ট পিপলস পার্টি (সিআরপিপি) গঠন করেন।[৩৩] জানুয়ারি, ২০১৫ সালে রানারিধ সিআরপিপি’র বিলুপ্তি ঘোষণা দেন ও হুন সেনের অনুরোধক্রমে ফুনকিনপেকে ফিরে আসেন।[৩৪] এরপর থেকে তিনি ফুনকিনপেকের সভাপতি হিসেবে পুণঃনির্বাচিত হন।

ব্যক্তিগত জীবন

১৯৬৮-এর শুরুর দিকে প্রথমা স্ত্রী মুসলিম বংশোদ্ভূত ইং ম্যারি’র সাথে পরিচিত হন।[৩৫][৩৬] সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮ সালে রাজপ্রাসাদে তাদের বিবাহকার্য সম্পন্ন হয়।[৩৭] এ সংসারে তিন সন্তান রয়েছে। মার্চ, ২০০৬ সালে ওক ফালা’র সাথে সম্পর্ক গড়ার কারণে তাদের মধ্যকার বিবাহ-বিচ্ছেদের সূচনা ঘটে।[৩৮] জুন, ২০১০ সালে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে।[৩৯]

ওক ফালা’র সংসারে দুই পুত্র রয়েছে।[৪০][৪১] রাজা সিসোওয়াথের বংশোদ্ভূত ফালা ধ্রুপদী নর্তকী ছিলেন।[৪২] ২০০২ সালে রাজা বরি নামের একটি চলচ্চিত্র পরিচালনার সময় রানারিধের সাথে তার পরিচয় ঘটে।[৪৩]

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জী

রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
হুন সেন
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী
১৯৯৩-১৯৯৭
উত্তরসূরী
আং হুত
পূর্বসূরী
চি সিম
কম্বোডিয়ার জাতীয় পরিষদের সভাপতি
১৯৯৮-২০০৬
উত্তরসূরী
হেং সামরিন
পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয়
পূর্বসূরী
নরোদম অরুণরশ্মি
ফুনকিনপেক পার্টির সভাপতি
২০১৫–বর্তমান
নির্ধারিত হয়নি
নতুন দপ্তরকমিউনিটি অব রয়্যালিস্ট পিপলস পার্টির সভাপতি
২০১৪-২০১৫
পদ বিলুপ্ত
সিআরপিপি’র সাথে একীভূত
নতুন দপ্তরনরোদম রানারিধ পার্টির সভাপতি
২০০৬-২০০৮
উত্তরসূরী
চিম সায়েক লেং
পূর্বসূরী
হায়েক তিওলং
ফুনকিনপেক পার্টির সভাপতি
১৯৯২-২০০৬
উত্তরসূরী
কিও পুথ রশ্মি
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ