নরোদম সিহানুক
নরোদম সিহানুক (খ্মের: នរោត្តម សីហនុ) কম্বোডিয়ার সাবেক রাজা যিনি কম্বোডিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে গত কয়েক দশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। তিনি শুধু তার পরিবারের নন, সমগ্র দেশ ও ইতিহাসের অংশ ছিলেন। সিহানুক জীবনের দীর্ঘ সময় রাজনীতির নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। কম্বোডিয়ায় তাই তিনি ‘কিং ফাদার অব কম্বোডিয়া’ হিসেবে পরিচিত।[১]
King Norodom Sihanouk នរោត្តម សីហនុ | |||||
---|---|---|---|---|---|
কম্বোডিয়ার রাজা (১ম মেয়াদ) | |||||
রাজত্ব | ২৫ এপ্রিল ১৯৪১ – ২ মার্চ ১৯৫৫ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ৩ মে ১৯৪১ | ||||
পূর্বসূরি | সিসোয়াথ মনিভং | ||||
উত্তরসূরি | নরোদম সুরামারিত | ||||
কম্বোডিয়ার রাজা (২য় মেয়াদ) | |||||
রাজত্ব | ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ – ৭ অক্টোবর ২০০৪ | ||||
পূর্বসূরি | চিয়া সিম | ||||
উত্তরসূরি | নরোদম শিয়ামনি | ||||
জন্ম | নম পেন , ফরাসি ইন্দোচীন | ৩১ অক্টোবর ১৯২২||||
মৃত্যু | ১৫ অক্টোবর ২০১২ বেইজিং, চীন | (বয়স ৮৯)||||
দাম্পত্য সঙ্গী | নরোদম মনিনিয়াথ (১৯৫২ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত) তালিকা
| ||||
বংশধর | ১৪ সন্তান | ||||
| |||||
রাজবংশ | নরোদম রাজবংশ | ||||
পিতা | নরদোম সুরামারিত | ||||
মাতা | সিসোয়াথ কোসামাক | ||||
ধর্ম | বৌদ্ধ | ||||
স্বাক্ষর |
জন্ম
সিহানুক ১৯২২ সালের ৩১ অক্টোবর কম্বোডিয়ার নমপেনে জন্মগ্রহণ করেন। কম্বোডিয়ার রাজা নরোদম সুরামারিত ও রানী কোসামাকের বড় সন্তান তিনি।[১] জীবনের প্রথম থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি তিনি রাজনীতি ও দেশপ্রেমে বেশ উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এজন্য দেশকে স্বাধীন করার চিন্তা তাকে সারাক্ষণ ভাবিয়ে তুলত।তার ইচ্ছা দেশটিকে স্বাধীন করা, দেশের সার্বভৌমত্ব আদায় করা। তিনি ছিলেন দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার পক্ষের একজন দৃঢ় আত্মদানকারী রাজা।[২]
সিংহাসনে আরোহণ
১৯৪১ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন।[১] ফরাসি উপনিবেশিক শক্তি সিহানুককে রাজ্য সিংহাসনে বসায় যদিও সিংহাসন আরোহণ তার জীবনের শেষ ইচ্ছা ছিল না। ১৯৬০ সালে তার বাবা নরোদম সুরামারিত কম্বোডিয়ার রাজা হন। পিতার মৃত্যুর পর সিহানুকই রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন।[২]
ক্ষমতাচ্যুত
রাষ্ট্র প্রধান হওয়ার পর দেশের ভেতর ও বাইরে নানা বাধার সম্মুখীন হন তিনি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মদতে জেনারেল লন নোলের সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চীনে নির্বাসিত হন। সেখান থেকেও তিনি স্বদেশের স্বাধীনতায় খেমাররুজ গেরিলাদের সঙ্গে গভীরভাবে নিজকে সম্পৃক্ত রাখেন। ১৯৭০-৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি তাদের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন। ১৯৭৫ সালে গেরিলারা রাজধানী নমপেন দখল করলে তিনি চীন থেকে রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করেন।[২]
বন্দি অবস্থা
এবং এর কয়েক মাস পরই তিনি রাজধানীতে ‘প্রাসাদবন্দী’ হয়ে পড়েন। সেখান থেকেও তিনি দেশের স্বাধীনতা এবং নানা সঙ্কট সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালান।১৯৭৯ সালটি ছিল তার জন্য ফের নির্বাসনে যাওয়ার আরও একটি স্মরণীয় বছর। এ সালটিতেই তিনি ভিয়েতনামের সামরিক আগ্রাসনের প্রাক্কালে বেইজিং চলে যান এবং ১৯৮২ সালে ভিয়েতনামবিরোধী নির্বাসিত জোট সরকারের প্রধান হন। ১৯৮৯ সালে নমপেন থেকে ভিয়েতনামের সেনা প্রত্যাহার করা হলে তিনি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ১৯৯১ সালে স্বদেশের রাজধানী নমপেনে ফিরে আসেন। ১৯৯৩ সালটি তার জন্য আরেক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন, যেখানে সেই নির্বাচনে তার ‘রাজ পরিবারপন্থী দল’ নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়। এরপর তিনি সিংহাসন আরোহণ করেন এবং তারই ছেলে নরোদম রানারিদ্ধকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।[২]
মৃত্যু
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। সিহানুকের মরদেহ দেশে আনার পর সপ্তাহব্যাপী শোক পালন করা হবে। জনসাধারণ সিহানুকের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাবে। রাজধানী নমপেনে ওই মরদেহ তিন মাস সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। পরে আড়ম্বরপূর্ণভাবে তার শেষকৃত্য হবে।[৩]
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগ
- Official site
- Genealogy of the Cambodian Royal Family
- News release regarding support of gay marriage
- News release regarding his website
- Cambodian politicians biography ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে
- Official Contact with the IPSP
- New York Times
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Norodom Sihanouk (ইংরেজি)