প্রকৌশলী
প্রকৌশলীরা হলেন দক্ষ প্রযুক্তিবিদ । গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রয়োগ ঘটিয়ে ব্যবহারিক সমস্যার নিরাপদ এবং অর্থনৈতিক বিচারে গ্রহণযোগ্য সমাধান খোঁজাই প্রকৌশলীর কাজ । প্রকৌশলী শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ engineer এসেছে লাতিন ingenium থেকে, যার অর্থ 'চালাকি' । তবে গত কয়েক শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের পর ক্রমাগত প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে অর্থেরও খানিকটা পরিবর্তন ঘটেছে । বর্তমানে প্রকৌশলী বলতে ব্যবহারিক বিজ্ঞানীদেরকে বোঝানো হয় ।
পেশা | |
---|---|
নাম | প্রকৌশলী |
পেশার ধরন | পেশা |
প্রায়োগিক ক্ষেত্র | ফলিত বিজ্ঞান |
বিবরণ | |
যোগ্যতা | গণিত, বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা |
শিক্ষাগত যোগ্যতা | প্রকৌশল বিদ্যা |
কর্মক্ষেত্র | গবেষণা ও উন্নয়ন, শিল্প কারখানা, ব্যবসা |
সম্পর্কিত পেশা | বিজ্ঞানী, স্থপতি |
ভূমিকা ও বৈশিষ্ট্য
পরিকল্পনা
প্রকৌশলীরা নতুন প্রযুক্তিগত সমাধান উন্নতিসাধন করে। প্রকৌশল নকশা প্রক্রিয়ায় একজন প্রকৌশলীকে অনেক কিছু করতে হয় যেমন, সমস্যা অনুসন্ধান, গবেষণা, মানদণ্ড বিশ্লেষণ, সম্ভাব্য সমাধান ও বিশ্লেষণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ। প্রকৌশলীদের বেশিরভাগ সময় গবেষণা, সমস্যার স্থান, প্রয়োগ এবং তথ্য বিনিময়ে ব্যয় হয়। প্রকৌশলী তার মেধা দিয়ে বিভিন্ন রকম সমাধান বের করবে এবং সেরা উপায় গ্রহণ করবে। [১] তাদের চরম এবং অনন্য করনীয় হল সনাক্তকরন, উপলব্ধি এবং সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করে একটি সফল সমাধান বের করা।
বিশ্লেষণ
প্রকৌশলীরা পরীক্ষন, উৎপাদন বা রক্ষণাবেক্ষণে বিভিন্ন ইঞ্জিনীরিং বিশ্লেষণ কৌশল ব্যবহার করে। বৈশ্লেষিক প্রকৌশলীরা যদি উৎপাদন পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে তারা, প্রক্রিয়াগন ত্রুটি খুজে বের করেন এবঙ্গি উৎপাদন পরিক্ষা করে দেখেন যাতে মান বজায় থাকে। তারা একটি প্রকল্পের সভাব্কয সময় ও খরচ হিসাব করেন। তত্ত্বাবধানকারী প্রকৌশলীরা সমগ্র প্রকল্প বা বড় অঙ্গিশের দায়িত্বে থাকেন। বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড, বিভিন্ন বস্তুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও যন্ত্রের কার্যকারিতা বর্ণনা করে। [২]অনেক প্রকৌশলী নকশা তৈরি, বিশ্লেষণ ও পরিক্ষনের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করেন।
প্রকৌশল বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা
অধিকাংশ ইঞ্জিনিয়ারদের এক বা একাধিক প্রকৌশল বিদ্যায় বিশেষজ্ঞ। [৩] সকল প্রকৌশল বিভাগ বিভিন্ন পেশাদার সমাজ দ্বারা স্বীকৃত। বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগের আবার অনেক উপবিভাগ আছে। উদাহরণস্বরূপ, পুরকৌশলে (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং) স্ট্রাকচারাল এবং পরিবহন প্রকৌশল রয়েছে এবঙ্গি উপকরণ প্রকৌশলে (মাটেরিয়াল এঙ্ইঞ্জিনিয়ারিঙ্গি ) সিরামিক, ধাতুবিদ ও পলিমার ইঞ্জিনিয়ারিং রয়েছে। প্রকৌশলীরা এক বা একাধিক বিষয়ে দক্ষ হতে পারে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় বর্ণনা করা হয়েছে প্রকৌশলীরা কীভাবে তাদের সময় ব্যয় করেন। [৪] গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৌশলীরা বেশ কয়েক ধরনের কাজ করেন, (১) প্রযুক্তিগত কাজ (যেমন, পণ্য বিকাশ বিজ্ঞানের ব্যবহার) (২) সামাজিক কাজ (অর্থাৎ, মানুষের মধ্যে যোগাযোগ) (৩) কম্পিউটার ভিত্তিক কাজ (৪) তথ্য ব্যবহার। এছাড়াও, প্রকৌশল একটি তথ্য নিবিড় ক্ষেত্র। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৌশলীরা ৫৫% সময় তথ্য নিয়ে কাজ করেন যার মধ্যে ১৪% সময় অন্যের কাছ থেকে এবঙ্গি ও তথ্যভাণ্ডার থেকে তথ্য খোঁজেন। [৪]
নৈতিকতা
প্রকৌশলীরা জনগণ, তাদের মক্কেল, নিয়োগকর্তা এবং পেশায় দায়িত্বশীল। প্রকৌশল সমাজের প্রতিষ্ঠিত কোড অফ প্রাকটিস এবং নীতিশাস্ত্র কোড দ্বারা পরিচালিত। প্রত্যেক প্রকৌশল অনুষদ এবং পেশাদার সমাজ নীতিশাস্ত্র কোড দ্বারা পরিচালিত এবং এর সদস্যরা তা মেনে চলতে বাধ্য। তাদের বিশেষত্বের উপর ভিত্তি করে, প্রকৌশলীরা নির্দিষ্ট সংবিধি, পণ্যের দায় আইন, এবং ব্যবসায়িক নীতিশাস্ত্র দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। [৫][৬][৭]বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ দ্বারা নিবন্ধিত। নিবন্ধিত প্রকৌশলীরা নীতিশাস্ত্র কোড দ্বারা পরিচালিত। [৮]