বিমানবাহী রণতরী

বিমানবাহী রণতরী

বিমানবাহী রণতরী (ইংরেজি: aircraft carrier) হচ্ছে সমুদ্রে চলমান বিমানঘাটি হিসেবে কাজ করতে সক্ষম এমন যুদ্ধ জাহাজ , যাতে একটি পূর্ন-দৈর্ঘ্যের ফ্লাইট ডেক থাকে এবং এতে যুদ্ধবিমান বহন, অস্ত্রসজ্জিত করণ, উড্ডয়ন এবং পুনরুদ্ধার করার জন্য সুযোগ সুবিধা থাকে।[১] সাধারণত, এটি হল বহরের প্রধান জাহাজ, এটি একটি নৌবাহিনীকে দেশে থাকা বিমানঘাটির ব্যবহার ছাড়াই বিশ্বব্যাপী বিমান শক্তি প্রদর্শনের সক্ষমতা প্রদান করে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে জন্ম নেয়া কাঠের তৈরি বিমানবাহী রণতরী, যা বেলুন মোতায়েনে ব্যবহৃত হত, সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়ে পারমাণবিক শক্তিচালিত যুদ্ধজাহাজে, যা যুদ্ধ বিমান, আক্রমণকারী বিমান, হেলিকপ্টার সহ বিভিন্ন ধরনের আকাশযান বহন করে পরিণত হয়েছে। স্থির-ডানার গানশিপ ও বোমারু বিমান এর মত ভারী বিমান বিমানবাহী রণতরী থেকে উড্ডয়ন করলেও বর্তমানে এদের অবতরণ সম্ভব নয়।

বিভিন্ন ধরনের চারটি আধুনিক বিমানবাহী রণতরী— ইউএসএস জন সি. স্টেনিস, শার্লে দি গল, ইউএসএস জন এফ. কেনেডি, হেলিকাপ্টারবাহী রণতরী এইচএমএস ওশান—এবং তাদের প্রহরী জাহাজ, ২০০২
নিচ থেকে উপরেঃ স্পেনীয় হালকা ভি/এসটিওএল বিমানবাহী রণতরী প্রিন্সিপে দে আস্তুরিয়াস, উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ ইউএসএস ওয়াস্প, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ফোরেস্টাল এবং হালকা ভি/এসটিওএল বিমানবাহী রণতরী এইচএমএস ইনভিন্সিবল, বিশ শতকের শেষের দিকের বিমানবাহী রণতরীর আকারের পার্থক্য দেখানো হচ্ছে, ১৯৯১

"বিমানবাহী রণতরীর" কোন একটি বিশেষ একক সংজ্ঞা নেই।[২] এবং আধুনিক নৌ-বাহিনী এ ধরনের বিভিন্ন প্রকারের  নৌ-যান ব্যবহার করে। বিমানবাহী রণতরী শ্রেণীকরণ করা হয় উপশ্রেণী হিসাবে,[৩] এবং কখনও কখনও কোন বিশেষ স্বতন্ত্র ধরনের নৌ-বিমান পরিবহনে সক্ষম জাহাজ হিসাবে শ্রেণীকরণ করা হয়।[৪] এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার এর শ্রেণিবিভাগ করা যায় তা কোন ধরনের বিমান পরিবহন করছে তার উপরেও এবং কোন ধরনের কাজে নিযুক্ত রয়েছে তার উপরও। এডমিরাল স্যার মার্ক স্টেনহোপ, প্রাক্তন রয়াল নেভির প্রধান বলেছেন, "যদি সহজভাবে বলতে হয়, কৌশলগত দিক থেকে যে সকল উচ্চাভিলাষী দেশ আন্তর্জাতিক প্রভাববিস্তার করতে পারে তাদের বিমানবাহী রণতরী রয়েছে"।[৫]

ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত, বিশ্বের বারটি নৌ-বাহিনীর ৩৭টি কার্যরত বিমানবাহী রণতরী চালু রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেভির ১০টি বৃহৎ  নিউক্লিয়ার-পাওয়ারড বিমানবাহী রণতরী রয়েছে (যা সুপারক্যারিয়ার নামে পরিচিত, প্রতিটি প্রায় ৮০টি ফাইটার জেট বহন করতে পারে), যা বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী; এর মোট মিলিত ডেকস্পেস অন্য সব দেশের বিমানবাহী রণতরীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।[৬] একই সাথে সুপারক্যারিয়ার বহরের পাশাপাশি মার্কিন নৌবাহিনীর আক্রমণ করার জন্য নয়টি উভচর আক্রমণকারী জাহাজ রয়েছে যা মূলত ব্যবহৃত হয় হেলিকপ্টার পরিবহনে (কখনও কখনও এগুলোকে হেলিকপ্টারবাহী রণতরীও বলা হয়), যদিওবা এছাড়াও এগুলো ২০টির মত উল্লম্বভাবে উড্ডয়নক্ষম বা সংক্ষিপ্ত ভূমিত্যাগের এবং অবতরণ ক্ষমতাসম্পন্ন (ভি/এসটিওএল) যুদ্ধবিমান পরিবহন করেতে পারে এবং এই সমমানের হালকা দ্রুতগামী বিমান পরিবহক রয়েছে। চীন, ফ্রান্স, ভারত ও রাশিয়ার প্রত্যেকে মাঝারি আকারের বিমানবাহী রণতরী পরিচালনা করে যা ৩০ থেকে ৫০টি ফাইটার জেট পরিবহনের ক্ষমতাসম্পন্ন, এছাড়াও বিভিন্ন হালকা দ্রুতগামী বিমানবাহী রণতরী, উভচর আক্রমণকারী জাহাজ ও হেলিকপ্টারবাহী রণতরী বিভিন্ন নৌ-বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত হয়। ব্রিটেন দুইটি ২৮০ মিটার (৯২০ ফুট) লম্বা বিমানবাহী রণতরী, কুইন এলিজাবেথ-ক্লাস বিমানবাহী রণতরী এবং এইচএমএস প্রিন্স অফ ওয়েলস (আর ০৯) নির্মাণ করছে, যা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রয়েল নেভিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শিডিউল রয়েছে।

বিমানবাহী রণতরীর প্রকারভেদ

পটভূমিতে ব্রাজিলের যুদ্ধবিমান পরিবাহক না সাও পাওলো এবং মার্কিন নেভাল ক্যারিয়ার ইউএসএস রোনাল্ড রেগান একটি যৌথ সামরিক মহরায় একসাথে। 
ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ, মার্কিন নেভির একটি সাব-ক্যারিয়ার (বামে), যা সমুদ্রযাত্রা করছে চালর্স দা গাউলির  সাথে, ফ্রেঞ্চ নেভির (ডানে), উভয়ের ক্যাটোবার কনফিগারেশন রয়েছে।
কেভোউর, ইতালীয় নেভির একটি হালকা বিমান পরিবাহক।
এইচএমএস ওশান রয়াল নেভির একটিউভচর আক্রমাত্নক জাহাজ/হেলিকাপ্টার পরিবাহক

মৌলিক ধরন

  • উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ
  • এন্টি সাবমেরিন সমরাস্ত্র পরিবাহক
  • বেলুন পরিবাহক এবং বেলুন টেন্ডার্‌স
  • সহচর পরিবাহক
  • বহর পরিবাহক
  • ফ্লাইট ডেক ক্রুজার
  • হেলিকপ্টার পরিবাহক
  • হালকা বিমান পরিবাহক
  • সী কন্ট্রোল সীপ
  • সীপ্লেন টেন্ডার এন্ড সীপ্লেন ক্যারিয়ার
  • সুপারক্যারিয়ার

(দ্রষ্টব্য: কিছু তথ্যসূত্র মতে, এখানে তালিকাভুক্ত কিছু প্রকারভেদকে বিমান বাহকের শ্রেণিবিভাগ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যাবে না)

কাজের ভিত্তিতে

সবাৱ আগে জেনে ৱাখা ভাল যে বাংলাদেশেৱও একটি ৱনতৱি বানানোৱ জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে ৱেখেছে ৷ একটি দ্রুতগামী পরিবাহক থাকার উদ্দেশ্যে হচ্ছে প্রধান বহরের সঙ্গে কাজ করা এবং সাধারণত এগুলোর আক্রমণাত্মক ক্ষমতাকে ব্যবহার করা হয়। এগুলো হল দ্রুতগতি সম্পন্ন বৃহৎ পরিবাহক। তূলনামূলকভাবে, সাজোয়া জাহাজগুলোকে প্রতিরক্ষা প্রদান করার জন্য সহচর বাহকের উন্নয়ন করা হয়। এগুলো আকারে ছোট এবং ধীর গতিতে কম সংখ্যক বিমান পরিবাহকের সাথে চলে। বেশিরভাগ নির্মিত হয়েছিল বাণিজিক জাহাজের কাঠামোর মত করে বা বাণিজিক বিমান পরিবাহকের ক্ষেত্রে বৃহৎ কার্গো ধারণের ক্ষমতার পাশাপাশি একটি ফ্লাইট ডেক যোগ করা হয়েছে জাহাজের উপরে। হালকা বিমান বাহক হল প্রধান বহরের সাথে যথেষ্ট দ্রুত চালার জন্য, কিন্তু এর ছোট আকারের কারণে বিমান ধারণ ক্ষমতাও হ্রাস পায়। সোভিয়েত যুদ্ধবিমান পরিবাহক যা এখন ব্যবহার করে রাশিয়া আসলে বলা হয়ভারী বিমান ক্রুজার; এই জাহাজগুলো বিভিন্ন আকারের বৃহৎ বাহক হিসাবে বহরে ব্যবহৃত হয়, যার পরিকল্পনা করা হয়েছে একা বা সহচর বাহকের সাথে আক্রমণে যাবার জন্য এবং এটি প্রদান করে একই সাথে শক্তিশালী আত্মরক্ষামূলক অস্ত্রসম্ভার ও ভারী আক্রমণাত্মক মিসাইল যা একটি গাইড করা মিসাইল ক্রুজারের সমতুল্য, যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার পরিবহনের পাশাপাশি।

কনফিগারেশন অনুসারে

ভারতীয় নৌবাহিনীর আইএনএস বিক্রমাদিত্য স্টোবার কনফিগারেশন রয়েছে।

সারা বিশ্বে চালু থাকা যুদ্ধবিমান পরিবাহকগুলোতে মূলত চার ধরনের কনফিগারেশন দেখা যায়, বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের উপর ভিত্তি করে এই ভাগ করা হয়:

  • ক্যাটাপুল-অ্যাসিস্টেড উড্ডয়ন কিন্তু অ্যারেস্টেড-রিকোভারি (ক্যাটোবার): এই বাহকদের সাধারণত বহন করে বৃহত্তর, ভারীতম, এবং সবচেয়ে বেশি অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা সজ্জিত বিমান গুলোকে, যদিও ছোট ক্যাটোবার বাহকের অন্যান্য সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে (যেমন ওজন নেয়ার ক্ষমতা বিমান এলিভেটরের ইত্যাদি)। তিনটি জাতি বর্তমানে এই ধরনের পরিবাহক ব্যবহার করছে: দশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক, এবং একটি করে ফ্রান্স এবং ব্রাজিল কর্তৃক মোট বারোটি সেবা প্রদান করছে।
  • স্বল্প-দূরত্বে উড্ডয়ন, কিন্তু এরেস্টেড-রিকোভারি (স্টোবার):  এই বাহকগুলর একটি সাধারণ সীমাবদ্ধতা হল এগুলো বহন করতে পারে শুধুমাত্র হালকা ফিক্সড-উইং বিমান এবং সীমিত সংখ্যক সমরাস্ত্র। স্টোবার ক্যারিয়ার এয়ার উইংস, যেমন সুখোই সু-৩৩ এবং ভবিষ্যতের মিকোয়ান মিগ-২৯কে এর উইংস এডমিরাল কুজনেটসোভকে প্রায়শই আকাশে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন এবং বহরের প্রতিরক্ষার ভূমিকায় ব্যবহার করা হয়, এগুলোকে আক্রমণ/শক্তি প্রদর্শনের কাজে লাগানো হয় না কারণ সেখানে প্রচুর সংখ্যক সমরাস্ত্র (বোমা এবং আকাশ থেকে মাটিতে আক্রমণের মিসাইল) প্রয়োজন। বর্তমানে, রাশিয়া, চীন এবং ভারতের কাছে এই ধরনের পরিবাহক রয়েছে।
  • স্বল্প-দূরত্বে উড্ডয়ন উল্লম্বভাবে -অবতরণ (স্টোভল): এটি শুধুমাত্র স্টোভল ধরনের বিমান পরিবহন করতে পারে। স্টোভল বিমান, যেমন হ্যারিয়ার জাম্প জেট ধরনের এবং ইয়াকোভ্লেভ ইয়াক-৩৮ বিমানের সাধারণ সীমাবদ্ধ হল সীমিত সংখ্যক সমরাস্ত্র পরিবহনে সক্ষম এবং এগুলো নিম্ন কর্ম ক্ষমতার, ও এগুলোর জ্বালানীর খরচ উচ্চ, প্রচলিত ফিক্সড-উইং বিমানের তুলনায়; তবে বর্তমানে একটি নতুন প্রজন্মের স্টোভল বিমান এর মধ্যে রয়েছে এফ-৩৫বি, যার কর্মক্ষমতা অনেক উন্নত। এই ধরনের যুদ্ধবিমান পরিবাহক বর্তমানে ইতালিতে সেবা প্রদান করছে। এছাড়াও স্পেনে একটি উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ স্টোভল হিসাবে পরিচালিত হচ্ছে, মোট তিনটি স্টোভল যুদ্ধবিমান পরিবাহক সক্রিয় পরিবাহক হিসাবে সেবা প্রদান করছে; থাইল্যান্ডের একটি সক্রিয় স্টোভল পরিবাহক রয়েছে, কিন্তু তাদের ইনভেন্টরিতে এখন আর কোনও কর্মক্ষম স্টোভল বিমান নেই। এছাড়াও অনেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সারির হালকা বিমান পরিবহন নিযুক্ত থাকা নয়টি উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজকে গণনায় যুক্ত করে সামগ্রিক সংখ্যাকে বাড়িয়ে মোট তেরোটি গণনা করে। মার্কিন যুক্তরাজ্য দুইটি ৭০,০০০ টনের স্টোভল ক্যারিয়ার নির্মাণ শুরু করেছে, এইচএমএস রানী এলিজাবেথ এবং এইচএমএস প্রিন্স অফ অয়ালেস রয়াল নৌবাহিনীর জন্য বানানো প্রথম বৃহত্তর যুদ্ধজাহাজ; আশা করা হয় ২০২০ সাল নাগাদ প্রথমটি "প্রাথমিক সামুদ্রিক কর্মক্ষম সামর্থ্যপূর্ণ হবে"।
  • হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার: হেলিকপ্টার বাহকের অন্যান্য বিমান বাহকের মত অনুরূপ চেহারা থেকে এবং স্বাভাবিক ফিক্সড-উইং অপারেশনকে সমর্থন করতে পারে। কিছু ডিজাইনে যোগ করা হয় অথবা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যেমন একটি স্কি ঝাঁপ দেয়ার রেম্প যা সুযোগ করে দেয় স্টোভল অপারেশনের বা থাকতে পারে একটি অব্যবহৃত স্কি ঝাঁপ দেয়ার রেম্প যা স্থাপন করা হয়েছিল স্টোভল বিমান অবসর যাবার আগে এবং নতুন কাজে নিয়োগের আগে। অতীতে কিছু প্রচলিত বাহকে পরিবর্তন করা হয় এবং নাম দেয়া হয়, কমান্ডো বাহক যা রয়্যাল নেভি ব্যবহার করত। কিছু হেলিকপ্টার বাহকের মধ্যে একটি প্রতিরোধী ফ্লাইট ডেক থাকতে পারে স্টোভল জেট বিমান পরিচালনার জন্য। বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক হেলিকপ্টার বাহকে, কিন্তু সবগুলো নয়, শ্রেণীবদ্ধ করা হয় উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ হিসাবে, যার কাজ হল শত্রুর এলাকায় অবতরণ এবং স্থল বাহিনীর সহায়তা প্রদান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের নয়টি, ফ্রান্স ও জাপানের তিনটি, অস্ট্রেলিয়ার দুইটি, যুক্তরাজ্যের একটি, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের (দক্ষিণ কোরিয়ার) একটি ও স্পেনের একটি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। স্বাভাবিক পরিচালনার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং স্পেনের উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ কাজ করে স্টোভল জেট দ্বারা।

আকার অনুসারে

  • বহর পরিবাহক
  • হালকা বিমান পরিবাহক
  • সহচর বাহক 

সুপার ক্যারিয়ার

  • সুপারক্যারিয়ার

নিমিট্জ ক্লাসটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাথে পরিষেবা দেওয়ার জন্য দশটি পারমাণবিক চালিত বিমানবাহকবাহকের একটি শ্রেণি। ১ লক্ষ টনের বেশি উত্পাটন মান হওয়ায় এগুলো ও জেরাল্ড আর ফোর্ড-শ্রেণীর বিমান বাহক হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র সুপার ক্যরিয়ার।

কাটামো ধরনের সনাক্তকারী চিহ্ন

বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে বিমান বাহক এবং সংশ্লিষ্ট ধরনের কাজে ব্যবহৃত জাহাজ সনাক্তকারণ চিহ্নের। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত প্যানেন্ট নম্বর যা ব্যবহার করে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি এবং কিছু কমনওয়েলথ দেশ, মার্কিন জাহাজের কাঠামো শ্রেণীকরণ চিহ্ন আরো ব্যবহার করে, ন্যাটো ও অন্যান্য বেশ কিছু দেশ,[৭] এবং কানাডিয়ান কাঠামো শ্রেণীকরণ চিহ্ন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজের কাঠামো শ্রেণীকরণ চিহ্ন বিমান বাহক এবং সংশ্লিষ্ট ধরনের জন্য
প্রতীকউপাধি
সিভিজেনেরিক যুদ্ধবিমান পরিবাহক
সিভিএআক্রমণাত্নক পরিবাহক
সিভিএএনপারমাণবিক শক্তিচালিত আক্রমণাত্নক পরিবাহক
সিভিইসহচর পরিবাহক
সিভিজিফ্লাইট ডেক ক্রুজার (প্রস্তাবিত)
সিভিএইচএযুদ্ধবিমান পরিবাহক, হেলিকপ্টার হামলা (অবসরপ্রাপ্ত)
সিভিএইচইযুদ্ধবিমান পরিবাহক, হেলিকপ্টার, সহচর, (অবসরপ্রাপ্ত)
সিভিএলহালকা যুদ্ধবিমান পরিবাহক
সিভিএনপারমাণবিক শক্তিচালিত যুদ্ধবিমান পরিবাহক
সিভিএস এন্টি সাবমেরিন সমরাস্ত্র পরিবাহক
সিভিভিযুদ্ধবিমান পরিবাহক, মাঝারি (প্রস্তাবিত)
এলএইচএ
ল্যান্ডিং হেলিকপ্টার হামলা, এক ধরনের উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ
এলএইচডিল্যান্ডিং হেলিকপ্টার ডক, একটি ধরনের উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ
এলপিএইচ
ল্যান্ডিং প্ল্যাটফর্ম হেলিকপ্টার, এক ধরনের উভচর আক্রমণাত্মক জাহাজ

ইতিহাস

উৎপত্তি

এই জাপানী সামুদ্রিক বিমান পরিবাহক ওয়াকামিয়া থেকে পরিচালিত হয় বিশ্বের প্রথম নৌ থেকে বায়ুতে অভিযান ১৯১৪ সালে।

১৯০৩ সালে আবির্ভাব হওয়া বায়ুর-তুলনায়-ভারী-ফিক্সড-উইং বিমান প্রতি ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেন ইউজিন বার্টন ইলাই, যিনি ১৪ই নভেম্বর ১৯১০ সালে প্রথম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করেন একটি কারটিসেস পুশার বিমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর জাহাজ, ক্রুজার ইউএসএস বার্মিংহামের ডেক থেকে যা নোঙ্গর করা ছিল নরফোক নেভি বে ভার্জিনিয়ায়। দুই মাস পর, ১৮ই জানুয়ারি, ১৯১১ সালে, ইলাই  তার কারটিসেস পুশার বিমান অবতরণ করান সাঁজোয়া ক্রুজার ইউএসএস পেনসিলভানিয়ার প্ল্যাটফর্মের উপর যা নোঙ্গর করা ছিল সান ফ্রান্সিসকো বেতে। ৯ মে ১৯১২ সালে প্রথম একটি বিমান চলমান একটি জাহাজের ডেক থেকে উড্ডয়ন করে যা ছিল ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির এইচএমএস হাইবেরনিয়া।[৮][৯] বিমান পরিবহনে সক্ষম জাহাজ আসে এরপর, ফরাসি জাহাজ ফোউদ্রে ১৯১১। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রথমদিকে ইম্পেরিয়াল জাপানি নেভির জাহাজ ওয়াকামিয়া থেকে পরিচালিত হয় বিশ্বের প্রথম সফল জাহাজ থেকে বিমান হামলা:[১০][১১] , ৬ই সেপ্টেম্বর, ১৯১৪ সালে, ওয়াকামিয়া উড্ডয়নকৃত একটি ফরমান বিমান আক্রমণ করে অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান ক্রুজার  এসএমএস কাইসেরিন এলিজাবেথ কে  এবং জার্মান গানবোট জাগুয়ার  আক্রমণ করে টসিংটাও এর কাইয়োছোও বে, যার উভয়ি নিস্ফল ছিল।[১২][১৩] প্রথম পরিবাহক-যা বিমান হামলা চালু করে তা ছিল টোন্দ্রেন রেইড জুলাই ১৯১৮ সালে। সাতটি সোপউইথ ক্যামেল বিমান যা উড্ডয়ন করেছিল রূপান্তরিত যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস ফিউরিয়াস (৪৭) থেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে টোন্দেরে অবস্থিত জার্মান বিমান ঘাঁটিতে এবং ধ্বংস করে দুইটি জেপেলীন্ বিমানকে।[১৪]

"হোসো" জাহাজের আকাশ থেকে তোলা ছবি যা ইম্পেরিয়াল জাপানি নেভির জন্য ডিসেম্বর, ১৯২২ সালে তৈরি করা হয়।

সমতল পৃষ্ঠের জাহাজ উৎপাদনের উন্নয়নের ফলে প্রথম বড় আকারের বহরের জাহাজ গড়ে ওঠে। ১৯১৮ সালে এইচএমএস আরগুরাস হয়ে ওঠে বিশ্বের প্রথম পরিবাহক যা একই সাথে জাহাজ থেকে নৌবাহিনীর বিমান প্রেরণ এবং পুনপ্রহন করতে সক্ষম ছিল।[১৫] এর ফলে ১৯২২ সালের ওয়াশিংটন নৌ চুক্তি হয়, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল নতুন ভারী পৃষ্ঠের যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ, সবচেয়ে সহজ ছিল সেই সকল যুদ্ধবিমান পরিবাহক বানানো যেগুলো ফেলে দেয়া জাহাজ থেকে বানানো হত (বা দায়িত্ব থেকে অবসর প্রাপ্ত জাহাজ থেকে) যেমন বিভিন্ন ধরনের জাহাজ: কার্গো জাহাজ, ক্রুইজার, ব্যাটেলক্রুইজার, বা যুদ্ধজাহাজ। এই পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট যুদ্ধবিমান পরিবাহক যেমন যুক্তরাষ্ট্রের লেক্সিংটন-শ্রেণীর যুদ্ধবিমান পরিবাহক (১৯২৭), জাপানের একাজি, এবং ব্রিটিশ ক্যারেজিয়াস শ্রেণীর। বিশেষায়িত পরিবাহকের বিবর্তন চলছিল একই সাথে, বেশ কিছু নৌবাহিনী ক্রয়ের আদেশ দিয়েছিল এবং যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করছিল বিশেষ উদ্দেশ্যপূর্ণ যুদ্ধজাহাজের, পরিকল্পনা ছিল, যুদ্ধবিমান পরিবাহক হিসাবে ১৯২০ সালের মাঝামাঝি সময়ের এগুলো চালু করা, ফলে জাহাজ যেমন আইজেএন হোসো (১৯২২), এইচএমএস হেরমেস (১৯২৪), এবং বেরেন (১৯২৭) এর কমিশনিং হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই জাহাজগুলো পরিচিত হয়ে ওঠে বহর বাহক হিসাবে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ