মগওয়ে

মানববসতি

মগওয়ে (বর্মী: မကွေးမြို့; এমএলসিটিএস: ma. kwe: mrui., উচ্চারিত: [məɡwé mjo̰]) হচ্ছে মিয়ানমারের মগওয়ে অঞ্চলের (পূর্বতন মগওয়ে বিভাগ) রাজধানী শহর, এবং ইরাবতী নদীর তীরে অবস্থিত। শহরের উত্তরে অবস্থিত মি-থা-লুন প্যাগোডা (Myathalun Pagoda), শহরটির একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। তিল এবং বিভিন্ন ধরনের বাদাম চাষের জন্য মগওয়ে অঞ্চলটি বিখ্যাত। এটি মগওয়ে অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং মগওয়ে বিমানবন্দরটিও এখানেই অবস্থিত।

মগওয়ে
မကွေး
Magwe
শহর
মগওয়ে মিয়ানমার-এ অবস্থিত
মগওয়ে
মগওয়ে
মিয়ানমারে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২০°০৯′ উত্তর ৯৪°৫৭′ পূর্ব / ২০.১৫০° উত্তর ৯৪.৯৫০° পূর্ব / 20.150; 94.950
রাষ্ট্র মিয়ানমার
অঞ্চলটেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত মগওয়ে অঞ্চল
জনসংখ্যা (২০১৪)
 • শহর২,৮৯,২৪৭[১]
 • পৌর এলাকা৬৬,৭৭২
 • মহানগর২,২২,৪৭৫
সময় অঞ্চলMST (ইউটিসি+৬.৩০)

মগওয়ে শহরটি ইয়াঙ্গুন থেকে জলপথে প্রায় ৬০৮ কিলোমিটার (৩৭৮ মাইল) এবং সড়কপথে ৫৩০ কিলোমিটার (৩৩০ মাইল) দূরে অবস্থিত।[২]

ইতিহাস

ব্রিটিশ দখলদারিত্বের সময়কালে, মগওয়ে ছিল মিন্‌বু বিভাগ (বা) মিন্‌বু প্রদেশের একটি পৌরসভা (township)। তিনটি জেলা নিয়ে মিন্‌বু প্রদেশটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেগুলো হল- মিন্‌বু জেলা (Minbu), থায়েট জেলা (Thayet) এবং ইন্যাংজাং জেলা (Yenangyaung)। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত মগওয়ে ছিল ইন্যাংজাং জেলার একটি পৌরসভা।

২ মার্চ ১৯৬২ তারিখে, জেনারেল নে উইন (General Ne Win) এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বার্মা’র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন, এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সামরিক বাহিনীর হাতে চলে যায়। ১৯৭৪ সালে, বার্মা ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (Socialist Republic of the Union of Burma)– এর একটি নতুন সংবিধান গৃহীত হয়।

১৯৭৪ সালের সংবিধান অনুসারে, মিন্‌বু অঞ্চলের নাম বদলে মগওয়ে অঞ্চল রাখা হয় এবং ইন্যাংজাং জেলা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ছয়টি জেলা নিয়ে মগওয়ে জেলা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ইন্যাংজাং এর স্থলে রাজধানী শহর হয় মগওয়ে। ১৯৭৪ সালে মগওয়ে শহরের জনসংখ্যা ছিল ৭,৮৯৬ জন।

বিভিন্ন সময়ে খননকার্য চলাকালে এই অঞ্চল থেকে প্রাচীন প্রাইমেট বর্গীয় প্রাণিদের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, যেগুলো ৪ কোটি বছরেরও বেশি পুরনো বলে ধারণা করা হয়।[৩]

উল্লেখযোগ্য স্থান

মগওয়ে শহরে অবস্থিত মি-থা-লুন প্যাগোডা

মি-থা-লুন প্যাগোডা (Mya Tha Lun Pagoda): মগওয়ে শহরের উত্তরে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত চমৎকারভাবে সংরক্ষিত স্বর্ণাবৃত গম্বুজবিশিষ্ট এই প্যাগোডাটি থেকে ইরাবতী নদী দেখা যায়। বলা হয়ে থাকে, এর দেয়াল সোনার ইট দ্বারা নির্মিত।[২] লোকমুখে প্রচলিত আছে যে, গৌতম বুদ্ধ এই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় এই স্থানে বিশ্রাম নিয়েছিলেন, যেখানে পরবর্তীকালে এই উপাসনালয়টি নির্মাণ করা হয়।[৩]

শ্বেসেত্তা প্যাগোডা (Shwesettaw Pagoda): ঘন জঙ্গল পরিবেষ্টিত এই উপাসনালয়টি ঐতিহ্য ও প্রকৃতির এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। এটি মগওয়ে থেকে ৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে নদীর বাঁকে অবস্থিত। এখানে প্যাগোডায় গৌতম বুদ্ধের পদচিহ্ন সংরক্ষিত রয়েছে বলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে থাকে। এজন্য এখানে প্রতি বছর (মিয়ানমারের পঞ্জিকা অনুসারে, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে) বিরাট উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে।[২]

নাগাপওয়েক পর্বত (Nagapwek Mountain): মি-থা-লুন প্যাগোডা'র ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত এটি। স্থানীয়রা বিশ্বাস করে যে, এই পর্বতে এক ড্রাগন (নাগর) বাস করে। ড্রাগনের যখন নিঃশ্বাস ছাড়ে, আগ্নেয় পর্বতের চারপাশের কাদা থেকে গ্যাসের বুদ্বুদ বের হয়। শহর থেকে গাড়িতে করে এখানে যাওয়া যায়।[৩]

জলবায়ু

কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে, মগওয়ের জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক জলবায়ু (tropical wet and dry climate, Aw), যা উত্তপ্ত প্রায়–অনুর্বর জলবায়ুর (hot semi-arid climate, BSh)– এর সীমানাবর্তী।

মগওয়ে, মিয়ানমার (১৯৮১-২০১০)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাসজানুফেব্রুমার্চএপ্রিলমেজুনজুলাইআগস্টসেপ্টেঅক্টোনভেডিসেবছর
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা)৩০.৭
(৮৭.৩)
৩৪.৫
(৯৪.১)
৩৮.৬
(১০১.৫)
৪০.৯
(১০৫.৬)
৩৮.৩
(১০০.৯)
৩৪.২
(৯৩.৬)
৩৩.৪
(৯২.১)
৩৩.১
(৯১.৬)
৩৩.৭
(৯২.৭)
৩৩.৭
(৯২.৭)
৩১.৫
(৮৮.৭)
২৯.৮
(৮৫.৬)
৩৪.৪
(৯৩.৯)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা)১১.৪
(৫২.৫)
১৩.৭
(৫৬.৭)
১৮.০
(৬৪.৪)
২২.৪
(৭২.৩)
২৪.০
(৭৫.২)
২৩.২
(৭৩.৮)
২৩.১
(৭৩.৬)
২৩.০
(৭৩.৪)
২২.৭
(৭২.৯)
২১.৯
(৭১.৪)
১৮.৩
(৬৪.৯)
১৩.৮
(৫৬.৮)
১৯.৬
(৬৭.৩)
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি)১.৪
(০.০৬)
২.৪
(০.০৯)
৫.০
(০.২০)
১৮.৯
(০.৭৪)
১০৫.৪
(৪.১৫)
১৪১.০
(৫.৫৫)
১০০.২
(৩.৯৪)
১৩২.০
(৫.২০)
১৬৩.৮
(৬.৪৫)
১৩২.৩
(৫.২১)
৫১.১
(২.০১)
৬.২
(০.২৪)
৮৫৯.৭
(৩৩.৮৫)
উৎস: নরওয়েজীয় আবহাওয়াবিদ্যা ইন্সটিটিউট [৪]

শিক্ষা

মগওয়ে'র কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা

  • মগওয়ে শিক্ষা মহাবিদ্যালয় (Magway Education College)
  • মগওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় (Magway University)
  • কম্পিউটার বিশ্ববিদ্যালয়, মগওয়ে (Computer University, Magway)
  • চিকিৎসাবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়, মগওয়ে (University of Medicine, Magway)[৫]
  • গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, মগওয়ে (University of Community Health, Magway)
  • প্রযুক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয়, মগওয়ে (Technological University, Magway)

খেলাধুলা

চিকিৎসাবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় (মগওয়ে) এর শিক্ষণ হাসপাতাল

৩,০০০ আসনবিশিষ্ট মগওয়ে স্টেডিয়াম একটি বহুমুখী স্টেডিয়াম, যা প্রধানত ফুটবল খেলার উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই মাঠটি মিয়ানমার জাতীয় লীগ (এম.এন.এল.) এর একটি দল, মগওয়ে এফ.সি. এর নিজস্ব মাঠ।

স্বাস্থ্যসেবা

সরকারি হাসপাতাল

  • মগওয়ে আঞ্চলিক হাসপাতাল
  • শিক্ষণ হাসপাতাল, চিকিৎসাবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় (মগওয়ে)

ভবিষ্যত পরিকল্পনা

  • মগওয়েতে একটি নতুন বন্দর
  • একটি নতুন চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

  • উইকিমিডিয়া কমন্সে মগওয়ে সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ