রূপান্তরক

রূপান্তরক বলতে এমন একটি বৈদ্যুতিক কলকৌশলকে বোঝায় যার মাধ্যমে তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মূলনীতি ব্যবহার করে একটি পরিবর্তী প্রবাহের বৈদ্যুতিক বর্তনী থেকে বৈদ্যুতিক শক্তিকে অপর একটি বর্তনীতে বৈদ্যুতিক বিভব, বৈদ্যুতিক প্রবাহ, দশা বা সামগ্রিক প্রতিরোধে পরিবর্তন সাধন করে স্থানান্তরিত করা হয়। একে ইংরেজিতে "ট্রান্সফর্মার" (Transformer) বলে। সাধারণত রূপান্তরকগুলিতে কোনও পরিবর্তী তড়িৎ ব‍্যবস্থায় অপরিবর্তিত কম্পাঙ্কতে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তিকে বিভবের মান অনুযায়ী কমিয়ে বা বাড়িয়ে এক বর্তনী থেকে অন‍্য বর্তনীতে স্থানান্তর করা যায়। রূপান্তরক একটি (সাধারণত লোহার) মজ্জা ও দুইটি (অন্তরিত তামার তারের) কুণ্ডলী নিয়ে গঠিত; মুখ্য কুণ্ডলীতে পরিবর্তী বিদ্যুৎপ্রবাহ একটি পরিবর্তী চৌম্বকীয় ক্ষেত্র সৃষ্টি করে, যেটি গৌণ কুণ্ডলীতে পরিবর্তী বিদ্যুৎপ্রবাহের সৃষ্টি করে। গৌণ ও মুখ্য কুণ্ডলীতে বিভবের (ভোল্টেজ) অনুপাত গৌণ ও মুখ্য কুণ্ডলীতে প্যাঁচের অনুপাতের প্রায় সমান। উচ্চ কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য রূপান্তরকের মজ্জাটিকে প্রায়শই স্তরিত লোহা (laminated iron) দিয়ে তৈরি করা হয়, যেটি উচ্চ প্রবেশ্যতা প্রদান করে ও ঘূর্ণি বিদ্যুৎপ্রবাহগুলিকে (Eddy current) ন্যূনতম মাত্রায় নিয়ে আসে।

খুঁটির উপরে স্থাপিত রূপান্তরক
আদর্শ রূপান্তরকের রেখাচিত্র

পরিবর্তী বিদ্যুৎপ্রবাহ ব্যবস্থায় কম বিভবকে বেশি বিভবে বা বেশি বিভবকে কম বিভবে রূপান্তর করার জন্য রূপান্তরক ব্যবহৃত হয়। কম থেকে বেশি বিভবে রূপান্তরের জন্য ব্যবহৃত রূপান্তরককে উচ্চধাপী রূপান্তরক (স্টেপ-আপ ট্রান্সফর্মার) এবং বেশি থেকে কম বিভবে রূপান্তরের জন্য ব্যবহৃত রূপান্তরককে নিম্নধাপী রূপান্তরক (স্টেপ-ডাউন ট্রান্সফরমার) বলা হয়।

গঠন

রূপান্তরকে মূলত দুটি অংশ থাকে:

  1. মুখ্য কুণ্ডলী (প্রাইমারি কয়েল): এই কুণ্ডলীতে পরিবর্তী প্রবাহের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
  2. গৌণ কুণ্ডলী (সেকেন্ডারি কয়েল): এই কুণ্ডলীতে পরিবর্তী প্রবাহের বিদ্যুৎ শক্তি স্থানান্তর হয়।

একটি কাঁচা লোহা বা ফেরাইটের (ferrite) আয়তাকার, বর্গাকার, বৃত্তাকার বা দণ্ডাকৃতির মজ্জার (কোর) দুই বিপরীত বাহুতে অন্তরিত (insulated) তামার তার পেঁচিয়ে রূপান্তরক তৈরি করা হয়। মজ্জার যে বাহুতে পরিবর্তী প্রবাহ বা বিভব প্রয়োগ করা হয় তাকে মুখ্য কুণ্ডলী বলে। আর যে কুণ্ডলীতে পরিবর্তী বিভব আবিষ্ট হয় তাকে গৌণ কুণ্ডলী বলে। উচ্চধাপী রূপান্তরকে মুখ্য কুণ্ডলীর চেয়ে গৌণ কুণ্ডলীর পাক সংখ্যা বেশি থাকে। আর নিম্নধাপী রূপান্তরকে মুখ্য কুণ্ডলীর চেয়ে গৌণ কুণ্ডলীর পাক সংখ্যা কম থাকে।

রূপান্তরকের কর্মদক্ষতা এবং সারা দিনের কর্মদক্ষতা

রূপান্তরকের এর কোন ঘুরন্ত অংশ না থাকায় এর কোনও ঘর্ষণজনিত শক্তিক্ষয় হয় না, তাই এর দক্ষতা অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি - প্রায় ৯০% থেকে ৯৮% পর্যন্ত হয়। তাই কোন নির্দিষ্ট পাওয়ার ফ্যাক্টরে রূপান্তরকের দক্ষতা =(রূপান্তরকটির কেভিএ রেটিং × পাওয়ার ফ্যাক্টর)/(রূপান্তরকেরটির কেভিএ রেটিং × পাওয়ার ফ্যাক্টর + কোর লস + কপার লস)

তারপর প্রাপ্ত মানকে ১০০ দ্বারা গুণ করে শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয়।

সারাদিনের কর্মদক্ষতা = {২৪ ঘণ্টার বহিরাগত শক্তি ÷ (২৪ ঘণ্টার বহিরাগত শক্তি + ২৪ ঘণ্টার মজ্জা ক্ষয় + কপারক্ষয়)} × ১০০

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ