শ্রীবিজয়া এয়ার
শ্রীবিজয়া এয়ার হলো একটি ইন্দোনেশীয় বিমান পরিবহন সংস্থা যার সদর দপ্তর এবং ঘাঁটি বানটেনের তাঙ্গেরাং-এর সোকারনো-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত।[৩]
| |||||||
প্রতিষ্ঠাকাল | ২০০৩ | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
কার্যক্রম শুরু | ১০ নভেম্বর ২০০৩ | ||||||
হাব | সোকারনো-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | ||||||
অধীনস্ত কোম্পানি | নাম এয়ার | ||||||
বিমানবহরের আকার | ১৮[১] | ||||||
গন্তব্য | ১৫[২] | ||||||
প্রধান কার্যালয় | তাঙ্গেরাং, ইন্দোনেশিয়া | ||||||
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি | চন্দ্র লাই (প্রধান কমিশনার) | ||||||
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
২০০৩ সালে চন্দ্র লি, হেনড্রি লি, অ্যান্ডি হালিম, এবং ফ্যান্ডি লিঙ্গগা শ্রীবিজয়া এয়ার প্রতিষ্ঠা করেন। ফ্যান্ডি লিঙ্গগা ঐতিহাসিক শ্রীবিজয়া সাম্রাজ্যের নামে এটির নামকরণ করেন। একই বছর, ২৮ এপ্রিল এটি ব্যবসায়িক লাইসেন্স লাভ করে, যখন এওসি (এয়ার অপারেটরসার্টিফিকেট) ঐ বছরের শেষের দিকে ২৮ অক্টোবর ইস্যু করা হয়। ১০ নভেম্বর ২০০৩ তারিখে বিমান সংস্থাটি প্রাথমিকভাবে জাকার্তা-পন্টিয়ানাক এবং জাকার্তা-পালেমবাং-এর মতো নতুন রুটে ফ্লাইট চালু করার আগে প্রাথমিকভাবে জাকার্তা এবং পাংকাল পিনাং-এর মধ্যে ফ্লাইট চালু করে। প্রথম বছরে, শ্রীজয়া এয়ারের ব্যাপ্তি দ্রুত বৃদ্ধি পায়, এবং জুন ২০০৯ এ শ্রীজয়া এয়ার ২৩ বিমান, ৩৩ অভ্যন্তরীণ এবং ২ আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে।
২০০৭ সালে, শ্রীবিজয়া এয়ার কয়েক মাস ধরে পরিচালিত পরিদর্শন পাস করার পর বিমানের নিরাপত্তা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বোয়িং আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। একই বছর শ্রীজয়া এয়ার পারতামিনা থেকে এভিয়েশন কাস্টমার পার্টনারশিপ পুরস্কার লাভ করে। ২০০৮ সালে, শ্রীজয়া এয়ার মার্কপ্লাস অ্যান্ড কোম্পানি দ্বারা একটি পুরস্কার প্রদান করা হয়।
২০১১ সালে প্যারিস এয়ার শোতে, শ্রীবিজয়া এয়ার আরো ২০ টি এম্বিয়ার ১৯০ জেট বিমান কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়।[৪]
২০১১ সালে বিমান সংস্থাটি ১২টি ব্যবহৃত বোয়িং ৭৩৭-৫০০ এর ইজারা দেওয়া শুরু করে যার মোট মূল্য ৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।[৫]
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিটিলিংকের মাধ্যমে গেরুয়া ইন্দোনেশিয়া একটি সহযোগিতা চুক্তির (কেএসও) মাধ্যমে শ্রীজয়া এয়ারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব গ্রহণ করে।[৬][৭]
সহায়ক সংস্থা
শ্রীবিজয়া এয়ারের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রীবিজয়া এয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পিতা লো কুই নামের সম্মানে এনএএম কে একটি সাধারণ অ্যাক্রোনিম হিসেবে ব্যবহার করে।
- ন্যাম এয়ার- শ্রীবিজয় এয়ারের ফিডার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে প্রথম ফ্লাইট।
- ন্যাশনাল এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট - পাংকাল পিনাং ভিত্তিক একটি ফ্লাইট স্কুল, যা ন্যাম ফ্লাইং স্কুল নামেও পরিচিত।
- ন্যাশনাল এয়ারক্রু ম্যানেজমেন্ট- শ্রীবিজয়া এয়ারের সদর দপ্তরের পাশে জাকার্তাভিত্তিক কেবিন ক্রু ট্রেনিং সেন্টার। এছাড়াও ন্যাম ট্রেনিং সেন্টার নামেপরিচিত।
- জাতীয় বিমান রক্ষণাবেক্ষণ- শ্রীজয়া এয়ার এবং ন্যাম এয়ার জন্য সামান্য রক্ষণাবেক্ষণ করা। প্রধান রক্ষণাবেক্ষণ জিএমএফ এরোএশিয়া এবং আইরোড এসডিএন বিএইচডি দ্বারা সঞ্চালিত হয়।
- নেগেরি আকসারা মন্দিরি- শ্রীবিজয়া এয়ার এবং ন্যাম এয়ারের জন্য ইনফ্লাইট ম্যাগাজিন প্রযোজনা, যা "শ্রীবিজয়া ইনফ্লাইট ম্যাগাজিন" নামে পরিচিত।
- পিটি নিভ আপলিকাশী মন্দিরি- শ্রীবিজয়া গ্রুপের জন্য নতুন আইটি অস্ত্র।
গন্তব্য
দেশ | শহর | এয়াপোর্ট | নোট | তথ্যসূত্র |
---|---|---|---|---|
ইন্দোনেশিয়া | অ্যাম্বন | পট্টিমুরা বিমানবন্দর | ||
বালি, ইন্দোনেশিয়া | নাগুরাহ রাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
বাতাম | হ্যাং নাদিম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
বান্দর লাম্পং | রাদিন ইনটেন ২ বিমানবন্দর | |||
বালিকপাপন | সুলতান আজি মুহাম্মদ সুলাইমান বিমানবন্দর | |||
বাঞ্জারমাসিন | শ্যামসুদিন নূর বিমানবন্দর | |||
বায়াক | ফ্রান্স কাইসিপো বিমানবন্দর | |||
বেংকুলু | ফাতেমাবতী সোয়েকারনো বিমানবন্দর | |||
ডেকাই | নোপ গোলিয়াথ ডেকাই বিমানবন্দর | |||
গোরালো | জালালউদ্দিন বিমানবন্দর | |||
জাকার্তা | সোয়েকারনো-হাট্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
জাম্বি | সুলতান থাহা বিমানবন্দর | |||
জয়পুরা | সেনানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
কেন্ডারি | হালুলিও বিমানবন্দর | |||
কুপাং | এল তারি বিমানবন্দর | |||
লুউক | সুকুরান আমিনুদ্দিন আমির বিমানবন্দর | |||
মাকাসার | সুলতান হাসানউদ্দিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
মানাদো | স্যাম রাতুলাঙ্গি বিমানবন্দর | |||
মানকওয়ারি | রেনদানি বিমানবন্দর | |||
মালাং | আব্দুল রাচমান সালেহ বিমানবন্দর | |||
মেডান | কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
পোলোনিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | বন্ধ বিমানবন্দর | |||
মেরাউক | মোপাহ বিমানবন্দর | |||
পাডাং | মিনাংকাবাউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
পালু | মুতিয়ারা বিমানবন্দর | |||
পন্টিয়ানাক | সপাদিও বিমানবন্দর | |||
পালেমব্যাং | সুলতান মাহমুদ বদরুদ্দিন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
পাংকাল পিনং | দেপতি আমির বিমানবন্দর | |||
পেকানবারু | সুলতান সরিফ কাসিম ২ বিমানবন্দর | |||
সুরাকার্তা | আদিসুমারমো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
সেমারাং | আচমাদ ইয়ানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
সুরাবায়া | জুয়ান্ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
সোরং | ডমিনিক এডওয়ার্ড ওসোক বিমানবন্দর | |||
সাম্পিট | সাম্পিত বিমানবন্দর | |||
কেপ পান্ডান | এইচ.এ.এস. হানান্দজোদিন বিমানবন্দর | |||
তানজং পিনাং | রাজা হাজী ফিসাবিল্লাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
তারাকান | জুওয়াতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | |||
টেরনেট | সুলতান বাবলুল্লাহ বিমানবন্দর | |||
তিমিকা | মোজেস কিলাঙ্গিন বিমানবন্দর | |||
যোগাকার্তা | আদিসুসিতো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | পর্যবসিত | [৮] | |
যোগাকার্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | [৮] | |||
পূর্ব তিমুর | দিলি | রাষ্ট্রপতি নিকোলাউ লোবাটো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর |
বহর
জানুয়ারী ২০২১ এর হিসাবে, শ্রীবিজয়া এয়ার বহর নিম্নলিখিত বিমানগুলো নিয়ে গঠিত:[২]
বিমান | বহরে রয়েছে | অর্ডারে রয়েছে | যাত্রী | মন্তব্য | |||
---|---|---|---|---|---|---|---|
গ | ওয়াই | মোট | |||||
বোয়িং ৭৩৭-৫০০ | ৬[১] | ২০১৪; | ৮ | ১১২ | ১২০ | একটি ফ্লাইট ১৮২ হিসাবে ক্র্যাশ করেছে | |
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ | ১১ | ২০১৪; | ২০১৪; | ১৮৯ | ১৮৯ | ||
বোয়িং ৭৩৭-৯০০ইআর | ২ | ২০১৪; | ২০১৪; | ২২০ | ২২০ | ||
মোট | ১৮ |
সাবেক বহর
বিমান | মোট | বহরে যোগ | অবসর | মন্তব্য |
---|---|---|---|---|
বোয়িং ৭৩৭-২০০ | ১৬[১] | ২০০৩ | ২০১৩ | |
বোয়িং ৭৩৭-৩০০ | ১৩[১] | ২০০৭ | ২০১৯ | |
বোয়িং ৭৩৭-৪০০ | ৭[১] | ২০০৮ | ২০১৬ |
দুর্ঘটনা
- ২০০৮ সালের ২৭ আগস্ট একটি শ্রীবিজয়া এয়ার বোয়িং ৭৩৭-২০০ (পিকে-সিজেজি, সি/এন ২৩৩২০) ফ্লাইট শ্রীবিজয়া এয়ার ফ্লাইট ৬২ জাম্বির সুলতান থাহা বিমানবন্দরের রানওয়ে অতিক্রম করে। সেখানে ২৬ জন আহত এবং একজন মারা যায়। মৃত ব্যক্তি একজন কৃষক যিনি তার পরিবারের সাথে বৃষ্টি থেকে আশ্রয় নেওয়া একটি কুঁড়েঘরে ছিলেন যখন এটি বিমানের ধাক্কায় আক্রান্ত হয়।[৯][১০]
- ২০ ডিসেম্বর, ২০১১ তারিখে শ্রীবিজয়া এয়ার ফ্লাইট ২৩০-এ একটি বোয়িং ৭৩৭-৩০০ (পিকে-কেএম, সি/এন ২৮৩) চূড়ান্ত ল্যান্ডিং এর সময় উইন্ডশেয়ারের মুখোমুখি হয় এবং যোগাকার্তার আদিসুতজিপ্তো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। বিমানটি নিচে নামতে সক্ষম হয়, কিন্তু সময়মত থামতে পারেনি। বিমানটি রানওয়ে প্রান্ত থেকে ২৫ মিটার অতিক্রম করে থেমে যায়। ডানের প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার এবং নোজ গিয়ার ধসে পড়ে, যার ফলে ডান ইঞ্জিন এবং ডানা উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে কোন প্রাণহানি হয়নি এবং দুইজন যাত্রী বিমানটি খালি করার সময় সামান্য আহত হয়েছিলেন। বিমানটি বন্ধ ছিল।[১১]
- ১ জুন, ২০১২ তারিখে একটি বোয়িং ৭৩৭-৪০০ (পিকে-সিজেভি, সি/এন ২৪৬৮৯) জাকার্তা থেকে পন্টিয়ানাক যাওয়ার সময় রানওয়ে ১৫ রানওয়ে থেকে নেমে যায়। ভেজা রানওয়েতে অ্যাকুয়াপ্ল্যান করার পর বিমানটি তার পেটের দিকে নরম মাটিতে টারম্যাকের বাম দিকে থামতে (নাকের গিয়ার ভেঙ্গে পড়ে এবং প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার নরম মাটিতে ডুবে যায়) এবং বিমানের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়। কেও আহত হয়নি, বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২ জুন ভারী ক্রেন ব্যবহার করে বিমান রানওয়ে থেকে অপসারণ করা হয় এবং বিমানবন্দর স্বাভাবিক ট্রাফিকের জন্য পুনরায় খোলা হয়।[১২]
- ১৩ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে উত্তর সুমাত্রার মেদান থেকে পশ্চিম সুমাত্রার পাডাং-এর মিনাংকাবাউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত শ্রীবিজায়ার একটি ফ্লাইট দুর্ঘটনাবশত ৭ মাইল (১২ কিলোমিটার) দূরে তাবিং এয়ার ফোর্স বেসে অবতরণ করে। ৯৬ জন যাত্রী এবং ৪ জন ক্রু র কেউই আহত হননি। পাইলট এবং কো-পাইলটকে সাসপেন্ড করা হয় এবং পরবর্তীতে এনটিএসসি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।[১৩][১৪]
- ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি জাকার্তা সোকার্নো-হাত্তা বিমানবন্দর থেকে টেক অফ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই শ্রীউইজয়া এয়ার ফ্লাইট ১৮২ নামে পরিচালিত একটি বোয়িং ৭৩৭-৫০০ (পিকে-সিএলসি) লাকি দ্বীপের কাছে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি পন্টিয়ানাক সুপাদিও বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়, যেখানে ৬২ জন যাত্রী (৫০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য) ছিলেন। ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি। কেউ বেঁচে না থাকায়, ফ্লাইট ১৮২ এখন পর্যন্ত বিমান সংস্থার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা হবে। অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করার জন্য ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।[১৫]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে শ্রীবিজয়া এয়ার সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।