সিপাহী

ভারতীয় সৈন্যকে প্রদত্ত পদ

সিপাহী (/ˈspɔɪ/) ছিল পূর্বে মুঘল বাহিনীতে ভারতীয় পদাতিক গাদাবন্দুকধারী সৈন্যদের উপাধি। আধুনিক নেপালী সেনাবাহিনী, ভারতীয় সেনাবাহিনী, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তে এখনও বেসরকারী সৈনিকের পদমর্যাদার জন্য এই উপাধি ব্যবহৃত হয়।[১]

সিপাহী
সিপাহী হিসাবে হায়দার আলী সিপাহী হিসাবে
দেশমুঘল সাম্রাজ্য
ব্রিটিশ ভারত
ভারত
পাকিস্তান
শাখাপদাতিক ও কামান বাহিনী
সরঞ্জামাদিরাইফেল

আঠারো শতকে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং তাদের অন্যান্য ইউরোপীয় সহযোগীরা ভারতের অভ্যন্তরে স্থানীয়ভাবে পদাতিক সৈন্যদের নিযুক্ত করেছিল, তাদের বলা হত "সিপাহী"। এই ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে বৃহত্তম অংশই ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত, এবং তারা ইউরোপীয় সামরিক ধরনে প্রশিক্ষিত হয়েছিল।[২]

ব্যুৎপত্তি

সিপাহী শব্দটি ফার্সি শব্দ sepāhī থেকে এসেছে, মুঘল সাম্রাজ্যে এর অর্থ ছিল "পদাতিক সৈনিক"। উসমানীয় সাম্রাজ্যে সিপাহী শব্দটি অশ্বারোহী সৈন্যদের উল্লেখ করার জন্য ব্যবহৃত হত।[৩] এর সর্বাধিক প্রচলিত ব্যবহার ছিল ব্রিটিশ ভারতীয় সেনা বাহিনীতে। এর আগে ব্রিটিশদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে, একজন বেসরকারী পদাতিককে সিপাহী বলা হত (অশ্বারোহী সৈন্য ছিল সওয়ার)।

ঐতিহাসিক ব্যবহার

সিপাহী শব্দটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাহিনীতে ব্যবহৃত হয়েছিল, যেখানে এটি স্থানীয় সৈনিকদের বিভিন্ন বিভাগের জন্য ব্যবহৃত হত, যেমন, পিওন, জেন্টু, মেস্তি এবং টোপাসী। প্রাথমিকভাবে এটি নিয়মিত উর্দি বা বাহিনী ছাড়া যে হিন্দু বা মুসলিম সৈন্যরা ছিল তাদের বলা হত। পরবর্তীকালে ভারতে ইউরোপীয় শক্তিগুলির পরিষেবায় নিযুক্ত, শ্রেণি নির্বিশেষে সমস্ত স্থানীয় সৈন্যদের সিপাহী বলা হত।[৩] ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ৩,০০,০০০ লোকের সেনাবাহিনীর প্রায় ছিয়ানব্বই শতাংশই ছিল মূলত ভারতে বাসিন্দা এবং এই সিপাহীরা কোম্পানির হয়ে উপমহাদেশের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।[৪]

মুঘল সাম্রাজ্যে, ১৭ - ১৮ শতকে মাইসোর রাজত্বে এবং আর্কট রাজ্যে সিপাহী

মির্জা নাজাফ খানের অধীন একজন মুঘল সিপাহী।
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব তার চূড়ান্ত অভিযান পরিচালনা করেন (১৭০৫), (সিপাহী বাহিনীটি নিচের ডানদিকে দৃশ্যমান)।

মুঘল সাম্রাজ্যে এবং মহীশূর রাজ্যে দুই জায়গাতেই সিপাহী বা সিপাইরা পদাতিক হিসেবে লড়াই করত। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব (১৬৫৮–১৭০৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন) পদাতিক সৈন্যবাহিনী হিসেবে সিপাহীদের গাদাবন্দুক, রকেটগ্রেনেড দিয়ে সজ্জিত করেছিলেন। এই সৈন্যরা সফলভাবে অবরোধের যুদ্ধবিগ্রহে নিযুক্ত হয়েছিল, বিশেষত বিদার অবরোধ, বিজাপুর অবরোধ এবং গোলকোন্ডা অবরোধে তারা কাজ করেছিল।

পরবর্তীকালে কর্ণাটকের নবাবেরা সিপাহী পদাতিক বাহিনীকে রেখে দেয়, যারা কর্ণাটক যুদ্ধে পরিষেবা দিয়েছিল।

ব্রিটিশের কাজে সিপাহীরা

ভারতীয় পদাতিক বাহিনীর সিপাহী, ১৯০০ সালের দিকে

ইস্ট ইন্ডিয়া সংস্থা প্রথমদিকে মাদ্রাজ এবং বোম্বে প্রেসিডেন্সিগুলির স্থানীয় সম্প্রদায় থেকে সিপাহীদের নিয়োগ করেছিল। নিয়োগের সময় জোর দেওয়া হত লম্বা এবং সৈনিকসুলভ চেহারার পক্ষে, বলা হত "সঠিক বর্ণের এবং যথেষ্ট দৈর্ঘ্যের"।[৫] বেঙ্গল আর্মিতে অবশ্য, নিয়োগ কেবল উচ্চ বর্ণের ব্রাহ্মণ এবং রাজপুত সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে হত, এরা ছিল প্রধানত বর্তমান উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার অঞ্চলের। স্থানীয়ভাবে, প্রায়শই, একই সম্প্রদায়, গ্রাম এবং এমনকি পরিবার থেকে স্থলবাহিনী বা সৈন্যদল দ্বারা নিয়োগ করা হত। একটি বাহিনীর অধিনায়ক পদাধিকারী, গ্রামের প্রধান বা গাওঁ বুরা হয়ে যেত। সে তখন "পল্টন" (" প্লাটুন "থেকে)-এর সিপাহীদের মাই-বাপ বা বাবা এবং মা হয়ে যেত। সেনাবাহিনীর মধ্যে অনেক পরিবার ও সম্প্রদায়ের সম্পর্ক ছিল এবং এমন অনেক উদাহরণ যেখানে পরিবারের সদস্যরা একই বাহিনীর তালিকাভুক্ত হত। বাহিনীর ইজ্জত ("সম্মান") প্রকাশ পেত বাহিনী রঙ দিয়ে; নতুন সিপাহী তাদের সামনে শপথ করে তালিকাভুক্ত হত। এই রংগুলি কোয়ার্টার প্রহরীদের সম্মানে সংরক্ষণ করা হয়েছিল এবং প্রায়শই সকলের সামনে প্রদর্শন করা হত। তারা যুদ্ধে একটি মিলনস্থল গঠন করত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে সিপাহীরা আনুগত্যের শপথ প্রদান করত এবং এর সঙ্গে, যে নুন তারা খেয়েছে, তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করত।[৩]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ