সুলুর সালতানাত

সুলুর সালতানাত (Tausūg: Kasultanan sin Sūg, Jawi: کسلطانن سولو دار الإسلام, Malay: Kesultanan Sulu, Arabic: سلطنة سولك‎) ছিল একটি মুসলিম রাজ্য যেটি মিন্দানাওয়ের সুলু দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলিকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল। আজকের ফিলিপাইন, পালোয়ানের কিছু অংশ এবং উত্তর-পূর্ব বোর্নিও (বর্তমানে যা সাবাহ এবং উত্তর কালিমান্তানের নির্দিষ্ট অংশ হিসেবে পরিচিত) নিয়েই এই রাজ্য বিস্তৃত ছিল।

সুলুর সালতানাত

کسلطانن سولو دار الإسلام (Jawi)
كاسولتانن سين سوڬ (Old Tausūg)
Kasultanan sin Sūg
  • ১৪০৫–১৯১৫
Sulu জাতীয় পতাকা
পতাকা (উনবিংশ শতাব্দী)
আধুনিক রাষ্ট্রের সীমানা সহ ১৮২২ সালে সুলু সালতানাতের ব্যাপ্তি দেখানো মানচিত্র
আধুনিক রাষ্ট্রের সীমানা সহ ১৮২২ সালে সুলু সালতানাতের ব্যাপ্তি দেখানো মানচিত্র
অবস্থাব্রুনিয়ান সাম্রাজ্য (১৪০৫–১৫৭৮)
উপশাখা মিং রাজবংশের (1417–1424)
সার্বভৌম রাষ্ট্র (১৫৭৮–১৭২৬, ১৭৩৩–১৮৫১)
উপশাখা চিং রাজবংশের (১৭২৬–১৭৩৩)
আশ্রিত রাজ্য স্পেন এর (১৮৫১–১৮৯৮)
আশ্রিত রাজ্য যুক্তরাষ্ট্র-এর (১৯০৩–১৯১৫)
রাজধানী
  • বুয়ানসা (১৪০৫–১৮৭৮)
  • মাইমবুং (১৮৭৮–১৮৯৩)[১]
  • পালাওয়ান (১৮৯৩–১৯১৫)[২]
প্রচলিত ভাষাতৌসুগ, আরবি, বাজাউ, ভিসায়ান, বাঙ্গুইংগুই, মালয়
ধর্ম
সুন্নী ইসলাম
সরকাররাজতন্ত্র
সুলতান 
• ১৪০৫–১৪৮০
শরীফ উল হাশিম (প্রথম)
• ১৪৮০–১৫০৫
কামাল উদ্দীন (দ্বিতীয়)
• ১৫৯৬–১৬০৮
বাতরাহ শাহ টেঙ্গাহ (অষ্টম)
• ১৬১০–১৬৫০
মুওয়াল্লিল ওয়াসিত (নবম)
• ১৭৩৫–১৭৪৮; 1১৭৬৪–১৭৭৪
১ম আজিম উদ্দীন (তেরতম)
• ১৭৬৩–১৭৬৪; ১৭৭৮–১৭৯১
২য় আজিম উদ্দীন (একুশতম)
• ১৮২৩–১৮৪৪
১ম জামালুল কিরাম
• ১৮৯৪–১৯১৫
২য় জামালুল কিরাম
ইতিহাস 
• আরোহন সুলতান শরীফ উল হাশিম এর
১৭ নভেম্বর ১৪০৫
• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িক ক্ষমতার অবসান
১৯১৫
মুদ্রাকোন মুদ্রা ব্যবস্থা ছিলনা (বিনিময়প্রথা প্রচলিত ছিল) এবং পরবর্তীতে সুলু কয়েন ব্যবস্থা চালু করা হয়[৩]
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
প্রাচীন বারংয়ে
লুপাহ সুগ
ব্রুনিয়ান সাম্রাজ্য
স্প্যানিশ ইস্ট ইন্ডিজ
ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জের ইনসুলার সরকার
জাম্বোয়াঙ্গা প্রজাতন্ত্র
উত্তর বোর্নিও
বুলুনগানের সালতানাত
ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ
বর্তমানে যার অংশ

সালতানাতটি ১৪০৫ সালের ১৭ নভেম্বরে[৪] জোহোরে জন্মগ্রহণকারী একজন অভিযাত্রী এবং ধর্মীয় পণ্ডিত শরীফ উল-হাশিম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাদুকা মহাসারী মাওলানা আল সুলতান শরীফ উল-হাশিম ছিল তাঁর পুরো নাম, শরীফ-উল হাশিম তাঁর সংক্ষিপ্ত নাম। তিনি সুলুর বুয়ানসায় বসতি স্থাপন করেন এবং আবু বকর এবং স্থানীয় দায়াং-দায়াং (রাজকুমারী) পারমিসুলির বিবাহের পর, তিনি সালতানাতটি প্রতিষ্ঠা করেন। সালতানাতটি ১৫৭৮ সালে ব্রুনিয়ান সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।এই সালতানাতের স্বর্ণযুগে, এটি পূর্ব দিক থেকে মিন্দানাও এর জাম্বোয়াঙ্গার পশ্চিম উপদ্বীপের সীমানাযুক্ত দ্বীপগুলি পর্যন্ত এবং উত্তরে পালাওয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।এটি বোর্নিওর উত্তর-পূর্বে মারুডু উপসাগর থেকে টেপিয়ান ডুরিয়ান (বর্তমান কালীমান্তান, ইন্দোনেশিয়া) পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলগুলিকে অর্ন্তভুক্ত করেছিল। আরেকটি সূত্র মতে, এই সালতানাতটি কিমানিস উপসাগর থেকে প্রসারিত ছিল, যা ব্রুনিয়ান সালতানাতের সীমানার সাথে সমানভাবে মিশে গিয়েছিল। স্প্যানিশ, ব্রিটিশ, ডাচ, ফরাসি, জার্মানদের মতো পশ্চিমা শক্তির আগমনের পরে, সামুদ্রিক এই সাম্রাজ্যের সুলতান এবং সার্বভৌম রাজনৈতিক শক্তিগুলি ১৯১৫ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি চুক্তির স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই বিশাল সালতানাত কার্যত ভেঙে যায়।

ইতিহাস

১৫৭৮ সালে নিজস্ব স্বাধীনতা লাভের আগে সুলু সালতানাতের বর্তমান এলাকাটি একসময় ব্রুনিয়ান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এই সময়ে সুলুকে লুপাহ সুগ বলা হত। কিছু চাম যারা সুলুতে স্থানান্তরিত হয়েছিল তাদেরকে বলা হয় ওরাং দাম্পুয়ান। চম্পা সভ্যতা এবং সুলুর বন্দর-রাজ্য একে অপরের সাথে বাণিজ্যে নিযুক্ত ছিল যার ফলে চাম বণিকেরা সুলুতে বসতি স্থাপন করে যেখানে তারা ১০-১৩ শতক থেকে ওরাং দাম্পুয়ান নামে পরিচিত ছিল। তাদের বিপুল সম্পদে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় সুলু বুরানুনরা সমস্ত ওরাং দাম্পুয়ানের নির্মমভাবে হত্যা করে। এখানে উল্লেখ্য যে, ওরাং দাম্পুয়ানদের থেকে সুলু সালতানাত তার ভারতীয় সভ্যতা লাভ করেছিল।

ইসলামীকরণ এবং প্রতিষ্ঠা

১৪ শতকের শেষের দিকে, মক্কা থেকে করিম উল-মাখদুম নামে একজন স্বনামধন্য আরব বিচারক এবং ধর্মীয় পণ্ডিত মালাক্কা সালতানাতে আসেন। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ইসলাম প্রচার করা শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে মালাক্কার শাসক সহ অনেক নাগরিক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে চীনা মুসলমান, আরব, পারস্য, মালয় এবং ভারতীয় মুসলমানরা সুলু এবং অন্যান্য সালতানাতে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তন করান। চীনা মুসলিম বণিকরা স্থানীয় বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করা শুরু করে এবং মিং রাজবংশের সময় (১৩৬৮-১৬৪৪) সুলু সালতানাতের সাথে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল। সুলু নেতা পাদুকা পাহালা এবং তার ছেলেরা চীনে ভ্রমনে যান, যেখানে তিনি মারা যান এবং চীনা মুসলমানরা তার ছেলেদের ডেঝৌ নামক স্থানে লালন-পালন করেন। সেখানে তাদের বংশধররা বসবাস করা শুরু করে এবং তাদের উপাধি হয় আন এবং ওয়েন্।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ