হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা
হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা যার পূর্ণ নাম হামাদ বিন ঈসা বিন সালমান আল খলিফা (Arabic: حمد بن عيسى بن سلمان آل خليفة Ḥamad bin ʿĪsā bin Salmān ʾĀl Ḫalīfah; জন্ম: জানুয়ারী ২৪, ১৯৫০খৃঃ) হলেন ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০০২ খৃঃ হতে নিযুক্ত বাহরাইনের প্রথম বাদশাহ। তার পূর্বে মার্চ ৬, ১৯৯৯ খৃঃ হতে ক্ষমতায় ছিলেন বাহরাইনের দ্বিতীয় আমির।[১] তিনি সেখানকার প্রথম আমির ঈসা বিন সালমান আল খলিফার পুত্র। দেশটিতে ১৭৮৩ সাল হতে আল খলিফা রাজ পরিবারের শাসন প্রচলিত রয়েছে।
হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা حمد بن عيسى آل خليفة | |
---|---|
বাহরাইনের বাদশাহ | |
রাজত্ব | মার্চ ৬, ১৯৯৯ - বর্তমান |
রাজ্যাভিষেক | ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০০২ |
পূর্বসূরি | ঈসা বিন সালমান আল খলিফা |
আপাত উত্তরাধিকারী | সালমান বিন হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা |
বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী | খলিফা বিন সালমান আল খলিফা |
জন্ম | রিফা, বাহরাইন | ২৮ জানুয়ারি ১৯৫০
দাম্পত্য সঙ্গী | সাবিকা বিনতে ইব্রাহীম (১৯৬৮–বর্তমান) শাইয়্যা বিনতে হাসান আল খেরিয়াস আল আজমী 2 others |
বংশধর বিস্তারিত | সালমান বিন হামাদ আল খলিফা আব্দুল্লাহ বিন হামাদ আল খলিফা খলিফা বিন হামাদ আল খলিফা নাজলা বিনতে হামাদ আল খলিফা নাছের বিন হামাদ আল খলিফা খালেদ বিন হামাদ আল খলিফা ফসাল বিন হামাদ আল খলিফা সোলতান বিন হামাদ আল খলিফা হ্যাসা বিনতে হামাদ আল খলিফা নূরা বিনতে হামাদ আল খলিফা মুনিরা বিনতে হামাদ আল খলিফা রীমা বিনতে হামাদ আল খলিফা |
রাজবংশ | খলিফা পরিবার |
পিতা | ঈসা বিন সালমান আল খলিফা |
মাতা | হ্যাসা বিনতে সালমান আল খলিফা |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা বাহরাইনের রিফা অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন জানুয়ারি ২৮, ১৯৫০ সালে।[২] তার পিতার ছিলেন যুবরাজ ঈসা বিন সালমান আল খলিফা এবং মা হ্যাসা বিনতে সালমান আল খলিফা।[৩] বাহরাইনের মানামা সেকেন্ডারী স্কুল শেষে হামাদকে পাঠানো হয়ে ইংল্যান্ডের গোডাল্মিং এর এ্যাপ্লিগার্থ্ কলেজে অবশ্য ইতঃপূর্বে তিনি কেম্ব্রিজের সারেই অঞ্চলের দ্যা লীস স্কুলেও ভর্তি হন । তারপর হামাদ হ্যাম্পশায়ারের এ্যাল্ডারশট অঞ্চলে ব্রিটিশ আর্মির সাথে মনস আফিসার ক্যাডেট স্কুলে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৮ সালে স্নাতক পাশ করেন।[২] চার বছর পর ১৯৭২ সালে ক্যানসারের ফোর্ট লেভেনওয়র্থে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের আর্মি কমান্ডেন্ট এন্ড জেনারেল ষ্টাফ কলেজ হতে ডিগ্রী ইন লিডারশিপ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন ।[৪][৫]
যুবরাজ
১৯৬৪ সালের ২৭ জুন তারিখে হামাদ তার পিতাকর্তৃক রাজ্যের উত্তরাধিকারী নুযুক্ত হন। তিনি সেচ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং মানামা মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন ১৯৬৮ সালে । তিনি বাহরাইন ন্যাশনাল গার্ড এর কমিশন লাভ করেন ১৯৬৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছর ঐ বাহিনীর কমান্ডার নিযুক্ত হন। ১৯৬৯ সালে বাহরাইনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। হামাদ ১৯৭০ সালে বাহরাইনের প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রধান এবং এ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্তি লাভ করে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দায়িত্বদ্বয়ে বহাল থাকনে। অতপর ১৯৭১ হতে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি বাহরাইনের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বভার নির্বাহ করেন। [৫] ১৯৭৮ সালে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করার পর হামাদ হেলিকপ্টার উড়াতে আরম্ভ করেন ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাস হতে । এরপর তিনি বাহরাইন আমিরী এয়ার ফোর্স গঠনে মনোনিবেশ করেন [৪][৫] যা ১৯৮৭ সালে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করলে ডিফেন্স ফোর্স এয়ার উইংকে পরিবর্ধিত কলেবরে এয়ার ফোর্সে রুপান্তর করা হয়।
সার্বভৌম কর্তৃত্ব
পিতা ঈসা বিন সালমান আল খলিফার মৃত্যুর পরে ১৯৯৯[১] সালের ৬ ই মার্চ হামাদ বাহরাইনের আমির নিযুক্ত হন। আমির হিসাবে হামাদ বাহরাইনে বহু রাজনৈতিক পরিবর্তন সাধন করেন । এর মধ্যে রয়েছে সকল রাজবন্ধিদের মুক্তি প্রদান, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আদালত বিলুপ্তি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিয়ক ১৯৭৪ সালে জারী করা নির্বাহী আদেশ বাতিল করা। এর পাশাপাশি তিনি বহু রাজ্যবিতাড়িত বাহরাইনি নাগরীককে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দেন।[৬] তিনি নিজেকে ২০০২ সালে বাদশাহ ঘোষণা করেন। তার বাস্তবায়ন করা ব্যাপক নির্বাহীকর্তৃত্ত্বের মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ প্রদান, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বদান, উচ্চ বিচারিক আদালতের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন, এবং নির্বাচিত নিম্ন কক্ষের সদস্যদের উপর উচ্চ কক্ষের সংসদ সদস্যগের নিয়োগদান।[৭]
সংসার জীবন
হামাদের চারজন স্ত্রীর সংসারে রয়েছে সাত ছেলে ও পাঁচ মেয়ে[৫] সহ মোট বারজন সন্তান:
- প্রথম স্ত্রী তার চাচাত বোন সাবিকা বিনতে ইব্রাহীম আল খলিফার (বিবাহ- অক্টোবর ১৯৬৮) সংসারে রয়েছে তিন ছেলে ও এক মেয়ে।
- দ্বিতীয় স্ত্রী কয়েতের শ্যায়ইয়া বিনতে হসান আল খারাইস আল আজমীর সংসারে রয়েছে দুই ছেলে।
- তৃতীয় স্ত্রী শেখ ফয়সাল বিন মোহাম্মদ বিন সুরায়্যিম আল ম্যারীর কন্যার সংসারে রয়েছে এক ছেলে ও দুই মেয়ে।
- চতুর্থ স্ত্রী জাবর আল নীমির কন্যার সংসারে রয়েছে এক ছেলে ও দুই মেয়ে।