হেবার প্রণালী

হেবার বস একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শিল্পক্ষেত্রে হাইড্রোজেন এর সাথে নাইট্রোজেনের বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া উৎপাদন করা হয়। শিল্পক্ষেত্রে অ্যামোনিয়া উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত প্রধান পদ্ধতি। এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে নাইট্রোজেন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কার্বনঅক্সিজেনও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কিন্তু এগুলো উদ্ভিদ মাটি ও বায়ু থেকে সহজেই পায়। যদিও বায়ুর ৭৮% নাইট্রোজেন, তথাপি বায়ু থেকে উদ্ভিদ নাইট্রোজেন গ্রহণ করতে পারে না। এর অন্যতম কারণ নাইট্রোজেনের অণু শক্তিশালী ত্রিবন্ধনে আবদ্ধ থাকে। তাই নাইট্রোজেনকে এমনভাবে থাকতে হবে যাতে উদ্ভিদ তা গ্রহণ করতে পারে। বিংশ শতাব্দীতে জার্মান রসায়নবিদ ফ্রিটজ হেবার এই পদ্ধতি আবিষ্কারের আগে এটি সম্ভবপর ছিল না। তিনিই প্রথম বায়ুর বিদ্যমান নাইট্রোজেনকে অ্যামোনিয়া উৎপাদনে ব্যবহার করতে সমর্থ হন, যা উদ্ভিদ সরাসরি গ্রহণ করতে পারে। এই পদ্ধতি আবিষ্কারের আগে শিল্পক্ষেত্রে অ্যামোনিয়া উৎপাদন অত্যন্ত কঠিন ছিল।[১][২][৩][৪]


জার্মান রসায়নবিদ ফ্রিটজ হেবার, ১৯১৮

যদিও বর্তমান সময়ে সার উৎপাদনে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি এই পদ্ধতি ব্যাবহার করে অ্যামোনিয়া উৎপাদন করেছিল যা দিয়ে বিস্ফোরক তৈরি করা হয়েছিল।

ইতিহাস

১৯ শতকে সার উৎপাদনের জন্য অ্যামোনিয়া এবং নাইট্রেট এর চাহিদা ক্রমশ বেড়ে চলেছিল। এগুলোর প্রধান উৎস ছিল খনিজ নাইটার এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপপুঞ্জের গুয়ানো। বিশ শতকের শুরুতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয় যে এসব উৎস হতে পাওয়া অ্যামোনিয়া এবং নাইট্রেট ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে না এবং অ্যামোনিয়ার নতুন উৎস খোঁজা অপরিহার্য ছিল। যদিও বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন পর্যাপ্ত রয়েছে, বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৮০ ভাগ, এটি খুবই স্থিতিশীল এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না। বাতাসের নাইট্রোজেন কে অ্যামোনিয়াতে পরিণত করা রসায়নবিদদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ছিল।

হেবার তার সহকারী রবার্ট লা রসিগনল কে সাথে নিয়ে গবেষণাগারে প্রদর্শন এর জন্য উচ্চ চাপ সম্পন্ন ডিভাইস এবং অনুঘটক তৈরি করেন। তারা ১৯০৯ সালের গ্রীষ্মে ফোঁটা ফোঁটা অ্যামোনিয়া তৈরি করেন, প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১২৫ মিলি হারে। জার্মানির রাসায়নিক পদার্থের কোম্পানি বিএএসএফ পদ্ধতিটি কিনে নেয় এবং বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের জন্য কার্ল বস কে নিযুক্ত করেন। তিনি ১৯১০ সালে সফল হন। পরবর্তীতে হেবার এবং বস কে আলাদা আলাদা ভাবে নোবেল পুরস্কার ভূষিত করা হয়।

বিএএসএফ এর ফ্যাক্টরিতে অ্যামোনিয়ার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ১৯১৩ সালে যা পরের বছরগুলোতে প্রতিদিন ২০ টন ছাড়িয়ে যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, অ্যামো উৎপাদনের জন্য প্রচুর নাইট্রেট লাগত। মিত্রশক্তির কাছে সোডিয়াম নাইট্রেট এর প্রচুর বন্দোবস্ত ছিল। জার্মানির এমন কোন উৎস ছিল না। তাই জার্মান যুদ্ধকৌশলের ক্ষেত্রে হেবার প্রণালী গুরুত্ব পেয়েছিল। হেবার প্রণালীতে উৎপন্ন অ্যামোনিয়া জার্মানি নাইট্রিক এসিড তৈরিতে ব্যবহার করেছিল যা বিস্ফোরক তৈরিতে কাজে লেগেছিল।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ