জন উইন্সটন ওনো লেনন, এমবিই (৯ অক্টোবর ১৯৪০ – ৮ ডিসেম্বর ১৯৮০), ছিলেন একজন ইংরেজগীতিকার, গায়ক, সুরকার, চিত্রশিল্পী, লেখক এবং শান্তি কর্মী। তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড দ্য বিটলস এর প্রতিষ্ঠাতা। লেনন ও পল ম্যাককার্টনি যৌথভাবে বিটলস ও অন্যান্যদের জন্য গান লিখতেন যা বাণিজ্যিক ভাবেও বেশ সফল ছিল।[১] লেনন ও ম্যাককার্টনি ছিলেন একে অপরের পরিপূরক।[২] তার নিজস্ব ক্যারিয়ারে লেনন Imagine ও Give Peace a Chance এর মত অসংখ্য গানের জন্ম দিয়েছেন।
লেনন ছিলেন বিপ্লবী প্রকৃতি ও অসাধারণ প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন টেলিভিশন, A Hard Day's Night (১৯৬৪) এর মত চলচ্চিত্রে, In His Own Write বইতে, এবং বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সম্মেলনে। তিনি তার জনপ্রিয়তাকে তার শান্তি কর্ম, শিল্প কর্ম ও লেখায় কাজে লাগিয়েছেন।
তার দুই ছেলে, প্রথম স্ত্রী সিনথিয়ার গর্ভে জুলিয়ান ও দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়োকো ওনোর গর্ভে সিন। ১৯৮০ সালের ৮ ডিসেম্বর রেকর্ডিং থেকে ফেরার সময় আততায়ী মার্ক ডেভিড চ্যাপম্যানের হাতে লেনন মারা যান।
২০০২ সালে বিবিসির জরিপে ১০০ শ্রেষ্ঠ ব্রিটনস এর তালিকায় তিনি অষ্টম অবস্থান লাভ করেছেন। ২০০৪ সালে রোলিং স্টোন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পঞ্চাশজন শিল্পীর তালিকায় ("The Immortals: The Fifty Greatest Artists of All Time") লেননকে ৩৮ তম অবস্থানে স্থান দিয়েছে[৩][৪] এবং দ্য বিটলসকে ১ নম্বর অবস্থানে রেখেছে।
প্রাথমিক বছরঃ ১৯৪০-১৯৫৭
জুলিয়া লেনন (নি স্ট্যানলি) ও আলফ্রেড ফ্রেডি লেননের ঘরে জন উইন্সটন লেলন জন্মেছিলেন ১৯৪০ সালের ৯ অক্টোবর লিভারপুলেরলিভারপুল মাতৃসদন হাসপাতালে।[৫] তার জন্ম হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেের সময়, যখন জার্মান বাহিনী বিমান আক্রমণ চালাচ্ছিল।[৬] তার পিতামহ জন জ্যাক লেলন ও উইন্সটন চার্চিলের নামে তার নাম রাখা হয়।[৬] তার পিতা-মাতা উভয়েই ব্যাঞ্জো বাজাতেন ও গান গাইতেন যদিও তাদের কেউ সঙ্গীতকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেননি।[৭]যুদ্ধে ফ্রেডি লেলন ছিলেন একজন মার্চেন্ট সিম্যান এবং তিনি নিয়মিত জুলিয়াকে পে-চেক পাঠাতেন। জুলিয়া এসময় তার সন্তান জনকে নিয়ে লিভারপুলের নিউকাসল রোডে বসবাস করতেন। ফ্রেডি যখন এডব্লিউওএল (AWOL) এ চলে যান তখন চেক পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়।[৮] যেহেতু ফ্রেডি কদাচিৎ লিভারপুলে আসতেন, জুলিয়া নাইট ক্লাবে যেতে শুরু করেন এবং ট্যাফি উইলিয়ামস নামে একজন ওয়েলসীয় সৈনিকের সাথে পরিচিত হন।[৯] ১৯৪৪ সালের শেষের দিকে ট্যাফির মাধ্যমে জুলিয়া গর্ভবতী হন[১০] অবশেষে যখন ফ্রেডি ১৯৪৪ সালে বাড়ি ফেরেন তিনি জুলিয়া, জন ও অনাগত শিশুর দায়িত্ব নিতে চান। তবে জুলিয়া তাতে সম্মতি দেননি।[১১] ১৯৪৫ সালের ১৯ জুন জুলিয়া তার কন্যাসন্তান ভিক্টোরিয়ার জন্ম দেন।[১২] জুলিয়ার পরিবার থেকে প্রবল চাপের পর মেয়েটিকে দত্তক দেয়া হয়। মেয়েটির নাম পরবর্তীকালে পরিবর্তন করে ইনগ্রিড রাখা হয়েছিল।[১১] লেলনকে কখনও তার সৎ-বোনের জন্মের খবর দেয়া হয়নি এবং তিনি কখনো তার অস্তিত্বের কথা জানতেন না।[১৩]
জুলিয়া পরে জন ববি ডাইকিন্সের সাথে পরিচিত হন এবং তার সাথে একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করতে শুরু করেন।[১৪] বিবাহিত জুলিয়ার সাথে ডাইকিন্সের অবৈধ সম্পর্কের[১৫][১৬] কথা শুনে জুলিয়ার বোন মেরি মিমি স্মিথ লিভারপুলের সমাজ সেবা দপ্তরে জুলিয়া ও ডাইকিন্সের সাথে একই বিছানায় জনের রাত্রিবাস সম্পর্কে অভিযোগ করেন। বোনের কাছ থেকে প্রবল চাপের মুখে জুলিয়া জনের দায়িত্ব মিমির হাতে সমর্পণ করেন।[১৬] ডাইকিন্সের সাথে জুলিয়ার দুই মেয়ে জুলিয়া ও জ্যাকি -এর জন্ম হয়।[১৭] ১৯৪৬ সালের জুলাই মাসে ফ্রেডি মিমিকে দেখতে আসেন এবং জনকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমনে ব্ল্যাকপুল যান। তার ইচ্ছা ছিল গোপনে জনকে নিয়ে নিউ জিল্যান্ড যাত্রা করার।[১৮] জুলিয়া ও ডাইকিন্স এ ঘটনা টের পেয়ে তাদের পিছু নেন। পরে অনেক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ফ্রেডি পাঁচ বছরের জনকে জুলিয়া অথবা তার মধ্যে কোন একজনকে বেছে নেয়ার জন্য বলেন। জন দুইবার ফ্রেডিকে নির্বাচন করেন এবং জুলিয়া তখন চলে যেতে শুরু করেন। কিন্তু জন কাঁদতে কাঁদতে তার মা জুলিয়ার পিছু নেন।[১৩] ফ্রেডি এরপরে তার পরিবারের সাথে সব যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেন। ইংল্যান্ডব্যাপী যখন বিটলম্যানিয়া শুরু হয় তখন আবার পিতা-পুত্রের মিলন ঘটে।[১৯]
দ্য কোয়ারিমেন অ্যান্ড দ্য সিলভার বিটলসঃ ১৯৫৭-১৯৬০
১৯৫৭ সালের মার্চ মাসে লেনন দ্য কোয়ারিমেন নামে একটি ব্যান্ড দল গঠন করেন। এসময় তিনি কোয়ারি ব্যাংক গ্রামার স্কুলে পড়তেন।[২০] তাদের প্রথম অনুষ্ঠান ছিল ১৯৫৭ সালের ৯ জুন তারিখে "মি. স্টার মেকার" নামে ক্যারোল লিউইস এর একটি অডিশনে।[২১] কয়েক সপ্তাহ পরে ১৯৫৭ সালের ৬ জুলাই, লেনন ও কোয়ারিমেনের সাথে পল ম্যাককার্টনির দেখা হয় সেন্ট পিটার্স চার্চের উল্টন গার্ডেনে।[২২] ম্যাককার্টনির পিতা পরে দ্য কোয়ারিমেনকে তাদের ২০ ফোর্থলিন রোডের বাসায় অনুশীলন করার অনুমতি দেন।[২৩][২৪] তাদের বন্ধুত্বের প্রথমদিকে লেনন ম্যাককার্টনিকে সিগারেট, মিস্টি বা বই প্রভৃতি দোকান থেকে চুরি করতে অনুপ্রানিত করেছিলেন,[২৫] এবং তারা তাদের ব্যান্ডের সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে নানা কৌতুক করতে মজা পেতেন।[২৬] এই সময়েই মূলত লেনন ও ম্যাককার্টনি একত্রে এবং আলাদাভাবে গান লিখতে শুরু করেন। লেনন আঠারো বছর বয়সে প্রথম গান লেখেন যার শিরোনাম "হ্যালো লিট্ল গার্ল"। এই গানটি পরবর্তীতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৫৮ সালের মার্চে জর্জ হ্যারিসনকে দেখার পর ম্যাককার্টনি লেলনকে হ্যারিসনকে দ্য কোয়ারিমেন ব্যান্ডে নিতে রাজী করান। হ্যারিসনের বয়স কম বলে লেনন প্রথমদিকে তাকে নিতে রাজী হচ্ছিলেন না। [২৭] হ্যারিসন লিড গিটারিস্ট হিসেবে দ্য কোয়ারিমেন দলে যোগ দেন।[২৮] পরবর্তীতে লেননের ছোটবেলার বন্ধু স্টুয়ার্ট সাটক্লিফ ব্যাস গিটারিস্ট হিসেবে দলে যোগ দেন।[২৯] দলটি কিছুদিন পরেই রক 'এন' রোল ঘরাণার গান করতে শুরু করে 'জনি অ্যান্ড দ্য মুনডগস' নাম ব্যবহার করে। ১৯৫৮ সালের মাঝামাঝি দ্য কোয়ারিমেন তাদের প্রথম রেকর্ডিং সম্পন্ন করে। এতে ছিল বাডি হলির গান দ্যাট'ল বি দ্য ডে এবং ম্যাককার্টনি ও হ্যারিসনের গাওয়া মৌলিক গান ইন স্পাইট অব অল দ্য ডেঞ্জার।
১৯৬০ সালে ব্যান্ডটি পাঁচবার তাদের নাম পরিবর্তন করে। স্টুয়ার্ট সাটক্লিফ বাডি হলি ও দ্য ক্রিকেটস্ দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে 'দ্য বিট্লস' (the Beetles) নামের প্রস্তাব দেন, যা পরে তিনি ও লেনন 'বিটাল্স' (Beatals) নামে পরিবর্তনের চিন্তা করেছিলেন। তারা এরপর তাদের নাম পরিবর্তন করে রাখেন 'সিলভার বিট্স' (Silver Beats), 'দ্য সিলভার বিট্লস' (The Silver Beetles), এবং 'সিলভার বিটল্স' (Silver Beatles)। লেনন পরে নামটি সংক্ষেপ করে রাখেন দ্য বিটল্স। "লং জন সিলভার অব দ্য সিলভার বিটল্স" নামে পরিচিত না হতেই নামটি সংক্ষেপ করা হয়েছিল কেননা নামটি 'জনি অ্যান্ড দ্য মুনডগস' এর মতই শোনায়। স্কটল্যান্ডে জনি জেন্টল্ এর সাথে একটি ভ্রমণের পর,[৩০][৩১] তারা তাদের দলের নাম পরিবর্তন করে 'বিটল্স' রাখে।[৩২]
লেননকে বিটল্স দলের নেতা হিসেবে ধরে নেয়া হত কেননা তিনিই মূল দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ম্যাককার্টনি বলেন, "আমরা সবাই লেলনের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তিনি ছিলেন বায়োজোষ্ঠ্য এবং অনেকটা নেতাসুলভ - তার বুদ্ধি ছিল সবচেয়ে তীক্ষ এবং তিনি সবার চেয়ে স্মার্ট।"[৩৩][৩৪]
১৯৬০-১৯৭০: দ্য বিটল্স
অ্যালান উইলিয়ামসের জারাকান্ডা ক্লাবে গান গাওয়ার পর তিনি ১৯৬০ সালের মে মাস থেকে দ্য বিটলসের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেন।[৩৫] এর কয়েকমাস পর তিনি জার্মানিরহামবুর্গের ইন্দ্রা ক্লাবে বিটলসের গান গাওয়ার ব্যবস্থা করেন।[৩৬] মোনা বেস্ট লিভারপুলে কাসাবা ক্লাব নামে একটি ক্লাব চালাতেন যেখানে ১৯৫৯ সাল থেকেই বিটলস প্রায়ই গান গাইত। হামবুর্গে বিটলসের ভ্রমণ নিশ্চিত হবার পর মোনার ছেলে পিট বেস্ট বিটলস দলে ড্রামার হিসেবে যোগ দেন।[৩৭] লেনন যখন হামবুর্গের কথা তার খালা মিমিকে জানান তখন তার খালা আতঙ্কিত হয়েছিলেন। খালা লেননকে তার পড়ালেখা শেষ করার অনুরোধ জানালেও তিনি তা মানেননি। [৩৮] বিটলস প্রথম ইন্দ্রা ক্লাবে গান করত[৩৯] এবং তারা রাত্রিযাপন করত বাম্বি কিনোর ছোট নোংরা ঘরে। ইন্দ্রা বন্ধ হবার পর তারা কাইজারকেলার নামে বড় ক্লাবে যান।[৩৯][৪০] ১৯৬০ সালের অক্টোবর মাসে তারা কশমিদার ক্লাব ছেড়ে দেন এবং পিটার একর্নের "টপ টেন ক্লাব" এ কাজ করতে শুরু করেন।[৪১][৪২] কশমিদার ম্যাককার্টনি ও বেস্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন যে তারা বাম্বিতে থাকাকালীন কনডমে পেরেক ঢুকিয়ে তাতে আগুন জালিয়েছিলেন।[৪৩] তাদের কে ফেরত পাঠানো হয়। জর্জ হ্যারিসন অল্পবয়সী হবার কারণে তাকেও ফেরত পাঠানো হয়।[৪৪] লেননের কাজ করার মেয়াদ শেষ হবার পর তিনি রেলগাড়ীতে করে ইংল্যান্ড আসেন। আর সাটক্লিফ টনসিলাইটিস বাধিয়ে ঘরে ফেরেন।[৪৫] যখন লেনন মেন্ডিপ্সে ফেরত আসেন তার খালা তার দিকে একটি রান্না করা মুরগী (যেটি লেনন তার খালার জন্যই কিনেছিলেন) ও একটি হাত-আয়না ছুড়ে মারেন কারণ লেনন সিনথিয়া পাওয়েলের জন্য একটি চামড়ার কোট কিনেছিলেন। সিনথিয়া পাওয়েল ছিলে তখন জনের মেয়েবন্ধু ও পরবর্তীকালের স্ত্রী। সিনথিয়াকে তার খালা গুন্ডা হিসেবে মনে করতেন।[৪৬]
১৯৬০ সালের ডিসেম্বর মাসে বিটলস পুনরায় একত্রিত হয় এবং ১৯৬১ সালের ২১ মার্চ তারা লিভারপুলের ক্যাভের্ন ক্লাবে তাদের প্রথম কনসার্টের আয়োজন করে।[৪৭][৪৮] ১৯৬১ সালের এপ্রিলে তারা আবার হামবুর্গে ফিরে যায় ও সেখানে টনি শেরিডানের সাথে 'মাই বোনি' রেকর্ড করে।[৪৯] যখন ইংল্যান্ডে ফেরত যাওয়ার সময় আসে তখন সাটক্লিফ অ্যাস্ট্রিড কির্চেরের সাথে জার্মানিতে থেকে যান, ফলে ম্যাককার্টনিকে ব্যাস গিটারিস্টের দায়িত্ব নিতে হয়।[৫০] ১৯৬১ সালের অক্টোবরে যখন তার বয়স ২১ বছরের কাছাকাছি তার খালা ম্যাটের (যিনি এডিনবরাতে থাকতেন) তাকে ১০০ পাউন্ড স্টার্লিং দেন যা তিনি ম্যাককার্টনির সাথে প্যারিস ভ্রমণ করে খরচ করে ফেলেন।[৫১] লেননের সৎবোন জুলিয়া বেয়ার্ড ব্যাখ্যা করেন যে এই টাকা এসেছিল লেননের মায়ের বীমা থেকে যা তার উত্তরাধিকারীরা ২১ বছর হলেই পাবে। জুলিয়া ও জ্যাকি - তার দুই সৎবোন ২১ বছর বয়স হবার পরে এই অর্থ পেয়েছিলেন।[৫২]
মৃত্যু
১৯৮০ সালের ৮ ডিসেম্বর। গানের জগতে অভিশপ্ত এক রাত। রাত তখন এগারোটা। পয়েন্ট থার্টি এইট স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন রিভালভারটি পকেটে নিয়ে ড্রাইভওয়ের অন্ধকারে অপেক্ষা করছিল মার্ক চ্যাপম্যান। ড্রাইভওয়ের বুক চিরে দুটো উজ্জল আলো ক্রমশ এগিয়ে আসছে। মার্ক চ্যাপম্যান অস্থির হয়ে উঠল। এই লিমুজিনটা সে ভালভাবেই চেনে।ডাকোটায় ঢোকার মুখে একটি পাথরের আর্চওয়ে, লিমুজিনটা তার কয়েক হাত আগেই থেমে গেল। তারপরেই গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন লেনন। মাত্র এক হাতের ব্যবধানে রক্তমাংসের সেই জীবন্ত কিংবদন্তি! “জন লেনন!” চ্যাপম্যান ফিস ফিস করে ডাকলেন। পরমুহূর্তেই নিস্তব্ধ সেই ড্রাইভওয়ে কাঁপিয়ে শোনা গেল গুলির আওয়াজ। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি চালাচ্ছেন চ্যাম্পম্যান। একবার নয়, বারবার। রাত শেষ না হতেই দাবানলের মতো দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। আততায়ীর গুলিতে জন লেনন নিহত হয়েছেন।
মার্ক চ্যাপম্যানকে যখন মার্কিন পুলিশ গ্রেফতার করছিল, তখনও তার হাতে ধরা ছিল লেননের এল পি রেকর্ড। সেদিন বিকেলেই চ্যাপম্যান লেননের অটোগ্রাফ চেয়েছিলেন, লেনন তাতে সইও দিয়েছিলেন। ডেইলি মিরর বড় করে হেডলাইন ছাপালো ‘ডেথ অব আ হিরো‘। টাইম পত্রিকা লেননকে বর্ণনা করলো কবি বলে।নিয় ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে বেরোল ১০,০০০ মানুষের এক মৌন মিছিল। লন্ডনের হাউড পার্ক, ট্রাফালগার স্কোয়ার সর্বত্র বেজেছে ‘গিভ পিস আ চান্স’। বরফ ঝরা সেই শীতের রাতে টরন্টো শহরে লেননের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ৩৫,০০০ যুবক-যুবতী মোমবাতি জ্বালালেন।
শরীরের মৃত্যু ঘটলেও এই সঙ্গীত প্রতিভার আজও মৃত্যু ঘটেনি। পৃথিবীকে আজও জন লেনন মাতিয়ে রেখেছেন তার সুরের মূর্চ্ছনায়। কারণ জন লেনন মানেই একটা যুগ, বিটলস এর স্বর্ণযুগ। লেনন, ম্যাককার্টনি, জর্জ হ্যারিসন আর রিঙ্গো স্টার এর সেই যুগ। বিটলস এর সেই যুগ। গানের সুরে ভেসে যাওয়ার সেই দিন।
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
John Lennon, Yoko Ono, David Sheff and G. Barry Olson (1981), The Playboy interviews with John Lennon and Yoko Ono. New York: Playboy Press/Putnam. আইএসবিএন০-৮৭২২৩-৭০৫-২ - includes unpublished conversations and Lennon's song-by-song analysis of his work.
John Lennon, Jann Wenner (1971), Lennon Remembers: The Complete Rolling Stone Interviews from 1970. Straight Arrow Books. আইএসবিএন১-৮৫৯৮৪-৬০০-৯.
Julia Baird (with Geoffrey Giuliano) (1989), John Lennon My Brother. Grafton Books. আইএসবিএন০-৫৮৬-২০৫৬৬-৭
Fenton Bresler (1989), The Murder of John Lennon. Mandarin Press. আইএসবিএন০-৭৪৯৩-০৩৫৭-৩
Ray Coleman (1984), Lennon: the definitive biography. Harper. Four further updated editions, the last being in 2000. আইএসবিএন০-৩৩০-৪৮৩৩০-৭
Albert Goldman (2001), The Lives of John Lennon. Chicago Review Press. আইএসবিএন১-৫৫৬৫২-৩৯৯-৮