অভিনয়
অভিনয় সংলাপ সহ বা সংলাপবিহীন অন্য একটি চরিত্রের আবেগ প্রকাশ। সাজগোজ করে কৃত্রিম অঙ্গভঙ্গি করে অন্য একটি চরিত্রের অণুরকরণ করাইকেই বলা হয় অভিনয়। পাশ্চাত্যের বেশিরভাগ প্রাথমিক উৎস যা অভিনয়ের শিল্প পরীক্ষা করে (গ্রীক: ὑπόκρισις, hypokrisis) এটিকে অলঙ্কারশাস্ত্রের অংশ হিসেবে আলোচনা করে। [১]
ইতিহাস
প্রথম পরিচিত অভিনেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন প্রাচীন গ্রীক যা থিসপিস অফ ইকারিয়া নামে পরিচিত। ঘটনার দুই শতাব্দী পরে এরিস্টটল তাঁর কবিতাগুলিতে (খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৫ খ্রিস্টাব্দ) পরামর্শ দিয়েছেন যে থিসপিস দ্বিথেরাম্বিক কোরাস থেকে বেরিয়ে এসে পৃথক চরিত্র হিসাবে সম্বোধন করেছিলেন। থিসপিসের আগে, কোরাস বর্ণনা করেছিলেন (উদাহরণস্বরূপ, "ডায়োনিসাস এটি করেছিলেন, ডায়োনিসাস বলেছেন যে")। থিপিস যখন কোরাস থেকে সরে দাঁড়ালেন, তখন তিনি এমন চরিত্রের কথা বলেছিলেন (উদাহরণস্বরূপ, "আমি ডায়ানিসাস, আমি এটি করেছি")) গল্প বলার এই বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য করার জন্য act আইনায়ন এবং বিবরণ — অ্যারিস্টটল "মিমেসিস" (আইন প্রয়োগের মাধ্যমে) এবং "ডাইজেসিস" (বর্ণনার মাধ্যমে) শব্দটি ব্যবহার করেন। থিসপিসের নাম থেকে "থিস্পিয়ান" শব্দটি এসেছে।
অভিনয়ের প্রকারভেদ
অলঙ্কার শাস্ত্র মতে, অভিনয় চার প্রকারে সম্পন্ন হয়।
০১) আঙ্গিক অভিনয় : শরীরের অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে যে অভিনয় করা হয়, সেটাই আঙ্গিক অভিনয়। শরীর ব্যবহার না করলে অভিনয় পরিপূর্ণ হয় না বলেই অভিনয়ে শারীরিক বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করতে হয়।
০২) বাচিক অভিনয় : অভিনয়কে পরিপূর্ণতা দানের জন্য কণ্ঠস্বরও ব্যবহার করতে হয়। কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে যে অভিনয় করা হয় সেটাই বাচিক অভিনয়। বাচিক অভিনয় ছাড়া অভিনয় পরিপূর্ণ হয় না।
০৩) সাত্ত্বিক অভিনয় : সত্তা বা মনকে অভিনয়ে অর্ন্তভুক্ত না করা পর্যন্ত অভিনয় পরিপূর্ণ হয় না। মনের ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ ও অন্তর্ভুক্ত করে যে অভিনয় করা হয়, সেটাই সাত্ত্বিক অভিনয়। মূলত আবেগ ব্যবহার না করে অভিনয় করলে সেটা পরিপূর্ণতা লাভ করে না। আর আবেগ ব্যবহার করতে হলেই অভিনেতাকে মন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এই মন নিয়ন্ত্রণ করে যেই অভিনয়, সেটাই সাত্ত্বিক অভিনয়।
০৪) আহার্য অভিনয় : অভিনয়কে পূর্ণমাত্রায় বোধগম্য ও চিত্তাকর্ষক করার জন্য পোশাক, অঙ্গরচনা, আলো ও মঞ্চ ব্যবহার করতে হয়। অভিনয়ের জন্য ব্যবহৃত এই সব উপাদান ছাড়া অভিনয় পরিপূর্ণতা পায় না। অভিনেতার শরীরের বাইরে অবস্থিত এই সব উপাদান ব্যবহার করে যে অভিনয় করা হয়, সেটাই আহার্য অভিনয়।