আলিয়া ভাট

ব্রিটিশ-ভারতীয় অভিনেত্রী

আলিয়া ভাট (/ˈɑːlɑː ˈbət/; জন্ম ১৫ মার্চ ১৯৯৩) একজন ব্রিটিশ-ভারতীয় অভিনেত্রী এবং গায়িকা, যিনি মূলত বলিউড চলচ্চিত্রে কাজ করেন। ২০১৭ সালে থেকে তিনি ফোর্বস ইন্ডিয়ার সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় এবং ২০১৭ সালে ফোর্বস এশিয়ার থার্টি আন্ডার থার্টি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

আলিয়া ভাট
आलिया भट्ट
আলিয়া ভাটের আবক্ষ আলোকচিত্র
২০২২ সালে বার্লিনে আলিয়া
জন্ম (1993-03-15) ১৫ মার্চ ১৯৯৩ (বয়স ৩১)
বম্বে (বর্তমানে মুম্বই), মহারাষ্ট্র, ভারত
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
অন্যান্য নামআলু
নাগরিকত্বব্রিটিশ[১]
শিক্ষাআইবিডিপি
মাতৃশিক্ষায়তনজামাবাই নার্সি বিদ্যালয়
পেশা
  • অভিনেত্রী
  • মডেল
  • গায়িকা
কর্মজীবন১৯৯৬, ২০১২-বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কর্ম
নিচে দেখুন
আদি নিবাসমুম্বই
দাম্পত্য সঙ্গীরণবীর কাপুর (বি. ২০২২)
সন্তান
পিতা-মাতা
আত্মীয়দেখুন ভাট পরিবার
পুরস্কারসম্পূর্ণ তালিকা
স্বাক্ষর
আলিয়া ভাটের স্বাক্ষর

ভাট পরিবারে জন্মগ্রহণকারী আলিয়া, চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট এবং অভিনেত্রী সোনি রাজদানের কন্যা। ১৯৯৯ সালে তনুজা চন্দ্র পরিচালিত সংঘর্ষ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পীর ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরবর্তীকালে একজন প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেত্রী হিসাবে সিদ্ধার্থ মালহোত্রাবরুণ ধবনের বিপরীতে করণ জোহর পরিচালিত প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্ত্বক স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার (২০১২) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন তিনি; যেটি সে বছরের বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করে। তিনি জোহরের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ধর্ম প্রোডাকশন্স প্রযোজিত বেশকয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসাবে বলিউড চলচ্চিত্র শিল্পে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যার মধ্যে টু স্টেট্‌স (২০১৪), হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া (২০১৪), ডিয়ার জিন্দেগি (২০১৬) এবং বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া (২০১৭) অন্তর্ভুক্ত। ২০১৪ সালে, ইমতিয়াজ আলী পরিচালিত হাইওয়ে পথচলচ্চিত্রে স্টকহোম সিনড্রোমে আক্রান্ত কিশোরীর চরিত্রে ভাটের অভিনয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্য লাভ করে। চলচ্চিত্রটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার জিতেছেন এবং একই অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্যও মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৬ সালে, উড়তা পাঞ্জাব অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্রে দারিদ্র্যপীড়িত অভিবাসী চরিত্রে এবং ২০১৮ সালে রাজি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীকালে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের সর্বাধিক উপার্জনকারী মহিলা-নের্তীত্বাধীন চলচ্চিত্রগুলিতে কাজ করেছিলেন। ২০১৯ সালে তার সর্বাধিক উপার্জনকারী সঙ্গীতধর্মী নাট্য চলচ্চিত্র গালি বয় মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি ৯২তম একাডেমি পুরস্কারে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে ভারত থেকে নির্বাচিত হয়েছিল।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি, ভাট তার পোশাক এবং হ্যান্ডব্যাগগুলির নিজস্ব ধারার বিবর্তন ঘটিয়েছেন এবং বাস্তুতান্ত্রিক উদ্যোগের অংশ হিসাবে কোএক্সজিস্ট নামক একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তার অভিনীত ছয়টি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠশিল্পী হিসাবে কাজ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৪ সালের একক "সামঝাওঁ আনপ্লাগড" গানটি প্রায়শই তিনি মঞ্চ শো এবং কনসার্ট সফরে পরিবেশন করেছেন। এছাড়াও তিনি নিয়মিত মঞ্চে একক ও যৌথ পরিবেশনায় অংশ নিয়ে থাকেন।

প্রাথমিক জীবন

২০০৬ সালে সারা আলি খানের সঙ্গে আলিয়া।

আলিয়া ভাট ১৯৯৩ সালের ১৫ মার্চ ভারতের বম্বেতে (বর্তমানে মুম্বই) জন্মগ্রহণ করেন।[২][৩][৪] তার বাবা ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক মহেশ ভাট এবং মা অভিনেত্রী সোনি রাজদান।[২] মায়ের দিক থেকে, ভাট কাশ্মীরী-জার্মান[৫][৬][৭][৮] এবং বাবার দিক থেকে, তিনি মূলত গুজরাতি বংশদ্ভূত।[৯][১০] তার ডাকনাম আলু।[১১] ভারতীয় পরিচালক নানাভাই ভাট তার পিতামহ। তার বড় বোন, শাহীন (জন্ম ১৯৮৮) একজন লেখক;[১২] এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও নির্মাতা পূজা ভাট তার সৎবোন ও সৎভাই চলচ্চিত্র অভিনেতা রাহুল ভাট।[২] অভিনেতা ইমরান হাশমী ও চলচ্চিত্র পরিচালক মোহিত সুরি তার চাচাতো ভাই এবং প্রযোজক মুকেশ ভাট তার চাচা।[১৩]

ভাট ২০১১ সালে মুম্বইয়ের জামাবাই নার্সি বিদ্যালয় (আইবিডিপি) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[২][১৪] জন্মসূত্রে ভাট ব্রিটিশ নাগরিক।[১][১৫]

কর্মজীবন

প্রাথমিক কাজ এবং খ্যাতি অর্জন (২০১২-১৫)

সিদ্ধার্থ মালহোত্রা (ডানে) ও বরুণ ধবনের সঙ্গে ২০১২ সালে স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার চলচ্চিত্রের প্রচারণায় ভাট।

আলিয়া ভাটের রূপালী পর্দায় অভিনয়ের সূচনা ঘটে ছয় বছর বয়সে, ১৯৯৯ সালে শিশুশিল্পীর ভূমিকায়, তনুজা চন্দ্র পরিচালিত নাট্যধর্মী সংঘর্ষ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রে ভাটের সহ-শিল্পী ছিলেন, অক্ষয় কুমারপ্রীতি জিন্টা, যেখানে ভাট জিন্টার শৈশব চরিত্রে অভিনয় করেছেন।[১৬] চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে প্রায়  ৫০ মিলিয়ন (US$ ৬,১১,১৬৫) আয় করে। ২০১২ সালে, ভাট চলচ্চিত্রে সর্বপ্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রাবরুণ ধবনের বিপরীতে, করণ জোহর পরিচালিত স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার চলচ্চিত্রে।[১৭] এ চলচ্চিত্রে তিনি শানায়া সিংহানিয়া চরিত্রে উপস্থিত হয়েছেন। চলচ্চিত্রে শানায়া একজন অত্যাধুনিক কিশোরী, যিনি ধবনের চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হন আবার অন্য চরিত্র মালহোত্রার প্রতিও এক পর্যায়ে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বলিউড হাঙ্গামার তরণ আদর্শ, ভাটের অভিনয় কর্মক্ষমতা সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, "আলিয়ার চরিত্র কাভি খুশি কাভি গাম... (২০০১) চলচ্চিত্রে কারিনা কাপুরের অভিনয় স্মরণ করিয়ে দেয়। আড়ম্বরপূর্ণ, অভিজাত, রূপালী চামচ মুখে জন্মগ্রহণকারী, যে কিনা শুধু তার পোশাক-ব্যাগ জাঁকালভাবে প্রদর্শন করতে পছন্দ করে আর ভালোবাসে ঐশ্বর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে। অত্যন্ত বিচ্ছুরিতভাবে, আলিয়া একটি অতি-আত্মবিশ্বাসী চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেছেন।"[১৮] হিন্দুস্তান টাইমসের চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপড়া কাপুর অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে ভাট অভিনীত চরিত্রের সাদৃশ্য উল্লেখ করেছেন শুধুমাত্র তার "অভিঘাতী মনোভাব ব্যতীত"।[১৯] স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছিল একটি বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র যা ২০১২ সালে বক্স অফিসে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন (US$ ৮.৫৬ মিলিয়ন) আয় করে।[২০]

২০১৪ সালে হাইওয়ে চলচ্চিত্রের ডিভিডি মুক্তির অনুষ্ঠানে ভাট।

২০১৪ সালে ভাটের তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তির মাধ্যমে তিনি বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেন।[২১][২২] একই বছর তিনি রণদীপ হুদার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ আলী পরিচালিত হাইওয়ে পথচলচ্চিত্রে। এই চলচ্চিত্রে অপহরণ হওয়ার পর স্টকহোম সিনড্রোমে আক্রান্ত একটি কিশোরীর চরিত্রে ভাটের অভিনয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্য অর্জন করে।[২৩] ফিল্মফেয়ারের রাচিত গুপ্ত উল্লেখ করেছেন, "এটা বিস্ময়কর যে মাত্র বিশ বছর বয়সে কীভাবে আলিয়া এতো নিপুণ তারতম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এমন, যেন ওই চরিত্রের সঙ্গেই সে বেড়ে উঠেছে। সত্যিই তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের সর্বাধিক প্রতিশ্রুতিশীল নতুন অভিনেত্রী।"[২৪] সাইফির'র সোনিয়া চোপড়া মন্তব্য করেন, ভাট তার চরিত্রে "সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত", এবং এও উল্লেখ করেন যে, "আলিয়া তার কুণ্ঠাহীন ও বাস্তব কর্মক্ষমতা দিয়ে আপনাকে আবেগাপ্লুত করে তুলতে সক্ষম।"[২৫] চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হলেও,[২৬] ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন এবং একই অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হয়েছিলেন।[২৭][২৮]

২০১৪ সালে, অর্জুন কাপুরের বিপরীতে করণ জোহর ও সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার যৌথ প্রযোজনায় অভিষেক বর্মণ পরিচালিত ২ স্টেটস চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ভাট। ২০১৪ সালের এপ্রিলে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্র চেতন ভগতের একই নামের উপন্যাসের চলচ্চিত্ররূপ। যেখানে আইআইএম আহমেদাবাদের দুই শিক্ষার্থীর গল্প বর্ণনা করা হয়েছে যারা তাদের বাবা-মাকে নিজেদের সম্পর্কের অনুমোদনের জন্য রাজি করানোর সমস্যায় পড়ে। এখানে অনন্য স্বামীনাথম নামে একটি তামিল মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে ভাট তামিল ভাষা রপ্ত করেছিলেন।[২৯] সমালোচকরা আলিয়ার অভিনয়ের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রেডিফ.কমে বলেছিলেন, ভাট "সত্যিই তার চরিত্রের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন।"[৩০] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের শুভ্রা গুপ্ত বলেন, ভাট ছিলেন "বিস্ময়কর" এবং ছিলেন "সরল ও প্রাণবন্ত এবং স্বাভাবিক"।[৩১] চলচ্চিত্রটি সে সময়ে শীর্ষ আয়কারী প্রযোজনা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে, যা বিশ্বব্যাপী  ১.৭ বিলিয়ন (US$ ২০.৭৮ মিলিয়ন) আয় করেছিল।[২০]

২০১৪ সালে ভাটের সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল শশাঙ্ক খৈতান পরিচালিত প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রহাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া, যেখানে তিনি কাব্য প্রতাপ সিং নামে এক পাঞ্জাবী মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে তার বিয়ের কিছুদিন পূর্বে একজন অপরিচিতের সঙ্গে প্রণয় সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন। চলচ্চিত্রটি দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫) চলচ্চিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদিত এবং করণ জোহর প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রে ভাটের সহ-শিল্পী ছিলেন বরুণ ধবন এবং সিদ্ধার্থ শুক্লা।[৩২] ইন্ডিয়া টুডের এক লেখায় রোহিত খিলনানি বলেছেন, এটি "তার(ভাটের) এযাবৎকালের সেরা কাজ", যদিও মিন্টের নন্দিনী রামনাথ ভাটের অভিনীত চরিত্রে উদাসীনতার প্রকাশ খুঁজে পেয়েছিলেন।[৩৩][৩৪] হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া ভাটের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র যা বিশ্বব্যাপী  ১ বিলিয়ন (US$ ১২.২২ মিলিয়ন) এর অধিক আয় করছিল।[২০] এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন, এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হন।[২৭][২৮] ভাটের এসকল সাফল্যে ২০১৪ সালে বক্স অফিস ইন্ডিয়া তাকে বছরের শীর্ষ বলিউড অভিনেত্রী হিসাবে আখ্যা দেয়।[৩৫]

এছাড়াও ২০১৪ সালে, ভাট নারীদের নিরাপত্তা বিষয়ক গোয়িং হোম নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, যা পরিচালনা করেছিলেন বিকাশ ভাল।[৩৬]

২০১৫ সালে, ভাট শাহিদ কপুরের বিপরীত বিকাশ ভালের শানদার চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, যেখানে তিনি একজন অনিদ্রারোগীর চরিত্রে অভিনয় করেন।[৩৭][৩৮] মুম্বই মিরর'র কুনাল গুহ চলচ্চিত্রটির সমালোচনা করে লিখেছিলেন, ভাট "তার চরিত্রের মধ্যে জীবনকে মজবুত করে তোলে তবে এই চলচ্চিত্রে তা করতে ব্যর্থ হন"।[৩৯] শানদার বক্স অফিসে স্বল্প আয় করেছিল।[৪০]

প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী (২০১৬–বর্তমান)

২০১৬ সালে উড়তা পাঞ্জাব-এর প্রচারণা অনুষ্ঠানে ভাট। যার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিলেন।

২০১৬ সালে ভাটের তিনটি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের প্রথমটিতে, ভাট একজন প্রাণবন্ত যুবতীর চরিত্রে সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ফাওয়াদ খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন শকুন বাত্রা পরিচালিত কাপুর অ্যান্ড সন্স চলচ্চিত্রে, যা একটি অচল পরিবার সম্পর্কিত নাট্য-চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি বাণিজ্যিক সাফল্য অর্জন করেছিল।[৪১][৪২] একই বছর ভাট ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের একটি দারিদ্র্যপীড়িত বিহারি অভিবাসী চরিত্রে অভিনয় করেন উড়তা পাঞ্জাব চলচ্চিত্রে। এটি অভিষেক চৌবে পরিচালিত মাদকের অপব্যবহার সম্পর্কিত একটি অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্র। এই চরিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য অংশগুলি ভাট পূর্বে তার বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সম্পাদন করেছিলেন এবং প্রস্তুতিস্বরুপ তিনি মাদকবিষয়ক বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র দেখা এবং বিহারি উপভাষায় কথা বলতে শিখেছিলেন।[৪৩] এই চলচ্চিত্রের সহ-অভিনেতা শাহিদ কপুর, কারিনা কাপুর এবং দিলজিৎ দোসাঞ্জ, বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন যখন কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র অনুমোদন পর্ষদ উল্লেখ করে যে চলচ্চিত্রটি নেতিবাচকভাবে পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির বিপক্ষে চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সেন্সরশিপ দাবি করে।[৪৪] বম্বে উচ্চ আদালত পরবর্তীতে একটি দৃশ্য বাদ দিয়ে প্রদর্শনীর জন্য চলচ্চিত্রটির ছাড়পত্র দেয়া হয়।[৪৫] চলচ্চিত্রে ভাটের অভিনয়-দক্ষতা সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল, বিভিন্ন মন্তব্যকারীদের বিশ্বাস যে এটি তার সেরা কর্মক্ষমতা ছিল।[৪৬] রেডিফ.কম-এর রাজা সেন লিখেছিলেন, ভাট "তার উচ্চারণভঙ্গি নিয়ে বদ্ধ পরিকর এবং চলচ্চিত্রের সবচেয়ে অপ্রীতিকর অধ্যায়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম"।[৪৭]

সমালোচকদের প্রশংসা প্রাপ্তির অব্যহতির মধ্য দিয়ে ভাট একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী চিত্রগ্রাহকের ভূমিকায় উপস্থিত হয়েছিলেন গৌরী সিন্ধে পরিচালিত ডিয়ার জিন্দেগি (২০১৬) নাট্য-চলচ্চিত্রে, যেখানে তিনি শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।[৪৮] ইন্ডিওয়ারের একটি লেখায়, অ্যানিসা জাভেরি উল্লেখ করেছেন যে, ভাট তার চরিত্রকে এমন অবস্থায় উন্নিত করেছ যেখানে "একটি ত্রি-মাত্রিক রূপ দেয়া হয়েছে যা প্রকৃতভাবে এতোটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে তা শনাক্ত করা দূরহ।"[৪৯] চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি, বিশ্বব্যপী  ১.৩৯ বিলিয়ন (US$ ১৬.৯৯ মিলিয়ন) আয় করে।[৫০] উড়তা পাঞ্জাব এবং ডিয়ার জিন্দেগি চলচ্চিত্রদুটি ভাটকে একাধিক পুরস্কার ও মনোনয়ন লাভ করতে সহায়তা করে; পূর্বে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন, এবং পরবর্তীতে তিনি ফিল্মফেয়ারে আরো একটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছেন।[৫১][৫২][৫৩]

সাফল্যমণ্ডিত চলচ্চিত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহতির মাধ্যমে ভাট ২০১৭ সালে, বরুণ ধবনের বিপরীতে বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া রোমান্টিক কমেডি চলচ্চিত্রে পুনরায় খৈতানের পরিচালনায় পর্দায় উপস্থিত হন।[৫৪] চলচ্চিত্রে গ্রাম্য ভারতের এক স্বাধীন যুবতীর গল্প বলা হয়েছে যিনি তার চৌর্যবাদী বাগদত্তার (ধবনের) কাছ থেকে পিতৃতান্ত্রিক প্রত্যাশা অমান্য করে। নিউ ইয়র্ক টাইম্‌সের রেচেল সল্টজ লিঙ্গগত সমতা নিয়ে চলচ্চিত্রটির বক্তব্য নোট করেছেন এবং লিখেছেন, "বলিষ্ঠ নায়িকাদের চতুরতার মধ্যে না পড়েই [ভাট] অনায়াসেই সেই প্রশংসনীয় বিষয়টির প্রতিচ্ছবি তৈরি করেছেন: তিনি একজন আধুনিক মহিলা।"[৫৫] ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে আরেকটি ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পেয়েছিলেন।[৫৬] মেঘনা গুলজারের গুপ্তচরবৃত্তি থ্রিলার রাজি (২০১৮) চলচ্চিত্রে, ভাট সেহমত নামে একজন কাশ্মীরী গুপ্তচরের মুখ্য ভূমিকায় উপস্থিত হন, যিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে (ভিকি কৌশল অভিনীত) বিয়ে করেছিলেন। ১৯৭১-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটি হরিন্দর সিক্কার কলিং সেহমত উপন্যাসের রূপান্তর।[৫৭][৫৮] এই চলচ্চিত্রের জন্য ভাট ফিল্মফেয়ারে আরেকটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছিলেন।[৫৯]

২০১৯ সালে গালি বয় চলচ্চিত্রের প্রচারণা অনুষ্ঠানে সহশিল্পী রণবীর সিংয়ের সাথে ভাট।

২০১৯ সালে ভাট ইটার্নাল সানশাইন প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা সংস্থা চালু করেন।[৬০] সে বছর তার প্রথম চলচ্চিত্রের উপস্থিতি ছিল জোয়া আখতারের গালি বয় চলচ্চিত্রে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে, যেটি ভারতীয় স্ট্রিট র‌্যাপার ডিভাইন এবং নায়েজের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত একটি সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্র।[৬১] চলচ্চিত্রের পটভূমিতে উন্নতি ঘটাতে তিনি একটি ঘেটো উপভাষা শিখতে অভিনয়ের কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন।[৬২] ৬৯তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার হয়েছিল।[৬৩] চলচ্চিত্রটি ৯২তম একাডেমি পুরস্কারে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে ভারত থেকে নির্বাচিত হলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন লাভ করে নি।[৬৪] স্ক্রিন ইন্টারন্যাশনালের লি মার্শাল মন্তব্য করেছিলেন যে "এটি ভাটের তীক্ষ্ণ অভিনয় যা গালি বয় গল্পের সবচেয়ে সফলভাবে বিকৃত রসবোধ, প্রণয় এবং সামাজিক মন্তব্যগুলির মিশ্রণ বহন করে"।[৬৫] বিশ্বব্যাপী  ২.৩৭ বিলিয়ন (US$ ২৮.৯৭ মিলিয়ন) আয়ের মাধ্যমে গালি বয় ভাটের সর্বাধিক উপার্জনকৃত চলচ্চিত্র হিসাবে পরিণত হয়।[৬৬] ভাটের পরবর্তী মুক্তিপ্রাপ্ত নাট্যচলচ্চিত্র কলঙ্ক, সেসময় পর্যন্ত তার সবচেয়ে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র।[৬৭] ভারত বিভাজনের পূর্বে ১৯৪০-এর দশকের পটভূমিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে ধাওয়ান এবং ভাটকে প্রেমিকযুগল হিসাবে উপস্থাপন করেছে, এবং প্রস্তুতিতে তিনি মুঘল-ই-আজম (১৯৬০) এবং উমরাও জান (১৯৮১) চলচ্চিত্রগুলি থেকে সেই যুগের মহিলাদের শরীরি ভাষা রপ্ত করেছিলেন এবং উর্দু ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য তিনি পাকিস্তানি টেলিভিশন ধারাবাহিক জিন্দেগি গুলজার হাই দেখেছিলেন।[৬৮] দ্য হিন্দুর নম্রতা জোশী শোক প্রকাশ করেছিলেন যে চলচ্চিত্রটি কাহিনির ভিত্তিতে দৃশ্যত জাঁকজমক মহিমার উপর গুরত্ব দিলেও ভাট এই চরিত্রের সঙ্গে কতটা মানানসই ছিলেন তার খেয়াল করে নি।[৬৯] এটি বক্স অফিসে আশানরূপ আয় করতে ব্যর্থ হয়।[৭০]

আসন্ন প্রকল্প

ডিসেম্বর ২০১৯-এর হিসাব অনুযায়ী, ভাটের ছয়টি আসন্ন প্রকল্প রয়েছে। প্রথমটি, আয়ান মুখার্জির ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র ট্রিলজি ব্রহ্মাস্ত্র, যেখানে তিনি রণবীর কাপুর এবং অমিতাভ বচ্চনের সাথে উপস্থিত হবেন।[৭১][৭২][৭৩] তিনি মহেশ ভাটের সড়ক ২ অপরাধ সিক্যুয়াল চলচ্চিত্রে সঞ্জয় দত্ত, পূজা ভাটআদিত্য রয় কাপুরের সঙ্গে কাজ করেছেন,[৭৪][৭৫] এবং তেলুগু ভাষার আরআরআর সময়কালীন চলচ্চিত্রে এনটি রামা রাও জুনিয়র, রাম চরণঅজয় দেবগনের পাশাপাশি পর্দায় উপস্থিত হবেন;[৭৬] দুটি চলচ্চিত্রই ২০২০ সালের জুলাইয়ে মুক্তি দেয়া হবে। এস হুসেন জ়াইদির মাফিয়া কুইনস অব মুম্বই অবলম্বনে নির্মাণাধীন সঞ্জয় লীলা বনশালি পরিচালিত গাঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি জীবনীচলচ্চিত্রে কামাথিপুরার পতিতালয়ের গ্যাংস্টার গাঙ্গুবাঈয়ের চরিত্রে উপস্থিত হবেন আলিয়া।[৭৭][৭৮][৭৯][৮০] ভাট এছাড়াও চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন করণ জোহর পরিচালিত তাকট ঐতিহাসিক নাট্য-চলচ্চিত্রে, যেখানে তিনি ভিকি কৌশল, রণবীর সিং এবং কারিনা কাপুরের সঙ্গে পর্দায় উপস্থিত হবেন।[৮১] এছাড়াও তিনি অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারির পরবর্তী চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন, যেটি ২০২০ সালের মাঝামাঝি মুক্তি দেয়া হবে।[৮২]

অন্যান্য কর্ম

২০১৪ সালে ৫৯তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে ভাট।

ভাট হাইওয়ে (২০১৪) চলচ্চিত্রে "সোহা সোহা" গানে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান তাকে তার সঙ্গীত বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।[৮৩] ২০১৪ সালে এছাড়াও, হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া চলচ্চিত্রে সুরকার শাহরিব-তোষির জন্য "সামঝাওয়া" গানের আনপ্লাগ্‌ড সংস্করণে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।[৮৪] ২০১৬ সালে, তিনি সহশিল্পী দোসন্ধির সাথে উড়তা পাঞ্জাব চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাকের জন্য "ইক কুড়ি" গানের একটি বিকল্প সংস্করণ গেয়েছিলেন।[৮৫]

চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের পর, ভাট বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান যেমন, ফিল্মফেয়ার, স্ক্রিন, স্টারডাস্ট ইত্যাদিতে সঞ্চালন করেন এবং বরুন ধবন ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে হংকংয়ে আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।[৮৬] ২০১৩ সালে, তিনি উত্তরাখণ্ডের বন্যা-প্রভাবিত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তহবিল সংগ্রহের অয়োজনে ধবন, মালহোত্রা, আদিত্য রায় কাপুর, শ্রদ্ধা কাপুর এবং হুমা কোরেশীর পাশাপাশি একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রদর্শনিতে অংশ নেন।[৮৭] ২০১৪ সালের আগস্টে, তিনি জোহরের পাশাপাশি অভিনয়শিল্পী ধবন, মালহোত্রা, রায় কাপুর, ক্যাটরিনা কাইফ, পরিণীতি চোপড়া, এবং গায়ক বাদশাহ সহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে "ড্রিম টিম ২০১৬" সফরে পরিবেশন করেছিলেন।[৮৮]

২০১৩ সালে, ভাট গৃহহীন পশুদের জন্য একটি পিটা প্রচারণা মডেল হিসাবে কাজ করেন।[৮৯] ২০১৭ সালে, তিনি পথ প্রাণীদের কল্যাণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কোএক্সজিস্ট নামে একটি পরিবেশগত উদ্যোগ শুরু করেছিলেন।[৯০] পরবর্তীবছর, ২০১৮ সালে, তিনি ফেসবুক লাইভে পরিবেশবাদ প্রচারের জন্য ফাইন্ড ইওর গ্রিন নামে একটি প্রচারের জন্য সহযোগিতামূলক কাজ করেছিলেন।[৯১]

২০১৪ সালে, ভাট অনলাইন ফ্যাশন পোর্টাল জাবোঙ্গ.কম-এর সঙ্গে নারী পোশাকের তার নিজস্ব ধারা চালু করেন; তিনি এই সংগ্রহকে "খুব সহজ" এবং "খুব আমার" হিসাবে বর্ণনা করেন।[৯২][৯৩] ২০১৮ সালে, তিনি ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজের জন্য হ্যান্ডব্যাগের নিজস্ব ধারা চালু করেছিলেন।[৯৪] তিনি এছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্যের প্রচারতারকা হিসাবে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে কোকা-কোলা, গার্নিয়ার এবং মেইবিলাইন অর্ন্তভূক্ত।[৯৫][৯৬]

গণমাধ্যমে

২০১৮ সালে জিকিউ স্টাইল পুরস্কার অনুষ্ঠানে ভাট

ফোর্বস ইন্ডিয়ার সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় ২০১৭ সালে তিনি ২১তম স্থানে, ২০১৮ সালে ১২তম স্থানে এবং ২০১৯ সালে ৮ম স্থানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।[৯৭] ২০১৭ সালে তিনি ফোর্বস এশিয়ার থার্টি আন্ডার থার্টি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।[৯৮] ২০১৮ সালে তিনি সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় পুনরায় ১২তম স্থানে অন্তর্ভুক্ত হন।[৯৯][১০০][১০১] সে বছর, ফোর্বসের মতে ভাটের বার্ষিক আয় ৫৮৮.৩ মিলিয়ন (US$ ৭.১৯ মিলিয়ন) মিলিয়ন ডলারে অনুমিত হয়েছিল এবং যা তাকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী অভিনেত্রী হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে।[১০২] একই বছরে, জিকিউর ভারতীয় সংস্করণে তাকে দেশের ৫০ জন প্রভাবশালী তরুণদের মধ্যে তালিকাভূক্ত করা হয়েছিল এবং "বিগ-বাজেট, অল-স্টার ব্লাউটস এবং আরো স্ক্রিপ্ট-ভিত্তিক চলচ্চিত্রের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার" জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল।[১০৩] ভাটকে ২০১৮ সালের টাইমস অব ইন্ডিয়ার "৫০ সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত মহিলা" তালিকায় প্রথম স্থান দেওয়া হয়েছিল।[১০৪]

ফিল্মফেয়ারের সম্পাদক রেদিতা ট্যান্ডন, ভাট সম্পর্কে লিখেছেন, "আলিয়া ভাটের সাথে সাক্ষাতের পর, আমি এক অপ্রত্যাশিত অনুভূতির সাহচর্যে আসি। তার সাক্ষাৎকার নেয়ার ঘটনা ছিলো অনেকটা মেয়ে বন্ধুর সাথে কথোপকথনের মতো। সবাই তারকাদের যেমন ভাবেন, ভাবনাহীন এবং স্বচ্ছন্দ– ভাট ঠিক তাই। তার কথায় অবশ্যই কোন মিনমিনে এবং কূটনীতিভাবাপূর্ণ আচরণ নেই। হয়তো তার কুড়ি বছর বয়সের জন্যই। অথবা হয়তো সে এটা তার বাবা, মহেশ ভাটের নিকট থেকেই শিখেছে। তথাপি, সে প্রাণচঞ্চল। যদিও বিগত বছর ধরে তরুণ অভিনেতারদের প্রসার থাকলেও তাদের মধ্যে শুধুমাত্র কয়েকজনই মান রাখতে পেরেছেন। আলিয়া নিঃসন্দেহে তাদের একজন। এটা তার অভিষেক চলচ্চিত্র, স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার প্রমাণ করেছিল। সে জানে, সামনে দীর্ঘ পথ রয়েছে এবং সে জোড়সোড়ভাবে কাজের প্রতি উৎসাহী।"[১০৫]

সহ-অভিনেতাদের সাথে প্রায়ই প্রণয়ঘটিত সম্পর্কে যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও, ভাট তা অস্বীকার করেছেন।[১০৬] তিনি মালহোত্রা, ধবন, দীপিকা পাড়ুকোন, অর্জুন কাপুর, সোনাম কপূর এবং করণ জোহরকে বলিউডে তার বন্ধু হিসাবে উল্লেখ করেন।[১০৭]

চলচ্চিত্রের তালিকা

সূত্র
মুক্তি প্রতিক্ষিত চলচ্চিত্র নির্দেশ করে
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্দেশ করে
শিরোনামবছরচরিত্রভাষাটীকা
সংঘর্ষ১৯৯৯ইয়াং রীত ওবেরয়হিন্দিবিশেষ উপস্থিতি[১৬]
স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার২০১২শানায়া সিংহানিয়ামনোনয়ন—শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার[১০৮][১০৯]
হাইওয়ে২০১৪ভীরা ত্রিপাঠিহিন্দি"সোহা সাহা" গানের প্লেব্যাক[১১০]
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার[২৭]
মনোনয়ন—শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার[২৮]
টু স্টেট্‌সঅনন্যা স্বামীনাথনহিন্দি[১১১]
হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়াকাব্য প্রতাপ সিংহিন্দি"সামঝাওঁ আনপ্লাগড" গানের প্লেব্যাক[১১২]
গোয়িং হোমস্বভূমিকায়হিন্দিস্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
আগলিইয়াং শালিনিহিন্দিক্যামিও উপস্থিতি[১১৩]
শানদার২০১৫আলিয়া অরোরাহিন্দি[১১৪]
কাপুর অ্যান্ড সন্স২০১৬তিয়া মালিকহিন্দি
উড়তা পাঞ্জাবমেরি জেনহিন্দি, পাঞ্জাবী"ইক কুড়ি (ক্লাব মিক্স)" গানের প্লেব্যাক গায়িকা[১১৫]
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার[৫৩]
অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিলডিজেহিন্দিক্যামিও উপস্থিতি[১১৬]
ডিয়ার জিন্দেগিকাইয়াহিন্দি"এ জিন্দেগি গালে লাগা লে – ২" গানের প্লেব্যাক গায়িকা[১১৭]
মনোনয়ন—শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার[৫১]
বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া২০১৭বাডেহি ত্রিবেদীহিন্দি"হামসাফার (আলিয়ার সংস্করণ)" গানের প্লেব্যাক গায়িকা[১১৮][১১৯]
মনোনয়ন—শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার[৫৬]
ওয়েলকাম টু নিউ ইয়র্ক২০১৮স্বভূমিকায়হিন্দিক্যামিও উপস্থিতি
রাজিসেহমাত খানহিন্দিশ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার[১২০]
মনোনয়ন—শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার[১২০]
জিরোস্বভূমিকায়হিন্দিবিশেষ উপস্থিতি[১২১]
গালি বয়২০১৯সাফিনা ফেরদৌসিহিন্দিসেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র হিসেবে একাডেমি পুরস্কারের জন্য ভারতীয় নিবেদন[১২২]
কলঙ্করুপ চৌধুরীহিন্দি[১২৩]
স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ২বেনামীহিন্দি"দ্য হুক আপ সং"-গানে বিশেষ উপস্থিতি[১২৪]
আংরেজি মিডিয়াম২০২০স্বভূমিকায়হিন্দি"কুড়ি নু নাচনে দে" গানে বিশেষ উপস্থিতি
সড়ক ২আরায়াহিন্দি[৭৪][৭৫]
গাঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি২০২২গাঙ্গুবাঈ কোঠোয়ালিহিন্দি[৭৮][৭৯][৮০]
আরআরআরসিতাতেলুগুচিত্রগ্রহণ[৭৬]
ডার্লিংস বদরু কোরেশিহিন্দিচিত্রগ্রহণ[৭১][৭২][৭৩]
ব্রহ্মাস্ত্র ইশাহিন্দিচিত্রগ্রহণ[৭১][৭২][৭৩]
রকি অর রানি কি প্রেম কাহানি ২০২৩রানিহিন্দি

সঙ্গীত ভিডিও

গানবছরপরিবেশনকারীসূত্র
"পর্দা"২০১৯দ্য দূরবীন(ফিচারিং শ্রেয়া শর্মা)[১২৫]
"স্মাইল দেকে দেখো"সুনিধি চৌহান, অমিত ত্রিবেদী[১২৬]

সঙ্গীত তালিকা

গানবছরঅ্যালবামসূত্র(সমূহ)
"সুহা সাহা"২০১৪হাইওয়ে[১১০]
"সামঝাওঁ আনপ্লাগড"হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া[১১২]
"ইক কুডি (ক্লাব মিক্স)"২০১৬উড়তা পাঞ্জাব[১১৫]
"লাভ ইউ জিন্দেগি (ক্লাব মিক্স)"ডিয়ার জিন্দেগি[১১৭]
"এ জিন্দেগি গালে লাগা লে – ২"
"হামসাফার (আলিয়ার সংস্করণ)"২০১৭বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া[১১৮][১১৯]

পুরস্কার ও মনোনয়ন

তিনটি ফিল্মফেয়ার, আন্তর্জাতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমি পুরস্কার, জি সিনে পুরস্কার, স্ক্রিন পুরস্কার সহ ভাট এযাবৎ ৫২টি পুরস্কার এবং ৪৪টি মনোনয়ন পেয়েছেন।

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

উৎস

  • জোশি, সুমিত (২০১৫)। "আলিয়া ভাট"। Bollywood Through Ages (ইংরেজি ভাষায়) (১ম সংস্করণ)। বেস্ট বুক রিড্‌স। পৃষ্ঠা ২৩৭। আইএসবিএন 9781311676696 

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ