কালিলা ওয়া-দিমনা

উপাসনা সংগ্রহ

কালিলা ওয়া-দিমনা বা কেলিলেহ ও দেমনেহ (আরবি: كليلة ودمنة; ফার্সি: کلیله و دمنه) হলো উপকথার একটি সংগ্রহ। বইটি পনেরোটি অধ্যায় নিয়ে গঠিত যেখানে অনেক কল্পকাহিনী রয়েছে এবং যেখানে চরিত্ররা সবাই পশু। একটি উল্লেখযোগ্য প্রাণী চরিত্র হল সিংহ, যে রাজার ভূমিকা পালন করে; তার একটি ভৃত্য বলদ রয়েছে, নাম শেত্রেবাহ। কালিলা ওয়া দিমনা শিরোনামের জন্তু দুটি হলো দুটি শৃগাল। উভয়েই গল্পের বর্ণনাকারী এবং প্রধান চরিত্র হিসাবে উপস্থিত হয়েছে। এর সম্ভাব্য উৎস সংস্কৃত পঞ্চতন্ত্র। ১৩ শতকের পর থেকে পাণ্ডুলিপিতে থাকা চিত্র সহ বইটি অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।

শিরোনামের দুই শৃগাল, কালিলা ও দিমনা। আরবি চিত্র, ১২২০
লেখকইবনুল মুকাফফা'
ভাষাআরবি, মধ্য ফার্সি
ধরনজন্তুর গল্প

উৎপত্তি

বইটি আনুমানিক ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সংস্কৃত পাঠ পঞ্চতন্ত্রের উপর ভিত্তি করে লেখা। বোরজুয়া এটিকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে মধ্য ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন।[১][২][৩] এটি পরবর্তীতে অষ্টম শতাব্দীতে ফার্সি ইবনুল মুকাফফা' দ্বারা আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হয়।[৪] কার্টলির রাজা ষষ্ঠ ভাখতাং ১৮ শতকে একে ফার্সি থেকে জর্জিয়ান ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন।[৫] পরে তাঁর কাজটি তাঁর পরামর্শদাতা সুলখান-সাবা অরবেলিয়ানি সম্পাদনা করেছিলেন। কাখেতির রাজা ডেভিড প্রথম -এর একটি পূর্বের অসমাপ্ত অনুবাদের সাথে এই লেখাটি সম্ভাব্য মূল পাঠ্য নির্ধারণ করার সময় একটি সহায়ক পাঠ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।[৬]

সারমর্ম

দার্শনিক বিদপাই রাজা ড্যাবশেলিমকে পরিদর্শন করতে আসেন এবং তাঁকে নররূপ আরোপিত প্রাণীদের (যে সব দেবতা, প্রকৃতি, জীবজন্তু ইত্যাদিতে মানুষের রূপ বা নরত্ব আরোপ করা হয়) গল্পের একটি সংকলন বলেন, যেগুলির নীতিবাক্য একজন রাজার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গল্পগুলি তিনি বলেছিলেন ড্যাবশেলিমের কাছ থেকে উপমা দেওয়ার অনুরোধের প্রতিক্রিয়ায়। গল্পগুলি রাশিয়ান পুতুলের বিন্যাস অনুসরণ করে, তারা নিজেদের মধ্যে জড়িয়ে আছে এবং তাদের গভীরতায় মূল কথা নিহিত আছে। পনেরটি প্রধান গল্প আছে, যারা কাঠামো গল্প হিসেবে কাজ করছে। তার মধ্যে আরও অনেক গল্প আছে। কালিলা এবং দিমনা নামে দুটি শৃগাল, গল্পের বর্ণনাকারী এবং তারা উভয়েই প্রধান হবার বৈশিষ্ট্যযুক্ত। তারা বাঙ্কালা সিংহ রাজার দরবারে কাজ করে। কালিলা তার অনেক কিছু নিয়ে খুশি, যেখানে দিমনা খ্যাতি অর্জনের জন্য ক্রমাগত সংগ্রাম করে। গল্পগুলি মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্থাপিত রূপক, এবং কল্পকাহিনীর পদ্ধতিতে মানুষের জীবনকে চিত্রিত করে।

পাণ্ডুলিপি

পাঠ্যের পাণ্ডুলিপি বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান রয়েছে এবং বিভিন্ন ভাষায় তাকে অনুবাদ করা হয়েছে। উপকথার সাথে সামঞ্জস্য রেখে চিত্রও রয়েছে।

আনুমানিক ১২২০ সংস্করণ (বিএনএফ আরাবে ৩৪৬৫)

কালিলা ওয়া দিমনার এই সংস্করণটি এখন বিবলিওতেক নাসিওনাল দ্য ফ্রঁসে (বিএনএফ আরাবে ৩৪৬৫) আছে।[৭] এটি ১৩ শতকের প্রথম চতুর্থাংশের ( তারিখ আনুমানিক ১২২০ খ্রিস্টাব্দ) রচনা।[৭]

১৩১৩ সংস্করণ (বিএনএফ ল্যাটিন ৮৫০৪)

কালিলা ওয়া দিমনার ফরাসি অনুবাদ, রেমণ্ড ডি বেজিয়ার্স, ১৩১৩ খ্রিস্টাব্দের রচনা। এখন বিবলিওতেক নাসিওনাল দ্য ফ্রঁসে (বিএনএফ ল্যাটিন ৮৫০৪) আছে। [১০]

অন্যান্য সংস্করণ

ঐতিহ্য

কালিলা ও দিমনার মধ্য ফার্সি পাণ্ডুলিপির ইবনে আল-মুকাফ্ফার অনুবাদকে আরবি ও বিশ্ব সাহিত্যের একটি শ্রেষ্ঠ রচনা বলে মনে করা হয়।[১১][১২] ১৪৮০ সালে, ইয়োহানেস গুটেনবার্গ আন্টন ফন ফোরের জার্মান সংস্করণ, বুচ ডের বেইসপিলে ডের আলটেন উইজেন (জার্মান: Buch der Beispiele der alten Weisen) প্রকাশ করেন। লা ফন্টেইন, তাঁর দ্বিতীয় সংকলনের উপকথার মুখবন্ধে স্পষ্টভাবে "ভারতীয় ঋষি পিলপে" এর প্রতি তাঁর ঋণ স্বীকার করেছেন।[১৩] সংগ্রহটি নাটক,[১৪][১৫][১৬] কার্টুন,[১৭] এবং ধারাভাষ্যমূলক রচনায় রূপান্তরিত হয়েছে।[১৮][১৯]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

উৎসসমূহ

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Panchatantraটেমপ্লেট:Islamic manuscripts

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ