তোষা পাট
তোষা পাট বা নালিতা পাট (ইংরেজি: Corchorus olitorius) যা বগীপাট, গুটিপাট ও পশ্চিম আফ্রিকীয় সোরেল[২] নামেও পরিচিত–হল মালভেসি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির গুল্ম। সাদা পাটের সাথে এটি পাটের আঁশের প্রাথমিক উৎস।[৩][৪] এর পাতা ও কচি ফল সবজি হিসাবে ব্যবহার করা হয় এবং এর শুকনো পাতা চা ও ঘন স্যুপ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর বীজও ভোজ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।[৩]
তোষা পাট | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | উদ্ভিদ (প্লান্টি) |
গোষ্ঠী: | সংবাহী উদ্ভিদ ট্র্যাকিওফাইট |
ক্লেড: | সপুষ্পক উদ্ভিদ (অ্যাঞ্জিওস্পার্মস) |
ক্লেড: | ইউডিকটস |
গোষ্ঠী: | রোসিদস |
বর্গ: | Malvales |
পরিবার: | Malvaceae |
গণ: | Corchorus L. |
প্রজাতি: | C. olitorius |
দ্বিপদী নাম | |
Corchorus olitorius L. | |
প্রতিশব্দ[১] | |
|
উৎস ও ইতিহাস
তোষা পাট আফ্রিকায় না এশিয়ায় উদ্ভূত হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। কিছু গবেষণা বিবেচনা করে যে, এটি ইন্দো-বর্মী এলাকা বা ভারত থেকে এর সাথে সম্পর্কিত অন্য প্রজাতিসমূহের সাথে এসেছে। কেউ উল্লেখ করেন যে, আফ্রিকায় এর বৃহত্তর জেনেটিক বৈচিত্র্য রয়েছে এবং কর্কোরাস প্রজাতিতে এটির মতো প্রচুর সংখ্যক বন্য প্রজাতি রয়েছে। তবে যেখানেই এর উদ্ভব হোক, উভয় মহাদেশে দীর্ঘকাল ধরে এর চাষাবাদ চালু রয়েছে এবং সম্ভবত গ্রীষ্মমন্ডলীয় আফ্রিকার প্রতিটি দেশে বন্য বা ফসল হিসাবে এটি বেড়ে ওঠে।[৫]
ধ্রুপদী সভ্যতায় প্লিনি লিপিবদ্ধ করেছেন যে, প্রাচীন মিশরে খাদ্য হিসেবে পাট গাছ ব্যবহার করা হত।[৬] তোষা পাট নিকট প্রাচ্যে ইহুদিদের দ্বারাও চাষ করা হতে পারে, যার কারণে একে জিউস পাটও বলা হয়ে থাকে।[৬]
উদ্ভিদবিদ্যা
তোষা পাট একটি খাড়া ভেষজ উদ্ভিদ, যা মোটামুটি শাখাযুক্ত হয় এবং প্রায় ১.৫ মিটার উঁচুতে বৃদ্ধি পায়। যাহোক, যদি আঁশ উৎপাদনের জন্য একে বড় করা হয়, তাহলে এটি ৪ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। এর প্রধান মূল বলিষ্ঠ হয় এবং পরবর্তীতে লোমহীন কাণ্ডে পরিণত হয়, যা সবুজ রঙের একটি ক্ষীণ লাল-বাদামী আভাযুক্ত এবং কখনও কখনও মাটির স্তরে কিছুটা কাঠ হয়ে যায়। এর কাটা কাটা পাতাগুলি ৬ থেকে ১০ সে.মি লম্বা এবং ২ থেকে ৪ সে.মি চওড়া হয়। গাছটি একাকী বা পাতার বিপরীতে দুই-ফুলযুক্ত সাইমে ফুল বহন করে। ফুল একটি ছোট কাণ্ডের শেষ প্রান্তে প্রস্ফুটিত হয়, যা ৫টি বৃত্যংশ, ৫ টি পাপড়ি এবং ১০ টি মুক্ত ও হলুদ মেরুদণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়। ফলটি টোকো আকৃতির হয়, যা ক্ষতবিক্ষত ও ৫টি ভালভের মাধ্যমে ভেদক বিভাগে বিভক্ত হয়। ফলের পরিমাপ ২ থেকে ৮ সেমি দৈর্ঘ্য এবং রং ধূসর-নীল থেকে সবুজ বা বাদামী-কালো পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। প্রতিটি বীজ প্রকোষ্ঠে ২৫ থেকে ৪০টি হয়ে বীজ থাকে, যার যোগফলে প্রতি গাছ ১২৫ থেকে ২০০ টি বীজ পর্যন্ত হয়ে থাকে। [৪][৭]
চাষ
তোষা পাট একটি বার্ষিক ফসল। উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল থেকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় মরুভূমি থেকে আর্দ্র বন জীবন অঞ্চল ও নিম্নভূমি গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এই উদ্ভিদটি ভাল জন্মে। এটি ৪০০ ও ৪২৯০ মি.মি. এর মধ্যে বার্ষিক বৃষ্টিপাত সহ্য করতে পারে ( তবে সর্বোচ্চ ১০০০ মি.মি. প্রতি বছর)[৮]। কিছু জাত জলাবদ্ধতার প্রতি খুবই সংবেদনশীল হয়; বিশেষ করে যখন তারা অল্প বয়সে থাকে। [৯] ১৬.৮ ও ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যবর্তী মাত্রা এর বৃদ্ধির জন্য সর্বোত্তম। [২][১০] এর মাটির জন্য ৪.৫ থেকে ৮.২ পিএইচ সর্বদা প্রয়োজন।[২][১০] উদ্ভিদটি একটি উর্বর, হিউমাস-সমৃদ্ধ এবং ভাল-নিষ্কাশিত পলিমাটি পছন্দ করে; তবে উপ-অনুকূল মাটিতেও ভালো জন্মায়। [১১] বীজ বপনের আগে লাঙ্গল দিয়ে সাবধানে মাটি প্রস্তুত করা হয় এবং ভেজা মৌসুমে লাঙলের সাাথে সাথে বীজ দেওয়া হয় বা মাটির রস শুকানো হয়। বীজ বপনের চব্বিশ ঘন্টা আগে বীজগুলিকে অবশ্যই গরম জলে দশ সেকেন্ডের জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে ( প্রায় ৯৩ সি°[১২]) সুপ্ততা কাটিয়ে উঠতে। [১৩] যদি ছোট বীজকে বালির সাথে মিশ্রিত করা হয় ;তাহলে এটি তাদের বপন করা সহজ করে তোলে।[৮] আর মাটি ভেজা থাকলে বীজ বপনের দুই থেকে তিন দিন পর অঙ্কুরোদগম হয়। তবে কিছু পদ্ধতি মোতাবেক চারার ১০ সেন্টিমিটার উচ্চতার পর রোপণ করা। [৮] গাছগুলি প্রায় ২০-২৫ সে.মি ব্যবধানে সারিবদ্ধভাবে জন্মায় এবং যখন উদ্ভিদটি ৮-২৫ সে.মি উচ্চতা অর্জন করে, তখন এর চারা ৩ থেকে চার বার রেক দিয়ে কাটা হয় এবং দুই থেকে তিন বার আগাছা দমন করা হয়।[৯] গরুর গোবর, কাঠের ছাই এর সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। [৯] এর ফসলের ফলন উচ্চ খনিজ পুষ্টির অবস্থার চেয়ে জলের প্রাপ্যতা ও মাটির জৈব পদার্থে বেশি সাড়া দেয়।[১৩]
চারা গাছের সুরক্ষা
তোষা পাটের জন্যে সবচেয়ে মারাত্মক এবং ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ হল মেলোইডোজিন প্রজাতির নেমাটোড, পাতা খাওয়া পোকা ও শুঁয়োপোকা। যদি পাটের চারা শুকনো হয়, তাহলে রোপণের আট থেকে দশ সপ্তাহ পরে পাতার পোকা ও মাকড়সার আক্রমণের কারণে এর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার ফলে অগ্র অঙ্কুর শুকিয়ে যায়। শস্য ঘূর্ণনের মাধ্যমে নেমাটোডের ক্ষতি কমানো যায়। কীটনাশক প্রয়োগ করাও সম্ভব; তবে ওষুধ ও তা প্রয়োগের সময়টি সাবধানে বেছে নেওয়া উচিত। যেহেতু পোকা পাতাগুলি খাওয়ার জন্য কাটে; তাই যখন পোকা আক্রমণের সময় হয়, তখনই ওষুধ প্রয়োগ করা উচিত।[১৪] পুঁচকে প্রজাতির কিছু পোকা (মেলেসেরাস), অর্ধচক্রীয় বিভিন্ন পোকা (এ্যানোমিস সাবিলেফেরা) ও হলুদ ক্ষুদ্র পরজীবী একধরণের কীট (প্যালিফাগোটার্সোনেমাস লেটাস ) দ্বারাও আক্রমণ লক্ষ করা যায়।[৯] তবে রোগ (ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণ) কীটপতঙ্গের (পোকামাকড় ও নেমাটোডের আক্রমণ) এর মতো গুরুতর নয়। চারা যদি স্যাঁতসেঁতে হয়, তবে পর্যাপ্ত জল ধারণ ক্ষমতাসহ হিউমাস-সমৃদ্ধ মাটিতে ভাল নিষ্কাশন ও চাষের মাধ্যমে এটি হ্রাস করা যেতে পারে। ঋতুর শেষের দিকে শুষ্ক আবহাওয়ায় স্ক্লেরোটিয়াম রোল্ফসির আক্রমণের ফলে কাণ্ডের বন্ধনী শুকিয়ে যেতে পারে। [১৪] কলেটোট্রিচাম দ্বারা সৃষ্ট অ্যানথ্রাকনোজ দাগ ফসলকে সংক্রমিত করতে পারে, কিন্তু কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করে সহজেই তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।[১৫]
ফসল ও ফলন কর্মক্ষমতা
প্রায় ৬ সপ্তাহ পরে ফসল কাটা শুরু করা যেতে পারে; [৮] তখন পুরো গাছটি সরাসরি (পাট উৎপাদনের জন্য) সংগ্রহ করা যেতে পারে অথবা গাছপালার সময় কালে (খাদ্য উৎপাদনের জন্য) কয়েকবার ছাঁটাই করে পাতা কাটা যেতে পারে। অঙ্কুর পুনরুত্থান অত্যন্ত নির্ভর করে বিভিন্নতা, মাটির উর্বরতা, পর্যাপ্ত জল সরবরাহ এবং আগাছা ও কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের উপর। প্রতিটি ফসল কাটার সাথে সাথে ছাঁটাই করা অঙ্কুরের পরিমাণ এবং গুণমান হ্রাস পায়। চাষের পরিস্থিতিতে এটির ফলন সাধারণত ভোজ্য পাতা প্রতি হেক্টরে প্রায় ২.৫ টন পর্যন্ত পৌঁছায়। পরীক্ষামূলক অবস্থার অধীনে ও খুব উচ্চ উর্বরতা প্রয়োগের সাথে প্রতি হেক্টরে প্রায় ২৮ টন পর্যন্তও ফলন পাওয়া গিয়েছে।[১৩]
ফসল কাটা ও উৎপাদনের পর
তাজাপাতা ব্যবহারের জন্য পাতা ৮ °সে (৪৬ °ফা) এর উপরে সংরক্ষণ করা উচিত এবং তা ১৫ °সে (৫৯ °ফা) এর নিচে হওয়া উচিত। নিম্ন তাপমাত্রা ১ থেকে ৮ °সে (৩৪ থেকে ৪৬ °ফা) পাতাগুলিকে বাদামী করে তোলে এবং অত্যধিক উচ্চ সংরক্ষণের তাপমাত্রায় পাতাগুলি হলুদ হয়ে যায়।[১৬] বীজ উৎপাদন করার জন্যে ফুল ফোটার ছয় সপ্তাহ পর ফল সংগ্রহ করা যায়। শুকনো বীজ কোষগুলি মাড়াই করা হয় এবং ভালভাবে সিল করা বয়ামে আট থেকে বারো মাস সংরক্ষণ করা যায়। [৮][১৩] সংরক্ষণের জন্য আর্দ্রতা প্রায় নয় শতাংশ হওয়া উচিত। [১৩]
জৈব রসায়ন
পাতা
তোষা পাটের পাতায় প্রধানত বহু রাসায়নিক যৌগের সমৃদ্ধ উৎস রয়েছে বলে জানা যায়। পাটের পাতায় প্রোটিন, চর্বি, শর্করা, আঁশ, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ছাই, আয়রন, সোডিয়াম, ফসফরাস, বিটা-ক্যারোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন ও ভিটামিন সিসহ প্রায় সতেরটি সক্রিয় পুষ্টিসম্পন্ন উপাদান রয়েছে। [১৭]
বীজ
তোষা পাটের বীজের প্রধান পুষ্টির তুলনামূলক একটি বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, বীজের অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়ার পর এটির প্রোটিনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে গবেষণাকৃত বীজে চিনির মাত্রা কমে গেছে।[১৮] উল্লিখিত এই গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়ার সময় তোষা পাটের বীজের পুষ্টির মাত্রা পরিবর্তিত হয়।
ভবিষ্যত সম্ভাবনাগুলি
তোষা পাট পুষ্টির দ্রবণসহ একটি ভাসমান পদ্ধতিতে জন্মাতে পারে এবং শিশু পাতা তৈরি করতে পারে, যা ইউরোপের তাজা কাটা শাক শিল্পের জন্য আকর্ষণীয় হবে।[১৯]
ব্যবহারসমূহ
আঁশ ও পোশাকজাত ব্যবহার
তোষা পাট ও সাদা পাটের বাকলের কলা থেকে আঁশ তৈরি করা হয়; বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে, যদিও তোষা পাট থেকে তৈরি আঁশ কম মানের বলে মনে করা হয়। চূড়ান্ত আঁশগুলি ৩ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য হয় এবং ২.৪ মি.মি. ব্যাসসহ সোনালি ও রেশমী দেখায়।[২০] প্রথম গাছের ডাঁটা কাটা হয় এবং তারপরে টানাটানি, তরঙ্গায়ণ, জাগ দেওয়া, ভাঙ্গণ এবং চিরুনি দিয়ে আঁচড়ানোর প্রক্রিয়াজাত করা হয়ে থাকে, যাতে অবাঞ্ছিত কাঠের উপাদান থেকে ভালোভাবে আলাদা করা সূক্ষ্ম তন্তু পাওয়া যায়। তারপর তন্তুগুলি নিরাময় এবং শুকানো হয়। অনেক টেক্সটাইল পাট দিয়ে তৈরি হয়; যেমন: সুতা, বস্তা, কার্পেটজাত কাপড় ও অন্যান্য মিশ্রিত টেক্সটাইল। এটি স্বরসমষ্টি ও তন্ত্রের কাঁচামাল হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।[২১]
আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন ধরনের পাটের পাতা ও কাণ্ড খাদ্য হিসেবে জন্য ব্যবহার করা হয়, যেখানে এর আঁশকে খুব কম গুরুত্ব দেওয়া হয়।[৫]
রন্ধনসম্পর্কীয় ব্যবহার
তোষা পাট সিরিয়া, লেবানন ও মিশরে একটি টাটকা তরকারী হিসাবে চাষ করা হয়। এটির রন্ধনসম্পর্কিত ব্যবহার অন্তত প্রাচীন মিশরীয়দের কাছে ফিরে যায়।[৬] এটি কোত দিভোয়ার, বেনিন, নাইজেরিয়া, ঘানা, ক্যামেরুন, সুদান, উগান্ডা, কেনিয়া, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়েতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শাক। এটি ক্যারিবীয় অঞ্চল, ব্রাজিল, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, বাংলাদেশ, জাপান এবং চীনেও চাষ করা হয় এবং একটি তরল তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। এর পাতাগুলি উত্তর-পূর্ব ভারতের বড়ো জনগোষ্ঠীর কাছে একটি বিশেষ প্রিয় বস্তু, যারা শুকনো পাতার সাথে চর্বিযুক্ত শূকরের মাংস ও নারজি নামক ক্ষারের সাথে মিশ্রিত করে একটি তরল খাবার তৈরি করে।
নাইজেরিয়া ও জাম্বিয়াতে, এর পাতাগুলিকে একটি আঠালো তরল তৈরি করতে সিদ্ধ করা হয়, যা শিমুল আলু দিয়ে পরিবেশন করা হয় (জাম্বিয়াতে এনশিমার সাথে পরিবেশন করা হয় ); অন্যথায় এটি বরং শুষ্ক হিসেবে ভোজ্য হয়। [৫] ভিয়েতনামী রন্ধনশৈলীতে, এটি রাউ ডে ( rau đay ) নামে পরিচিত এবং চিংড়ি দিয়ে এর একটি স্যুপ তৈরি করা হয়। মিশর ও ফিলিস্তিনে, মুলুকিয়াহ এর সিদ্ধ পাতা থেকে তৈরি একটি খাবার।
পুষ্টি
পাটের ভোজ্য অংশ হল এর কাঁচা পাতা। পটাসিয়াম, ভিটামিন বি৬, আয়রন, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি-র সমৃদ্ধি ফসলটিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে, যেখানে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টহীন লোকেরা একে একটি প্রধান শস্য হিসেবে তাদের শক্তির চাহিদার একটি উচ্চ অংশ পূরণ করে। এই সবজিটি মূলত আফ্রিকা এবং এশিয়ায় খাওয়া হয়ে থাকে। একটি ঐতিহ্যবাহী সিরীয় , লেবাননী, তিউনিসীয়, তুর্কি সাইপ্রিয়ট, জর্ডানীয়, ফিলিস্তিনি ও মিশরীয় খাবার তোষা পাটের পাতা দিয়ে তৈরি করা হয়, যা মুলুকিয়াহ নামে পরিচিত।
ঔষধি দিক
পাটের পাতার সেবন প্রশমক, ক্ষয়কারক, মূত্রবর্ধক, ল্যাকটাগগ, শোধনকারী ও বলবর্ধক বলে জানা যায়। এটি ব্যথা, আমাশয়, অন্ত্রপ্রদাহ, জ্বর, হৃদয়জাত ব্যথা ও টিউমারের জন্য একটি লোক–প্রতিকার।[২২][২৩] আয়ুর্বেদবিদরা এটির পাতা ব্যবহার করে অ্যাসাইটিস, ব্যথা, অর্শরোগ ও নিওপ্লাজমের জন্য। এছাড়াও পাতা সিস্টাইটিস, ডিসুরিয়া, জ্বর এবং প্রমোহ রোগে ব্যবহৃত হয়। ঠান্ডা আধান ক্ষুধা ও শক্তি পুনরুদ্ধার করতে এটি ব্যবহার করতে বলা হয়। [২৪] এর পাতা একটি প্রদাহ বিরোধী হিসাবে কাজ করতে পারে এবং এর পাতার গ্যাস্ট্রোপ্রোটেকটিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।[২৫]
গ্যালারি
- পাটের ভোজ্য পাতা।
উদ্ভিদবিদ্যা-সম্পর্কীয় গ্যালারি
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- Ya Tang; Michael G. Gilbert; Dorr, Laurence J. (২০০৭), "Corchorus olitorius Linnaeus", Flora of China online, 12