থাকসিন সিনাওয়াত্রা
থাকসিন সিনাওয়াত্রা (থাই: ทักษิณ ชินวัตร; </noinclude>আরটিজিএস: Thaksin Chinnawat; থাই উচ্চারণ: [tʰák.sǐn tɕʰīn.ná.wát]; জন্ম: ২৬ জুলাই, ১৯৪৯) চিয়াং মাই প্রদেশের স্যান কামফায়েং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী থাইল্যান্ডের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ধনকুবের। ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তার ছোট বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা ২০১১ থেকে ২০১৪ মেয়াদে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
থাকসিন সিনাওয়াত্রা এমপিচ এমডব্লিউএম টিসিডব্লিউ জিসিওএন জিসিপিএস | |
---|---|
ทักษิณ ชินวัตร | |
থাইল্যান্ডের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৩ মে, ২০০৬ – ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৬ | |
সার্বভৌম শাসক | ভূমিবল অতুল্যতেজ |
পূর্বসূরী | চিতচাই ওয়ানাসাথিত (ভারপ্রাপ্ত) |
উত্তরসূরী | সোনথি বুনিয়ারাগলিন (অভ্যুত্থানকারী নেতা) |
কাজের মেয়াদ ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০০১ – ৫ এপ্রিল, ২০০৬ | |
সার্বভৌম শাসক | ভূমিবল অতুল্যতেজ |
পূর্বসূরী | চুয়ান লিকপাই |
উত্তরসূরী | চিতচাই ওয়ানাসাথিত (ভারপ্রাপ্ত) |
থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৩ জুলাই, ১৯৯৫ – ৮ নভেম্বর, ১৯৯৭ | |
প্রধানমন্ত্রী | বানহার্ন সিল্পা-আর্চা চভালিত ইয়ংচাইয়ুধ |
কম্বোডিয়ার বিশেষ অর্থনৈতিক পরামর্শক | |
কাজের মেয়াদ ৪ নভেম্বর, ২০০৯ – ২৩ আগস্ট, ২০১০ | |
প্রধানমন্ত্রী | হুন সেন |
পূর্বসূরী | পদ সৃষ্ট |
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | স্যান কামফায়েং, চিয়াং মাই, থাইল্যান্ড | ২৬ জুলাই ১৯৪৯
জাতীয়তা | থাই মন্টেনেগ্রিন (২০০৯-বর্তমান) |
রাজনৈতিক দল | থাই রাক থাই পার্টি (১৯৯৮-২০০৬)[১] |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | পালাং ধর্ম পার্টি (১৯৯৪-৯৮) |
দাম্পত্য সঙ্গী | পতজামান না পমবেজরা (১৯৭৬-২০০৮)[২] |
বাসস্থান | দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | রয়্যাল পুলিশ ক্যাডেট একাডেমি ইস্টার্ন কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয় স্যাম হস্টন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় |
জীবিকা | ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা পুলিশ কর্মকর্তা |
ধর্ম | থেরবাদ বৌদ্ধ |
স্বাক্ষর |
বংশ বৃত্তান্ত
থাকসিনের প্র-পিতামহ চীনা বংশোদ্ভূত সেং সাইখু ১৮৬০-এর দশকে শ্যামে অবতরণ করেন ও ১৯০৮ সালে চিয়াং মাইয়ে আবাস গড়েন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র চিয়াং সাইখু ১৮৯০ সালে জন্মগ্রহণ করেন ও সায়েং সামানা নাম্নী এক থাই রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। চিয়াংয়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র সাক ১৯৩৮ সালে চীনা বিরোধী আন্দোলনের সময় থাই গোত্র নাম সিনাওয়াত্রা গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই তাদের পরিবার সিনাওয়াত্রা পদবী ধারণ করেন।[৩]
প্রারম্ভিক জীবন
থাকসিনের জন্মকালীন সময়ে সিনাওয়াত্রা পরিবার অন্যতম ধনী পরিবার ছিল ও চিয়াং মাইয়ে অন্যতম প্রভাবশালী পরিবাররূপে আখ্যায়িত হয়। পনের বছর বয়স পর্যন্ত সেন কামফেং গ্রামে অবস্থান করেন। এরপর তিনি চিয়াং মাই শহরের মন্টফোর্ট কলেজে ভর্তি হন। বাবার নির্দেশিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[৪]
আর্মড ফোর্সেস একাডেমিস প্রিপারেটরি স্কুলে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন।[৫] এরপর তিনি থাই পুলিশ ক্যাডেট একাডেমিতে অধ্যয়ন করেন।
কর্মজীবন
১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর রয়্যাল থাই পুলিশে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন কেনটাকি ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিমিনাল জাস্টিস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিন বছর পর টেক্সাসের স্যাম হস্টন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে একই বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। দেশে ফিরে ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট হন। ১৯৮৭ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে কমিশন পান ও পুলিশ বাহিনী ত্যাগ করেন।
এক সময় তিনি পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৮৭ সালে পুলিশ বাহিনী থেকে পদত্যাগ করে এডভান্সড ইনফো সার্ভিস মোবাইল ফোন অপারেটর, আইটি ও শিন কর্পোরেশন নামের টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান গড়েন।[৬] এরফলে তিনি থাইল্যান্ডের অন্যতম ধনী ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৯৪ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯৮ সালে থাই রাক থাই পার্টি (টিআরটি) প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে দেশব্যাপী ব্যাপক বিজয় পায়। এরফলে তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
ক্ষমতায় আসার সাড়ে চার বছরের মধ্যে তার সরকার দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার[৭] ন্যায় পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।[৮][৯] থাকসিন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন যাতে আড়াই হাজারেরও অধিক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে। মুসলিম অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কঠোর হস্তে দমন করেন।
গণতান্ত্রিক পন্থায় থাইল্যান্ডের প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে সরকার পরিচালনা করেন।[১০] ২০০৫ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে তিনি পুণঃনির্বাচিত হন।
সমালোচনা
তিনি তার প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে বিলিয়ন ডলারেরও অধিক মূল্যে করবিহীন অবস্থায় বিক্রয় করার পর ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন।[১১][১২] দূর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্টতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে থাকসিনের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের সূচনা ঘটে যা পিপলস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্র্যাসি বা হলুদ শার্ট নামে পরিচিতি পায়।[১৩] ফলশ্রুতিতে থাকসিন নামমাত্র নির্বাচন আহ্বান করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষীয় দলগুলো এতে অংশ নেয়নি ও সাংবিধানিক আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৬ তারিখে সামরিক অভ্যুত্থানে তার সরকারের পতন ঘটে।[১৪] তার দলকে অবৈধ ঘোষণাসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হয়।[১৫] এরপর তিনি স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান ও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ তারিখে থাইল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন।[১৬] ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে তার অনুপস্থিতিতে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।[১৭] ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টিসহ এর উত্তরাধিকারী সংগঠন ফিউ থাই পার্টি, লাল শার্ট আন্দোলন বা ইউনাইটেড ফ্রন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যাগেইনস্ট ডিক্টেটরশীপের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থান করেও থাই রাজনীতিতে প্রভাববিস্তার করছেন।
ব্যক্তিগত জীবন
পুলিশ জেনারেলের কন্যা পতজামান দামাপংয়ের সাথে জুলাই, ১৯৭৬ সালে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।[১৮] তাদের সংসারে এক পুত্র ও দুই কন্যা রয়েছে। কিন্তু, ২০০৮ সালের তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।[১৯] এরপর থেকেই দামাপং তার মায়ের গোত্র নাম ব্যবহার করছেন।[২০] থাকসিনের ছোট বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা ২০১১ সালে ভাইয়ের অনুরোধে থাকসিনপন্থী ফিউ থাই পার্টিতে নেতৃত্ব দেন ও ৩ জুলাই, ২০১১ তারিখে দেশের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন।[২১]
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্ঝী
- Bidhya Bowornwathana (২০০৪)। "Thaksin's model of government reform: Prime Ministerialisation through "a country is my company" approach"। Asian Journal of Political Science। 12 (1): 135–153। ডিওআই:10.1080/02185370408434237।
- Pavin Chachavalpongpun (২০১০)। Reinventing Thailand: Thaksin and His Foreign Policy। Singapur: Institute of Southeast Asian Studies। আইএসবিএন 978-616-215-000-5।
- John Funston, সম্পাদক (২০০৯), Divided over Thaksin: Thailand's Coup and Problematic Transition, Singapore: Institute of Southeast Asian Studies, আইএসবিএন 978-981-230-961-7
- Kevin Hewison (২০১০)। "Thaksin Shinawatra and the reshaping of Thai politics"। Contemporary Politics। 16 (2): 119–133। ডিওআই:10.1080/13569771003783810।
- Duncan McCargo; Ukrist Pathmanand (২০০৫), The Thaksinization of Thailand, Copenhagen: NIAS Press, আইএসবিএন 87-91114-46-2
- Pasuk Phongpaichit; Chris Baker (২০০৯), Thaksin (2nd সংস্করণ), Silkworm Books, আইএসবিএন 9789749511794
- Pasuk Phongpaichit; Chris Baker (২০০৮)। "Thaksin's populism"। Journal of Contemporary Asia। 38 (1): 62–83। ডিওআই:10.1080/00472330701651960।
বহিঃসংযোগ
- Profile: Thaksin Shinawatra at BBC News
- Thaksin Shinawatra Interview 2008—Arabian Business
- Thaksin interview with Radio France Internationale/France 24 TV in English
- সি-এসপিএএন-তে উপস্থিতি
- গ্রন্থাগারে থাকসিন সিনাওয়াত্রা সম্পর্কিত বা কর্তৃক কাজ (ওয়ার্ল্ডক্যাট ক্যাটালগ) (ইংরেজি)
- আল জাজিরা ইংরেজিতে থাকসিন সিনাওয়াত্রা সংগৃহীত সংবাদ ও মন্তব্য।
- Thaksin Shinawatra ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ অক্টোবর ২০১১ তারিখে collected news and commentary at Asian Correspondent
- Thaksin Shinawatra collected news and commentary at Breaking Legal News
- থাকসিন সিনাওয়াত্রা দ্যা গার্ডিয়ান-এর সংবাদ ও ধারাভাষ্যের সংগ্রহশালা।
- "থাকসিন সিনাওয়াত্রা সংগৃহীত খবর এবং ভাষ্য"। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)।
- থাকসিন সিনাওয়াত্রা দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর সংবাদ ও ধারাভাষ্যের সংগ্রহশালা।
- High tension in Thailand ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে – a chronology of events in the political crisis of 2005–2006
- NewMandala ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে - Southeast Asia Politics, hosted by the Australian National University (ANU) College of Asia and the Pacific.
- John Berthelsen, Asia Sentinel (৪ আগস্ট ২০১০)। "Thaksin and Thailand's contentious foreign policy"। Book review। Asian Correspondent। ১৭ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল (news, blog) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১১।
Reinventing Thailand: Thaksin and His Foreign Policy. Pavin Chachavalpongpun, Institute of Southeast Asian Studies and Silkworm Books. 354 pp. Paperback.
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী চুয়ান লিকপাই | থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ২০০১-২০০৬ | উত্তরসূরী চিতচাই ওয়ানাসাথিত ভারপ্রাপ্ত |
পূর্বসূরী চিতচাই ওয়ানাসাথিত ভারপ্রাপ্ত | থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ২০০৬ | উত্তরসূরী সোনথি বুনিয়ারাতগলিন প্রশাসনিক পুণর্গঠন কাউন্সিলের সভাপতি |
নতুন দপ্তর | কম্বোডিয়ার বিশেষ অর্থনৈতিক পরামর্শক ২০০৯-২০১০ | পদ বিলুপ্ত |
ব্যবসা অবস্থান | ||
পূর্বসূরী জন ওয়ার্ডল | ম্যনচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবের সভাপতি ২০০৭-২০০৮ | উত্তরসূরী খালদুন আল মুবারক |