বায়ুমণ্ডল

কোনও গ্রহ বা উপগ্রহকে বেষ্টনকারী বায়বীয় (গ্যাসীয়) পদার্থের স্তর

বায়ুমণ্ডল (গ্রীক শব্দ ἀτμός (এটমোস) থেকে, যার অর্থ 'গ্যাস', এবং σφαῖρα (sphaira), যার অর্থ 'বল' বা 'বলয়'[১][২]) হলো কোন গ্রহ বা পর্যাপ্ত ভরসম্পন্ন কোন কঠিন পদার্থের চারদিকে বেষ্টন করে থাকা গ্যাসের এক বা একাধিক স্তর, যা বস্তুটি তার মহাকর্ষ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। বস্তুর মহাকর্ষ যদি যথেষ্ট বেশি হয় এবং বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা যদি কম থাকে তাহলে এই বায়ুমণ্ডল অনেকদিন টিকে থাকতে পারে।

মঙ্গল গ্রহের পাতলা বায়ুমণ্ডল.ও গ্রহের বাইরের আবরন
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল নাইট্রোজেন (প্রায় ৭৮%), অক্সিজেন (প্রায় ২১%), আর্গন (প্রায় ০.৯%), কার্বন ডাই অক্সাইড (০.১৩%) এবং সামান্য পরিমাণে অন্যান্য গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত।[৩] অক্সিজেন বেশিরভাগ জীবের শ্বসনের জন্য ব্যবহৃত হয়; নিউক্লিওটাইড এবং অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরিতে ব্যবহৃত অ্যামোনিয়ায় রূপান্তর করতে ব্যাকটিরিয়া এবং বজ্রপাত দ্বারা নাইট্রোজেন সংবদ্ধকরণ হয়; এবং কার্বন ডাই অক্সাইড উদ্ভিদ, শৈবাল এবং সায়ানোব্যাকটেরিয়ার সালোকসংশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। বায়ুমন্ডল সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ, সৌর বায়ু এবং মহাজাগতিক রশ্মির দ্বারা জিনগত ক্ষয়ক্ষতি থেকে জীবিত প্রাণীদের রক্ষা করতে সহায়তা করে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বর্তমান গঠনটি জীবিত প্রাণীর দ্বারা প্যালিওটমোস্ফিয়ারের কোটি কোটি বছরের জৈব রাসায়নিক পরিবর্তন

নাক্ষত্রিক বায়ুমণ্ডল শব্দটি একটি তারার বাইরের অঞ্চল বর্ণনা করে এবং যা সাধারণত অস্বচ্ছ আলোকমণ্ডলের উপরের অংশটি অন্তর্ভুক্ত করে। পর্যাপ্ত কম তাপমাত্রাযুক্ত তারাগুলোতে যৌগিক অণুর বহিঃস্থ বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে।

চাপ

কোন নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হল সেই স্থানের উপরে বায়ুমণ্ডলের উল্লম্ব কলামের ওজন দ্বারা নির্ধারিত পৃষ্ঠের প্রতি একক ক্ষেত্রের দৈর্ঘ্যের উপর প্রযুক্ত বল। পৃথিবীতে বায়ুচাপের একক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আদর্শ অবস্থায় বায়ুমণ্ডলের চাপ (এটিএম) এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, এটি ১০১.৩২৫ কিলোপ্যাসকেল (kPa) (৭৬০ টর বা ১৪.৬৯৬ পিএসআই)। এটি ব্যারোমিটার দিয়ে পরিমাপ করা হয়।

উপরের গ্যাসের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার কারণে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে হ্রাস পায়। বায়ুমণ্ডলের চাপ যে উচ্চতায় ফ্যাক্টর e অনুসারে হ্রাস পায় (এটি একটি অমূলদ সংখ্যা এর মান ২.৭১৮২৮...) তাকে স্কেল উচ্চতা বলে এবং H দ্বারা একে চিহ্নিত করা হয়। একই তাপমাত্রাযুক্ত বায়ুমণ্ডলের ক্ষেত্রে স্কেল উচ্চতা তাপমাত্রার সাথে সমানুপাতিক এবং শুষ্ক বায়ুর গড় আণবিক ভর এবং সেই স্থানে মহাকর্ষের স্থানীয় ত্বরণের ব্যস্তানুপাতিক। এই জাতীয় আদর্শ বায়ুমণ্ডলের জন্য চাপ উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রুত হ্রাস পায়। তবে তাপমাত্রার সাথে বায়ুমণ্ডল পরিবর্তনশীল, তাই কোন নির্দিষ্ট উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ নির্ধারণ করা আরও জটিল।

নির্গমন

গ্রহসমূহের পৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণ উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক হয়। উদাহরণস্বরূপ দৈত্যকার গ্রহ বৃহস্পতির মহাকর্ষীয় শক্তি হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের মতো হালকা গ্যাস ধরে রাখে যা নিম্ন মাধ্যাকর্ষণযুক্ত বস্তু থেকে মুক্ত হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, সূর্য থেকে দূরত্ব ঐ স্থানের বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসকে উত্তাপের জন্য প্রাপ্য শক্তি নির্ধারণ করে যেখানে তার অণুগুলোর তাপীয় গতির কিছু অংশ গ্রহের মুক্তিবেগকে ছাড়িয়ে যায় ফলে এগুলো গ্রহের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে যায়। তাই দূরবর্তী এবং শীতল টাইটান, ট্রাইটন এবং প্লুটো তাদের তুলনামূলকভাবে কম মাধ্যাকর্ষণ সত্ত্বেও তারা তাদের বায়ুমণ্ডল ধরে রাখতে সক্ষম।

যেহেতু গ্যাসের অণুগুলো বিস্তৃত পরিসরে চলতে পারে তাই মহাকাশে গ্যাসের মন্থর নি:সারণ এখানে সর্বদা কিছুটা দ্রুত হবে। একই তাপীয় গতিশক্তিতে হালকা অণুগুলো ভারীগুলোর চেয়ে দ্রুত চলাচল করে এবং তাই কম আণবিক ওজনের গ্যাসগুলো উচ্চ আণবিক ওজনের গ্যাসের তুলনায় অধিক দ্রুত অপব্যয়িত হয়। ধারণা করা হয় যে সৌর অতিবেগুনী বিকিরণের মাধ্যমে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের ফোটোডিসোসিয়েশন হওয়ার ফলে হাইড্রোজেন মুক্ত হয়ে যাওয়ায় কারণে শুক্র এবং মঙ্গল গ্রহ তাদের অনেক পানি হারাতে পারে। সাধারণত সৌর বায়ু হাইড্রোজেনের নির্গমনকে প্রবলভাবে বাড়িয়ে তোলে, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এটিকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। যাইহোক বিগত ৩ বিলিয়ন বছরে পৃথিবীর চৌম্বকীয় মেরু অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেনের নিট ২% মেরুজ্যোতির ক্রিয়াকলাপের কারণে অপব্যয়িত হতে পারে।[৪] চূড়ান্ত ফলাফল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্গমন প্রক্রিয়াগুলো বিবেচনায় নিয়ে আসে, এটি একটি স্বকীয় চৌম্বকীয় ক্ষেত্র কোন গ্রহকে বায়ুমণ্ডলীয় নির্গমনের হাত থেকে রক্ষা করে না এবং কিছু চৌম্বকীয় অঞ্চলে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের উপস্থিতি নির্গমনের হার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।[৫]

বায়ুমণ্ডল হ্রাসের কারণ হওয়ার অন্যান্য প্রক্রিয়াসমূহ হচ্ছে সৌর বায়ু দ্বারা চালিত স্পুটারিং, প্রভাব ক্ষয়, মৃত্তিকা আবহবিকার এবং সিকোয়েস্ট্রেশন - যাকে কখনও কখনও "হিমশীতল" হিসাবে উল্লেখ করা হয় - শিলার ধ্বংসাবশেষ এবং মেরু বরফ টুপি।

ভূসংস্থান

পর্বতবহূল ভূতলে বায়ুমণ্ডলের নাটকীয় প্রভাব রয়েছে। যে সকল বস্তুর কোন বায়ুমণ্ডল নেই বা কেবলমাত্র একটি এক্সোস্ফিয়ার রয়েছে তাদের খাদে আবৃত অঞ্চল রয়েছে। বায়ুমণ্ডল না থাকলে গ্রহটি উল্কা থেকে কোন সুরক্ষা তৈরি করতে পারে না এবং এগুলোর সবগুলোই উল্কাপিণ্ড হিসাবে ভূ-পৃষ্ঠে আঘাত হানে এবং খাদ তৈরি করে।

বেশিরভাগ উল্কা গ্রহের পৃষ্ঠে আঘাত হানার আগে উল্কাপিণ্ড হিসাবে জ্বলে উঠে। যখন উল্কা আঘাত হানে তখন প্রায়শই বাতাসের সাথে সংঘর্ষের ফলে তা পুড়ে যায়।[৬] তাই বায়ুমণ্ডলযুক্ত বস্তুগুলোতে খাদের সংখ্যা বিরল।

বায়ু ক্ষয় বায়ুমণ্ডলের সাথে পাথুরে গ্রহের ভূখণ্ড গঠনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান এবং সময়ের সাথে সাথে খাদ এবং আগ্নেয়গিরির প্রভাবসমূহ মুছে ফেলতে পারে। এছাড়াও যেহেতু তরল চাপ ছাড়া তাদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে পারে না, বায়ুমণ্ডল তরলকে পৃষ্ঠতলে অবস্থান করতে সহায়তা করে, যার ফলে হ্রদ, নদী এবং মহাসাগর সৃষ্টি হয়। পৃথিবী এবং টাইটান গ্রহগুলোর পৃষ্ঠতল এবং ভূখণ্ডে তরল রয়েছে বলে জানা যায়, তাতে ধারণা করা হয় যে অতীতে মঙ্গলের পৃষ্ঠ তরল ছিল।

সংযুক্তি

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসসমূহ নীল আলোকে অন্য তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোর চেয়ে বেশি ছড়িয়ে দেয়, ফলে মহাকাশ থেকে দেখলে পৃথিবীকে নীল রঙের দেখায়

একটি গ্রহের প্রাথমিক বায়ুমণ্ডলীয় গঠনটি গ্রহ গঠনের সময় স্থানীয় সৌর নীহারিকার রসায়ন এবং তাপমাত্রার সাথে সম্পর্কিত এবং পরবর্তীকালে অভ্যন্তরীণ গ্যাস নির্গমনের সাথে সম্পর্কিত। মূল বায়ুমণ্ডল গ্যাসের ঘূর্ণয়মান চাকতি দিয়ে শুরু হয়েছিল যা ঘনীভূত হয়ে গ্রহ গঠনের সময় ফাঁকা রিংয়ের একটি সিরিজ গঠনের জন্য ভেঙে পড়েছিল। গ্রহের বায়ুমণ্ডল সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন জটিল কারণে পরিবর্তিত হয়েছে, যার ফলে একেবারে পৃথক পরিণতি পেয়েছে।

শুক্র এবং মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল মূলত কার্বন ডাই অক্সাইড দ্বারা গঠিত সাথে সামান্য পরিমাণে নাইট্রোজেন, আর্গন, অক্সিজেন এবং অন্যান্য গ্যাস রয়েছে।[৭]

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের গঠনটি এটি বজায় রাখে এমন জীবনের উপজাতক দ্বারা মূলত পরিচালিত হয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের শুষ্ক বায়ুতে ৭৮.০৮% নাইট্রোজেন, ২০.৯৫% অক্সিজেন, ০.৯৩% আর্গন, ০.০৪% কার্বন ডাই অক্সাইড এবং সামান্য পরিমানে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং অন্যান্য "নোবেল" গ্যাস (আয়তন হিসাবে) রয়েছে, তবে সাধারণত পরিবর্তনশীল পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকে যা সমুদ্রপৃষ্ঠে গড়ে প্রায় ১%।[৮]

সৌরজগতের অতিকায় গ্রহগুলো যথা বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুনের নিম্ন তাপমাত্রা এবং উচ্চতর মাধ্যাকর্ষণ তাদেরকে কম আণবিক ভরের গ্যাসসমূহকে আরও সহজেই ধরে রাখতে দেয়। এই গ্রহগুলোর হাইড্রোজেন – হিলিয়াম সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল রয়েছে, সাথে সামান্য পরিমাণে জটিল যৌগ রয়েছে।

বাইরের গ্রহের দুটি উপগ্রহের উল্লেখযোগ্য বায়ুমণ্ডল রয়েছে। শনির চাঁদ টাইটান এবং নেপচুনের চাঁদ ট্রাইটনে মূলত নাইট্রোজেনের বায়ুমণ্ডল রয়েছে। নিজ কক্ষপথে আবর্তনের সময় প্লুটো যখন সূর্যের নিকটতম অংশে থাকে তখন তাতে ট্রাইটনের মতো নাইট্রোজেন এবং মিথেনের বায়ুমণ্ডল থাকে তবে সূর্য থেকে দূরে অবস্থান কালে এই গ্যাসগুলো হিমায়িত হয়ে যায়।

সৌরজগতের অন্যান্য বস্তুতে অত্যন্ত পাতলা বায়ুমণ্ডল থাকে যা ভারসাম্যহীন অবস্থায় থাকে। এর মধ্যে চাঁদ (সোডিয়াম গ্যাস), বুধ (সোডিয়াম গ্যাস), ইউরোপা (অক্সিজেন), আইয়ো (সালফার), এবং এনসেলাডাস (জলীয় বাষ্প) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এইচডি ২০৯৪৫৮বি হলো প্রথম বহির্গ্রহ যার বায়ুমণ্ডলীয় গঠন নির্ধারণ করা হয়েছে, এটি পেগাসাস তারামণ্ডলে অবস্থিত নক্ষত্রের কাছাকাছি ঘনিষ্ঠ কক্ষপথ যুক্ত একটি গ্যাসীয় দৈত্য। এর বায়ুমণ্ডলটি এক হাজার কেলভিন-এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে অবিচ্ছিন্নভাবে মহাকাশে নির্গমন ঘটছে। গ্রহটির স্ফীত বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন এবং সালফার শনাক্ত করা হয়েছে।[৯]

গঠন

পৃথিবী

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত যার সংযুক্তি, তাপমাত্রা এবং চাপের মতো পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সবচেয়ে নীচের স্তরটি হলো ট্রপোমণ্ডল, এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে স্ট্রাটোমণ্ডলের নীচ পর্যন্ত বিস্তৃত। বায়ুমণ্ডলের ভরের তিন চতুর্থাংশ ট্রপোমণ্ডলের মধ্যে থাকে এবং এই স্তর পৃথিবীর পার্থিব আবহাওয়া বিকাশ করে। এই স্তরের উচ্চতা নিরক্ষীয় অঞ্চলে ১৭ কিমি থেকে মেরুতে ৭ কিলোমিটারের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। ট্রপোমণ্ডলের শীর্ষ থেকে মেসোমণ্ডল নিচে অবধি বিস্তৃত স্ট্রাটোমণ্ডলে ওজোন স্তর বিদ্যমান। ওজোন স্তরটি ১৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত এবং এটি সূর্যের বেশিরভাগ অতিবেগুনী বিকিরণ শোষণ করে। মেসোমণ্ডল ৫০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং এই স্তরে বেশিরভাগ উল্কা জ্বলে উঠে। তাপমণ্ডল ৮৫ কিমি থেকে ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় এক্সোমণ্ডলের নীচ পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এতে আয়নমন্ডল বিদ্যমান, এই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডল সূর্য থেকে আগত সৌর বিকিরণ দ্বারা আয়নিত হয়। আয়নমন্ডল পুরুত্ব বৃদ্ধি পায় এবং দিনের আলোয় পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে এবং রাত্রে উপরে উঠে যায় বৃহত্তর পরিসরে রেডিও যোগাযোগের নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিগুলোর অনুমতি দেয়। ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় তাপমণ্ডলের মধ্যে অবস্থিত কার্মান রেখাটি সাধারণত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং মহাশূন্যর সীমানা নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। এক্সোমণ্ডল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৯০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার উপর থেকে পৃথকভাবে শুরু হয়, এটি গ্রহের চৌম্বকীয় আবরণের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়া করে। উচ্চতার সাথে তাপমাত্রায় পরিবর্তনের হার নির্ধারণ করার জন্য প্রতিটি স্তরের আলাদা আলাদা ভ্রষ্টতা হার রয়েছে।

অন্যান্য

অন্যান্য জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু যেমন সূর্য, চাঁদ, বুধ ইত্যাদির বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে জানা গেছে।

সৌরজগতের ভিতরে

সৌরজগতের কিছু বস্তুর পৃষ্ঠের তাপমাত্রার বিপরীতে মুক্তিবেগের লেখচিত্রে দেখা যায় কোন গ্যাসসমূহ বজায় রয়েছে। বস্তুগুলো স্কেল অনুযায়ী আঁকা হয়েছে এবং মাঝখানের কালো বিন্দু তাদের উপাত্ত।

সৌরজগতের বাইরে

  • এইচডি ২০৯৪৫৮ বি এর বায়ুমণ্ডল

সঞ্চলন

তাপীয় বিকিরণের চেয়ে সংবহন যখন তাপের আরও কার্যকর পরিবহনকারী হয়ে পড়ে তখন তাপের পার্থক্যের কারণে বায়ুমণ্ডলের সঞ্চালন ঘটে। যে গ্রহের প্রাথমিক তাপের উৎস সৌর বিকিরণ সেখানে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে অতিরিক্ত তাপ উচ্চতর অক্ষাংশে স্থানান্তরিত হয়। কোন গ্রহ যখন অভ্যন্তরীণভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তাপ উৎপন্ন করে, যেমন বৃহস্পতিতে বায়ুমণ্ডলে সংবহন তাপমাত্রা উচ্চতর তাপমাত্রা অভ্যন্তর থেকে পৃষ্ঠের উপরে বহন করতে পারে।

গুরুত্ব

গ্রহসংক্রান্ত ভূতাত্ত্বিকের দৃষ্টিকোণ থেকে বায়ুমণ্ডল একটি গ্রহের পৃষ্ঠকে আকার দেওয়ার কাজ করে। বাতাসের সাথে যখন ভূখণ্ডের সংঘর্ষ হয় তখন ধূলিকণা এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র কণা তুলে নিয়ে যায়, ভূখণ্ড ক্ষয় করে দেয় এবং আকরিক স্তর ছেড়ে দেয় (ইওলিয়ান প্রক্রিয়া)। তুষারপাত এবং বৃষ্টিপাত বায়ুমণ্ডলের গঠনের উপর নির্ভর করে, এটি ভূমণ্ডলকেও প্রভাবিত করে। জলবায়ু পরিবর্তন গ্রহের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসকে প্রভাবিত করতে পারে। বিপরীতে পৃথিবীর পৃষ্ঠতল বিশ্লেষণ করে অন্যান্য গ্রহের বায়ুমণ্ডল এবং জলবায়ু সম্পর্কে ধারণা করা যায়।

আবহাওয়াবিদদের মতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের গঠন জলবায়ু এবং এর পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে।

জীববিজ্ঞানী বা পেলিউন্টোলজিস্টের মতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলীয় গঠন জীবনের উপস্থিতি এবং এর বিবর্তনের উপর নিবিড়ভাবে নির্ভরশীল।

==আরও দেখুন

==

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ