ভাস্কর্য

ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম

ভাস্কর্য ত্রি-মাত্রিক শিল্পকর্মকে ভাস্কর্য বলে।অর্থাৎ, জ্যামিতিশাস্ত্রের ন্যায় ভাস্কর্যকে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা সহ ত্রি-মাত্রিক হতে হবে। ভারত,বাংলাদেশ এবং চীনের ন্যায় বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন ধরনের, বহুমূখী আকৃতির ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যায়। রেনেসাঁ এবং আধুনিককালে এটি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। পুতুল, মুখোশ, মাটির জিনিসপত্র ভাস্কর্যের উদাহরণ।

১৭৮৭ সালে এন্টনিও ক্যানোভা কর্তৃক খোদাইকৃত ভাস্কর্য সাইকি রিভাইভড বাই লাভ'স কিস

যিনি প্রস্তরাদি, কাঠ ইত্যাদি দিয়ে ভাস্কর্য করেন, তিনি ভাস্কররূপে জনসমক্ষে পরিচিতি লাভ করেন।

ভারতীয় উপমহাদেশ

খ্রীষ্ট-পূর্ব ৩৩০০-১৭০০ সালে প্রতিষ্ঠিত সিন্ধু সভ্যতায় প্রথম ভাস্কর্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বর্তমান পাকিস্তানের মহেঞ্জোদাড়ো এবং হরপ্পায় দেখা গিয়েছিল। পরবর্তীতে হিন্দু, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মের উত্তরণে ভারতে ব্রোঞ্জ ধাতু ও পাথরে খোদাই করে সৃষ্টি করা হয় ভাস্কর্যগুলো। সমধিক পরিচিত দেব-দেবীদের মূর্তি ভাস্কর্য আকারে তৈরী করে মন্দির কিংবা উপাসনালয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। তন্মধ্যে ইলোরা এবং অজন্তা'য় পাথরের ভাস্কর্যগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ ভাস্কর্য শিল্পকলা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।

খ্রীষ্ট-পূর্ব ৪র্থ থেকে ৬ষ্ঠ শতকের মধ্যে গুপ্ত সাম্রাজ্যে মথুরা নগরের বেলে পাথর দিয়ে গড়া ভাস্কর্যগুলো খুবই উচ্চ সৌন্দর্যমণ্ডিত ও উন্নত রূচিশৈলীর পরিচয় বহন করে। পরবর্তীতে চীনের সুই রাজবংশের সময়কালীন শিল্পকলার প্রভাব গুপ্ত সাম্রাজ্যে লক্ষ্য করা যায় যা সমগ্র পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। আফগানিস্তানে নতুন ধরনের ভাস্কর্যকলার চর্চা শুরু হয়। এতে শিলা মাটি, কাদা মাটি, চুনাবালি ব্যবহার করার মাধ্যমে গুপ্ত সাম্রাজ্য পরবর্তীকালের বহমান ধারা ও ধ্রুপদী শিল্পকলার প্রভাব বিস্তার করেছিল।

৮৫০-১২৫০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বর্তমান দক্ষিণ ভারতের চোল রাজত্বকালে ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যচিত্রে স্বাতন্ত্র্যরূপ ধারণ করে। এ সময়কালের নির্মিত ভাস্কর্য হিসেবে ব্রোঞ্জ পদার্থ দিয়ে গড়া নটরাজ তথা শিবের মূর্তি প্রধান উদাহরণ হিসেবে বিবেচ্য।[১] ভারতীয় ভাস্কর্যকলায় এ ধারাটি বিংশ-একবিংশ শতকে এসেও বিকশিত ও প্রবহমান। এর সাথে যুক্ত হয়েছে গ্রানাইট পাথর যা পল্লব রাজবংশের সময়কালীন মহাবালিপুরামের মন্দিরে দৃশ্যমান। সমকালীন প্রেক্ষাপটে ভারতীয় ভাস্কর্যকলা সাধারণত বহু দেব-দেবীকে ঘিরে আবর্তিত; পাশাপাশি ধ্রুব মিস্ত্রি'র ন্যায় আধুনিক, প্রথিতযশা ভাস্করও গড়ে তুলতে যথেষ্ট সাহায্য করেছে।

ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন

একত্ববাদ অর্থাৎ এক ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের কারণে ইহুদি ধর্মে ভাস্কর্যের প্রতি নিষিদ্ধতা রয়েছে, যার ফলে ১৯ শতক পর্যন্ত রুপক ভাস্কর্য অগ্রহণযোগ্য ছিল,[২] খ্রিষ্ট ধর্মের প্রাথমিক বিস্তৃতির আগ পর্যন্ত যেটি অব্যাহত ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তারা প্রাথমিকভাবে বড় ভাস্কর্য গ্রহণ করে। খ্রিষ্টধর্ম ও বৌদ্ধধর্মের মধ্যে ভাস্কর্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যদিও খ্রিষ্টানদের পূর্ব অর্থডক্স মণ্ডলী স্মরণীয় ভাস্কর্য কখনো অনুমোদন করে নি এবং ইসলাম ধারাবাহিকভাবে প্রায় সব রূপক ভাস্কর্য প্রত্যাখ্যান করেছে।

তথ্যসূত্র

উদ্ধৃতি

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ