মাজুরো

প্রশান্ত মহাসাগরের মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী ও প্রবাল অ্যাটল দ্বীপ

মাজুরো পশ্চিম-মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের "রাতাক" (সূর্যোদয় তথা পূর্বী) দ্বীপশৃঙ্খলে অবস্থিত একটি প্রবালপ্রাচীরবেষ্টিত দ্বীপ (অ্যাটল) এবং মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ প্রজাতন্ত্রের রাজধানী। ৬৪টি খণ্ডদ্বীপ নিয়ে গঠিত অ্যাটলটির উপবৃত্তাকার প্রবাল প্রাচীরটি ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এর মোট আয়তন ৯.৭ বর্গকিলোমিটার। প্রবাল প্রাচীরটি একটি লেগুন বা উপহ্রদকে ঘিরে রেখেছে যার আয়তন ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। দ্বীপটি অস্ট্রেলিয়াহাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি একটি অবস্থানে অবস্থিত।

মাজুরো
রাজধানী শহর
আয়তন
 • মোট৯.৭ বর্গকিমি (৩.৭ বর্গমাইল)
উচ্চতা৩ মিটার (১০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১৮)৩১,০০০
 [১]

মাজুরো দ্বীপের জনসংখ্যা মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অ্যাটলের মূল বসতিটি কৃত্রিম ভূমি দিয়ে সংযুক্ত দেলাপ, উলিগা ও দজাররিত খণ্ডদ্বীপগুলির সমষ্টি নিয়ে গঠিত (যার সংক্ষিপ্ত নাম ডিইউডি, DUD) এবং এটিই দেশের রাজধানী হিসেবে কাজ করে। মাজুরোতে কেনাকাটার এলাকা, একাধিক হোটেল, একটি সমুদ্র বন্দর ও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। ২০১৮ সালের গণনা অনুযায়ী এখানে প্রায় ৩১ হাজার লোকের বাস। [১]

ভূগোল

মাজুরোর রূপরেখামূলক মানচিত্র

জলবায়ু

মাজুরো বিষুবরেখার সামান্য উত্তরে অবস্থিত। কিন্তু এর জলবায়ু বিষুবীয় নয়, বরং ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য প্রকৃতির (উষ্ণ ও আর্দ্র), কেননা সারা বছর ধরেই এখানে বাণিজ্য বায়ু প্রবাহিত হয়, যদিও গ্রীষ্মকালে আন্তঃক্রান্তীয় অভিসৃতি অঞ্চলের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে বাণিজ্য বায়ুর প্রবাহ প্রায়ই ব্যাহত হয়।[২] এখানে ঘূর্ণিঝড়ের ঘটনা বিরল। তাপমাত্রা প্রায় সারা বছরই একই থাকে। গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কদাচিৎ তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রীর নিচে নেমে আসে। [৩] মাজুরোতে বছরে গড়ে ৩২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

মাজুরো-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাসজানুফেব্রুমার্চএপ্রিলমেজুনজুলাইআগস্টসেপ্টেঅক্টোনভেডিসেবছর
সর্বোচ্চ গড় °ফা (°সে)৮৫.৫
(২৯.৭)
৮৫.৯
(২৯.৯)
৮৬.১
(৩০.১)
৮৬.১
(৩০.১)
৮৬.৪
(৩০.২)
৮৬.৩
(৩০.২)
৮৬.৪
(৩০.২)
৮৬.৭
(৩০.৪)
৮৬.৯
(৩০.৫)
৮৬.৯
(৩০.৫)
৮৬.৬
(৩০.৩)
৮৫.৯
(২৯.৯)
৮৬.৩
(৩০.২)
সর্বনিম্ন গড় °ফা (°সে)৭৭.৮
(২৫.৪)
৭৭.৯
(২৫.৫)
৭৮.০
(২৫.৬)
৭৮.১
(২৫.৬)
৭৮.৩
(২৫.৭)
৭৭.৯
(২৫.৫)
৭৭.৮
(২৫.৪)
৭৭.৯
(২৫.৫)
৭৭.৯
(২৫.৫)
৭৭.৮
(২৫.৪)
৭৭.৯
(২৫.৫)
৭৭.৭
(২৫.৪)
৭৭.৯
(২৫.৫)
অধঃক্ষেপণের গড় ইঞ্চি (মিমি)৮.২৮
(২১০)
৭.৬২
(১৯৪)
৭.৫৫
(১৯২)
৯.৬৩
(২৪৫)
৯.৮৬
(২৫০)
১০.৯৩
(২৭৮)
১১.৯৩
(৩০৩)
১১.৪২
(২৯০)
১২.১৪
(৩০৮)
১৩.২৭
(৩৩৭)
১৩.২৩
(৩৩৬)
১১.৫৬
(২৯৪)
১২৭.৪২
(৩,২৩৬)
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় (≥ ০.০১ in)১৯.৩১৬.১১৭.৬১৮.৯২২.১২৩.১২৪.৩২২.৯২২.৯২৩.৪২২.৯২২.৭২৫৬.২
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%)৭৭.৭৭৭.১৭৯.০৮০.৭৮১.৯৮১.১৮০.৫৭৯.৩৭৯.৪৭৯.৪৭৯.৯৭৯.৭৭৯.৬
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড়২২৪.৪২১৮.৬২৫২.৮২১৯.৪২২৪.৮২১০.৮২১৭.০২৩২.২২১৭.৮২০৫.৪১৯১.৪১৯৭.৪২,৬১২
রোদের সম্ভাব্য শতাংশ৬১৬৬৬৭৬০৫৮৫৬৫৬৬১৬০৫৫৫৪৫৪৫৯
উৎস: NOAA (relative humidity and sun 1961−1990)[৪][৫]

ইতিহাস

সম্ভবত ২০০০ বছর ধরে মানুষ মাজুরোতে বসবাস করে আসছে।[৬] ১৮৮৪ সালে জার্মান সাম্রাজ্য মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের বাকী দ্বীপগুলির সাথে সাথে মাজুরো দ্বীপটিও দখল করে নেয় এবং এখানে একটি বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে। ১৯১৪ সালে সাম্রাজ্যিক জাপানি নৌবাহিনী ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ তথা মাজুরোকে করায়ত্ত করে। ১৯২০ সালে লিগ অফ নেশনস জাপান সাম্রাজ্যকে দ্বীপটি পরিচালনা করার ক্ষমতা দান করে। দ্বীপটি এসময় জাপানি শাসনাধীন ভূখণ্ড নানিয়ো-র একটি অংশে পরিণত হয়। যদিও জাপানিরা নানিয়োতে একটি স্থানীয় সরকার স্থাপন করেছিল, তা সত্ত্বেও স্থানীয় সমস্ত প্রশাসনিক কাজ ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় নেতাদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়।

১৯৪৪ সালে মাজুরোতে নোঙরকৃত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫ম নৌবহর

১৯৪৪ সালের ৩০শে জানুয়ারি মার্কিন সেনারা মাজুরো আক্রমণ করে, কিন্তু অনুধাবন করে যে তার এক বছর আগেই জাপানিরা তাদের দুর্গ পরিত্যাগ করে কোয়াজালেইন এবং এনেওয়েতাক দ্বীপে চলে গেছে। কেবল একজন জাপানি ওয়ারেন্ট কর্মকর্তাকে দেখাশোনা করার জন্য রেখে যাওয়া হয়। তাকে বন্দী করার সাথে সাথে দ্বীপটি মার্কিন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এর ফলে মার্কিন নৌবাহিনী মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে বৃহত্তম একটি নোঙরস্থল ব্যবহার করার সুযোগ পায়।[৭]

২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে মাজুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বাধীন প্রশান্ত দ্বীপপুঞ্জসমূহের জাতিসংঘ ট্রাস্ট অঞ্চলের একটি অংশে পরিণত হয়। মার্কিনীরা জালুইত অ্যাটল দ্বীপের পরিবর্তে মাজুরোকে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসনিক কেন্দ্রের মর্যাদা দান করে। ১৯৮৬ সালে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীনতা লাভ করলে এটি রাষ্ট্রটির রাজধানীতে পরিণত হয়।

জনপরিসংখ্যান

ধর্ম

মাজুরোর জনগণের অধিকাংশই খ্রিস্টান।[৮] সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক একত্রিত খ্রিস্ট গির্জামন্ডলীকে অনুসরণ করে। এছাড়া এখানে রোমান ক্যাথলিক মন্ডলীর একটি ক্যাথেড্রাল আছে।[৯] সম্প্রতি ইসলামি প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে মূলত আহমদিয়া মতাবলম্বী মুসলমানরা বাস করে। ২০১২ সালে দ্বীপটির প্রথম মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।[৩][১০]

অর্থনীতি

মাজুরোর অর্থনীতি মূলত সেবাখাতভিত্তিক।[৮]

শিক্ষা

স্বাস্থ্য

অবকাঠামো

পরিবহন

আকাশপথ

ক্রীড়া

যুগ্ম বা ভগিনী শহর

মাজুরো শহরের যুগ্ম বা ভগিনী শহরগুলি হল:

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ