মৎস্য শিকার
মৎস্য শিকার (ইংরেজি: Fishing) কোন ব্যক্তি কর্তৃক মাছ ধরার জন্য চেষ্টাবিশেষ। সাধারণতঃ মাছ প্রকৃতি প্রদত্ত নদী-নালার মুক্ত জলাশয় থেকে ধরা হয়।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা যায় যে, বিশ্বে আনুমানিক ৩৮ মিলিয়ন লোক বাণিজ্যিকভাবে জেলে এবং মৎস্য খামারীর পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়াও প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এ পেশায় সম্পৃক্ত রয়েছে ৫০০ মিলিয়নেরও অধিক জনগোষ্ঠী।[১] ২০০৫ সালে বৈশ্বিকভাবে প্রকৃতি প্রদত্ত উন্মুক্ত জলাশয় ক্ষেত্র থেকে মাথা পিছু ১৪.৪ কিলোগ্রাম মাছ আহরণ করা হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত ৪.৩ কিলোগ্রাম মাছ আবদ্ধ জলাশয় থেকে চাষাবাদের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়েছিল।[২] উল্লেখযোগ্য খাদ্য সংগ্রহসহ আধুনিককালে মৎস্য শিকার বিনোদনকল্পে অবসরকালীন সময় ক্ষেপণেরও অন্যতম মাধ্যমরূপে পরিগণিত।
ইতিহাস
প্রায় চল্লিশ হাজার বছর পূর্বে পেলিওলিথিক যুগে মাছ আহরণ কার্য্যের উদ্ভব ঘটেছিল বলে জানা যায়।[৩] তিয়ানিউয়ান মানবের কঙ্কাল পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে জানা যায় পূর্ব এশিয়ায় তারা নিয়মিতভাবে স্বাদু পানির মাছ ধরার মাধ্যমে খাবারের চাহিদা মেটাতো।[৪][৫] প্রত্নতত্ত্ববিশারদগণ তাদের প্রতিবেদনে পরিত্যক্ত মাছের হাড় এবং গুহায় অঙ্কিত চিত্রকর্ম পরখ করে দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, সামুদ্রিক খাবার আত্মরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ ধরনের খাবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আহরিত হতো।[৬] ঐ সময়ে অধিকাংশ লোকই শিকার করে জীবনধারণসহ যাযাবর জীবনধারায় অভ্যস্ত ছিল। কিন্তু স্থায়ীভাবে বসবাসকারীগণ মাছ শিকারের মাধ্যমে তাদের খাদ্যের প্রধান উৎসরূপে যুক্ত করেছিল।
প্রাচীন নীল নদ মাছে পরিপূর্ণ ছিল; টাটকা এবং শুটকি মাছ অধিকাংশ জনগণের আদর্শ খাদ্য ছিল।[৭] মিশরীগণ মৎস্য শিকার যন্ত্র প্রয়োগ এবং পদ্ধতিকে সমাধিস্তম্ভের দৃশ্য, অঙ্কন এবং প্যাপিরাস দলিলে তুলে ধরেছিল। কিছু উপস্থাপনায় মৎস্য শিকারকে অলস সময় ব্যয়ের মাধ্যমরূপে তুলে ধরে।
প্রাচীন গ্রীকের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে মৎস্য শিকারের দৃশ্য খুব কমই উপস্থাপিত হয়েছে। বরঞ্চ মৎস্য শিকার কার্যক্রমকে নিম্নস্তরের সামাজিক মর্যাদাসম্পন্নরূপে উল্লেখ করা হয়েছে। অপিয়ান অব কোরিকাস নামীয় একজন গ্রীক লেখক সমুদ্রে মাছ ধরার কথকতা হ্যালাইউলিকা বা হ্যালাইউটিকা নামীয় গ্রন্থে ১৭৭ থেকে ১৮০ সালের মধ্যে তুলে ধরেছেন। এটি ছিল আধুনিককালের প্রথমদিককার মৎস্য শিকার সম্পর্কীয় লেখনি। প্রাচীন রোমে মোজাইকের মাধ্যমে মৎস্য শিকারকে তুলে ধরা হয়েছে।[৮]
গ্রীকো-রোমান সমুদ্র দেবতা নেপচুন ত্রিশূল ধারণ করে মৎস্য শিকার করতেন। প্রাচীন পেরুর মোচে জনগোষ্ঠীর মৎস্য আহরণ কর্ম সিরামিকে বর্ণিত হয়েছিল।[৯]
মৎস্য শিকার করা
হাতে ধরা, বর্শা, জাল, ফাঁদ, ছিপ ও বড়শি ইত্যাদি উপকরণের সাহায্যে ও কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে মৎস্য শিকার বা মৎস্য আহরণ করা হয়। যিনি মৎস্য শিকার করেন তিনি মৎস্য শিকারী নামে পরিচিত।
বড়শি
বড়শি দিয়ে মৎস্য শিকার করার উপকরন হলো টোপ। আবহমান বাংলায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টোপ হিসাবে এই ডোল পিঁপড়ার ডিম উপকরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
টেমপ্লেট:Ports
- Schultz, Ken (১৯৯৯)। Fishing Encyclopedia: Worldwide Angling Guide। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 0028620577।
- Gabriel, Otto (২০০৫)। Fish catching methods of the world। Blackwell। আইএসবিএন 0852382804। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - Sahrhage, Dietrich (১৯৯২)। A History of Fishing। Springer-Verlag। আইএসবিএন 0387553320। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
বহিঃসংযোগ
- Pauly, Daniel (2009) The sea without fish, a reality ! আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ৭ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে Interview with the project leader of the Sea Around Us Project, University of British Columbia.
- কার্লিতে Recreational fishing (ইংরেজি)
- কার্লিতে Commercial fishing (ইংরেজি)