যুক্তিবাদ

যুক্তিবাদ (লাতিন ভাষা ratio থেকে, " কারণ ") একটি দার্শনিক গতির অনুমানের উপর ভিত্তি করে যা, মানবিক যুক্তির সমস্ত জ্ঞানের মূলনীতির উৎ‍স। জ্ঞানতত্ত্বে এবং আধুনিক অর্থে যুক্তিবাদকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়ঃ

  • একটি দৃষ্টিভঙ্গী যা যুক্তিকে জ্ঞানের উৎস ও সত্য প্রতিপাদনের একমাত্র মাধ্যম মনে করে[১]
  • একটি তত্ত্ব যেখানে সত্যের মানদন্ড ঐন্দ্রিক নয়, বরং বৌদ্ধিক এবং অবরোহী[২]

যুক্তির উপর গুরুত্ব প্রয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য থাকার কারণে যুক্তিবাদে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে। উদার যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গী বলে, “জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে যুক্তির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি” আর চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গী বলে, “জ্ঞানার্জনের জন্য যুক্তিই একমাত্র সহায়ক”।[৩] প্রাক-আধুনিক যুগে যুক্তিবাদকে দর্শন কিংবা সক্রেটীয় জীবন জিজ্ঞাসার সাথে সমার্থক মনে করা হত।

পটভূমি

দর্শন ও বিজ্ঞানের বিকাশের যুগ থেকে যুক্তিবাদ বলতে দর্শনশাস্ত্রে গাণিতিক পদ্ধতির সম্পৃক্তকরণকেই বোঝানো হয়ে থাকে, যেমনটি দেকার্ত, লিবনিৎজ্ এবং স্পিনোজা করেছিলেন। একে মূলত ইউরোপীয় যুক্তিবাদ বলা হয়, কারণ ইউরোপে যখন এই মতবাদ কর্তৃত্বময় ছিল তখন ব্রিটেনে অভিজ্ঞতাবাদের রাজত্ব চলছিল।

যুক্তিবাদকে প্রায়ই অভিজ্ঞতাবাদের বিপরীতে দাড় করানো হয়। বিস্তীর্ন অর্থে এই দু’টো দৃষ্টিভঙ্গী একটা আরেকটা থেকে স্বতন্ত্র্য নয়, কারণ একজন দার্শনিক একই সাথে যুক্তিবাদী ও অভিজ্ঞতাবাদী হতে পারেন।[১] অভিজ্ঞতবাদের সবচেয়ে চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গী বলে যে অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই জ্ঞান অর্জন হয়, হয় পঞ্চইন্দ্রীয় দিয়ে নয়ত বেদনা-সুখের মত গহীন অনুভূতি দিয়ে। জ্ঞানের ভিত্তি অভিজ্ঞতা, আবার অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান অবরোহিতও হয়। দন্দ্ব মূলত জ্ঞানের উৎস এবং জ্ঞান যাচাইয়ের উপযুক্ত পদ্ধতি নিয়েই।

যুক্তিবাদের কয়েকটি তরিকার সমর্থকরা বলেন যে ভিত্তিপ্রস্তরমূলক নীতি থেকে, যেমন জ্যামিতির সূত্র, অবরোহী পদ্ধতি দ্বারা সব প্রকার সম্ভাব্য জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। বারুচ স্পিনোজা এবং গটফ্রিড লিবনিৎজ্ এই মতের অনুসারী ছিলেন এবং তারা দেকার্তের উপস্থাপিত কিছু জ্ঞানতাত্ত্বিক এবং অধিবিদ্যাগত সমস্যার সাথে লড়তে গিয়ে তারা যুক্তিবাদের মৌলিক তরিকার জন্ম দেন। স্পিনোজা এবং লিবনিৎজ্ দাবি করেন যে তত্ত্বীয়ভাবে সব প্রকার জ্ঞান (যার মধ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানও অন্তর্ভুক্ত) যুক্তি দ্বারা আহরণ করা সম্ভব, যদিও তারা দু’জনই পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে গণিতের মত কিছু ব্যতিক্রমী শাখা বাদে আর কোন ক্ষেত্রেই এই কাজ সম্ভব না। আচরণকে যুক্তির উপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণ করাকেই যুক্তিবাদ বলে।

দার্শনিক ব্যবহার

যুক্তিবাদী ও অভিজ্ঞতাবাদীদের মধ্যে পার্থক্যটা পরে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং একারণে উভয় তরিকার দার্শনিকরা এই পার্থক্যীকরণ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। এছাড়া এই পার্থক্যের করণটা আপাতদৃষ্টিতে যত পরিষ্কার মনে হয়, বাস্তবে মোটেই তা নয়; যেমন, প্রধান তিন যুক্তিবাদী অভিজ্ঞতাবাদী বিজ্ঞানের গুরুত্বের প্রতি নিবেদিত ছিলেন, ওদিকে অনেক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাবাদীরা তাঁদের কর্মপদ্ধতি এবং অধিবিদ্যাগত তত্ত্বের দিক দিয়ে দেকার্তের সাথে স্পিনোজা এবং লিবনিৎজের থেকে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন।

ইতিহাস

সক্রেটিস(খ্রীষ্টপূর্ব ৪৭০-৩৯৯)

সক্রেটিস তীব্রভাবে বিশ্বাস করতেন যে দুনিয়া সম্পর্কে জানার আগে মানুষকে নিজেকে জানতে হবে; এর একমাত্র মাধ্যম হল যৌক্তিক চিন্তাভাবনা। এর অর্থ বুঝতে হলে আগে গ্রিকদের বিশ্বদর্শন সম্পর্কে জানতে হবে। মানুষের দু’টো অংশ রয়েছে- শরীর এবং আত্মা। আত্মার আবার দু’টো অংশ রয়েছে- প্রথমত অযৌক্তিক অংশ, যা আমাদের আবেগ দ্বারা গঠিত এবং দ্বিতীয়তঃ যৌক্তিক অংশ, যেটিই আমাদের প্রকৃত রুপ। আমার প্রতিদিনের অভিজ্ঞতায় অযৌক্তিক আত্মা আবেগ দ্বারা তাড়িত হয়ে আমাদের শরীরে ঢুকে পড়ে, একারণে জগত সম্পর্কে আমাদের সংবেদনশীল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যা বলে আমরা তাই বুঝতে পারি। আমাদের যৌক্তিক আত্মা আমাদের চেতনার ঊর্ধ্বে, কিন্তু মাঝে মাঝে স্বপ্ন, মানসচিত্র ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে।

দার্শনিকের কাজ হল অযৌক্তিক আত্মাকে শরীরের বন্ধন হতে মুক্ত করা (যার জন্য নৈতিক অগ্রগতি প্রয়োজন) এবং যৌক্তিক আত্মার সাথে সংযোগ স্থাপন করে পরিপূর্ণ মানুষের রুপান্তরিত হওয়া। প্রকৃত যুক্তিবাদ তাই নেহাত কোন বুদ্ধিবৃত্তিক প্রক্রিয়া নয়, এটি দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন এবং ব্যক্তির গুণগত প্রকৃতির পরিবর্তনও বটে। একটি যৌক্তিক আত্মা আধ্যাত্মিকভাবে জগতকে দেখে- প্লেটোনিক রুপ বা বস্তুর নির্যাসকে দেখে। এভাবে জগতকে জানতে হলে আগে নিজেকে জানতে হবে, এই প্রেক্ষাপটেই সক্রেটিস বলেছিলেন “know thyself”।

সক্রেটিস তার চিন্তাভাবনাকে লিখিতভাবে প্রকাশ করেননি, কিন্তু তিনি সবসময় সবার সাথে আলাপ-আলোচনা করতেন। তিনি প্রথমে একজন ব্যক্তি একটি বাগাড়ম্বরপুর্ণ প্রশ্ন (আপাতদৃষ্টিতে যার উত্তর আছে বলে মনে হয়) করতেন এবং ব্যক্তিটি উত্তর দিতেন। তারপর সক্রেটিস ব্যক্তির উত্তরগুলোর প্রেক্ষিতে একটার পর একটার প্রশ্ন করে যেতেন যতক্ষণ না সবগুলো সংঘাত নিরসন হত নয়ত ব্যক্তিটি অজ্ঞতা স্বীকার করত (সক্রেটিসের বেশিরভাগ আলোচনা এভাবেই শেষ হত)। সক্রেটিস কখনও উত্তর জানার দাবি করতেন না, কিন্তু তাই বলে তিনি যুক্তি দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা থামাতেন না। তিনি দেখাতে চাইতেন যে জগত সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানার্জনের পদ্ধতিটি ক্রুটিযুক্ত এবং জগৎ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান আহরণ করতে চাইলে আমাদেরকে এই পদ্ধতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।

রেনে দেকার্ত(১৫৯৬-১৬৫০)

দেকার্ত মনে করতেন কেবলমাত্র শ্বাসত সত্য সম্পর্কে জ্ঞান, যেমন গণিতশাস্ত্রের সত্য এবং বিভিন্ন বিজ্ঞানের জ্ঞানতাত্ত্বিক ও অধিবিদ্যাগত ভিত্তি, শুধু যুক্তি দিয়ে আহরণ করা সম্ভব; অন্য সব জ্ঞান, যেমন পদার্থবিদ্যার জ্ঞান অর্জনের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ও অভিজ্ঞতাবাদী পদ্ধতির প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন যে যদিও স্বপ্নগুলোকে বাস্তব মনে হয়, স্বপ্ন কখনও মানুষকে জ্ঞান দিতে পারে না। তাছাড়া ইন্দ্রিয় যেহেতু প্রপঞ্চের দ্বারা বিভ্রান্ত হতে পারে, তাই মানুষের ইন্দ্রিয়ও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। এর ফলে দেকার্ত অবরোহন করেন যে যুক্তি দিয়ে সত্যান্বেষণ করতে চাইলে বাস্তবতা সম্পর্কে যেকোন বিশ্বাসকেই সন্দেহ করতে হবে। তিনি তার Discourse on Method, Meditations on First Philosophy এবং Principles of Philosophy গ্রন্থগুলোতে এসব বিশ্বাসের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। দেকার্ত সত্যানুসন্ধানের এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করেন যা যুক্তিবহির্ভুত কোন ধারণাকেই জ্ঞান হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। দেকার্ত মনে করেন এই সত্যগুলো "ইন্দ্রিগত অভিজ্ঞতা ছাড়াই” প্রাপ্ত হয়। যুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত সত্যগুলোকে এমন সব উপাদানে বিভক্ত করা হবে যা অন্তঃর্জ্ঞান দ্বারা বোধগম্য হয়, এবং এই উপাদানগুলোকে অবরোহন পদ্ধতির ভেতর দিয়ে পরিচালিত করে অবশেষে বাস্তবতা সম্পর্কে পরিষ্কার সত্যতে রুপান্তরিত করা হবে।

দেকার্ত তাই যুক্তি দেখান যে যুক্তি একাই, ইন্দ্রিয়ের কোন প্রকার সাহায্য ছাড়াই, সত্যকে জানতে পারে।

বারুখ স্পিনোজা (১৬৩২-১৬৭৭)

স্পিনোজা দেকার্ত[৪], ইউক্লিড[৫], থমাস হবস[৪] এবং মাইমোনাইডিসের[৪] মত ইহুদি দর্শনশাস্ত্রের চিন্তকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, কিন্তু তার কাজ অনেক ক্ষেত্রেই ইহুদি-খ্রীষ্টান শাস্ত্র থেকে বহির্গমন করেছিল। তার অনেক ধারণা আজকের দার্শনিকদের হয়রান করে এবং তার প্রস্তাবিত অনেক নীতি, বিশেষ করে আবেগ সম্পর্কিত নীতিগুলো আধুনিক মনোবিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে। প্রথম সারির দার্শনিকরা পর্যন্ত স্পিনোজার “জ্যামিতিক পদ্ধতি”[৬] বুঝতে হিমসিম খাচ্ছেন। গোয়েথ মন্তব্য করেছেন যে তিনি বেশিরভাগ সময় স্পিনোজার কাজকর্ম ও উদ্দেশ্য বুঝতে পারতেন না।[৬] তার দর্শন আইন্সটাইন[৭] সহ অনেক চিন্তাবিদকে আকর্ষণ করেছে।[৮][৯][১০][১১][১২]

গটফ্রিড লাইবনিৎস (১৬৪৬-১৭১৬)

শীর্ষ যুক্তিবাদীদের মধ্যে লাইবনিৎস ছিলেন সর্বশেষ দার্শনিক যিনি গণিতের মত অন্যান্য বিষয়সমূহতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। লাইবনিৎস দেকার্তের দ্বৈতবাদ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং বস্তুজগতের অস্তিত্বও অস্বীকার করেছিলেন। লাইবনিৎসের দৃষ্টিতে পৃথিবীতে অসংখ্য সরল বস্তু রয়েছে, যাদের নাম দিয়েছেন তিনি “মোনাড” (খুব সম্ভবত তিনি এনি কনওয়ের কর্ম থেকে শব্দটি ধার করেছিলেন)। দেকার্ত ও স্পিনোজার কর্মের প্রতিক্রিয়া হিসেবে লাইবনিৎস “মোনাড” এর ধারণাটি প্রস্তাব করেছিলেন। তার মতে, মোনাড হল বাস্তবতার মৌলিক একক যা দিয়ে জড় ও জীবিত বস্তু গঠিত হয়েছে। এই এককগুলোই মহাবিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করে, যদিও তারা কার্যকারণের সূত্রাদির প্রভাব হতে মুক্ত।

ইমানুয়েল কান্ট (১৭২৪-১৮০৪)

ইমানুয়েল কান্ট শুরুতে একজন প্রথাগত যুক্তিবাদী ছিলেন, যেহেতু তিনি লাইবনিৎস এবং ক্রিশ্চিয়ান উলফ পড়েছিলেন, কিন্তু ডেভিড হিউমের কর্ম অধ্যায়ন করার পর তিনি তার নিজস্ব যুক্তিবাদী চিন্তাধারা শুরু করেন, যা প্রথাগত যুক্তিবাদ এবং অভিজ্ঞতাবাদকে সংশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছিল।

কান্ট তার জ্ঞানতাত্ত্বিক শাখার নাম দিয়েছিলেন “স্বজ্ঞালদ্ধ আদর্শবাদ” এবং এসম্পর্কে তার চিন্তাভাবনা প্রথম প্রকাশ করেছিলেন তার দ্যা ক্রিটিক অব পিওর রিজন গ্রন্থটিতে। বইটিতে তিনি দাবি করেন যে যুক্তিবাদ ও অভিজ্ঞতাবাদ, দু’টোরই কিছু মৌলিক সমস্যা রয়েছে। যুক্তিবাদের ক্ষেত্রে তিনি দাবি করেন যে যেসব বিষয় যুক্তির গণ্ডির বাইরে অবস্থিত, সেসব বিষয়ে যুক্তি প্রয়োগ করা ভুল হবে, যেমন- ঈশ্বরের অস্তিত্ব, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব এবং মানবাত্মার অবিনশ্বরতা। কান্ট দাবি করেন যে এসব বিষয় সম্পর্কে কোন কিছু জানা অসম্ভব কারণ এরা সংজ্ঞামতেই সব ধরনের অভিজ্ঞতা বহির্ভূত অবভাস। অভিজ্ঞতাবাদের ক্ষেত্রে তিনি বলেন যে অভিজ্ঞতা জ্ঞানার্জনের জন্য একটি মৌলিক প্রয়োজন হলেও যুক্তি ছাড়া এই অভিজ্ঞতাকে অর্থবহ চিন্তায় রুপান্তরিত করা যাবে না। অতএব, তিনি দাবি করেন যে জ্ঞানের জন্য যুক্তি ও অভিজ্ঞতা-দু’টোই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রবীর ঘোষ (জন্ম ১মার্চ ১৯৪৫)

প্রবীর ঘোষ কলকাতাভিত্তিক ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির প্রধান এবং হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা। বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পক্ষ থেকে প্রবীর ঘোষ যে কোনো ধরনের অলৌকিক শক্তির প্রমাণ প্রদানকারীকে পঞ্চাশ লক্ষ ভারতীয় মুদ্রা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বেশকিছু জ্যোতিষবিদ ও অলৌকিক শক্তি অধিকারী বলে দাবি কৃত ব্যক্তিদের প্রচারণার অসারতা প্রমাণ করেছেন। যার মধ্যকার কয়েকটি ঘটনা নিয়ে চ্যানেল ফোর 'Guru Busters' নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে।[১৩] সমকালীন যুক্তিবাদ[১৪] বা contemporary rationalism তার সৃষ্টি। তার মতে "যুক্তিবাদ হঠাৎ করে আকাশ থেকে পড়েনি এই মতবাদের পরিপূর্ণ দর্শন হয়ে ওঠারও একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে। বুদ্ধ, মহাবীর, চার্বাক থেকে দেকার্ত, স্পিনোজা, হেগেল, কান্ট, মার্কস, প্রত্যেকেরই অবদানের পরিণতিতে আজ যুক্তিবাদ একটি সম্পূর্ণ দর্শনের রূপ পেয়েছে। 'যুক্তিবাদ ' ও 'নব্য যুক্তিবাদ ' এর পথ পরিক্রমা শেষে 'সমকালীন যুক্তিবাদ' চিরকালীন সমকালই থাকবে - এমনই এক যুক্তিবাদ।"

রাজনৈতিক যুক্তিবাদ

“যুক্তিবাদ” শব্দটিকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন একটি রাজনৈতিক মতাদর্শকে নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত হয় যা রাজনৈতিক বাস্তববাদ এবং আন্তর্জাতিকতাবাদের মধ্যবর্তীতে অবস্থান করে।[১৫] এই শব্দটি সেই মতাদর্শকে নির্দেশ করার জন্য ব্যবহার করা হয় যা বলে যে বিশ্ব রাজনীতি মোটেই নৈরাজ্যিক নয় যেমনটা বাস্তববাদীরা দাবি করে; বিশ্ব রাজনীতি কিছুটা শৃঙ্খলা মেনে চলে এবং রাষ্ট্রগুলো নিতান্তই প্রয়োজন না হলে অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করে না। এই মতবাদ আরও দাবি করে যে জাতিসংঘের মত আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে, যদিও এটি আন্তর্জাতিকতাবাদের মতো জাতিসংঘকে অত বেশি গুরুত্ব দেয় না।

সমকালীন যুক্তিবাদ

এই যুক্তিবাদটি প্রবীর ঘোষ কর্তৃক নির্মিত। তিনি সমাজকে একটি আরোও সুন্দর দিশা দেখান এই দর্শন দিয়ে। তার বইতে এটার ওপর তথ্য রয়েছে।

অন্য রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে সংঘর্ষ

যুক্তিবাদকে প্রায়ই বাস্তববাদ এবং আন্তর্জাতিকতাবাদের মধ্যবর্তী হিসেবে দেখানো হয়। আন্তর্জাতিকতাবাদ যেখানে “বৈশ্বিক” এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী লালন করে এবং বাস্তববাদ যেখানে ব্যক্তিগত ও বিশৃঙ্খল দৃষ্টিভঙ্গী লালন করে, যুক্তিবাদ সেখানে এই দুটো মতবাদেরই সমম্বয় সাধন করে। একারণেই একে “যুক্তিবাদ” বলা হয়।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ