রাসায়নিক বিক্রিয়া

এক বা একাধিক পদার্থ ভিন্ন পদার্থে রূপান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়া

রাসায়নিক বিক্রিয়া হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে এক বা একাধিক পদার্থ একত্রিত হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থে রূপান্তরিত হয়।[১] রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থগুলোকে বিকারক বা বিক্রিয়ক পদার্থ বলা হয়। অপরদিকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে নতুন ধর্মবিশিষ্ট যেসব পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাদের বিক্রিয়াজাত পদার্থ বা উৎপাদ বলা হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়া বিকারক পদার্থগুলোর মধ্যে ইলেকট্রনের আদান-প্রদান বা ভাগাভাগির ফলে হয়ে থাকে। পদার্থের নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন হলে তাকে সাধারণত রাসায়নিক বিক্রিয়া হিসেবে গণ্য করা হয় না।

আয়রন (III) অক্সাইড ব্যবহার করে একটি তাপোৎপাদী বিক্রিয়া

প্রকারভেদ

রাসায়নিক বিক্রিয়া মূলত চার ধরনের; এগুলি হলোঃ

  1. সংযোজন বিক্রিয়া
  2. বিয়োজন বিক্রিয়া
  3. প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া
  4. দহন বিক্রিয়া
  • এ বিক্রিয়া গুলো মূলত রেডক্স বিক্রিয়ার অংশ।

এ ছাড়াও কিছু শ্রেণিভেদ আছে। যেমন, ইলেক্ট্রন স্থানান্তরের ভিত্তিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া দুই প্রকার। যথা: (ক) রেডক্স,(Redox) এবং (খ) নন-রেডক্স,(Non-redox)।

উপরের ৪ টি বিক্রিয়া মুলত রেডক্স বিক্রিয়ার প্রকারভেদ। এবং নন-রেডক্স বিক্রিয়া আবার ২ প্রকার। যথা:- (ক) প্রশমন, এবং (খ) অধঃক্ষেপন।

তাপ বিনিময়ের বিবেচনায়ও রাসায়নিক বিক্রিয়া দুই প্রকার যথা: (ক) তাপ উৎপাদী (তাপমোচী) বিক্রিয়া (Exothermic Reaction) এবং (খ) তাপহারী (তাপগ্রাহী) বিক্রিয়া (Endothermic Reaction)।

আরও কিছু বিক্রিয়া আছে যা বর্ণিত শ্রেণিবিভাগের অন্তর্ভুক্ত নয়। যেমন: (ক) আর্দ্রবিশ্লেষণ (Hydrolysis), (খ) জলযোজন (Hydration), (গ) সমাণুকরণ বিক্রিয়া (Isomerisatio) ইত্যাদি।

সংযোজন বিক্রিয়া

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একের অধিক পদার্থ একত্রিত হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী নতুন রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে তখন তাকে সংযোজন বিক্রিয়া বলে। যেমনঃ C2+2O2=2CO2

এছাড়াও রয়েছে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া। সংশ্লেষণ বিক্রিয়াও এক ধরনের সংযোজন বিক্রিয়া। সংযোজন বিক্রিয়ায় যদি দুটি মৌল (যৌগ নয়) যুক্ত হয়ে ভিন্ন ধর্মীয় যৌগ উৎপন্ন হয়।কার্বন + হাইড্রোজেন = মিথেন

বিয়োজন বিক্রিয়া

কোন যৌগকে ভেঙে একাধিক যৌগ বা মৌলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বিয়োজন বিক্রিয়া বলে।

  • PCl5 (l) +(তাপ) = PCl3 (l) + Cl2 (g)

প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া :

কোনো অধিক সক্রিয় মৌল বা যৌগমুলক অপর কোনো কম সক্রিয় মৌলে বা যৌগমুলক কে প্রতিস্থাপন করে নতুন যৌগ উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে। যেমন; জিংক বেশি সক্রিয় ধাতু H থেকে, তা Zn, H কে সরিয়ে তার জায়গা দখল করে নিতে পারে, নিচে বিক্রিয়াটি দেওয়া হল।

  • Zn(s) + H2SO4 (aq) = ZnSO4 (aq) + H2 (g)

এখানে জারণ ও বিজারণ যুগপৎ ঘটেছে।

দহন বিক্রিয়া

কোনো মৌল বা যৌগ বিক্রিয়া করে যদি তাপ উৎপন্ন করে তাহলে সেই বিক্রিয়া কে দহন বিক্রিয়া বলে। এতে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন হয় ।H₂+O₂=H₂O

  • CH4 (g) + 2O2 (g) = CO2 (g) +2H2O (g)
  • 2Mg + O2 = 2MgO

তাপহারী বিক্রিয়া

যে বিক্রিয়ায় তাপের শোষণ হয় তাকে তাপহারী বিক্রিয়া বলে।এই বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তির মান বেশি তাই এই বিক্রিয়ার বাহির থেকে তাপ সরবরাহ করতে হয়।

2KClO₃ = 2KCl + 3O₂ - তাপ

এই বিক্রিয়াটি তাপহারী বিক্রিয়া।

বিক্রিয়ক অনুতে বন্ধন ভাঙ্গনে শোষিত শক্তি > উৎপাদের অনুতে বন্ধন গঠনে বিমুক্ত শক্তি

তাপোৎপাদি বিক্রিয়া

যে বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয় তাকে তাপোৎপাদি বিক্রিয়া বলে।যেমন,CaCO3 = CaO +CO2

বিক্রিয়ক অণুতে বন্ধন ভাঙ্গনে শোষিত শক্তি < উৎপাদের অনুতে বন্ধন গঠনে বিমুক্ত শক্তি

প্রশমন বিক্রিয়া

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার অম্ল ও ক্ষার যুক্ত হয়ে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে প্রশমন বিক্রিয়া বলে। এই বিক্রিয়াকে অম্ল-ক্ষার বিক্রিয়াও বলে। প্রশমন বিক্রিয়া সর্বদাই তাপ উৎপন্ন করে অর্থাৎ প্রশমন বিক্রিয়া তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া। অম্ল ও ক্ষার উভয়ই তীব্র হলে এই তাপের মান ΔH = -57.34 Kj।

  • NaOH + HCl = NaCl + H2O

তথ্যসূত্র


🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ