রেনেসাঁ শিল্প

রেনেসাঁ শিল্প বলতে ইউরোপীয় রেনেসাঁর সময়কার চিত্রকলা, স্থাপত্য, এবং আলংকারিক কার্যকলাপসমূহকে বোঝানো হয় যা দর্শন, সাহিত্য, সঙ্গীত, এবং বিজ্ঞানের পাশাপাশি একটি নিজস্ব শৈলী নিয়ে ১৪০০ সালে ইতালিতে আবির্ভূত হয়। রেনেসাঁ চিত্রকলা, যাকে কিনা ক্লাসিকাল এন্টিকুইটির/ধ্রুপদী সভ্যতার শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়, তা ক্লাসিকাল বা শাস্ত্রীয় চিত্রকলাকে বুনিয়াদ করেই গড়ে ওঠে, তবে সেই ঐতিহ্যকেই উত্তর ইউরোপের সমসাময়িক শৈল্পিক বিকাশ এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সাথে যুক্ত করে রুপান্তর করে নেয়। সুরভি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে "ক্লাসিসিজম-এর বৈশিষ্ট্য হল পরিমিতিবোধ, ভারসাম্যবোধ, সংযম এবং আঙ্গিক-সচেতনতা।...ক্লাসিসিজম-এর তাত্ত্বিক অর্থ হল নিয়ম, প্রথা এবং প্রচলিত শৃঙ্খলার অনুসরণ, তাৎক্ষণিক প্রেরণা নয়"।[১] রেনেসাঁ শিল্প এবং রেনেসাঁ মানবতাবাদ দর্শন সমস্ত ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিত্যনতুন শৈল্পিক কলাকৌশল ও শৈল্পিক সংবেদনশীলতা শিল্পী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের প্রভাবিত করে। রেনেসাঁ শিল্পের মাধ্যমেই ইউরোপ মধ্যযুগ থেকে আদি আধুনিক যুগে উন্নীত হয়।

টিশান , স্যাক্রেড এন্ড প্রোফেন লাভ, c. সম্ভবত ১৫১৩ – ১৫১৪
Piero della Francesca, দ্য ব্যাপ্টিজম অফ ক্রাইস্ট, (সম্ভবত ১৪৫০) (ন্যাশনাল গ্যালারি, লন্ডন).
সান্দ্রো বত্তিচেল্লি, দ্য বার্থ অফ ভেনাস , সম্ভবত ১৪৮৫. উফিজি, ফ্লোরেন্স

রেনেসাঁ বলতে সাধারণত নির্দেশ করা হয় মধ্যযুগের অন্তিম পর্যায় ও পাশ্চাত্য আধুনিক যুগের আদি পর্যায়কে। তবে এই তারিখ নির্ণয়ের সমস্যাগুলি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে: ১২শ শতকে ইউরোপিয়ান শিক্ষাগ্রহণের একটি নবজাগরণ বর্তমানে স্বীকৃত হয়েছে, অন্যদিকে ১৮শ শতকের আলোকিত যুগ রেনেসাঁ সম্বন্ধীয় বুদ্ধিবৃত্তিক প্রবণতার একটি ধারাবাহিকতা বা সম্প্রসারণ। সাধারণত শব্দটি নির্দেশ করে ১৫শ ও ১৬শ শতকের সম্মিলিত বুদ্ধিবৃত্তিক ও শৈল্পিক রুপান্তরণ, যার অন্তর্গত মানবধর্ম, রোমীয়মতবিরোধী (প্রটেস্ট্যান্ট) ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, কোপার্নিকাসের জ্যোতির্বিদ্যা, এবং আমেরিকার 'আবিষ্কার'। [২]

  • ইউরোপের বেশ কয়েকটি স্থানে, আদি রেনেসাঁ শিল্প এবং অন্তিম মধ্যযুগীয় শিল্প একই সাথে তৈরি হয়।
  • একই রেনেসাঁ সম্বন্ধীয় বিকাশসমূহ যা মানবসমাজকে প্রভাবিত করেছিল, তা দর্শন, সাহিত্য, স্থাপত্য, ধর্মতত্ত্ব, বিজ্ঞান, শাসনব্যবস্থা, এবং সমাজের অন্যান্য শাখাকেও প্রভাবিত করে। নিম্নলিখিত তালিকাটি একটি সারসংক্ষেপ, যার বিষয়গুলি উপরে উদ্ধৃত করা বিশ্বকোষের মূল প্রবন্ধগুলিতে আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
  • শাস্ত্রীয় পুঁথিসমূহ যেগুলি ইউরোপীয় পন্ডিতদের কাছে অনেক শতাব্দী পর্যন্ত উপস্থিত ছিল না, তা সহজলভ্য হল। এর মধ্যে ছিল দর্শন, গদ্য, কাব্য, দৃশ্যকাব্য, বিজ্ঞান, শিল্পকলার উপর একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ, এবং প্রারম্ভিক খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ব।
  • একইসঙ্গে, ইউরোপ পরিণত গণিতে, যা ইসলামী পন্ডিতদের রচনায় উৎপত্তি হয়েছিল, প্রবেশাধিকার লাভ করল।
  • পঞ্চদশ শ্তাব্দীতে চলমান টাইপ প্রিন্টিং এর আবির্ভাব হওয়ার ফলে চিন্তাধারণা খুব সহজেই প্রচার করা সম্ভব হয়, এবং বৃহত্তর জনগণের উদ্দেশ্যে ক্রমবর্ধমান হারে পুস্তক রচিত হতে থাকে।
  • মেডিচি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা এবং ফলত ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ইতালির একটিমাত্র শহর, ফ্লোরেন্সে, বিপুল ধনসম্পদ নিয়ে আসে।
  • ইতালিয় ব্যাংক-পরিচালক ও রাজনীতিবিদ কসিমো ডি মেডিচি শিল্পকলায় উৎসাহদানের নতুন মানদণ্ড স্থির করেন। এই মানদণ্ড চার্চ বা রাজতন্ত্র থেকে মুক্ত ছিল। কসিমো ডি মেডিচি তার বিপুল ধনসম্পদ যেমন ফ্লোরেন্সিয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যবহার করেন, একইভাবে বক্তা, কবি, দার্শনিকদের উদ্দেশ্যে,[৩] ও বেশ কয়েকটি শৈল্পিক সম্পাদনের জন্যও তিনি মূলধন যোগান দেন। [৪]
  • মানবতাবাদী দর্শনের ফলে মানবসমাজের সঙ্গে মনুষ্যত্ব, মহাবিশ্ব ও ভগবানের সম্পর্কের উপর গির্জার আর একচেটিয়া অধিকার রইল না।
  • গ্রীক ত্ত ল্যাটিন ভাষার রচনার প্রতি একটি পুনরুজ্জীবিত আগ্রহ গড়ে ওঠায় স্থপতি ব্রুনেলেস্কি ও ভাস্কর ডোনাটেলোর নেতৃত্বে রোমান সাম্রাজ্যের ভগ্নাবশেষের প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যয়ন শুরু হয়। শাস্ত্রীয় উদাহরণের উপর ভিত্তি করে স্থাপত্যশিল্পের একটি নির্মাণকৌশলের পুনঃপ্রচলন হওয়ার দরুন চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্যে গ্রিক ও ল্যাটিন উদাহরণের অনুকরণ শুরু হয়, যা ১৪২০ তেই মাসাচ্চিও ও উচ্চেলো-র চিত্রাঙ্কনে প্রতিভাত হয়।
  • উন্নত তেল রং এর উৎপাদন এবং ইয়ান ভন আইক, রোখইয়ের ভন দ্যর ওইদেন ও হিউগো ভন দ্যর খুস প্রমুখ ডাচ শিল্পীর অধিনায়কত্বে তৈল চিত্রের কলাকৌশলের বিকাশ হয় ও তা ইতালিতে ১৪৭৫ এর কাছাকাছি সময়ে গৃহীত হয় এবং শেষপর্যন্ত পৃথিবীব্যাপী চিত্রাঙ্কণ পদ্ধতির উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে।
  • ১৫শ শতকে ফ্লোরেন্স ভূখণ্ডের মধ্যেই শৈল্পিক প্রতিভাবান ব্যক্তিগণ যেমন মাসাচ্চিও, ব্রুনেলেস্কি, গিবারটি, পিয়েরো ডেলা ফ্রান্সেসকা, ডোনাটেল্লো, ও মাইকেলোতসো প্রমুখের লাভজনক উপস্থিতি একটি বিশেষ ইথস বা মেজাজের জন্ম দেয় যার থেকে আবির্ভুত হন হাই-রেনেসাঁ বা অন্তিম পর্যায়ের রেনেসাঁর মহান ব্যক্তিত্বগণ, আবার একই মেজাজ অনেক মাঝারি মানের শিল্পীদেরও অসাধারণ শিল্পকর্ম তৈরিতে উৎসাহিত করে। [৫]
  • একই রকমের বংশপারম্পরিক শিল্পকর্ম সৃষ্টি হয় ভেনিসের মেধাবী বেলিনি পরিবারে, তাদের প্রভাবশালী আত্মীয় ম্যান্টেগ্না, জরজনে, টিশান, ও তিন্তরেত্তো প্রমুখের দ্বারা। [৫][৬][৭] লেওন বাতিস্তা আল্বারতি দুটি নিবন্ধের প্রকাশ করেন, 'ডি পিকচুরা' ('অঙ্কন সম্বন্ধে'), ১৪৩৫, এবং দে রে এদিফিকাতোরিয়া ('নির্মাণ কৌশল শিল্প সম্বন্ধে'), ১৪৫২।

ইতিহাস

ইতালির গোড়ার দিকের রেনেসাঁ ১২৮০-১৪০০

জত্তো: দ্য লামেন্টেশন , সম্ভবত ১৩০৫, স্ক্রোভগ্নি চ্যাপেল, রেনেসাঁর পূর্বাভাস লক্ষণীয়।

ইতালিতে ১৩শ শতকের শেষভাগে ও ১৪শ শতকের প্রথম ভাগে নিকোলা পিসানো ও তার পুত্র জোভান্নি পিসানো পিসা, সিয়েনা, ও পিস্তোইয়া তে কর্মরত ছিলেন, এবং তাদের ভাস্কর্যের মধ্যে সুস্পষ্টরূপে ক্ল্যাসিক প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এর কারণ সম্ভবত এই যে এই শিল্পীরা প্রাচীন রোমান সারকোফেগাসসমূহের (অর্থাৎ প্রাচীন সভ্যতাগুলির ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া খচিত-অলঙ্কৃত প্রস্তরনির্মিত শবাধার) সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। এঁদের শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম পালপিটস অফ দ্য ব্যাপ্টিসটেরি(খ্রিষ্টধর্মে নবজাতকের অভিষেকের নির্দিষ্ট স্থান), এবং ক্যাথেড্রাল অফ পিসা ('পিসার প্রধান গির্জা')

জোভান্নি পিসানোর সমসাময়িক, ফ্লোরেন্সিয় চিত্রশিল্পী, জত্ত, রুপকধর্মী চিত্রাঙ্কনের একটি রীতি উদ্ভাবন করেন যা তার গুরু শিমাবুয়ে ও সমসাময়িকদের তুলনায় নজিরবিহীনভাবে প্রকৃতিবাদী, ত্রিমাত্রিক, জীবন্ত ও বাস্তবধর্মী, এবং ক্ল্যাসিসিস্ট ছিল। জত্ত, যার শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম দ্য সাইকেল অফ দ্য লাইফ অফ ক্রাইস্ট (যীশুখ্রিষ্টের জীবন চক্র) যা এরেনা চ্যাপেল, পাডুয়া, ইতালিতে অবস্থিত। ১৬শ শতকের জীবনীকার জরজো ভাসারি মনে করেন যে এই শিল্পকর্মটি "অমার্জিত চিরাচরিত বাইজানটাইন শিল্পরীতি থেকে শিল্পকে উদ্ধার ও পুনরধিষ্ঠিত করে।" [৮]

গোড়ার দিকের নেদারল্যান্ডিয় শিল্পকলা, ১৪০০-১৫২৫

রোখিয়ের ভন দের ওইদেন, The Descent from the Cross (c. 1435), ওক গাছের তক্তার উপর অঙ্কিত তৈলচিত্র , ২২০ সেমি × ২৬২ সেমি (৮৭ ইঞ্চি × ১০৩ ইঞ্চি). মুসেও দেল প্রাদো, মাদ্রিদ।

লো কান্ট্রিস এ (অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ও লাক্সেমবর্গ) এইসময়কার চিত্রশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ইয়ান ভন আইক, তার ভ্রাতা হুবারট ভন আইক, রবার্ট ক্যাম্পিন, হ্যান্স মেম্লিং, রোখইয়ের ভন দ্যর ওইদেন ও হিউগো ভন দ্যর খুস। তাদের চিত্রকলা আদি ইতালিয় রেনেসাঁ চিত্রকলার অনধীন ভাবে গড়ে ওঠে, এবং তাদের কর্মে মধ্যে গ্রিক ও ল্যাটিন পুরাকালের সচেতন ও স্বেচ্ছাকৃত পুনরূজ্জীবিকরণের প্রচেষ্টার প্রভাবও দেখা যায় না। তাদের শৈলী মধ্যযুগীয় শিল্পকলার অন্তর্গত রঙিন প্রলেপ, রঙিন কাচ, ও পুস্তক আলোকসজ্জা প্রভৃতি থেকে গড়ে ওঠে। অঙ্কনের প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় তেল রং, যা বহুকাল থেকেই আনুষ্ঠানিক চামড়ার তৈরি ঢাল ও আনুষঙ্গিক বস্ত্রের রঙিন চিত্রাঙ্কন করায় ব্যবহৃত হয়ে আসছিল, কারণ তা ছিল নমনীয় ও অপেক্ষাকৃতভাবে দীর্ঘকাল ধরে ব্যবহার্য। সর্বপ্রথম নেদারল্যান্ডিয় তৈলচিত্রগুলি মধ্যযুগীয় রঙিন প্রলেপের মতোই পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা সমন্বিত। উপাদানটি সূক্ষ্ম পার্থক্য় ও বয়নবিন্যাস বর্ণনার পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী ছিল এবং প্রকৃতির বিশদ পর্যবেক্ষণ অঙ্কনের মাধ্যমে তুলে ধরতে সাহায্য করেছিল।

নেদারল্যান্ডিয় চিত্রশিল্পীগণ রৈখিক পরিপ্রেক্ষিত ও বিভিন্ন অংশের সুসমতাকে মাথায় রেখে একটি চিত্র প্রস্তুত করেননি। তারা অনুক্রমিক কাঠামোর সমানুপাত ও ধর্মসংক্রান্ত প্রতীকসমূহের উপর মধ্যযুগীয় অভিমত কেই বজায় রেখেছেন, পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মনুষ্যনির্মিত উপাদানগুলিকে বাস্তবধর্মী দিক থেকে বর্ণনা করেই আহ্লাদিত হয়েছেন। ইয়ান ভন আইক ও তার ভ্রাতা হুবারট 'দি অল্টারপিস অফ দ্য মিস্টিক্যাল ল্যাম্ব' (রহস্যময় মেষশাবকের গির্জাবেদি-চিত্র)। আন্তোনেল্লো দ্য মেসিনা সম্ভবত সিসিলির নেপলস-এ থাকাকালীন ইয়ান ভন আইকের চিত্রকলার সঙ্গে পরিচিত হন। ১৪৭৫-এ হিউগো ভন দ্যর খুসের 'পোরটিনারি অল্টারপিস' ফ্লোরেন্সে পৌঁছায় এবং সেখানকার অনেক চিত্রশিল্পীদের উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। খুব শিঘ্রই প্রভাবিত হন দোমেনিকো গিরল্যান্দাইয়ো, যিনি 'পোরটিনারি অল্টারপিস'-এর অনুকরণে একটি গির্জাবেদি-চিত্র অঙ্কন করেন।

গোড়ার দিকের ইতালিয় রেনেসাঁ, ১৪০০-১৪৭৯

Donatello, ডেভিড (১৪৪০-দশক?) মুসেও নাজিওনাল দেল বার্গেলো।

যদিও দুজন পিসানো এবং জত্তো দের শিষ্য এবং অনুগামী ছিল, প্রকৃত রেনেসাঁ শিল্পী ফ্লোরেন্সে ১৪০১ এর পূর্বে আবির্ভূত হননি। ১৪০১-এ ফ্লোরেন্সের প্রধান গির্জা বা ক্যাথেড্রাল-এর ব্যাপ্টিসটেরি-র (খ্রিষ্টধর্মে নবজাতকের অভিষেকের নির্দিষ্ট স্থান) কয়েকটি ব্রোঞ্জের দরজা খোদাই করার প্রতিযোগিতায় সাতজন তরুণ ভাস্কর অংশগ্রহণে এগিয়ে আসেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ব্রুনেলেস্কি, ডোনাটেল্লো, এবং লোরেন্সো গিবারটি যিনি প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেন। ব্রুনেলেস্কি, যিনি ফ্লোরেন্সে ক্যাথেড্রাল-এর গম্বুজের স্থপতি হিসেবে সবচেয়ে বিখ্যাত ছিলেন, কয়েকটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেন, যেমন সান্টা মারিয়া নভেলা-য় পূর্ণায়ত ক্রুশবিদ্ধ যিশুর মূর্তি, যা স্বাভাবিকতাবাদী বা প্রকৃতিবাদী শিল্পরীতির অন্যতম উদাহরণ। ব্রুনেলেস্কির পরিপ্রেক্ষিতের উপর গবেষণা ও চিন্তাভাবনা চিত্রশিল্পী মাসাচ্চিও-কে প্রভাবিত করেছিল বলে মনে করা হয়। ডোনাটেল্লো আদি রেনেসাঁর শ্রেষ্ঠ ভাস্করের স্বীকৃতি পান। তার শ্রেষ্ঠ অবদান ছিল মানবতাবাদী এবং যৌন-কামনা উদ্রেককারী ডেভিড -এর খোদাই-করা প্রতিকৃতি এবং গাত্তামেলাতা-র স্মৃতিস্তম্ভ। ডেভিড ছিলেন ফ্লোরেন্সিয় প্রজাতন্ত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তি। গাত্তামেলাতা-র স্মৃতিস্তম্ভটি ছিল রোমান-পরবর্তী সময়ের প্রথম বিশালাকৃতি ব্রোঞ্জনির্মিত অশ্বারোহী।

ডোনাটেল্লোর সমসাময়িক, মাসাচ্চিও, ছিলেন জত্ত-এর আঙ্কিক উত্তরাধিকারী, এবং এক শতাব্দী পূর্বে আরম্ভ আকারের কঠিনতা ও স্বাভাবিকতাবাদী/প্রকৃতিবাদী মুখমণ্ডল ও অঙ্গভঙ্গির শিল্পরীতির চলকে আরও অগ্রসর করেছিলেন। মাসাচ্চিও বেশ কয়েকটি প্যানেল পেইন্টিং (কাষ্ঠখন্ড-চিত্রাঙ্কণ) সম্পূর্ণ করেন তবে যার জন্য তিনি সবচেয়ে বিখ্যাত তা হল ফ্রেস্কো সাইকল-সমূহ (ফ্রেস্কো - ভেজা পলেস্তারার উপরিভাগে লাগিয়ে শুকাতে দেওয়া রঞ্জক পদার্থের সাহায্যে চিত্রিত ছবি) যা তিনি ব্র্যাঙ্কাচ্চি চ্যাপেল-এ (ব্র্যাঙ্কাচ্চি একটি খ্রীষ্টীয় ভজনালয় ) বয়োজ্যেষ্ঠ শিল্পী ম্যাসোলিনো-এর সঙ্গে শুরু করেন এবং যা পরবর্তী কালের চিত্রশিল্পীদের, যেমন মাইকেলএঞ্জেলো, উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। মাসাচ্চিওর বিকাশসমূহের আরও উন্নতিসাধন করেন ফ্রা এঞ্জেলিকো তার চিত্রাঙ্কনের মধ্যে দিয়ে, মূলত ফ্লোরেন্সের কনভেন্ট অফ স্যান মারকোয় উপস্থিত তার ফ্রেস্কো-গুলির মধ্যে দিয়ে।

১৫শ শতকের ফ্লোরেন্সিয় চিত্রশিল্পীদের কাছে পরিপ্রেক্ষিত, আলো প্রভৃতি উপাদানগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উচ্চেলো তার অঙ্কনে পরিপ্রেক্ষিতের প্রকাশ করতে এতটাই আচ্ছন্ন ছিলেন যে ভাসারির মতে তার নিদ্রা পর্যন্ত বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। তার সমাধান লক্ষ্য করা যায় তার শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম, 'দ্য ব্যাটল অফ স্যান রোম্যানো'। পিয়েরো ডেল্লা ফ্রান্সেস্কা আলো ও রৈখিক পরিপ্রেক্ষিত দুইয়েরই শৃঙ্খলাবদ্ধ বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন করেন, এবং তার ফলাফল আমরা দেখতে পাই স্যান ফ্রান্সিস্কোর আরেতসো-য় তার ফ্রেস্কো সাইকল 'দ্য হিস্ট্রি অফ দ্য ট্রু ক্রস'-এ।

নেপলস-এ চিত্রশিল্পী অ্যান্তোনেল্লো দা মেসিনা প্রতিকৃতি ও ধর্মসম্বন্ধীয় চিত্রাবলি অঙ্কনের ক্ষেত্রে অন্যান্য ইতালিয় চিত্রশিল্পীদের পূর্বেই, সম্ভবত ১৪৫০-এ, তেল রং ব্যবহার করা শুরু করেন। তিনি এই পদ্ধতিটি উত্তরে প্রসারিত করেন এবং ভেনিসের চিত্রশিল্পীদের প্রভাবিত করেন। উত্তর ইতালির অন্যতম সেরা চিত্রশিল্পী ছিলেন অ্যান্দ্রিয়া ম্যান্তেগ্না, যিনি তার পৃষ্ঠপোষক লুদোভিকো গনজাগা-র জন্য একটি ঘরের, 'দ্য ক্যামেরা দেগ্লি স্পোসি', অভ্যন্তরের সৌন্দর্যবৃদ্ধি করেন। এক্ষেত্রে তিনি পরিবার ও সভার সদস্যদের প্রতিকৃতি ঐন্দ্রজালিক পটভূমিতে স্থাপন করেন।

ইতালিয় চিত্রকলায় আদি রেনেসাঁর প্রভাবের সমাপ্তি তার শুরুর মতোই একটি কমিশনের মাধ্যমে হয় যেটি শিল্পীদের একত্রীভূত করে। তবে এইবার শিল্পীরা এগিয়ে আসেন প্রতিযোগী মনোভাব নিয়ে নয়, সহযোগিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে। পোপ সিক্সটাস দ্য ফোরথ 'পেপাল চ্যাপেল' পুনর্নির্মাণ করেন, যা তার সম্মান রক্ষার্থে 'দ্য সিস্টাইন চ্যাপেল' নামকরণ করা হয়। পোপ সিক্সটাস দ্য ফোরথ সান্দ্রো বত্তিসেলি, পিয়েত্রো পেরুজিনো, দমেনিকো গিরল্যান্দাইয়ো, ও কসিমো রোসেলি প্রমুখ শিল্পীদের একটি দল গঠন করেন এবং তারা একত্রে ফ্রেস্কো সাইকল দিয়ে পেপাল চ্যাপেলের দেয়াল সজ্জিত করেন। এই ফ্রেস্কো সাইকল 'লাইফ অফ ক্রাইস্ট' এবং 'লাইফ অফ মোসেস' তুলে ধরে। ষোলোটি বিশালাকার চিত্রে, চিত্রশিল্পীরা প্রত্যেকে নিজস্ব শৈলীতে কাজ করা সত্ত্বেও বিন্যাসের নীতির উপরে একমত হন, এবং আলোকসজ্জিত করার পদ্ধতি, রৈখিক ও পারিপার্শ্বিক পরিপ্রেক্ষিত, দৈহিক গঠনতন্ত্র, ফোরসরটেনিং, চরিত্রাঙ্কন, ইত্যাদি পদ্ধতির সদ্ব্যবহার করেন এবং গিবারটি, ভেরোচ্চিও, গিরল্যান্দাইয়ো ও পেরুজিনোর ফ্লোরেন্সিয় চিত্রশালায় এগুলি কে এক উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ফ্রান্সে আদি রেনেসাঁ, ১৩৭৫-১৫২৮

বার্গান্ডির ডাচ শিল্পীগণ সমেত ফ্রান্সের শিল্পীগণ অনেকক্ষেত্রেই বিচারব্যবস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন এবং অভিজাত সম্প্রদায়ের জন্য পুঁথিসমূহের স্পষ্টতর ব্যাখ্যা, এবং প্রতিকৃতি, ভক্তিমূলক চিত্রাবলি ও গির্জাবেদি-চিত্র অঙ্কন করতেন। সবচেয়ে বিখ্যাতদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ফ্লেমিশ পুঁথি-চিত্রন-শিল্পী লিম্বোরগ ভ্রাতৃবৃন্দ যারা তৈরি করেন 'ডিউক অফ বেরির মূল্যবান সময়গুলি'। রাজসভার চিত্রশিল্পী, জ ফুকে, ইতালি পরিদর্শন করেন ১৪৩৭ এ এবং ফলস্বরূপ তার চিত্রাঙ্কণে ফ্লোরেন্সিয় চিত্রশিল্পীগণ যেমন পাওলো উচ্চেলোর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যদিও তিনি সপ্তম চার্লস প্রমুখের প্রতিকৃতিসমূহের জন্যই বিখ্যাত, তবুও ফুকে পুঁথি-চিত্রন তৈরি করেন, এবং তাকে ক্ষুদ্রকায় প্রতিকৃতির উদ্ভাবনকারী বলেও মনে করা হয়। এইসময়কার কয়েকজন শিল্পী ছিলেন যারা বিখ্যাত কিছু গির্জাবেদি-চিত্র অঙ্কন করেন, যেগুলি শৈলীগত দিক থেকে ইতালিয় ও ফ্লেমিশের থেকে স্বতন্ত্র। এঁদের মধ্যে রয়েছেন দুজন রহস্যময় ব্যক্তিত্ব, এঙ্গুয়ের কোয়ারত, যিনি সম্ভবত নির্মাণ করেন পিয়েতা অফ ভিলেনু-লা-আভিওন, এবং জ হেই, যিনি তার 'মউলিন্স অল্টারপিস' (মউলিন গির্জাবেদি-চিত্র) এর সুবাদে 'মউলিনের রাজা' নামেও পরিচিত ছিলেন। এই শিল্পকর্মগুলিতে রিয়েলিজম এবং মানবদেহের নিখুঁত পর্যবেক্ষণ, আবেগ এবং আলোকসজ্জা প্রভৃতির সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে এক মধ্যযুগীয় নিয়মানুগত্য, যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল স্বর্ণমণ্ডিত প্রেক্ষাপট।

উচ্চতর ইতালিয় রেনেসাঁ, ১৪৭৫-১৫২৫

মাইকেলএঞ্জেলো, (সম্ভবত ১৫১১) দ্য ক্রিয়েশন অফ এডাম, সিস্টাইন চ্যাপেল সিলিং থেকে।

সার্বজনবিদিত প্রতিভাবান শিল্পী, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর তার জীবনভর অধ্যয়ন ও নির্ভুল লিপিবদ্ধকরণের উপর নির্ভর করে অগ্রসর করতে চেয়েছিলেন চিত্রশিল্পের বিভিন্ন দিকগুলি, যেমন, আলোকসজ্জা, রৈখিক ও পারিপার্শ্বিক পরিপ্রেক্ষিত, দৈহিক গঠনতন্ত্র, ফোরশরটেনিং, এবং বৈশিষ্ট্যপ্রদান। এগুলি হল সেই দিকগুলি যেগুলি আদি রেনেসাঁর শিল্পীদের আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। তিনি তেল রং তার চিত্রাঙ্কণের প্রাথমিক উপাদান হিসেবে অবলম্বন করেন এবং তার ফলে আলো ও পারিপার্শ্বিক পটভূমির উপর তার প্রভাব অনেক স্বাভাবিক ও নাটকীয়ভাবে বর্ণনা করতে সক্ষম হন। তার 'মোনা লিসা'য় যা প্রতীয়মান হয়। তার শবব্যবচ্ছেদ কঙ্কাল ও পেশীসংক্রান্ত দৈহিক গঠনতন্ত্র বুঝতে সাহায্য করে, যেমন আমরা দেখতে পাই (অসমাপ্ত) 'সেন্ট জেরোম'-এ। 'দ্য লাস্ট সাপার' এ তার মানব-অনুভূতির রুপায়ণ ধর্মসংক্রান্ত চিত্রাঙ্কনের মানদণ্ড স্থির করে।

লিওনার্দোর কনিষ্ঠ সমসাময়িক মাইকেলেঞ্জেলো সম্পূর্ণ ভিন্ন গতিপথে যান। মাইকেলেঞ্জেলো তার চিত্রকলা কিংবা ভাস্কর্য কোনোটাতেই মানবদেহ ছাড়া অন্য কোনো প্রাকৃতিক উপাদানের প্রতি আগ্রহ দেখাননি। যখন তার বয়স কুড়ি-পঁচিশ বছর তখনি তিনি তার কৌশলকে নিখুঁত করে তোলেন: রোমের সেন্ট পিটারস বাসিলিকায় ডেভিডের বিশালাকায় মার্বেলের মূর্তি ও বেশ কয়েকটি পিয়েতা তৈরির মাধ্যমে। এর পর তিনি মানব-দৈহিক-গঠনতন্ত্রের বিশেষ অভিব্যক্তির সম্ভাবনার অনুসন্ধান করেন। দ্বিতীয় পোপ জুলিয়াসের অনুজ্ঞায় তিনি সিস্টাইন চ্যাপেল এর ছাদ অলংকরণ করেন যা রূপকধর্মী রচনার সেরা শিল্পকর্ম হিসেবে খ্যাতিলাভ করে এবং পরবর্তী প্রজন্মের ইউরোপীয় শিল্পীদের উপর এটি বিশাল প্রভাব বিস্তার করে।

লিওনার্দো ও মাইকেলেঞ্জেলোর পাশাপাশি ছিলেন উচ্চতর রেনেসাঁর তৃতীয় শ্রেষ্ঠ কনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী, রাফায়েল, যিনি তার স্বল্প সময়ের জীবনে বিশাল সংখ্যক জীবন্ত ও চিত্তাকর্ষক প্রতিকৃতি অঙ্কন করেন, যেমন দ্বিতীয় পোপ জুলিয়াসের এবং তার উত্তরাধিকারী দশম পোপ লিও এর প্রতিকৃতি, এবং ম্যাডোনা ও ক্রাইস্ট চাইল্ড এর বহুসংখ্যক চিত্র, যার মধ্যে রয়েছে সিস্টাইন ম্যাডোনা এর চিত্র।

উত্তর ইতালিতে উচ্চতর রেনেসাঁর প্রতিনিধি হলো জোভাননি বেলিনির ধর্ম-সম্বন্ধীয় চিত্রাঙ্কনসমূহ যার অন্তর্গত এক বিশেষ ধরনের বেশ কয়েকটি প্রশস্ত গির্জাবেদি-চিত্র যার নাম "স্যাক্রেড কনভার্সেশন" (পবিত্র কথোপকথন) যেখানে বর্ণনা করা হয়েছে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ম্যাডোনার চারিদিকে একদল সাধু। তার সমসাময়িক জর্জন অল্পসংখ্যক বিভ্রান্তকর শিল্পকর্ম রেখে গেছেন যেমন "দ্য টেম্পেস্ট", যার বিষয়বস্তু নিয়ে জল্পনা এখনো চলছে। টিশানের একেবারে প্রথম দিকের শিল্পকর্মগুলির তারিখ উচ্চতর রেনেসাঁর যুগ থেকেই স্থির করা হয় যার মধ্যে অন্যতম একটি বিশালাকার গির্জাবেদি-চিত্র "দি এসাম্পশন অফ দ্য ভার্জিন" (কুমারী মেরির স্বর্গে অভ্যর্থনা), যার মধ্যে নাটকীয় কার্যকলাপ এবং দৃষ্টি আকর্ষক রং ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়।

জার্মানিয় রেনেসাঁ শিল্প

অগ্রজ লুকাস ক্রানাচ, অ্যাপোলো এন্ড ডায়ানা

জার্মান রেনেসাঁ চিত্রকলা উত্তর ইউরোপীয় রেনেসাঁর বৃহত্তর শ্রেণীর আওতায় পড়ে, যাকে উত্তরাঞ্চলীয় রেনেসাঁ-ও বলা হয়ে থাকে। জার্মান চিত্রকলায় রেনেসাঁর প্রভাব দৃষ্টিগোচর হয় ১৫শ শতকে, তবে এই ঝোঁক বহুবিস্তৃত ছিল না। গার্ডনার-এর 'আর্ট থ্রু দি এজেস' মাইকেল প্যাচার - একজন চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর- -কে প্রথম জার্মান শিল্পী যাঁর শিল্পকর্ম ইতালীয় রেনেসাঁর প্রভাবযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে। সেই উৎস অনুযায়ী, প্যাচারের চিত্রাঙ্কন, "সেন্ট উল্ফগ্যাং ফোর্সেস দ্য ডেভিল টু হোল্ড হিস্ প্রেয়ারবুক" (১৪৮১), শৈলীর দিক থেকে পশ্চাদবর্তী-গোথিক, তবে ইতালীয় শিল্পী ম্যানটেগনার প্রভাববিশিষ্ট। [৯] কারূশিল্পীদের মধ্যে খোদকারেরা নৈপুণ্যের তুলনায় সৌন্দর্যের উপর বেশি নজর দেন। জার্মানিতে উকৃষ্ট খোদকারেরা ছিলেন, উদাহরণস্বরূপ, মার্টিন স্কনগর, যিনি ১৪০০-এর শেষের দিকে ধাতু খোদাই করতেন। গার্ডনার অঙ্কন সম্বন্ধীয় কলার দক্ষতা ও জার্মানির মুদ্রণপ্রযুক্তির উন্নতি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বলে মনে করেন এবং বলেন যে ধাতু খোদাই রেনেসাঁর সময়ে কাঠে খোদাই ছবিকে প্রতিস্থাপন করে। [১০] তবে, কয়েকজন শিল্পী, যেমন আলব্রেখট ডিউরার, কাঠে খোদাই করা ছবি চালু রাখেন। গার্ডনার ও রাসেল দুজনেই ডিউরার-এর খোদাইয়ের সূক্ষ্মতার প্রশংসা করেন, রাসেল "দ্য ওয়ার্ল্ড অফ ডিউরার" -এ বলেন যে ডিউরার "সেগুলিকে উচ্চ মানের শিল্পে উন্নীত করেন"।[১১]

১৫০০শ শতকে, জার্মানির রেনেসাঁ শিল্প আরো সুলভ হয়ে ওঠে, গার্ডনারের কথায়, "ষোড়শ শতকের উত্তর ইউরোপিয় শিল্পে ইতালীয় রেনেসাঁর উন্নয়নসমূহের প্রতি একটি আকস্মিক সচেতনতা এবং এই নতুন শৈলীটিকে যত দ্রুত সম্ভব অঙ্গীভূত করার একটি অভিপ্রায় লক্ষ্য করে যায়।"[১২] সবচেয়ে পরিচিত জার্মান রেনেসাঁ চিত্রকলা চর্চাকারীদের মধ্যে ছিলেন আলব্রেখট ডিউরার (১৪৭১-১৫২৮)। ক্লাসিকাল চিন্তাভাবনার প্রতি তার আকর্ষনের দ্বারা চালিত হয়ে ডিউরার ইতালিতে শিল্পকলার অধ্যয়নে যান। গার্ডনার ও রাসেল দুজনেই জার্মানিতে ইতালীয় রেনেসাঁর শৈলী ও চিন্তাভাবনা নিয়ে আসার উপর ডিউরার-এর অবদানকে স্বীকার করেন। [১১][১৩] রাসেল বলেন যে এটি "জার্মান শিল্পকলায় গোথিক শিল্পরীতির জানালা খুলে দেয়,"[১১] অন্যদিকে গার্ডনার এটিকে ডিউরার-এর "জীবনের উদ্দেশ্য"[১৩] বলে আখ্যা দেন। গুরুত্বপূর্ণভাবে, গার্ডনার উল্লেখ করেন যে, ডিউরার "প্রথম উত্তরাঞ্চলের শিল্পী ছিলেন যিনি দক্ষিণাঞ্চলের রেনেসাঁর প্রাথমিক লক্ষ্যগুলি সম্পূর্ণ উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন" [১৩] যদিও তার শৈলী সবসময় তার পরিচয় দেয় না। একই উৎস থেকেই জানা যায় যে কনিষ্ঠ হ্যান্স হোলবেন (১৪৯৭-১৫৪৩) ইতালীয় ধারণাসমূহ সফলতার সঙ্গে অঙ্গীভূত করেছিলেন আবার একইসঙ্গে "উত্তরাঞ্চলের প্রথাগত ক্লোজ রিয়েলিজম"[১৪] কেও বজায় রেখেছিলেন। এটিকে জার্মানীয় ও ইতালীয় শৈলীর মেলবন্ধনের পরিবর্তে "স্থানীয় জার্মান শৈলী" [১৩] -তে কাজ করবার প্রতি ডিউরার-এর প্রবণতার সঙ্গে পার্থক্য করা হয়। জার্মান রেনেসাঁর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন গ্রিউনেওয়াল্ড, আলব্রেখট অল্টডর্ফার, এবং অগ্রজ লুকাস ক্রনাশ[১৫]

হাইরোনিমাস বশ ছিলেন একজন নেদারল্যান্ডীয় চিত্রশিল্পী, যিনি একধরনের কল্পনাপ্রবণ গড়ন প্রয়োগ করেন যেগুলি অনেকক্ষেত্রেই উদ্ভিদ, পশু ও স্থাপত্য-সংক্রান্ত গড়নের সমন্বয়ে প্রান্তসজ্জা ও পুঁথি-চিত্রনের হরফ অলঙ্করণে ব্যবহার করে হতো। পুঁথি-চিত্রনের প্রসঙ্গে ও যখন এগুলি মানব মূর্তি দিয়ে জনপূর্ণ রয়েছে সেইসব ক্ষেত্রে এই গড়নগুলি বশ-এর চিত্রাঙ্কনকে এক সারিয়াল বা পরাবাস্তব চরিত্র দান করেছিল যার কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য কোনও রেনেসাঁ শিল্পীর শিল্পকর্মে নেই । তার শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম হল "দ্য গার্ডেন অফ আর্থলি ডিলাইটস" নামক একটি ট্রিপটিক অর্থাৎ পাশাপাশি তিনটি ফলকে অঙ্কিত চিত্র বা ত্রিপট।

ব্রিটেন

ব্রিটেন রেনেসাঁ শৈলী তৈরিতে অনেকটাই দেরি করেছিল এবং টিউডর সভার অধিকাংশ শিল্পীরাই ছিলেন বিদেশী, সাধারণত 'লো কান্ট্রিস'-এর থেকে আসা, যেমন ছিলেন কনিষ্ঠ হ্যান্স হোলবেন, যিনি ইংল্যান্ডে মারা যান | ব্যতিক্রম ছিল ক্ষুদ্রকায় প্রতিকৃতি, যেটি শিল্পীগণ যেমন নিকোলাস হিলিয়ার্ড, ইউরোপের বাকি অঙ্গে জনপ্রিয় হওয়ার আগেই একটি স্বতন্ত্র ধরনে উন্নীত করেন | স্কটল্যান্ডীয় রেনেসাঁ শিল্পকলা একইভাবে বিদেশী শিল্পীদের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং বিচারসভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল |

বিষয়বস্তু এবং প্রতীক

সান্দ্রো বত্তিচেল্লি, ম্যাগনিফিকেট ম্যাডোনা, ১৪৮০-৮১, পাটাতনের উপর টেম্পেরা, উফিজি, ফ্লোরেন্স

রেনেসাঁ চিত্রশিল্পীরা বহুসংখ্যক বিষয়বস্তুর উপরে চিত্রাঙ্কন করেন। ধর্ম-সম্বন্ধীয় গির্জাবেদি-চিত্র, ফ্রেস্কো সাইকেল, এবং ব্যক্তিগত ভক্তি-উপাসনার উপর চিত্রসমূহ খুব জনপ্রিয় ছিল। ইতালি ও উত্তর ইউরোপের চিত্রশিল্পীরা অনুপ্রেরণার জন্য জাকোবোস দি ভোরাজিনে-এর "গোল্ডেন লেজেন্ড" (১২৬০) বইটির শরণাপন্ন হন। সাধু-সন্তদের জীবনীর উপর এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসগ্রস্থ ছিল যেটি মধ্যযুগীয় চিত্রশিল্পীদের উপর বিশাল প্রভাব বিস্তার করে। ক্লাসিকাল এন্টিকুইটি এবং রেনেসাঁ মানবতাবাদের পুনর্জন্ম বহু পৌরাণিক কাহিনী ও ইতিহাস সংক্রান্ত চিত্রাবলির জন্ম দিয়েছিলো। উদাহরণস্বরূপ, ওভিড-এর গল্পগুলি খুব জনপ্রিয় ছিল। স্থাপত্যের বিভিন্ন উপাদানে বহুল ব্যবহৃত সাজসজ্জার অলঙ্কারসমূহ ক্লাসিক্যাল রোমান মোটিফের দ্বারাই অনুপ্রাণিত হয়েছিল।

কলাকৌশল

  • সমানুপাতের ব্যবহার চিত্রাঙ্কনের সাহায্যে স্থান-সম্বন্ধীয় ত্রৈমাত্রিকতার প্রকাশ প্রতিভাত হয় যত্ত দি বন্দোনে র শিল্পে ১৪শ শতকের শুরুতে। সত্যিকারের রৈখিক পরিপ্রেক্ষিত পরবর্তীতে বিধিবদ্ধ করেন ফিলিপো ব্রুনেলএসচি এবং লেওন বাতিস্তা আলবার্তি। শিল্পে বাস্তবধর্মিতা নিয়ে আসার পাশাপাশি এটি রেনেসাঁ চিত্রশিল্পীদের আরও বেশি পরিমানে চিত্রাবলী প্রস্তুতিতে উৎসাহিত করে।
  • ফোরশর্টেনিং: ফোরশর্টেনিং বলতে নির্দেশ করা হয় গভীরতার আভাস তৈরি করার উদ্দেশ্যে একটি চিত্রে ব্যবহৃত সংকুচিতকারী রেখা।
  • স্ফুমাতো: স্ফুমাতো শব্দটি উদ্ভাবন করেন ইতালীয় রেনেসাঁ চিত্রশিল্পী, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, এবং এটি হলো তীক্ষ্ন প্রান্তরেখাগুলিকে মসৃন বা আবছা করার জন্য ধীরে ধীরে পাতলা চক্চকে প্রলেপ দিয়ে একটি রং অন্যটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে গভীরতার বা ত্রৈমাত্রিকতার আভাস নিয়ে আসার একটি অঙ্কন পদ্ধতি। শব্দটি আসে ইতালীয় শব্দ স্ফুমেয়ার থেকে যার অর্থ বাষ্পীভূত হওয়া বা মিলিয়ে যাওয়া। এই শব্দটির ল্যাটিন উৎপত্তি হল ফুমেয়ার, যার অর্থ ধূমপান করা।
  • কিয়ারুসকুরো: কিয়ারুসকুরো শব্দটির অর্থ আলো-অন্ধকারের পার্থক্যের সাহায্যে ত্রৈমাত্রিকতার ভ্রম সৃষ্টি করার অঙ্কন পদ্ধতি। এটি শব্দটি আসে ইতালীয় শব্দ 'কিয়ারো' অর্থাৎ আলো, ও 'স্কুরো' অর্থাৎ অন্ধকার থেকে। এই পদ্ধতিটি বারোক যুগে বিপুল পরিমানে ব্যবহৃত হতে শুরু করে।

ইতালিয় শিল্পীসমূহ

টেমপ্লেট:Renaissance

  • লিওন বাতিস্তা আলবার্তি (১৪০৪-১৪৭২)
  • ফ্রা এঞ্জেলিকো (সম্ভবত ১৩৯৫-১৪৫৫)
  • বিআজিয়ো দি আন্তোনিও (১৪৪৬- ১ জুন ১৫১৬)
  • যত্ত দি বন্দনে (১২৬৭–১৩৩৭)
  • দোনাতেল্লো (সম্ভবত ১৩৮৬ – ডিসেম্বর ১৩, ১৪৬৬)
  • লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি (১৫ এপ্রিল ১৪৫২ – ২ মে ১৫১৯)
  • মাইকেলেঞ্জেলো (৬ মার্চ ১৪৭৫ – ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৫৬৪)
  • রাফায়েল (এপ্রিল ৬ অথবা মার্চ ২৮, ১৪৮৩ – এপ্রিল ৬, ১৫২০)
  • সান্দ্রো বত্তিচেল্লি (সম্ভবত ১৪৪৫ – মে ১৭, ১৫১০)
  • মাসাচ্চিও (ডিসেম্বর ২১, ১৪০১- ১৪২৮)
  • ডোমেনিকো ভেনেজিয়ানো (সম্ভবত ১৪১০ – মে ১৫, ১৪৬১)
  • ফিলিপো লিপি (সম্ভবত ১৪০৬ – ৮ অক্টোবর ১৪৬৯)
  • আন্দ্রিয়া দেল কাস্তাগনো (সম্ভবত ১৪২১ – ১৯ অগাস্ট ১৪৫৭)
  • পিয়েরো দি কসিমো (২ জানুয়ারি ১৪৬২ – ১২ এপ্রিল ১৫২২)
  • পাওলো উচ্চেলো (১৩৯৭ – ১০ ডিসেম্বর ১৪৭৫)
  • আন্তোনেল্লা দা মেসিনা (সম্ভবত ১৪৩০ – ফেব্রুয়ারি ১৪৭৯)
  • পিসানেল্লো (সম্ভবত ১৩৯৫ – সম্ভবত ১৪৫৫)
  • আন্দ্রিয়া ম্যানতেগনা (সম্ভবত ১৪৩১ – সেপ্টেম্বর ১৩, ১৫০৬)
  • লুসা সিগনোরেলি (সম্ভবত ১৪৪৫ – ১৬ অক্টোবর ১৫২৩)
  • আলিশইও বাল্দোভিনেত্তি (১৪ অক্টোবর ১৪২৫ – ২৯ অগাস্ট ১৪৯৯)
  • পিয়েরো দেল্লা ফ্রান্সেসকা (সম্ভবত ১৪১৫ – ১২ অক্টোবর ১৪৯২)
  • ম্যাসোলিনো (সম্ভবত ১৩৮৩ – সম্ভবত ১৪৪৭)
  • টিশান (সম্ভবত ১৪৮৮/১৪৯০ – ২৭ অগাস্ট ১৫৭৬)
  • আন্দ্রিয়া দেল বেরোচ্ছিও (সম্ভবত ১৪৩৫ – ১৪৮৮)
  • ডোমেনিকো গিরলানদাইও (১৪৪৯ – ১১ জানুয়ারি ১৪৯৪)
  • বেনতসো গতজোলি (সম্ভবত ১৪২১ – ১৪৯৭)
  • কার্লো ক্রিভেল্লি (সম্ভবত ১৪৩৫ –সম্ভবত ১৪৯৫)
  • মার্কো কারডিস্কো (সম্ভবত ১৪৮৬ – সম্ভবত ১৫৪২)
  • পিয়েত্রো নেগ্রোনি (সম্ভবত ১৫০৫ – সম্ভবত ১৫৬৫)

'লো কান্ট্রিস'-এর শিল্পীসমূহ

Main articles: Early Netherlandish painting for 15th-century artists, Dutch and Flemish Renaissance painting for 16th-century artists

  • জ বেলেগ্যাম্বে (সম্ভবত ১৪৭০ – ১৫৩৫)
  • হাইরোনিমাস বশ (সম্ভবত ১৪৫০ – ১৫১৬)
  • দরক বুৎস (১৪১৫ – ৬ মে ১৪৭৫)
  • রবার্ট ক্যাম্পিং (সম্ভবত ১৩৮০ – ১৪৪৪)
  • পেটরাস খৃস্টস (১৪১০/১৪২০ –১৪৭২)
  • জক দারিত
  • জেরার্দ ডেভিড (সম্ভবত ১৪৫৫ – ১৫২৩)
  • হুবার্ট ভন আইক (১৩৬৬?–১৪২৬)
  • য়ান ভন আইক (১৩৮৫?–১৪৪০?)
  • গির্টজেন তত সিন্ট য়ান্স
  • হুগো ভন দার খুস
  • আদ্রিয়েন ইসেনব্রান্ট (সম্ভবত ১৪৯০ – ১৫৫১)
  • লিমবার্গ ভ্রাতৃবৃন্দ
  • কুয়েন্তিন মাটসিস (১৪৬৬ – ১৫৩০)
  • হ্যান্স মেমলিং (সম্ভবত ১৪৩০ – ১৪৯৪)
  • জোয়াচিম পাতিনীর
  • রাখিয়ের ভন দার ওইদেন (রাখিয়ের দি লা পাস্তুর)
"দ্য ঘেন্ট অল্টারপিস: দ্য এডোরেশান অফ দ্য ল্যাম্ব" (অভ্যন্তরীণ দৃশ্য) ১৪৩২ এ ইয়ান ভন আইকের দ্বারা অঙ্কিত।

জার্মান শিল্পীসমূহ

  • আলব্রেশ্ট আল্টিডোরফার (সম্ভবত ১৪৮০ – ১৫৩৮)
  • হ্যান্স বালডুঙ (সম্ভবত ১৪৮০ – ১৫৪৫), Alsatian
  • লিওনহার্ড বেক (সম্ভবত ১৪৮০ – ১৫৪২)
  • অগ্রজ বার্থেল ব্রুইন (১৪৯৩ – ১৫৫৫)
  • হ্যান্স বুরকামীর (১৪৭৩ – ১৫৩১)
  • অগ্রজ লুকাস ক্রেনাচ (১৪৭২ – ১৫৫৩)
  • কনিষ্ঠ লুকাস ক্রেনাচ (১৫১৫ – ১৫৮৬)
  • আলব্রেশ্ট ডিউরার (১৪৭১ – ১৫২৮)
  • কনরাড ফবের ভন ক্রেউজনাচ (সম্ভবত. ১৫০০ – c. ১৫৫৩)
  • ম্যাথিয়াস গ্রিউনেওয়াল্ড (সম্ভবত. ১৪৭০ – ১৫২৮)
  • অগ্রজ হ্যান্স হলবেইন (সম্ভবত ১৪৬০ – ১৫২৪)
  • কনিষ্ঠ হ্যান্স হলবেইন (সম্ভবত ১৪৯৭ – ১৫৪৩)
  • আম্ব্রোসিয়াস হলবেইন (১৪৯৪ – ১৫১৯)
  • যের রাতগেব (c. ১৪৮০ – ১৫২৬)
  • উইলহেল্ম স্টেট্যার (১৪৮৭ – ১৫৫২), আলসাটিয়ান

ফ্রেঞ্চ শিল্পীসমূহ

  • জ ফুকে (১৪২০ –১৪৮১)
  • জ ক্ল্যুয়েট (১৪৮০–১৫৪১)
  • ফ্রাশোয়া ক্ল্যুয়েট (সম্ভবত ১৫১০ – ২২ ডিসেম্বর ১৫৭২)
  • বার্থেলেমি ডিআইক (সম্ভবত . ১৪২০ – ১৪৭০ -এর পরে)
  • নিকোলাস ফ্রমেন্ট (সম্ভবত . ১৪৩৫ – c. ১৪৮৬)
  • জ হেই (পূর্বে 'মাস্টার অফ মৌলীন' নামে পরিচিত ছিলেন) (সম্ভবত ১৪৭৫ – সম্ভবত ১৫০৫)
  • সিমন মার্মিওন (সম্ভবত . ১৪২৫ – ২৪/২৫ ডিসেম্বর ১৪৮৯)
  • ইনগুয়েরো কোৰ্তন (সম্ভবত ১৪১০ – c. ১৪৬৬)

স্প্যানিশ শিল্পীসমূহ

  • বার্তোলোমি বেরমেজো
  • পেদ্রো বেরুগুয়েতে
  • আয়েন ব্রু
  • উয়ান দি ফ্ল্যান্ডেস
  • লুই দি মোরালেস
  • জমে হুগুয়ে
  • পাওলো দ্য সান লেওকাদিও
  • আলোনসো সানচেজ কইলো
  • এল গ্রেকো
  • মুরিল্লো

ক্রোয়েশিয়ান শিল্পীসমূহ

  • ফ্রান্সেস্কো লাউরানা (সম্ভবত ১৪৩০ – ১২? মার্চ ১৫০২)
  • জিওর্জিও দ্য সেবেনিকো (সম্ভবত ১৪১০ – ১০ অক্টোবর ১৪৭৫)
  • নিক্কোলো দি জিওভান্নি ফিওরেন্তিনো
  • আন্দ্রেয়া আলেসি (১৪২৫ – ১৫০৫)
  • নিকোলাস অফ রাগুসা (১৪৬০? – ১৫১৭)
  • জিওভান্নি ডালমাতা (সম্ভবত ১৪৪০ – ১৫১৪)
  • আন্দ্রেয়া স্কিয়াভোঁ(সম্ভবত ১৫১০/১৫১৫ – ১৫৬৩)

শিল্পকর্মসমূহ

  • ঘেন্ট অলটারপিস, হুবার্ট এবং ইয়ান ভন আইক
  • দ্য অর্নলফিনই পোর্ট্রেট, ইয়ান ভোন আইক
  • দ্য ওয়েরেল ট্রিপটিক, রবার্ট ক্যাম্পিন
  • দ্য পোর্টিনারি ট্রিপটিক, হুগো ভন দের খুস
  • দ্য ডিসেন্ট ফ্রম দ্য ক্রস, রোখিয়ের ভন দের ওইডেন
  • ফ্লাজেলেশান অফ খ্রীষ্ট, পিয়েরো দেল্লা ফ্রান্সেসকা
  • Spring, সান্দ্রো বত্তিচেল্লি
  • লামেন্টেশন অফ ক্রাইস্ট, মানতেগনা
  • দ্য লাস্ট সাপার, by লিওনার্দো দা ভিঞ্চি
  • দ্য স্কুল অফ এথেন্স, রাফায়েল
  • সিস্টিন চ্যাপেল সিলিং, মাইকেলএঞ্জেলো
  • একস্ট্রিং পোর্ট্রেট অফ চার্লস ভি, টিশান
  • আইসেনহেইম অল্টারপিস, ম্যাথিয়াস গ্রূনেওয়াল্ড
  • মেলেনকোলিয়া প্রথম, আলব্রেখট দিউরার
  • দ্য আম্বাসাডরস, কনিষ্ঠ হ্যান্স হোলবেইন
  • মেলুন ডিপটিচ, জ ফুকে
  • সেন্ট ভিন্সেন্ট প্যানেলস, নুনো গনসালভিস

গুরুত্বপূর্ণ সংকলনসমূহ

সাধারণ সংকলনসমূহ:
  • ন্যাশনাল গ্যালারি, লন্ডন
  • লোভরে, প্যারিস
  • ন্যাশনাল গ্যালারি অফ আর্ট, ওয়াশিংটন
  • ইমালদেগালারী, বার্লিন
  • মেট্রোপলিটন মুসিয়াম অফ আর্ট, নিউ ইয়র্ক সিটি
  • ন্যাশনাল আর্ট মুসিয়াম অফ আজেরবাইজান, বাকু
নেদারল্যান্ডীয়
  • মুসী কম্যুনাল দেস বিউজ-আর্টস, ব্রুগেস, বেলজিয়াম
  • Groeningemuseum, ব্রুগেস, বেলজিয়াম
  • মুসেও ডেল প্রাদো, মাদ্রিদ, স্পেন – হিয়েরোনিমোস বশের শিল্পকর্মের জন্য।
ইতালিয়ান:
ফরাসি:
  • শ্যাটো দি একুয়ান (ন্যাশনাল মুসিয়াম অফ টি রেঁনেসা), একুয়ান, ফ্রান্স

আরও দেখুন

  • দানিউব স্কুল
  • চিত্রাঙ্কনের ইতিহাস
  • আন্তর্জাতিক গোথিক
  • সর্বোচ্চমানের চিত্রাঙ্কনশিল্পী, স্থপতি, ও ভাস্কর্যশিল্পীদের জীবনীসমূহ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ