শামুক

শামুক হচ্ছে মোলাস্কা (mollusca) ফাইলামের গ্যাস্ট্রোপোডা (Gastropoda) শ্রেণীর প্রায় সকল সদস্যের সাধারণ নাম। এরা নরমদেহী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের দেহ একটি প্যাঁচানো খোলকে আবৃত থাকে। সাধারণত শামুক বলতে স্থলচর, সামুদ্রিক ও স্বাদুজলের শামুককে বোঝায়।

হেলিক্স পোমাটিয়া (Helix pomatia)এক প্রজাতির স্থলচর শামুক

মরুভূমি, নদী ও স্রোতস্বিনী, বদ্ধ জলাশয়, জলাশয়, সমুদ্র উপকূলসহ অনেক আবহাওয়াতে শামুকের দেখা পাওয়া যায়। স্থলচর শামুক বেশিরভাগ মানুষের কাছে পরিচিত হলেও এরা আসলে শামুকের জগতে সংখ্যালঘু। সামুদ্রিক শামুকেরাই বৈচিত্র্য ও সংখ্যায় অনেক বেশি এগিয়ে। স্বাদু জলে এবং এমনকি সামুদ্রিক নোনা জলেও শামুকের সংখ্যা প্রচুর। বেশিরভাগ শামুকই তৃণভোজী; তবে কিছু সামুদ্রিক শামুক প্রজাতি উভভোজী অথবা মাংসাশী।

কিছু শামুক ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাস নেয়। এদেরকে পালমোনাটা বলে। অন্যদিকে যেসব শামুক ফুলকা জাতীয় অঙ্গের সাহায্যে শ্বাস নেয় তাদেরকে প্যারাফিলেটিক দলে ফেলা হয়। স্থলচর শামুকদের মাথায় দুইজোড়া কর্ষিকা থাকে যা শামুকের দরকার পড়লে গুটিয়ে রাখতে পারে। পেছনের কর্ষিকাজোড়ায় থাকে চোখ। জলজ শামুকদের একজোড়া গোটানোর অনুপযোগী কর্ষিকা থাকে যার গোড়ায় চোখ থাকে[১]

শামুকের খোলক স্পাইরাল বা প্যাঁচের আকারে তৈরী। বেশিরভাগ খোলকই ডানাবর্তী, অর্থাৎ যদি খোলকের কেন্দ্রের উঁচু অংশটি দর্শকের দিকে তাক করে থাকে, তবে প্যাঁচ বা স্পাইরালগুলি ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘোরে সেদিকে ঘুরতে ঘুরতে এগোবে।

শারীরিক বৈশিষ্ট্য

ঘাসের ডগা বেয়ে উঠতে থাকা একটি শামু্কের নিচে থেকে নেয়া ছবি। ছবিতে শামুকের পেশল পা দেখা যাচ্ছে

বেশিরভাগ শামুকই এপিথেলীয় সিলিয়া দ্বারা আবৃত পেশল পায়ের সাহায্যে পিছলে চলে, এই পা মিউকাসের সাহায্যে পিচ্ছিল হয়ে থাকে[২]। পায়ের পেশীতে পরপর ঘনঘন সঙ্কোচন ঘটিয়ে শামুক চলাচল করে। এ্যাকোয়ারিয়ামের দেয়াল বেয়ে উঠতে থাকা শামুকের দিকে তাকালে পেশীর এই নড়াচড়া স্পষ্ট দেখা যায়। শামুকের চলার গতি অত্যন্ত ধীর (পূর্ণবয়স্ক হেলিক্স লুকোরাম প্রজাতির শামুকের ক্ষেত্রে ১ মিমি/সেকেন্ড স্বাভাবিক গতি[৩])। শামুকের পায়ে থাকা মিউকাস ঘর্ষণ কমিয়ে তাদের পিছলে চলাতে সাহায্য করে। এই মিউকাস ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তু লেগে শামুকের দেহ কেটে যাওয়া থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে। এই কারণে শামুক ধারালো বস্তু যেমন রেজর বা ব্লেডের উপর দিয়ে চলতে পারে কিন্তু তাতে তাদের দেহ কেটে ছিঁড়ে যায় না[৪]

আয়ু

স্বাদুপানির শামুকের মিলন

বিভিন্ন প্রজাতির শামুকের আয়ু ভিন্ন ভিন্ন। প্রকৃতিতে আকাটিনিডে শামুক ৫ থেকে ৭ বছর বাঁচে, আবার হেলিক্স প্রজাতির শামুক ২ থেকে ৩ বছর বাঁচে। অ্যাকোয়াটিক অ্যাপল জাতের শামুকের আয়ু মাত্র বছরখানেক। বেশিরভাগ শামুকের মৃত্যু হয় শিকারীর হাতে আর নয়তো পরজীবী দ্বারা। গৃহবন্দী অবস্থায় শামুকের আয়ু অনেক বেশি হয়, বেশিরভাগ প্রজাতির ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত। কিছু কিছু শামুকের আরো বেশি, প্রায় ৩০ বছর পর্যন্তও বাঁচার নজির রয়েছে[৫]

খাদ্যাভাস

প্রকৃতিতে থাক অবস্থায় শামুক নানা রকম খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। স্থলচর শামুক তৃণভোজী। এরা পাতা, গাছের নরম বাকল, ফল, শাক ইত্যাদি খেয়ে থাকে। শামুকের কিছু প্রজাতি শষ্য ও বাগানের গাছের ক্ষতিসাধন করে বিধায় এদেরকে ক্ষতিকারক কীটের দলে ফেলা যায়। জলজ শামুক বিভিন্ন ধরনের খাদ্য যেমন প্ল্যাংকটন, অ্যালজি, গাছ-গাছড়া এবং অন্যান্য জলজ আণুবীক্ষনিক জৈববস্তু খায়।

গ্যালারি

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ