সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি

জাতীয় অর্থনীতি

সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি ঐতিহাসিকভাবে সর্বাপেক্ষা উন্নত মুক্ত বাজার অর্থনীতির ফসলরূপে গড়ে উঠেছে।[১৫][১৬] হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ানসিঙ্গাপুর - এ চারটি এশিয়ার অর্থনীতিতে বাঘ হিসেবে পরিচিতি পেলেও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দিক থেকে সিঙ্গাপুর বেশ এগিয়ে রয়েছে। বিশ্বে মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চস্থানীয়। মোট দেশজ উৎপাদনের হার ১৪.২%।[১৭] এ দেশের অর্থনীতি অন্যতম মুক্ত,[১৮] অন্যতম সংস্কারবাদী, সর্বাপেক্ষা প্রতিযোগিতামূলক, সর্বাপেক্ষা গতিশীল ও সর্বাপেক্ষা ব্যবসায়-বান্ধব।[১৯] ২০১৫ সালে ইকোনোমিক ফ্রিডমের ইনডেক্সে বিশ্বের দ্বিতীয় মুক্ত অর্থনীতির দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরকে চিত্রিত করা হয়েছে। এছাড়াও, করাপশন পারসেপশনস ইনডেক্সে সিঙ্গাপুরকে নিউজিল্যান্ড ও অন্যান্য স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলোর সাথে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশরূপে ৭ম স্থানের রাখা হয়েছে।[২০] এখানে করের হার খুবই কম।

সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি
মুদ্রাসিঙ্গাপুর ডলার (SGD/S$)
অর্থবছর
১ এপ্রিল – ৩১ মার্চ
বাণিজ্যিক সংস্থা
ডব্লিউটিও, এপেক, আইওআর-এআরসি, আসিয়ান
পরিসংখ্যান
জিডিপি$২৯৬.১ বিলিয়ন (২০১৫ প্রাক্কলন)[১]
Int$৪৭০.৫৫১ বিলিয়ন (পিপিপি; ২০১৫ প্রাক্কলন)[১]
জিডিপি ক্রম৩৬তম (২০১৪) / ৪০তম (পিপিপি, ২০১৪)
জিডিপি প্রবৃদ্ধি
হ্রাস -৪.৬% (Q2 ২০১৫)[২]
মাথাপিছু জিডিপি
$৫৩,৬০৪ (২০১৫ প্রাক্কলন)[১]
Int$৮৫,১২৭ (পিপিপি, ২০১৫ প্রাক্কলন)[১]
খাত অনুযায়ী জিডিপি
(২০১৪)
সেবাখান: ৭৫%
শিল্প: ২৫%
কৃষিকার্য: ০%
১% (২০১৪ প্রাক্কলন)
দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থিত জনসংখ্যা
প্রযোজন্য নয়
৪৬.৪ (২০১৪)
শ্রমশক্তি
৩.৬২৭৫ মিলিয়ন (জুন, ২০১৫) [৩]
পেশা অনুযায়ী শ্রমশক্তি
(২০১৪)
সেবা: ৮৩.৯%
শিল: ১৪.৮%
কৃষিকার্য: ১.৩%
বেকারত্ব২% (২০১৫ প্রাক্কলন)
প্রধান শিল্পসমূহ
তালিকা
  • আর্থিক খাত
    ইলেক্ট্রনিক্স
    রাসায়নিক দ্রব্য
    তৈল কূপ সরঞ্জাম
    জ্বালানী পরিশোধন
    রাবার প্রক্রিয়াকরণ ও উৎপাদন
    খাদ্য ও পানীয় প্রক্রিয়াকরণ
    জাহাজ মেরামত
    তীরবর্তী অবকাঠামো
    জীবনমখী বিজ্ঞান
    এন্ট্রেপট ব্যবসা
    পর্যটন
ব্যবসা করার সহজসাধ্যতা সূচক ক্রম
১ম[৪]
বৈদেশিক
রপ্তানিS$৫১৮.৯২২ বিলিয়ন (২০১৪) [৫]
রপ্তানি পণ্য
তালিকা
  • মেশিনারী ও যন্ত্রপাতি
    ইলেকট্রনিকস ও টেলিযোগাযোগ
    ফার্মাসিউটিক্যালস ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যাদি
    পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম উৎপাদন
প্রধান রপ্তানি অংশীদার
(২০১৩)
 Malaysia ১২.২%
 China ১১.৮%
 Hong Kong ১১.২%
 Indonesia ৯.৯%
 United States ৫.৮%
 Japan ৪.৩%
 South Korea ৪.১%
আমদানিS$৪৬৩.৭৭৯ বিলিয়ন (২০১) [৬]
আমদানি পণ্য
তালিকা
  • মেশিনারী ও যন্ত্রাংশ
    খনিজ তৈল
    রাসায়নিক দ্রব্য
    খাদ্যসামগ্রী
    কনজুমার গুডস
প্রধান আমদানি অংশীদার
(২০১৩)
 China ১১.৭%
 Malaysia ১০.৯%
 United States ১০.৪%
 South Korea ৬.৪%
 Japan ৫.৫%
 Indonesia ৫.২%
 United Arab Emirates ৪.৪%
এফডিআই স্টক
US$৯০০.২ বিলিয়ন (২০১৪ প্রাক্কলন - দেশ)
US$৫১৭.৮ বিলিয়ন (২০১৪ প্রাক্কলন - বিদেশ)
চলতি হিসাব
US$৬১.১৭২ বিলিয়ন (২০১৫ প্রাক্কলন) [৭]
মোট বৈদেশিক ঋণ
S$১.৮১৩ ট্রিলিয়ন (Q1 2015) [৮]
নিট আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অবস্থান
S$৭৩৮.১১ বিলিয়ন (Q1 2015) [৯]
সরকারি অর্থসংস্থান
সরকারি ঋণ
জিডিপ ১০৩.২ (২০১৪ প্রাক্কলন)
রাজস্বS$৫৯.৯৯৫৪ বিলিয়ন (২০১৪) [১০]
ব্যয়S$৫৬.৬৪৮২ বিলিয়ন (২০১৪) [১১]
অর্থনৈতিক সহযোগিতানেই
ঋণ পরিশোধে ঝুঁকির মূল্যায়ন
  • স্ট্যান্ডার্ড এন্ড পুর’স:[১২]
    এএএ (দেশ)
    এএএ (বিদেশ)
    এএএ (টিএন্ডসি অ্যাসেসমেন্ট)
    আউটলুক:স্ট্যাবল[১৩]
  • মুদি’জ:[১৩]
    এএএ
    আউটলুক:স্ট্যাবল
  • ফিচ:[১৩]
    এএএ
    আউটলুক:স্ট্যাবল
বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার
US$২৫১.৬ বিলিয়ন (৩১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫) [১৪]
মূল উপাত্ত সূত্র: সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক
মুদ্রা অনুল্লেখিত থাকলে তা মার্কিন ডলার এককে রয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।

নিয়ামকসমূহ

সরকারের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখছে। বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলো আকর্ষণীয় ব্যবসায় উপযোগী পরিবেশ ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশের সুযোগ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।[২১]

সঠিক ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ফলে ইলেকট্রনিকস, রাসায়নিক ও সেবাখাত রফতানী করছে যা দেশের রাজস্ব বৃদ্ধির প্রধান উৎস।[২২][২৩][২৪] দক্ষ মানবসম্পদও সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির প্রধান উৎসস্থল। সিঙ্গাপুরীদের স্বাস্থ্যসেবা ও অবসরকে ঘিরে সরকার উচ্চ পর্যায়ের সঞ্চয়ী ও বিনিয়োগ নীতি গ্রহণ করে। ১৯৭০-এর দশক থেকে সিঙ্গাপুরের সঞ্চয়ের হার বিশ্বের সর্বোচ্চ।[২৫]

মধ্যস্থতাকারী ব্যবসা হিসেবে তরল ও তৈলের ন্যায় কাঁচামাল ক্রয় করে পুনরায় রফতানী করছে। ২০০৮-১১ সময়কালে জিডিপি’র অনুপাত ছিল আকাশচুম্বী যা ৪০০%।[২৬] কার্গো আদান-প্রদানে সিঙ্গাপুর বন্দর বিশ্বের তৃতীয় ব্যস্ততম বন্দর।

ইতিহাস

১৯৬৫ থেকে মালয়েশিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি বেশ ছোট ধরনের ছিল।[২৫] পাশাপাশি বেকারত্ব ও দারিদ্রতাও ছিল উচ্চ পর্যায়ের। ৭০ শতাংশ নাগরিক জনবহুল পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করতো। শহরের বস্তিগুলোয় এক-তৃতীয়াংশ লোকের বাসস্থা ছিল। বেকারত্বের হার ১৪% ও মাথাপিছু আয় $৫১৬ মার্কিন ডলার।[২৭][২৮] এছাড়াও মোট জনসংখ্যার অর্ধেক লোক অশিক্ষিত ছিল।

ফলশ্রুতিতে সিঙ্গাপুর সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থা গঠন করে ও বিদেশ বিনিয়োগের দিকে মনোনিবেশ ঘটায়।[২৮] ২০০১ সালে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ৭৫% বিদেশী প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদিত দ্রব্যের ৮৫% বিদেশে রফতানী করা হয়েছিল।[২৫] ১৯৯২ সালের মধ্যে দেশের মূলধন ৩৩গুণ বৃদ্ধি পায়।[২৯] জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেতে থাকে ও নিম্নশ্রেণীর পরিবারগুলো মধ্যবিত্তশ্রেণীতে পরিণত হয়। ১৯৮৭ সালে জাতীয় দিবসের শোভাযাত্রার বক্তৃতায় লি কুয়ান ইউ বলেন যে, নাগরিকদের ৮০% এখন মধ্যবিত্তশ্রেণী হিসেবে দাবী করতে পারেন।

১৯৬০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে দেশের গড় উৎপাদন ৮.০% ছিল। ১৯৯৯ সালে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সঙ্কটে এ হার ৫.৪% থাকলেও ২০০০ সালে ৯.৯% হয়। ২০০৩ সালে সার্স ছড়িয়ে পড়লে সিঙ্গাপুরেও এর প্রভাব পড়ে।

টেলিযোগাযোগ, গণমাধ্যম, প্রতিরক্ষা, বন্দর, বিমানবন্দর পরিচালনসহ ব্যাংকিং, শিপিং, বিমান, অবকাঠামো ও আবাসন ব্যবস্থায় সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিচ্ছে।[৩০] নভেম্বর, ২০১১ সালে জিএলসিভূক্ত শীর্ষ ছয়টি প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জের মোট অর্থের ১৭ শতাংশ দখল করে আছে।

খাতসমূহ

জৈবপ্রযুক্তি শিল্পে সিঙ্গাপুরে শতশত মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ, গবেষণা অর্থ সরবরাহ ও উন্নয়নে শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিমানের বিজ্ঞানীদেরকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। শীর্ষস্থানীয় ঔষধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লিন (জিএসকে), পফিজার এন্ড মার্ক এন্ড কোং সিঙ্গাপুরে কারখানা স্থাপন করেছে। ৮ জুন, ২০০৬ তারিখে জিএসকে ঘোষণা করে যে, পেডিয়াট্রিক টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে তারা আরও ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে যা এশিয়ায় প্রথম।[৩১] দেশের মোট আয়ের ৮% ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে আসে।[৩২] জাহাজ মেরামতে বিশ্ববাজারের ২০ শতাংশ দখল করেছে। নৌপরিবহন ও তীর এলাকায় ৭০,০০০ শ্রমিক কর্মরত।[৩৩]

তথ্যসূ্ত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ