অবস্থান্তর ধাতু

অবস্থান্তর মৌল পর্যায় সারণির গ্রুপ ৩-১২

রসায়নশাস্ত্রে অবস্থান্তর ধাতু বা অবস্থান্তর বস্তুর দুই ধরনের ব্যাখ্যা আছে:

  • এটি সাধারণভাবে পর্যায় সারণির d-ব্লকের যে কোন উপাদানকে বুঝাতে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে জিঙ্ক, ক্যাডমিয়ামপারদ অন্তর্ভুক্ত। এটি পর্যায় সারণিতে গ্রুপ ৩ থেকে ১২ পর্যন্ত প্রতিনিধিত্ব করে।
  • আরো বিশদভাবে IUPAC সংজ্ঞানুসারে অবস্থান্তর ধাতু হল, কোন উপাদান যার অণুতে অসম্পূর্ণ d উপস্তর থাকে, অথবা যার কোন সুস্থিত ক্যাটায়নে অসম্পূর্ণ d-উপস্তর থাকে। এই সংজ্ঞানুসারে জিঙ্ক, ক্যাডমিয়াম ও মার্কারি অবস্থান্তর ধাতু নয়। কেননা তাদের কনফিগারেশন d10 এই উপাদানগুলোর মাত্র কয়েকটি অবস্থান্তর প্রজাতির আয়নে আংশিকভাবে পূর্ণ d উপস্তর থাকে এবং কেবল মার্কারির ক্ষেত্রে Hg22+ দেখা যায় যা আংশিকভাবে পূর্ণ উপস্তর ঠিকভাবে গঠন করে না যা শেষোক্ত সংজ্ঞার বিরোধী।[১]
অবস্থান্তর ধাতু রঞ্জিত হওয়া
অবস্থান্তর ধাতুসমূহ

এগুলি সন্ধিগত মৌল নামেও পরিচিত।

প্রথম সংজ্ঞাটি সাধারণ এবং প্রচলিত। অবস্থান্তর মৌলগুলোর অনেক বিশেষ বৈশিষ্ট্য তাদের আংশিক পূর্ণ d-সাবশেলের কারণে হয়ে থাকে। পর্যায় সারণির অন্যান্য অংশ থেকে d-ব্লক মৌলসমূহ কম পর্যায় ধর্মবিশিষ্ট। এদের ক্ষেত্রে ব্যালেন্সের পরিবর্তন না হওয়ায় অণূতে যুক্ত ইলেকট্রনটি সর্ববহিঃস্থ শেলে না গিয়ে ভেতরের শেলে গমন করে। ফলে এর শিল্ড শক্তিশালী হয়।[২]

প্রথম সংজ্ঞানুসারে অবস্থান্তর ধাতু হল ৪০ টি রাসায়নিক উপাদান যা পর্যায় সারণির ২১ থেকে ৩০, ৩৯ থেকে ৪৮, ৭১ থেকে ৮০ এবং ১০৩ থেকে ১১২ নম্বর অবস্থানে অবস্থিত। “অবস্থান্তর” শব্দটি পর্যায় সারণিতে তাদের অবস্থানের কারণে এসেছে। চারবার আবির্ভূত হবার প্রত্যেক ক্ষেত্রে এই উপাদানগুলির d অরবিটালে একটি করে ইলেকট্রন যোগ করার প্রতিনিধিত্ব করে। এভাবে করে অবস্থান্তর ধাতু গ্রুপ ২ উপাদান ও গ্রুপ ১৩ উপাদানগুলোর পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে। d উপশক্তিস্তর > p উপশক্তিস্তর।

গ্রুপ (IUPAC ও CAS অনুসারে)3 (III B)4 (IV B)5 (V B)6 (VI B)7 (VII B)8 (VIII B)9 (VIII B)10 (VIII B)11 (I B)12 (II B)
Period 4Sc ২১Ti ২২V ২৩Cr ২৪Mn ২৫Fe ২৬Co ২৭Ni ২৮Cu ২৯Zn ৩০
Period 5Y ৩৯Zr ৪০Nb ৪১Mo ৪২Tc ৪৩Ru ৪৪Rh ৪৫Pd ৪৬Ag ৪৭Cd ৪৮
Period 6Lu ৭১Hf ৭২Ta ৭৩W ৭৪Re ৭৫Os ৭৬Ir ৭৭Pt ৭৮Au ৭৯Hg ৮০
Period 7Lr 103Rf 104Db 105Sg 106Bh 107Hs 108Mt 109Ds 110Rg 111Uub 112

বৈশিষ্ট্য

অবস্থান্তর পদার্থসমূহ উচ্চ প্রসারণ শক্তি, ঘনত্ব, গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট। এর মূলে d অরবিটালের মেটাল ল্যাটিসের ভিতরে ইলেকট্রনগুলোর ডিলোকালাইজ হবার ক্ষমতা। অবস্থান্তর ধাতুর কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:

  • প্রায়শ রঙিন যৌগ গঠন করে।
  • পরিবর্তনশীল যোজনী থাকে।
  • অন্তত একটি যৌগে অসম্পূর্ণ d-উপকক্ষ থাকে। (১০টি ইলেক্ট্রন থাকে না)
  • সাধারণত ভাল বিরঞ্জক।
  • সাধারণ তাপমাত্রায় তামাটে-নীল (তামা ও সোনা ব্যতীত)।
  • সাধারণ তাপমাত্রায় কঠিন।
  • জটিল আয়ন গঠন করে।
  • প্যারাম্যাগনেটিক ধর্ম প্রদর্শন করে।

অনুঘটক বৈশিষ্ট্য

অবস্থান্তর ধাতু গুলো ভাল হোমোজিনিয়াস ও হেটেরোজিনিয়াস অনুঘটক তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ, আয়রন হেবার পদ্ধতিতে ও ভ্যানডিয়াম (V) অক্সাইড কণ্ট্যাক্ট পদ্ধতির জন্য ব্যবহার হয়। মার্জারিন তৈরিতে নিকেল এবং নাইট্রিক এসিডের প্রস্তুতি দ্রুততর করতে প্লাটিনাম ব্যবহার ঘটে। এর কারণ হল পরিবর্তনশীল যোজনী থাকার কারণে এরা কোন বিক্রিয়ার মাঝপথে বিভিন্ন যৌগ গঠন করে যার ফলে কমশক্তি খরচ হয় ও বিক্রিয়াটি সংক্ষিপ্তভাবে বিকল্প পথে সংঘটিত হতে পারে।

তথ্যসূত্র


🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ