গালীল
গালীল[১] (হিব্রু ভাষায়: הַגָּלִיל, HaGalil; আরবি: الجليل, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Jalīl) হল উত্তর ইসরায়েল ও দক্ষিণ লেবাননে অবস্থিত একটি অঞ্চল। ঐতিহ্যগতভাবে গালীল বলতে উচ্চ গালীল (হিব্রু ভাষায়: הגליל העליון, HaGalil HaʿElyon; আরবি: الجليل الأعلى, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Jalīl al-Aʿala) ও নিম্ন গালীলে (হিব্রু ভাষায়: גליל תחתון, Galil Tahton; আরবি: الجليل الأسفل, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Jalīl al-Asfal) বিভক্ত পর্বতময় অংশকে বোঝানো হয়।[২][৩]
কর্মিল পর্বত-গিল্বোয় পর্বত শৈলশিরার উত্তরের এবং লিতানি নদীর পূর্ব-পশ্চিম ভাগের দক্ষিণের সমগ্র অঞ্চলকেই গালীল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এটি ইস্রায়েলীয় উপকূলীয় সমভূমি এবং পশ্চিমে একরসহ ভূমধ্যসাগরের তীর থেকে পূর্বদিকে যর্দন উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত; উত্তরদিকে লিতানি থেকে শুরু করে গোলান মালভূমির সাথে সীমান্ত তৈরিকারী এক টুকরো ভূখণ্ডসহ উত্তর-পূর্বে হর্মোণ পর্বতের গোড়ায় দান পর্যন্ত, দক্ষিণে কর্মিল পর্বত এবং গিল্বোয় পর্বত পর্যন্ত বিস্তৃত। এই সংজ্ঞায় জনীনের উত্তরের যিষ্রিয়েল উপত্যকার সমভূমি ও বৈৎ-শান উপত্যকা, গালীল সাগর এবং হুলা উপত্যকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যদিও এটিতে সাধারণত হাইফার অনতিদূরে উত্তরের শহরতলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এই সংজ্ঞা দ্বারা অঞ্চলটি ইস্রায়েলের প্রশাসনিক উত্তর জেলার বেশিরভাগ এলাকা এবং দক্ষিণ লেবাননের সাথে সমাপতিত হয়।[৪][৫][৬]
এই নিবন্ধটিতে কেবল গালীলের ইসরায়েলি অংশ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ব্যুৎপত্তি
এই অঞ্চলের ইস্রায়েলীয় নাম ইব্রীয় মূলশব্দ থেকে পাওয়া גָּלִיל (galíl) (গ্যালাল), ‘জেলা’ এবং সাধারণত ‘সিলিন্ডারের’ চূড়ান্ত এক অনন্য শব্দ। যিশাইয় ৮:২৩ (বা বাইবেলের বিভিন্ন সংস্করণে ৯:১)-এ ব্যবহৃত হিব্রু রূপটি g'lil ha-goyím (হিব্রু ভাষায়: גְּלִיל הַגּוֹיִם) গঠনাবস্থায় রয়েছে, যার অর্থ ‘জাতিসমূহের গালীল’, অর্থাৎ পুস্তকটির রচনাকালে গালীলের পরজাতীয়দের দ্বারা অধ্যুষিত অংশ।
অঞ্চলটি ক্রমশ প্রাচীন আরবিসহ অনেক ভাষায় “গালীল সাগর” হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। হিব্রু ভাষায়, হ্রদটিকে কিন্নেরৎ হ্রদ (গণনা পুস্তক ৩৪:১১) হিসাবে, যা হিব্রু কিন্নর (বীণার আকৃতি বর্ণনা করে) থেকে আগত; গিনেষরৎ হ্রদ (লূক ৫:১) হিসাবে, যা ‘গীনোসার’ থেকে, যা গী (‘উপত্যকা’) ও নৎসর (‘শাখা’) বা নাৎসোর ('রক্ষার জন্য', 'নজর রাখা') থেকে আগত, যা সম্ভবত নাসরৎ শহরের প্রতি একটি ইঙ্গিত ছিল; হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরিবর্তে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় তিবিরিয়া শহর থেকে তিবিরিয়া সাগর নাম (যোহন ৬:১) এসেছে, খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীর রোমীয় সম্রাট তিবিরিয় কৈসরের নামানুসারে যার নামকরণ করা হয়েছিল। এগুলো হল “গালীল সমুদ্রের” পরিবর্তে মূলত অভ্যন্তরীণ যিহূদী-রচিত সাহিত্যে ব্যবহৃত তিনটি নাম।[৭] তবে ইহুদিরা এই হ্রদসহ গোটা অঞ্চলকে (আরামীয়: הגלילי) বোঝাতে “গালীল” শব্দটি ব্যবহার করত।