দিরহাম

দিরহাম (আরবি: درهم) ছিল মুসলিম শাসনামলের রৌপ্য মুদ্রার নাম। বর্তমানেও বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্রে মুদ্রার একক হিসেবে রয়েছে। এটি ভরের সম্পর্কিত এককও ছিল। নামটি প্রাচীন গ্রীক মুদ্রা, ড্রাকমা থেকে এসেছে।[১]

লাল রঙের দেশগুলো বর্তমানে দিরহাম ব্যবহার করে। সবুজ রঙের দেশগুলো দিরহাম নামে একটি উপবিভাগীয় একটি মুদ্রা ব্যবহার করে।
খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজের রৌপ্য দিরহাম ৭১৮-৭১৯ খ্রি.
দ্বিতীয় ইয়াজিদের রৌপ্য দিরহাম ৭২১-৭২২ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়েছিল।
মারওয়ান দ্বিতীয় ইবনে মুহাম্মদের রৌপ্য দিরহাম ৭৪৯-৭৪৫ খ্রি.।
আস-সাফাহ এর রৌপ্য দিরহাম; ৭৫৪-৭৫৮ খ্রি.।
আল-হাদির রৌপ্য দিরহাম আল-হারুনিয়ায় ৭৮৬-৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল।
আল-মুতাসিমের রৌপ্য দিরহাম, ৮৩৬-৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে আল-মুহাম্মাদিয়ায় খোদাই করা হয়েছিল।
উমাইয়া খিলাফতের প্রথমদিকের রৌপ্য মুদ্রাগুলির মধ্যে একটি, যা তখনও সাসানীয়দের মোটিফ অনুসরণ করছিল। মুদ্রাটিতে হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফে নাম খোদাইকৃত।
পরবর্তী যুগের উমাইয়া খিলাফতের রৌপ্য দিরহাম , বালখে ৭২৯-৭৩০ খ্রিস্টাব্দে (১১১ হিজরি) তৈরি করা হয়েছিল।

ভরের একক

দিরহাম উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, পারস্য এবং ইফাত জুড়ে ব্যবহৃত ওজনের একক ছিল। পরে মানের বিভিন্নতা সহ আদাল নামে পরিচিতি পায়।

মুসলিম আইনে ইসলামি দিরহামের মূল্য ছিল ১৪ কিরাত। আবার ১০ দিরহামের সমমান ছিল ৭ মিছকালের অনুরূপ।

উসমানীয় সাম্রাজ্যের শেষের দিকে (উসমানীয় তুর্কি: درهم) আদর্শ দিরহাম ছিল ৩.২০৭ গ্রাম;[২] ৪০০ দিরহাম সমান এক ওকা। উসমানীয় দিরহাম সাসানীয় দ্রাচমের (মধ্যযুগীয় ফার্সি ভাষায়: দ্রাহম) উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। আবার সাসানীয়দের দ্রাহম রোমান দ্রাম/ড্রামের উপর ভিত্তি করে ছিল।

বর্তমান মুসলিম বিশ্বে দিরহামকে রূপা পরিমাপের জন্য ভরের একটি ইউনিট হিসাবে পুনরুজ্জীবিত করতে একটি আন্দোলন করা হয়। যদিও এর সঠিক মান বিতর্কিত (৩ বা ২.৯৭৫ গ্রাম)।[৩]

ইতিহাস

৭১১-৭১২ এবং ৮৮২-৮৮৩ খ্রি., লুবলিন জাদুঘরে ইস্যু করা ২১৪টি রৌপ্য দিরহাম সমন্বিত লুবলিন-চেকো থেকে মজুত রৌপ্য।

"দিরহাম" শব্দটি মূলতঃ গ্রীক মুদ্রা ড্রাকমা (δραχμή) থেকে এসেছে।[১] গ্রীক-ভাষী বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য শাম নিয়ন্ত্রণ করত এবং আরবদের সাথে ব্যবসা করত। প্রাক-ইসলামি সময়ে এবং পরবর্তী সময়ে মুদ্রাটি সেখানে প্রচলিত হয়েছিল। মুদ্রাটি প্রাথমিকভাবে একটি ফার্সি শব্দে পরিণত হয়; (মধ্যযুগীয় ফারসী ভাষায় বলা হত- দ্রাহম বা দ্রাম)। তারপর ৭ম শতাব্দীর শেষের দিকে মুদ্রাটি সার্বভৌম এবং ধর্মীয় নিদর্শন বহনকারী একটি ইসলামী মুদ্রায় পরিণত হয়। পারস্যিক দিরহামের পৃথক মুদ্রামান ছিল। আরবরা তাদের নিজস্ব মুদ্রা চালু করেছিল। ইসলামি দিরহাম ছিল ৮ দানিক ।[৪] দিরহাম ভূমধ্যসাগরীয় দেশসহ আন্দালুস (মরিস্কো স্পেন) এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে প্রচলিত ছিল। এছাড়া ১০ ও ১২তম শতকে ইউরোপের দেশসমূহে ব্যবহৃত হয়ে থাকবে। উল্লেখযোগ্যভাবে ভাইকিংদের সাথে যোগসূত্র থাকা দেশগুলো; যেমন ভাইকিং ইয়র্ক[৫] বা ডাবলিন ইত্যাদিতে প্রচলিত ছিল।

আধুনিক যুগের মুদ্রা

বর্তমানে বৈধ জাতীয় মুদ্রার নাম দিরহাম এমন দেশসমূহ:

দিরহাম বা দিরামের উপবিভাগসহ আধুনিক মুদ্রাগুলি হল:

  • লিবিয়ান দিনার ১,০০০ দিরহামে বিভক্ত
  • ১ কাতারি রিয়াল ১০০ দিরহামে বিভক্ত
  • জর্দানীয় দিনার ১০ দিরহামে উপবিভক্ত
  • ১ তাজিকিস্তানি সোমনি ১০০ দিরামে বিভক্ত

এছাড়াও অনানুষ্ঠানিক আধুনিক সোনার দিনার দিরহামে বিভক্ত।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ