দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া

উপন্যাস ধারাবাহিক

দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া সি. এস. লিউইস রচিত কল্প-উপন্যাস। এটিকে শিশুতোষ উপন্যাস হিসেবেও বিবেচনা করা হয় যা এর রচয়িতার সেরা সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত এবং ৪৭টি ভাষায় এর ১ কোটিরও বেশিবই বিক্রি হয়েছে।[১][২] এর লেখক সি. এস. লিউইস, অলঙ্করন করেছেন পউলিন বেইনিস এবং ১৯৫০ ও ১৯৫৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে এই ধারার উপন্যাসগুলো শুধুমাত্র লন্ডনে প্রকাশিত হয়েছিল। বিভিন্ন উৎস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ধারাটি রচনা করা হয়েছে। এর অনেকগুলো চরিত্র রোমান এবং গ্রীক পূরাণের পাশাপাশি ব্রিটিশ ও আইরিশ রুপকথা থেকে নেওয়া।

দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া
লেখকসি. এস. লিউইস
অলংকরণপউলিন বেইনিস
দেশযুক্তরাজ্য
ভাষাইংরেজি
বর্গকল্প-উপন্যাস
শিশু সাহিত্য
প্রকাশকহারপার কলিনস
প্রকাশকাল১৬ অক্টোবর১৯৫০ – ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৫৬
মিডিয়া ধরনমুদ্রণ

নাম

"নার্নিয়া" নামটি এসেছে ইতালির নারনি নামক একটি জায়গার নাম থেকে যেটিকে ল্যাটিন ভাষায় লেখা হয় নার্নিয়া রুপে।[৩]

প্রকাশনার ইতিহাস

১৯৫০ সাল থেকে দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া'র ৭টি বই ক্রমাগতভাবে প্রকাশিত হতে থাকে, যার ১ কোটি সংস্করণ ৪৭টি ভাষায় বিক্রি হয়। এটি ব্রেইল সংস্করণেও প্রকাশিত হয়েছে।[৪][৫][৬]এই ধারার প্রথম পাঁচটি বই যুক্তরাজ্যে জিওফ্রি ব্লিস এর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এটির প্রথম বই দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব প্রথমবার শুধুমাত্র লন্ডনে ১৯৫০ সালের ১৬ই অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছিল।যদিও এরই মধ্যে প্রিন্স ক্যাসপিয়ান, দ্য ভয়াজ অব দ্য ডন ট্রেডার এবং দ্য হর্স এন্ড হিজ বয় লেখা সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল কিন্তু বইগুলো তখনও প্রকাশ করা হয়নি।এগুলো পরে ১৯৫১ সাল-১৯৫৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর একটি করে (দ্য সিলভার চেয়ার-সহ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হয়। শেষের দুইটি বই (দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউদ্য লাস্ট ব্যাটল) যথাক্রমে ১৯৫৫ ও ১৯৫৬ সালে যুক্তরাজ্যে বোডলি হেড কর্তৃক প্রকাশিত হয়।[৭][৮]
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমে এর প্রকাশনা স্বত্ত্বের অধিকারী ছিল ম্যাকমিলান পাবলিশার্স এবং পরে হার্পার কলিনস।

বই

দ্য ক্রনিকলস অব নার্নিয়াধারার সাতটি বইয়ের বর্ণনাতাদের প্রকাশনাকাল অনুযায়ীধারাবাহিকভাবে দেওয়া হল:

দ্য লায়ন, দ্য উইচ এন্ড দ্য ওয়াড্রোব (১৯৫০)

দ্য লায়ন, দ্য উইচ এন্ড দ্যওয়াড্রোব বইটি লেখা সম্পন্ন হয়১৯৪৯ সালের মার্চের শেষদিকে।[৯] এবংজিওফ্রি ব্লেস কর্তৃক যুক্তরাজ্যে১৬ই অক্টোবর ১৯৫০ সালেপ্রকাশিত হয়। বইটিতে চার ভাই-বোন পিটার পেভেনসি, সুজানপেভেনসি, এডমন্ড পেভেনসি ও লুচিপেভেনসির কথা বলা হয়েছে যারাখুবই সাধারণ প্রকৃতির। ১৯৪০সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়তারা লন্ডন থেকে পালাতে বাধ্য হয়এবং প্রফেসর ডিগোরি কাইর্কিরবাড়িতে আশ্রয় নেয় যেখানে তারাএকটি আলমারি খুঁজে পায় যারভেতর দিয়ে "নার্নিয়া" নামকজাদুর দেশে যাওয়া যায়। পেভেনসিভাইবোনেরা সেখানে আসলান নামেরএক কথা বলা সিংহকে "হোয়াইটউইচ" নামক ভয়ঙ্কর জাদুকরীথেকে নার্নিয়াকে রক্ষা করার জন্যসাহায্য করে। চার ভাইবোন ওআসলান হোয়াইট উইচের বিরুদ্ধেযুদ্ধে জয়ী হয় এবং আসলান তাদেরসবাইকে নার্নিয়ার নতুন রাজা ওরানী ঘোষণা করে। তারা সকলেনার্নিয়া শাসনের মাধ্যমে সেখানেনতুন যুগের সূচনা করে। বহু বছরনার্নিয়া শাসন করার পর তারাতাদের আসল জগতের কথা ভুলে যায়এবং একদিন শিকার করার উদ্দেশ্যে বের হলে তারা যে পথে প্রথমবার নার্নিয়ায় এসেছিল সেখানে এসে পৌঁছায় এবং কৌতুলবশত ঐ পথ দিয়ে চলতে চলতে আলমারি থেকে বের হয়ে যায় এবং বাস্তব জগতে পূর্বের শিশু অবস্থায় ফিরে আসে।

প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান: দ্য রিটার্ন টু নার্নিয়া(১৯৫১)

এই বইটি লেখা সম্পন্ন হয়েছিল১৯৪৯ এর ক্রিস্টমাসের পর এবং প্রকাশিত হয় ১৫ অক্টোবর১৯৫১ সালে।[১০], প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান: দ্যরিটার্ন টু নার্নিয়া নার্নিয়ায়পেভেনসিদের দ্বিতীয়বার ভ্রমণেরগল্প নিয়ে রচিত। প্রিন্সক্যাস্পিয়ান সাহায্যের জন্যসুজানের শিঙ্গায় ফুঁক দিলে চারভাইবোনের সবাই নার্নিয়া গিয়েপৌছায়। তারা দেখতে পায়, যেনার্নিয়াকে তারা রেখে গিয়েছিলসেটি আর আগের মত নেই। এরইমধ্যে এখানে তেরোশ বছর পার হয়েগেছে। তাদের প্রাসাদ ধ্বংসপ্রাপ্তহয়েছে এবং নার্নিয়ার শাসনভাররয়েছে টেলমেরিনদের হাতে যাদের ভয়ে নার্নিয়ার আসল অধিবাসীরা লুকিয়ে থাকে। নার্নিয়ার সিংহাসনে তখন মিরাজ যে তার ভ্রাতুষ্পুত্র ক্যাস্পিয়ানকে হত্যা করতে চায়। কিন্তু ক্যাস্পিয়ান জঙ্গলে পালিয়ে যায়। চার ভাইবোন আরও একবার নার্নিয়াকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

দ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডার (১৯৫২)

এই বইটি রচনা করা হয় ১৯৫০সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিমাসের মাঝামাঝি সময়ে[১১] এবং প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে। দ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডার-এ এইবার শুধুমাত্রএডমন্ড ও লুচি পেভেনসি তাদেরচাচাত ভাই ইউস্টাচ স্কার্বকে সাথেনিয়ে নার্নিয়ায় যায়। সেখানে আবার তারা ক্যাস্পিয়ানের সাথে মিলিত হয় এবং মিরাজের শাসনামলে নিখোঁজ হওয়া সাতজন লর্ডকে খুঁজতে তার সমুদ্র যাত্রার সঙ্গী হয়। বহু বিপদ ও অনেক আশ্চর্যজনক জিনিসের মুখোমুখি হওয়ার পর তাদের এই যাত্রা পৃথিবীর শেষ প্রান্তে আসলানের দেশে পৌঁছানোর মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

দ্য সিলভার চেয়ার (১৯৫৩)

এটি লেখা শেষ হয় ১৯৫১ সালেরমার্চের শুরুতে[১১]এবং প্রকাশিত হয় ৭ই সেপ্টম্বর১৯৫৩ সালে। দ্য সিলভারচেয়ার দ্য ক্রনিকলস্ অবনার্নিয়া ধারার প্রথম বই যেখানেপেভিনসি ভাই-বোনরা নেই বরং এটিরচনা করা ইউস্টাচকে কেন্দ্র করে।ক্যাস্পিয়ান ও পেভিনসিদের সাথেইউস্টাচের সমুদ্র যাত্রার কয়েকমাস পর আসলান তাকে ও তারসহপাঠী জিল পুলকে পুনরায়নার্নিয়ায় ডেকে পাঠায়। তাদেরকেবলা হয় প্রিন্স ক্যাস্পিয়ানের পুত্ররিলিয়ানকে খুঁজে বের করতে, যে দশবছর আগে তার মায়ের মৃত্যুরপ্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়।নার্নিয়ায় ৫০ বছর পার হয়ে যায়।ক্যস্পিয়ান, যে একজন যুবক ছিলসে এখন বৃদ্ধ কিন্তুইউস্টাচ আগের মত শিশুই থেকেযায়। পাডেলগ্লামের সহযোগীতায় রিলিয়ানকেউদ্ধারে ইউস্টাচ ও জিল অনেকধোঁকা ও বিপদের মুখোমুখি হয়।

দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয়(১৯৫৪)

বইটি লেখা শুরু হয় ১৯৫০ সালেরমার্চে ও শেষ হয় জুলাইয়ে।[১১] দ্য হর্স এন্ড হিজবয় প্রকাশিত হয় ১৯৫৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। নার্নিয়ায়পেভেনসি ভাইবোনদের শাসনমলে এই গল্পের সূত্রপাত। গল্পের নায়কশাস্তা নামের এক তরুন যুবক ওব্রি নামে তার কথা বলা ঘোড়া,যারা কালোরমেন নামক একদেশেআবদ্ধ। ঘটনাক্রমে তারা তাদেরমুক্তির জন্য নার্নিয়া আসারপরিকল্পনা করে। পথে তাদের সাথে সাক্ষাত ঘটে আরাবিস নামের এক তরুনী ও তার কথা বলা ঘোড়া হুইন এর সাথে। তারাও নার্নিয়ার দিকে পালিয়ে আসছিল। পরে তারা কালোরমেনের রাজকুমার রাবাদাস এর অন্যায়ভাবে আর্চিনল্যান্ড জয়ের পরিকল্পনা নস্যাত্‍ করে।

দ্য ম্যাজিশিয়া'ন ন্যাপিউ(১৯৫৫)

এটি লেখা শেষ হয় ১৯৫৪ সালেরফেব্রুয়ারি মাসে[১২]এবং বোডলি হেড কর্তৃক ২রা মে১৯৫৫ সালে লন্ডনে প্রকাশিতহয়। দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউবই পাঠকদের নার্নিয়ার ইতিহাসেরমূলে নিয়ে যায় এবং এর মাধ্যমে জানা যায় আসলান কীভাবে জাদুর এই জগত তৈরী করেছিল এবং কীভাবে এখানে প্রথমবার অপশক্তি প্রবেশ করে। ডিগোরি কাইর্কি এবং তার বন্ধু পলি প্লামার ডিগোরির চাচার তৈরী জাদুর আংটির মাধ্যমে ঘটনাক্রমে একটি নতুন জগতে গিয়ে পৌঁছায়। চার্ন নামক এই ধ্বংস হতে বসা জগতটির রানি জেডিসকে তারা জাগিয়ে তোলে এবং তারা নার্নিয়া জগত সৃষ্টির সাক্ষী হয় (যেখানে পরে জেডিস হোয়াইট উইচে রুপান্তরিত হয়)। এই উপন্যাসে নার্নিয়া সম্পর্কে বহু পুরনো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় । ১৯০০ সাল থেকে এর গল্পের সূত্রপাত, ডিগোরির বয়স যখন মাত্র বারোবছর। দ্য লায়ন, দ্য উইচ এন্ডদ্য ওয়াড্রোব বইয়ে এর ৪০ বছর পর সে পেভেনসি ভাইবোনদের যখন আশ্রয় দেয় তখন সে একজন মধ্যবয়সী প্রফেসর।

দ্য লাস্ট ব্যাটল (১৯৫৬)

লেখা শেষ হয় ১৯৫৩ সালেরমার্চে[১৩] এবং প্রকাশিত হয় ৪সেপ্টম্বর ১৯৫৬ সালে। দ্যলাস্ট ব্যাটল বইয়ে নার্নিয়ারধ্বংস হয়ে যাওয়ার কাহিনি বর্নিতহয়েছে। জিল এবং ইউস্টাচনার্নিয়ায় ফেরত আসে একে শিপ্টনামের এক হনুমানের হাত থেকেবাঁচাতে যে একটি গাঁধাকে আসলানসাজিয়ে নার্নিয়ানদের ধোঁকাদিচ্ছিল। এর মাধ্যমে সে কেলোরমেনও রাজা তিরিয়ান এর মধ্যেবিশৃঙ্খলা বাঁধায় যা আসলানকর্তৃক আসল নার্নিয়ার প্রদর্শনও নার্নিয়াকে এর শেষ পরিনতিরদিকে নিয়ে যায়।

প্রকাশনার ক্রম

যুক্তরাষ্ট্রে এই ধারার ভক্তরা প্রায়ই সেখানে এর ভুল প্রকাশনার ক্রম নিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে এই ধারার প্রথম উপন্যাস দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব প্রকাশিত হওয়ার আগেই দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউদ্য সিলভার চেয়ার প্রকাশ করা হয় আর বিতর্কের সূত্রপাত এখান থেকেই। যে ক্রমানুসারে উপন্যাসগুলো পড়া উচিত ছিল তার আগেই এই দুই উপন্যাস প্রকাশ করায় তারা মূলত প্রধান গল্প থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যদিও এই ধারার অন্য পাঁচটি উপন্যাসের প্রকাশনা নিয়ে কোন বিতর্ক তৈরী হয়নি।

আসল প্রকাশনা ক্রমহার্পার কলিনস্- এর প্রকাশনা ক্রম
দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোবদ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউ
প্রিন্স ক্যাস্পিয়ানদ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব
দ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডারদ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয়
দ্য সিলভার চেয়ারপ্রিন্স ক্যাস্পিয়ান
দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয়দ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডার
দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউদ্য সিলভার চেয়ার
দ্য লাস্ট ব্যাটলদ্য লাস্ট ব্যাটল

প্রধান চরিত্রসমূহ

আসলান

পাঠকের সাথে আসলানের পরিচয়ঘটে দ্য ক্রনিকলস অব নার্নিয়াধারার প্রথম উপন্যাস দ্য লায়ন,দ্য উইচ এন্ড দ্য ওয়াড্রোব এরমাধ্যমে। এই ধারায় তার ভূমিকাঅন্যান্য উপন্যাসের মাধ্যমেউৎকর্ষ লাভ করে। সে-ই একমাত্রচরিত্র যার উপস্থিতি সাতটি বইয়ের সবগুলোতে রয়েছে। আসলান হলো কথা বলা সিংহ, শিকারিদের রাজা এবং সমুদ্রের সম্রাটের পুত্র। নার্নিয়ায় ভ্রমণকারী মানবশিশুদের পথপ্রদর্শনের পাশাপাশি সে নার্নিয়ার অবিভাবক ও রক্ষক।[১৪]

পেভেনসি পরিবার

দ্য ক্রনিলস অব নার্নিয়া-য়চার ভাইবোন প্রধান মানব চরিত্র।সাতটি উপন্যাসের পাঁচটিতেইপ্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদেরসবার অথবা তাদের মধ্যেকয়েকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করাযায়। লেখক দ্য লায়ন, দ্য উইচএন্ড দ্য ওয়াড্রোব এর মাধ্যমেচার ভাইবোনকে পাঠকদের কাছেপরিচিত করান। প্রথমে শিশু হিসেবে দেখানো হলেও নার্নিয়া শাসনের একপর্যায়ে তারা সকলেইপ্রাপ্তবয়স্ক হয়। কিন্তু তারা যখন বাস্তব জগতে ফিরে আসে তখন শিশু রুপেই আসে। আবার দ্যহর্স এন্ড হিজ বয় উপন্যাসে তাদের শাসনকালে আরও একবারতাদের প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দেখানো হয়। দ্য লায়ন, দ্য উইচ এন্ড দ্য ওয়াড্রোব এবং প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান-এ তাদের সকলেরউপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এরপরযদিও আসলান পিটার ও সুজানকেবলে তারা বড় হয়ে যাওয়ায়নার্নিয়ায় আর আসতে পারবে না।সুজান, লুচি এবং এডমন্ডকে দেখাযায় দ্য হর্স এন্ড হিজ বয়উপন্যাসে। ঐ উপন্যাসে পিটারনার্নিয়ার অপর প্রান্তে দৈত্যদেরসাথে যুদ্ধ করতে চলে যায়। দ্যভয়াজ অব দ্য ডন ট্রেডার-এশুধুমাত্র লুচি ও এডমন্ডকে দেখাযায়, যেখানে আসলান তাদের বলে বয়স বেড়ে যাওয়ায় তারাও আর নার্নিয়ায় আসতে পারবে না। দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসে শুধু পিটার, এডমন্ড এবং লুচিকে আসলানের দেশের রাজা ও রানী হিসেবে দেখা গেলেও সুজানের উপস্থিতি থাকে না।

১৯৫৮ সালে এক শিশু চিঠিতেলেখককে বলে সে কি আর একটি বই লিখতে পারে যার নাম হবে সুজান অব নার্নিয়া যাতে পেভেনসি পরিবারের সবাই পুনরায় মিলিত হতে পারে
সি এস লুইস চিঠির উত্তরে জানান"আমি জেনে খুবই আনন্দিত হলাম যে, তুমি নার্নিয়ান বইগুলো পছন্দ কর আর এটি খুবই ভালো যে তুমি এটা নিয়ে লিখেছ এবং আমাকে জানিয়েছ। আমাকে আরও লিখতে বলে লাভ নেই। গল্প যখন আমার মাথায় আসে আমি তখন লিখি আর যখন আসেনা তখন আমি পারিনা।"[১৫]

লুসি পেভেনসি

চার ভাইবোনের মধ্যে লুসি পেভেনসি সবার কনিষ্ঠ এবং সে আসলানের সবচেয়ে ঘনিষ্ট ছিল। দ্য লায়ন, দ্য উইচ, অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব উপন্যাসে সে-ই প্রথমবার আলমারিতে প্রবেশ করে নার্নিয়ার সন্ধান পায়। পরে সে সুজানের সাথে আসলানের হত্যা ও তার পুনরুত্থান প্রত্যক্ষ করে। তাকে নির্ভিক রাণী লুসি নামে ডাকা হয়। প্রিন্স ক্যাস্পিয়ানে সে-ই প্রথমে আসলানকে দেখে।দ্য ভয়াজ অব দ্য ডন ট্রেডার উপন্যাসে সে ডাফলপাডসদের অদৃশ্য হয়ে থাকার জাদু থেকে মুক্ত করে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয় উপন্যাসে এনবার্ডে সে কালোরমেনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করে। যদিও দ্য লাস্ট ব্যাটলে তার ভূমিকা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।

এডমন্ড পেভেনসি

দ্য লায়ন, দ্য উইচ এন্ড দ্যওয়াড্রোব উপন্যাসে লুসির পরনার্নিয়ায় প্রবেশ করা দ্বিতীয়ব্যক্তি হল এডমন্ড যেখানে সেহোয়াইট উইচের দেওয়া টার্কিশডিলাইট খেয়ে জাদুর প্রভাবে তার অনুগত হয়ে যায় এবং তারভাইবোনদের সাথে প্রতারনা করে।নার্নিয়ার নিয়ম অনুযায়ী সকলপ্রতারকের শাস্তি হল হোয়াইটউইচের কাছে নিজের রক্ত উৎসর্গকরা। পরে এডমন্ড হোয়াইট উইচের আসল রুপ দেখে ও তার ভয়ঙ্কর উদ্দেশ্যের কথাও জানতে পারে এবং নিজের ভুল বুজতে পারে। এর পরে সে প্রতারনার শাস্তি সম্পর্কেও অবগত হয়। কিন্তু আসলান তার জীবন উৎসর্গের মাধ্যমে এডমন্ডকে রক্ষা করে। সে ন্যায়পরায়ণ রাজা এডমন্ড নামে পরিচিত।

সুজান পেভেনসি

দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব উপন্যাসে সুজান ও লুসি একসাথে আসলানের মৃত্যু ও পুনরায় বেঁচে ওঠা প্রত্যক্ষ করে। তার উপাধি কোমলমতি রাণী সুজান। দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয় উপন্যাসে একজন প্রাপ্তবয়স্ক রানী হিসেবে সে কালোরমেনের রাজকুমার রাবাদাস-এর বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রত্যাখ্যানের ফলে রাবাদাসের ক্রোধ গল্পকে এর চূড়ান্ত পরিনতির দিকে নিয়ে যায়। দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসে সে নার্নিয়ার কথা ভুলে যায় এবং একে সে শৈশবের কল্পনা মনে করে নার্নিয়ার অস্তিত্বে অবিশ্বাস করা শুরু করে।

পিটার পেভেনসি

পেভেনসিদের মধ্যে পিটার বয়সেসবার বড়। দ্য লায়ন, দ্য উইচঅ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব-এ সে একটি কথা বলা নেকড়েকে হত্যা করে সুজানকে উদ্ধার করে এবং হোয়াইট উইচের বিরুদ্ধে নার্নিয়ান সৈন্যদের নেতৃত্ব দেয়। আসলান তাকে "মহারাজা" উপাধি দেয়। এছাড়া সে "পিটার দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট" হিসেবে পরিচিত। প্রিন্স ক্যাস্পিয়ানউপন্যাসে সে মিরাজের বিরুদ্ধেযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয় এবং দ্য লাস্টব্যাটলে আসলান নার্নিয়ারদরজা শেষবারের জন্য বন্ধ করার দায়িত্ব পিটারকে দেয়।

ইউস্টাচ স্কার্ব

ইউস্টাচ ক্লেরেন্স স্কার্ব হলোপেভেনসিদের চাচাত ভাই এবং জিল পুলের সহপাঠী। তাকে প্রথমে দুষ্টু ও খিটখিটে মেজাজের বালক হিসেবে দেখানো হয় যে পেভেনসিদের সহ্য করতে পারত না। কিন্তু পরে যখন তার লোভের কারণে সে একটি ড্রাগনের রুপ লাভ করে তখন তার বাজে আচরণগুলো দুর হয়ে যায়। ড্রাগন হয়ে বেঁচে থাকার যন্ত্রনায় সে বুজতে পারে আগে সে কতটা খারাপ ছিল। শীঘ্রই সে একজনভালো মানুষে পরিনত হয় এবংআসলান তাকে আগের রুপে ফিরিয়ে আনে। এর পরের উপন্যাসগুলোতে ইউস্টাচকে আরও ভালো একজন ব্যক্তিরুপে চিত্রায়িত করা হয়েছে। সে একজন নায়ক বনে যায় যখন সে এবং জিল পোল মিলে হারিয়ে যাওয়া রাজকুমার রিলিয়ানকে এক জাদুকরীর হাত থেকে রক্ষা করে। দ্য ভয়াজ অব দ্য ডন ট্রেডার, দ্য সিলভার চেয়ার, এবং দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসগুলোতে তাকে দেখা যায়।

জিল পুল

জিল পুল-এর সাথে এর আগেনার্নিয়ায় প্রবেশকারী শিশুদেরকোন সম্পর্ক নেই। সে ইউস্টাচস্কার্বে সহপাঠী ও প্রতিবেশী। তারআবির্ভাব ঘটে দ্য সিলভারচেয়ার উপন্যাসের মাধ্যমে এবংদ্বিতীয়বার দেখা যায় দ্য লাস্টব্যাটল-এ। দ্য সিলভার চেয়ারউপন্যাসে ইউস্টাচ তাকে নার্নিয়ারসাথে পরিচয় করায়, যেখানে আসলানতাকে কিছু ধারাবাহিক চিহ্ন মনেরাখতে বলে যা তাদেরক্যাস্পিয়ানের হারানো ছেলেকে খুঁজেপেতে সাহায্য করবে। দ্য লাস্টব্যাটল-এ কালোরমেনদের বিরুদ্ধেরাজা তিরিয়ানের দূর্বলপ্রতিরক্ষায় সে এবং ইউস্টাচতিরিয়ানের সঙ্গ দেয়।

রাজকুমার ক্যাস্পিয়ান

রাজকুমার ক্যাস্পিয়ান, পরেনার্নিয়ার রাজা দশম ক্যস্পিয়ানহিসেবে পরিচিতি পায়। তার উপাধিলর্ড অব কেইর পারাবেল এবংইম্পেরিয়ল অব দ্য লুনআইল্যান্ডস। এছাড়াও তাকেক্যাস্পিয়ান দ্য সীফেরার ওক্যাস্পিয়ান দ্য ন্যাভিগেটর নামেডাকা হয়। প্রথমে প্রিন্সক্যাস্পিয়ান: দ্য রিটার্ন টুনার্নিয়ায় তাকে রাজা মিরাজেরতরুণ ভাতিজা এবং নার্নিয়ারসিংহাসনের উত্তরাধীকারি হিসেবেপরিচয় করানো হয়। এছাড়াওক্যাস্পিয়ান দ্য ভয়াজ অব দ্যডন ট্রেডার-এর একজন কেন্দ্রীয়চরিত্র এবং দ্য সিলভার চেয়ারউপন্যাসের শুরু শেষের দিকে অল্পসময়ের জন্য তার উপস্থিতি লক্ষ্যকরা যায়।

মি. টামনাস

টামনাস, লুসি যাকে "মি. টামনাস"বলে ডাকে একজন ফন যাকে দ্যলায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্যওয়াড্রোব, দ্য হর্স অ্যান্ডহিজ বয় এবং দ্য লাস্ট ব্যটলউপন্যাসে দেখা যায়। সে-ই প্রথমপ্রাণী নার্নিয়ায় যার সাথে লুসিরদেখা হয়। সে লুসিকে তার ঘরেআমন্ত্রন জানায়, উদ্দেশ্য ছিলতাকে ধোঁকা দিয়ে হোয়াইট উইচেরহাতে তুলে দেওয়া কিন্তু শীঘ্রই সেতার মন পরিবর্তন করে এবং লুসিরসাথে বন্ধুত্ব করে।[১৬]

ডিগোরি কাইর্কি

ডিগোরি কাইর্কি দ্যম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউউপন্যাসের অন্যতম প্রধানচরিত্র। তাকে প্রথম দেখা যায়দ্য লায়ন দ্য উইচ অ্যান্ড দ্যওয়াড্রোব উপন্যাসে গৌনভূমিকায়। সেখানে তার পরিচয় ছিলএকজন প্রফেসর হিসেবে যেপেভেনসি ভাইবোনদের তার বাড়িতেআশ্রয় দিয়েছিল। দ্যম্যজিশিয়ান'স ন্যাপিউ বইয়ে সেএকজন তরুন যুবক যে তার চাচারজাদুর আংটি নিয়ে গবেষণা করতেগিয়ে জেডিসকে তার ধ্বংস হতে বসাজগত সার্ন থেকে নতুন সৃষ্টি হওয়াজগত নার্নিয়ায় নিয়ে আসে। তারভুল সংশোধনের জন্য আসলান তাকেএকটি জাদুর আপেল আনতে পাঠায়,যেটি নার্নিয়াকে রক্ষা করবে এবংডিগোরির মাকে সুস্থ করে তুলবে।দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসে তাকেপুনরায় দেখা যায়।

পলি প্লামার

পলি প্লামারকে দেখা যায় দ্যম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউ এবং দ্যলাস্ট ব্যাটল উপন্যাসে। সে তরুনডিগোরি কাইর্কির প্রতিবেশী। সেএক ধূর্ত জাদুকরের (ডিগোরিরচাচা) ধোঁকার শিকার হয়, যে তাকেএকটি জাদুর আংটি স্পর্শ করতেবলেছিল এবং একে স্পর্শ করারফলে সে দুই জগতের মাঝখানে একটিজঙ্গলে গিয়ে পড়ে আর তাকেসেখানেই ফেলে রাখা হয়। ডিগোরিরধূর্ত চাচা ডিগোরিকে অন্যআরেকটি জাদুর আংটি নিয়ে যেটিরপলিকে ফেরত আনার ক্ষমতারয়েছ। এই ঘটনাই পলি ও ডিগোরিকেনতুন জগতে নিয়ে যায় এবং তারানার্নিয়ার সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করে।

ট্রাম্পকিন

বামন ট্রাম্পকিন ক্যাস্পিয়ানেরএকজন অন্যতম শুভাকাঙ্ক্ষী এবংপ্রাচীন নার্নিয়ার অন্যতমচরিত্র। সে-ই পেভেনসিদের কেইরপারাবেল থেকে প্রাচীন নার্নিয়ায়ক্যাস্পিয়ানের সৈন্য শিবিরে নিয়েআসে। দ্য ভয়েজ অব দ্য ডনট্রেডার উপন্যাসে ক্যাস্পিয়ান যখন সমুদ্র যাত্রায়বের হলে নার্নিয়ায় তারপ্রতিনিধি হিসেবে ট্রাম্পকিনকে রেখে যায়। দ্যসিলভার চেয়ার উপন্যাসে তাকেসংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দেখা যায়।

রিপিচিপ

রিপিচিপ একটি ইদুঁর এবং প্রিন্সক্যাস্পিয়ান উপন্যাসে সেনার্নিয়ার সকল কথা বলা ইদুঁরেরনেতা। সে অত্যন্ত নির্ভীক,অতিশয় বিনয়ী এবং প্রবল আত্মসম্মানের অধিকারী। যুদ্ধে সে আহত হলেআসলান ও লুসি তাকে সারিয়েতোলে। দ্য ভয়েজ অব দ্য ডন ট্রেডার উপন্যাসে সে আসলানেরদেশে স্বেচ্ছায় গমন করে।[১৭]

পাডেলগ্লাম

দ্য সিলভার চেয়ার উপন্যাসেপাডেলগ্লাম ইউস্টাচ এবং জিলকেতাদের অভিযানে সাহায্য করে।

শাস্তা/কোর

শাস্তা, পরে কোর অবআর্চিনল্যান্ড নামে পরিচিত হয়।সে দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয়উপন্যাসের একজন মূখ্য চরিত্র,যে আর্চিনল্যান্ডের রাজা লুন এরবড় ছেলে এবং সিংহাসনেরউত্তরাধিকারী। সে রাজকুমারকরিনের যমজ বড় ভাই। শিশুকালেইকরকে অপহরণ করা হয় এবংকালোরমেন দেশে একজন জেলেরসন্তান হিসেবে বড় করা হয় এবংনাম রাখা হয় শাস্তা। দ্য হর্সঅ্যান্ড হিজ বয় উপন্যাসেরশুরুতে সে যখন জানতে পারে তাকেদাস হিসেবে বিক্রি করা হবে তখনসে তার স্বাধীনতার জন্য পালিয়েযায়। সে আর্চিনল্যান্ড ওনার্নিয়াকে শত্রুর আক্রমণ থেকেরক্ষা করে এবং তার আসল পরিচয়সম্পর্কে জানতে পারে। শাস্তাকেলোরমেনের আরাভিসকে বিয়ে করেএবং রেম দ্য গ্রেটের (যেপরবর্তীতে আর্চিনল্যান্ডেরসবচেয়ে বিখ্যাত রাজা হবে) বাবাহয়।

আরাভিস

আরাভিস, কিদরাস তারকানের মেয়েদ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয়উপন্যাসের একটি চরিত্র। লুদসামআহোস্তার সাথে জোরপূর্বকবাগ্দানের ফলে সে পালিয়ে যায় এবংতার সাথে শাস্তার দেখা হয়। সেকালোরমেনের রাজকুমার কর্তৃকআর্চল্যান্ড আক্রমণেরপরিকল্পনা শুনে ফেলে। আরাভিসপরে শাস্তাকে বিয়ে করে এবংআর্চল্যান্ডের রানী হয়।

ব্রি

ব্রি (ব্রিহি-হিনি-ব্রিনি-হুয়ি-হাহ্)হলো দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয়উপন্যাসে শাস্তার সঙ্গী এবংপরামর্শদাতা। কালোরমেনের একসত্ লোকের যুদ্ধের ঘোড়া হিসেবেতাকে প্রথম দেখা যায়। যখন ঐসত্ লোকটি শাস্তাকে তার দাসহিসেবে কেনে তখন ব্রি-ই শাস্তারসাথে একসাথে পালিয়ে যাওয়ারব্যবস্থা করে। বন্ধুসুলভ হওয়াসত্ত্বেও সে ছিল দাম্ভিকপ্রকৃতির যতক্ষন পর্যন্ত নাগল্পের শেষ পর্যায়ে আসলানেরসাথে তার দেখা হয়।

রাজা তিরিয়ান

দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসেনার্নিয়ার সর্বশেষ রাজা হিসেবেতিরিয়ানকে দেখা যায়। নার্নিয়ারএকটি কথা বলা ঘোড়ার সাথে খারাপআচরণ করায় সে এক কালোরমেনকেহত্যা করার ফলে শিপ্ট কর্তৃকবন্দি হয়। পরে ইউস্টাচ ও জিলতাকে মুক্ত করে। একসাথে বিশ্বাসনিয়ে তারা শেষবার যুদ্ধ করে এবংআসলানের রাজ্যে তাদের স্বাগতজানানো হয়।

খলনায়ক

জেডিস/হোয়াইট উইচ

জেডিস, নার্নিয়া শাসন করার সময় সাধারনত হোয়াইট উইচ নামে পরিচিত ছিল। তাকে দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যন্ড দ্য ওয়াড্রোব এবং দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউ উপন্যাসে প্রধান খলনায়কের ভূমিকায় দেখা যায়। সে-ই একমাত্র খলনায়ক যাকে দ্য ক্রনিকলস্ নার্নিয়-র একাধিক উপন্যাসে দেখা যায়। দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব উপন্যাসে শতবছর ধরে নার্নিয়ায় শীতকাল বিরাজ করার জন্যই সে-ই দায়ী। সে তার শত্রুদের মূর্তি বানিয়ে দেয়। সে আসলানকে স্টোন টেবিলে হত্যা করে এবং পরে আসলান কর্তৃকই যুদ্ধে নিহত হয়। দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউ উপন্যাসে ডিগোরি তাকে সার্ন নামক ধ্বংস হতে চলা জগত থেকে জাদুর ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে এবং নার্নিয়ায় যাওয়ার আগে তাকে লন্ডনে নেওয়া হয় যেখানে সে অমরত্ব পাওয়ার জন্য একটি জাদুর আপেল চুরি করে।

রাজা মিরাজ

রাজা মিরাজ প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান উপন্যাসের প্রধান খলনায়ক। গল্পের শুরুতে সে ক্যাস্পিয়ানের বাবা রাজা নবম ক্যাস্পিয়ানকে হত্যা করে এবং নিজেকে টেলমেরিনদের (যারা বাইরে থেকে এসে নার্নিয়ায় বসতি স্থাপন করেছে) রাজা ঘোষণা করে। সে ক্যাস্পিয়ানকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে বড় করে কিন্তু তার নিজের সন্তানের জন্মের পর ক্যাস্পিয়ানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গল্পের এক পর্যায়ে মিরাজ নার্নিয়ার পুরনো অদিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে টেলমারিনদের নেতৃত্ব দেয়। সে পিটারের সাথে ধন্দ্ব যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং তার এক পরামর্শক তাকে হত্যা করে।

লেডি অব দ্য গ্রীন কার্টেল

দ্য লেডি অব দ্য গ্রীন কার্টেল দ্য সিলভার চেয়ার উপন্যাসের প্রধান খলনায়ক এবং ঐ উপন্যসে সে পাতালের রানী বা শুধুমাত্র জাদুকরি হিসেবে পরিচিত। তার জাদু শক্তির মাধ্যমে সে পাতাল শাসন করে। দ্য সিলভার চেয়ার-এ সে ক্যাস্পিয়ানের স্ত্রীকে হত্যা এবং তার ছেলে রিলিয়ানকে অপহরণ করে।

রাজকুমার রাবাদাস

রাজকুমার রাবাদাস কালোরমেন রাজ্যের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী। সে উগ্র মেজাজ ও দাম্ভিক প্রকৃতির। দ্য হর্স অ্যান্ড হিজ বয় উপন্যাসে সে সুজান পেভেনসি ও এডমন্ড পেভেনসিকে কালোরমেনে আমন্ত্রন জানায় এই আশায় যে, সে সুজানকে বিয়ে করবে। কিন্তু সুজান তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ফলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে নার্নিয়া দখলের পরিকল্পনা করে। প্রথমে সে অর্চল্যান্ড আক্রমণ করতে চায় যাতে নার্নিয়া দখলের পূর্বে সেখানে ঘাঁটি তৈরী করতে পারে। কিন্তু আর্চল্যান্ডের অধিবাসীদের সতর্ক করে দিয়ে শাস্তা ও আরাভিস এই পরিকল্পনা নস্যাত্‍ করে দেয়। পরে এডমন্ড তাকে আটক করে এবং আসলান তার অপরাধের শাস্তি হিসেবে তাকে গাধায় রুপান্তরিত করে।

শিপ্ট

শিপ্ট দ্য লাস্ট ব্যাটল উপন্যাসের প্রধান খলনায়ক। সে একটি কথাবলা বৃদ্ধ উল্লুক। যদিও লিউইস পরিষ্কারভাবে জানাননি সে কি ধরনের উল্লুক। কিন্তু পউলিন বেইনিস তাকে শিম্পাজ্ঝি হিসেবে চিত্রায়িত করেছেন। একটি গাধাকে আসলানের মত করে সাজায় এবং নার্নিয়ায় কর্তৃত্ব স্থাপন করে ও সকল কথা বলা গাছ কেটে ফেলার আদেশ দেয়। এছাড়াও সে কথা বলা সকল জন্তুদের নিজের দাস বানায় এবং কালোরমেনদের নার্নিয়া অক্রমন করতে বলে। কিন্তু এক পর্যায়ে নেশায় বুঁদ হয়ে থাকার কারণে সে পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং কালেরমনের দেবতা থ্যাস তাকে গ্রাস করে।

নার্নিয়ান জগত

ডেবিড বেডেল-এর নার্নিয়া জগতের কাল্পনিক মানচিত্র

দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া সাহিত্য ধারাটি মূলত নার্নিয়াকে কেন্দ্র করে রচনা করা হয়েছে আর দ্য ম্যাজিশিয়ান'স ন্যাপিউ উপন্যাসে লিউইস বর্ণনা করেছেন কীভাবে এটি সৃষ্টি হয়েছে। নার্নিয়া সমান্তরাল মহাবিশ্বে অবস্থিত অসংখ্য জগতের একটি এবং আমাদের বাস্তব জগতের সাথে এর যোগাযোগ সম্ভব। নার্নিয়াকে বহু বৈচিত্রময় জীবের আবাসস্থল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যাদের অধিকাংশই ইউরোপীয় পূরাণ ও ব্রিটিশ এবং আইরিশ রুপকথার প্রাণীদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

নার্নিয়ার বাসিন্দা

লিউইস তার উপন্যাসগুলোতে দুই স্বতন্ত্র প্রাণীর কথা বর্ণনা করেছেন। এদের মধ্যে একটি হল মানুষ আর অন্যটি হলো নার্নিয়ার আসল অধিবাসী। অনেকগুলো বইয়ে অধিকাংশ মানুষকে প্রধান চরিত্র রুপে দেখানো হয়েছে। আর নার্নিয়ার অধিবাসীদের ক্ষেত্রে লিউইস শুধুমাত্র একটি উতসের উপর নির্ভর না করে অনেকগুলো উত্‍স থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন, তিনি গ্রীক ও জার্মান পূরাণ এবং সেল্টিক সাহিত্য ইত্যাদিতে বর্নিত প্রাণীদের তার উপন্যাসগুলোতে চিত্রায়িত করেছেন।

ভূগোল

দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া-র উপন্যাসগুলোতে নার্নিয়াকে চারদিক থেকে বিশাল মহাসমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত ভূখন্ডের একটি দেশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[১৮] আর এই ভূখন্ডের পূর্ব দিকে মহাসমুদ্রের তীরে নার্নিয়ার রাজধানী অবস্থিত। দ্য ভয়াজ অব দ্য ডন ট্রেডার উপন্যাসে এই মহাসমুদ্রের অনেকগুলো নতুন দ্বীপ আবিষ্কৃত হয়। মূল ভূখন্ডে নার্নিয়ার পাশাপাশি কালোরমেন ও আর্চিনল্যান্ড রাজ্য রয়েছে আর এদের আশেপাশে অনেকগুলো বৈচিত্রময় এলাকা রয়েছে যাদেরকে লেখক দেশ হিসেবে বর্ণনা করেন নি। [১৯]

কাল্পনিক এই জগতের অনেকগুলো মানচিত্র তৈরী করা হয়েছে, আর এদের মধ্যে রয়েছে ১৯৭২ সালে বইয়ের অলঙ্কারক পউলিন বেইনিস কর্তৃক একটি রঙিন মানচিত্র যাকে নার্নিয়ার আনুষ্ঠানিক মানচিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০০৫ সালে দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া: দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তার কারণে আরও দুইটি মানচিত্র তৈরী করা হয়।

ইতিহাস

দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া-তে নার্নিয়ার সৃষ্টি থেকে ধ্বংস পর্যন্ত সমগ্র ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। বাস্তব জগতের শিশুরা প্রায়ই নার্নিয়ায় প্রবেশ করে এবং সেখানকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় প্রভাব বিস্তার করে। নার্নিয়ার ইতিহাস মূলত নিম্ন লিখিত সময়গুলোর মধ্যে বিভক্ত: নার্নিয়ার সৃষ্টি, হোয়াইট উইচের শাসন, স্বর্ণ যুগ, টেলমেরিনদের অনুপ্রবেশ এবং রাজত্ব, দশম ক্যস্পিয়ানের কাছে টেলমেরিনদের পরাজয়, রাজা দশম ক্যাস্পিয়ান ও তার বংশধরদের শাসন, এবং নার্নিয়ার ধ্বংস। অনেকগুলো গল্পেই এই ঘটনাগুলো ক্রমানুসারে বর্ণিত হয়নি।

অনুপ্রেরণা

লিউইসের জীবন

লিউইসের প্রাথমিক জীবন এবং দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া-কে সমান্তরাল বলা চলে। সাত বছর বয়সে সে তার বাবা-মার সঙ্গে বেলফাস্টের একটি বড় বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। এর বিশাল কক্ষগুলো আবিষ্কারের সময় সে ও তার ভাই তাদের শৈশবে অন্য জগতের কথা কল্পনা করা শুরু করে। আর তার এই চিন্তার প্রতিফলন ঘটে দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব উপন্যাসে আলমারির মধ্যে লুচির নার্নিয়া আবিষ্কারের মাধ্যমে। [২০] ক্যাস্পিয়ান ও রিলিয়ানের মত কম বয়সেই লিউইস তার মাকে হারায় এবং বোর্ডিং স্কুলে তার কৈশরকালের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করে যেমনটা দেখা যায় পেভেনসি ভাইবোন, ইউস্টাচ স্কার্ব ও জিল পুল এর ক্ষেত্রে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক শিশুই জার্মান বায়ু সেনার আক্রমণের ফলে লন্ডন ছেড়ে অন্যান্য মফস্বল এলাকায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। আর লুচি নামের এক শিশুসহ (লিউইসের গড ডটার) আরও কয়েকজন লিউইসের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করে যেমনভাবে প্রফেসর ডিগোরি কাইর্কি পেভেনসিদের দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব উপন্যাসে আশ্রয় দেয়।[২১]

পূরাণ

"সেন্টার ফর ক্রিশ্চিয়ান স্টাডি"র সভাপতি ড্রীউ ট্রোটার উল্লেখ করেন দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া: দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব চলচ্চিত্রের প্রযজোকেরা মনে করে যে নার্নিয়ার বইগুলো জোসেফ ক্যাম্পবেল এর দ্য হিরো উইথ এ্যা থাউসেন্ড ফেইসেস বইয়ের প্যাটার্ন মেনে চলে।[২২]

লিউইস ব্যাপকভাবে ব্রিটিশ সেল্টিক সাহিত্যের ওপর পড়াশোনা করেন এবং এর প্রভাব তার নার্নিয়া ধারার বইগুলোতে লক্ষ্য করা যায়, বিশেষ করে দ্য ভয়াজ অব দ্য ডন ট্রেডার বইটিতে। বইটির পুরো অংশ জুড়ে "ইমরাম" নামক একধরনের ঐতিহ্যবাহী আইরিশ রুপকথার প্রভাব দেখা যায় যেখানে একদল লোক অন্য জগতের উদ্দেশ্যে সমুদ্র যাত্রা করে।[২৩][২৪] মধ্যযুগীয় আয়ারল্যান্ডে কম মর্যাদাসম্পন্ন রাজা বা রানীর ওপর হাই কিং বা উচ্চ মর্যাদার রাজাদের শাসন চলত যেমনটা নার্নিয়ায় দেখানো হয়েছে। ব্রিটিল দ্বীপপুজ্ঝের সেল্টিক এলাকায় "কোরেকল" নামক একধরনের ঐতিহ্যবাহী নৌকার ব্যবহার ছিল আর নার্নিয়া উপন্যাসে রিপিচিপের ব্যবহার করা নৌকাটি এর অনুকরণ করে। বইয়ের কিছু প্রাণী যেমন "ডুপলিপাডস" এর মত এক পায়ের জন্তু গ্রীক, রোমান ও মধ্যযুগীয় পূরাণে দেখা যায়। এছাড়া জার্মান পূরাণ থেকেও অনেকগুলো চরিত্র নেওয়া হয়েছে।

সাহিত্য

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ