লি সিয়েন লুং

সিঙ্গাপুরের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী

লি সিয়েন লুং (ইংরেজি: Lee Hsien Loong; জন্ম: ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২) সিঙ্গাপুরের তৃতীয় ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্ষমতাসীন পিপল’স অ্যাকশন পার্টি (পিএপি)-এর মহাসচিব থাকা অবস্থায় আগস্ট, ২০০৪ সালে প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহ চক টংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন।

সম্মানীয়
লি সিয়েন লুং
李显龙
সিঙ্গাপুরের ৩য় প্রধানমন্ত্রী
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
১২ আগস্ট, ২০০৪
রাষ্ট্রপতিসেলাপ্প রামনাথন
টনি ট্যাং
ডেপুটিটনি ট্যাং
শুনমুগাম জয়কুমার
ওং ক্যান সেং
টিও চি হিন
থার্মন শানমুগারত্মম
পূর্বসূরীগোহ চক টং
সিঙ্গাপুর পিপল’স অ্যাকশন পার্টির মহাসচিব
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৩ ডিসেম্বর, ২০০৪
ডেপুটিওং ক্যান সেং
টিও চি হিন
থার্মন শানমুগারত্মক
সভাপতিলিম বুন হেং
খ বুন ওয়ান
পূর্বসূরীগোহ চক টং
সিঙ্গাপুরের অর্থমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২০০১ – ১ ডিসেম্বর, ২০০৭
প্রধানমন্ত্রীগোহ চক টং
ডেপুটিরেমন্ড লিম
পূর্বসূরীরিচার্ড হু
উত্তরসূরীথারমান শানমুগারত্মম
সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৮ নভেম্বর, ১৯৯০ – ১২ আগস্ট, ২০০৪
প্রধানমন্ত্রীগোহ চক টং
পূর্বসূরীগোহ চক টং
উত্তরসূরীশানমুগাম জয়কুমার
আং মো কিও জিআরসি আসনের
সিঙ্গাপুর সংসদ সদস্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৩১ আগস্ট, ১৯৯১
পূর্বসূরীনির্বাচনী এলাকা প্রতিষ্ঠিত
সংখ্যাগরিষ্ঠ৬২,৮২৬ (৩৮.৭%)
টেক ঘি এসএমসি আসনের
সিঙ্গাপুর সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
২২ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ – ৩১ আগস্ট, ১৯৯১
পূর্বসূরীনির্বাচনী এলাকা প্রতিষ্ঠিত
উত্তরসূরীনির্বাচনী এলাকা প্রতিষ্ঠিত
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1952-02-10) ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ (বয়স ৭২)
সিঙ্গাপুর
রাজনৈতিক দলপিপল’স অ্যাকশন পার্টি
দাম্পত্য সঙ্গীওং মিং ইয়াং (বি. ১৯৭৮; বিচ্ছেদ. ১৯৮২)
হো চিং (বি. ১৯৮৫)
সন্তানজিওকি
ইপেং
হংয়ি
হেওই
প্রাক্তন শিক্ষার্থীট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজ
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড এন্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ
ধর্মরোমান ক্যাথলিক
সামরিক পরিষেবা
শাখা সিঙ্গাপুর সেনাবাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯৭১-১৯৮৪
পদব্রিগেডিয়ার জেনারেল

প্রারম্ভিক জীবন

শহর-নগর হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ ও তদ্বীয় পত্নী কিউয়া গিউক উ’র জ্যেষ্ঠ সন্তান লি লুং সিঙ্গাপুরে জন্মগ্রহণ করেন ও সেখানেই বড় হন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণের জন্য ১৯৭৪ সালে গণিত বিষয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম-শ্রেণীতে স্নাতক ডিগ্রী এবং ১৯৮০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্ট থেকে জনপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

সংসদে যোগদানের পূর্বে তিনি সিঙ্গাপুর সেনাবাহিনীতে ১৯৭১ সালে যোগদান করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি ফোর্ট লিভেনওয়ার্থের ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড এন্ড জেনারেল স্টাফ কলেজে ভর্তি হন। লি খুব দ্রুত ব্রিগেডিয়ার-জেনারেল পদে জুলাই, ১৯৮৩ সালে উন্নীত হন ও সিঙ্গাপুরের সর্বকনিষ্ঠ ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের মর্যাদা পান। সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা ক্যাবল কার বিপর্যয়ের উদ্ধার কার্যক্রম তার নির্দেশনায় পরিচালিত হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে রাজনীতিতে জড়ানোর উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর সেনাবাহিনী থেকে চলে আসেন।[১]

রাজনৈতিক জীবন

১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তিনি ব্যবসা ও শিল্প মন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে স্বীয় পিতার রাজনৈতিক ও ক্ষমতাসীন দল পিপল’স অ্যাকশন পার্টিতে যোগ দেয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ঐ বছরই টেক ঘি সংসদীয় এলাকা থেকে ৩২ বছর বয়সে লি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর পিপল’স অ্যাকশন পার্টি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সকল পুরনো সদস্য ১ জানুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখ পদত্যাগ করেন। কিন্তু লি কুয়ান ইউ পদত্যাগ করেননি।[২] ১৯৮৫ সালে অর্থনৈতিক কমিটির সভাপতি হন ও বড় ধরনের কর হ্রাসের প্রস্তাবনা দেন।

এক বছর পর তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সাল থেকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর তিনি ব্যবসা ও শিল্প মন্ত্রী এবং দ্বিতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মর্যাদা পান। ১৯৯০ সালে গোহ চক টং ক্ষমতাগ্রহণ করলে তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী হন। লি সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব লাভের সুবিধার্থে সিঙ্গাপুরের নারীদের গর্ভে বিদেশীদের সন্তান জন্মগ্রহণের উদ্দেশ্যেও অনেক ছাড়ের উদ্যোগ নেন।[৩] কিন্তু, পুণঃপুণঃ সংসদ সদস্য ও সিঙ্গাপুর পুণর্গঠন কমিটির চাপে তা বাতিল করতে বাধ্য হন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লি অন্যান্য দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালালেও নিউজিল্যান্ডের কাছ থেকে দূরে থেকেছেন।[৪]

১৯৯০-এর দশকের শুরুতে তিনি লিমফোমা’র চিকিৎসা করেন। ক্যান্সারের উপশম হলে তিনি বর্ণাঢ্যময় রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের মুদ্রা তহবিল কর্তৃপক্ষের সভাপতি নিযুক্ত হন। পাশাপাশি ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

প্রধানমন্ত্রী

১২ আগস্ট, ২০০৪ তারিখে লি সিয়েন লুং সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহের কাছ থেকে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এ দায়িত্বভার প্রক্রিয়াটি পূর্ব-নির্ধারিত এবং এরজন্যে কোন নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। লি’র বাবা মন্ত্রীদের পরামর্শদাতা নামের একটি নতুন পদ সৃষ্টি করেন যাতে পদত্যাগের পরও গোহ মন্ত্রিপরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এছাড়াও মন্ত্রী পরিষদে প্রথমবারের মতো দুইজন নারী মন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ঐদিনই জাতীয় শোভাযাত্রা উপলক্ষে প্রথম ভাষণ দেন। এতে তিনি পাঁচ-দিনের কর্মসপ্তাহ নীতির কথা জানান যা শনিবারের অর্ধ-দিবস বিলোপন করতে সাহায্য করবে। এ পরিকল্পনাটি ১ জানুয়ারি, ২০০৫ তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়।

২০ এপ্রিল, ২০১২ তারিখ লি সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকল্পে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পৃষ্ঠা খোলেন।[৫]

২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে লি বার্ষিক S$৩,৮৭০,০০০ ($২,৮৫৬,৯৩০) বেতন উত্তোলন করেন।[৬] পূর্বেকার S$৩,০৯১,২০০ (মার্কিন $২০৩৭১৬৮) বেতনের চেয়ে যা ছিল ২৫% বেশি।[৭] কিন্তু, জানুয়ারি, ২০১২ সালে ব্যাপক গণঅসন্তোষ মোকাবেলায়[৮] লি ২৮% বেতন কর্তন করে S$২.২ মিলিয়ন (US$১.৭ মিলিয়ন) ধার্য্য করেন।[৯][১০][১১] তারপরও তিনি অদ্যাবধি বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনধারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন।[১২]

লি’র পত্নী হো চিং সরকারী পরিচালনায় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান টেমাসেক হোল্ডিংয়ের নির্বাহী পরিচালক পদে রয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানটি সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বৃহৎ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত।

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:Cabinet of Singapore

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ