শক্তির নিত্যতা

পদার্থবিজ্ঞানের নীতি: শক্তি কখনো সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না; মহাবিশ্বের মোট শক্তি ধ্রুব

পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে শক্তির নিত্যতার সূত্র জানায় যে কোনো একটি বদ্ধ সিস্টেমের শক্তি সর্বদা ধ্রুব থাকে; এটি সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল নয়।[১] এই সূত্রটি সর্বপ্রথম প্রস্তাব এবং পরীক্ষা করেন এমিলি দ্যু শাতলে । এর মানে এই যে শক্তির কোনো সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই; বরং এটি কেবল এক রূপ থেকে অন্য রূপে স্থানান্তরিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি ডায়নামাইট দন্ড বিস্ফোরিত হলে রাসায়নিক শক্তি গতিশক্তিতে পরিণত হয়। বিস্ফোরণে নির্গত হওয়া সকল শক্তি , যেমন- বিস্ফোরণের পর ডাইনামাইট দন্ডের গতিশক্তিবিভব শক্তি এবং বিস্ফোরণের তাপ ও শব্দ একত্রিত করা হলে বিস্ফোরণে ক্ষয় হওয়া প্রকৃত রাসায়নিক শক্তির মানের সমান হবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, শক্তির নিত্যতা সূত্রটি গৃহীত হয় ভরের সংরক্ষণশীলতা থেকে। যাই হোক, আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব থেকে প্রমাণিত হয় যে ভর এবং শক্তি পরস্পর সম্পর্কিত (E=mc²) । E=mc² সমীকরণটি ভর-শক্তি সমতা নির্দেশ করে এবং বিজ্ঞান বর্তমানে এটি মেনে নিয়েছে যে কোনো বস্তুর ভর-শক্তি সংরক্ষিত থাকে। তাত্ত্বিকভাবে, এটি নির্দেশ করে যে ভর এবং শক্তি পরস্পর রূপান্তরিত হতে পারে। যাই হোক, এটি কেবল চরম ভৌত অবস্থায় ই সম্ভব, যেমন- বিগ ব্যাং এর পর যেভাবে পৃথিবী একিভূত হচ্ছিল অথবা কৃষ্ণগহ্বর এর কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ

এমি ন্যোটার এর সূত্র- সময়ের সাথে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রসমূহ অপরিবর্তিত থাকে ; এটি দিয়ে শক্তির নিত্যতা অকাট্যভাবে প্রমাণ করা যায়। শক্তির নিত্যতার ফলস্বরূপ বোঝা যায় যে প্রথম বিভাগ অবিরাম গতি মেশিনটি [১] বাস্তবে সম্ভব নয় । সুতরাং, বলা যায়, বাহ্যিক শক্তি সরবরাহ ব্যতীত কোনো সিস্টেম কর্তৃক অনবরত শক্তির সরবরাহ পাওয়া সম্ভব নয়।[২] শক্তির সংজ্ঞার উপর নির্ভর করে যুক্তিসাপেক্ষে সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ব দিয়ে শক্তির নিত্যতা সূত্র লঙ্ঘন করা যায়।[৩]

ইতিহাস

Gottfried Leibniz

খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ৫৫০ এর সময়কার প্রাচীন দার্শনিকদের ধারণা ছিল যে কিছু অন্তর্নিহিত পদার্থ সংরক্ষণ করে সবকিছু তৈরী হয়েছে । কিন্তু আমরা যেটাকে ভর-শক্তি হিসেবে জানি সেটা এভাবে শনাক্ত করা যায় না (যেমন, থালেস এটাকে জল ভেবেছিলেন) । এমপেডোক্লেস (খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ৪৯০-৪৩০) এর মতে বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ড, চার উপাদান (পৃথিবী, বায়ু, জল, অগ্নি) দিয়ে গঠিত । [৪] এই সকল উপাদানের ক্রমাগত মিশ্রণ বা পরিবর্তনেই ব্ৰহ্মাণ্ড গঠন হয়েছে ।১৬০৫ সালে সাইমন স্টেভিনাস প্রথম ধরনের অবিরাম গতি যন্ত্রের উপর বেশ কিছু স্থিতিবিদ্যা সংক্রান্ত প্রশ্নের সমাধান করেন ।১৬৩৮ সালে গ্যালিলিও বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন । এর মধ্যে 'বিঘ্নিত দোলক' এর বিশ্লেষণও ছিল, যেখানে শক্তির সংরক্ষণ নীতি মেনে স্থিতিশক্তি থেকে গতিশক্তিতে রূপান্তর হয় এবং গতিশক্তি থেকে স্থিতিশক্তিতে রূপান্তর হয় ।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ