সক্রিয়ন শক্তি

রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করতে বিক্রিয়ককে যে ন্যুনতম শক্তি অর্জন করতে হয়

রসায়নে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করতে ন্যূনতম পরিমাণ শক্তি পরিবেশ থেকে দেওয়া বাধ্যতামূলক তাকে সক্রিয়ন শক্তি বলে।[১] বাইরে থেকে শক্তি (চাপ, তাপমাত্রা ইত্যাদি) প্রদানের ফলে বিক্রিয়ক অণু সমূহ বা একাংশ পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে সক্রিয়ন শক্তি লাভ করে এবং বিক্রিয়া অগ্রাভিমুখে ত্বরান্বিত হয়। যে সকল অণু এই শক্তি অর্জন করে তাদের সক্রিয়ন অণু বলে। ১৮৮৯ সালে বিজ্ঞানী সভান্টে আরেনিউস সক্রিয়ন শক্তির কথা প্রথম উল্লেখ করেন। সক্রিয়ন শক্তিকে সাধারনত Ea দিয়ে প্রকাশ করা হয় এবং এর পরিমাপের একক কিলোজুল প্রতি মোল বা কিলোক্যালোরি প্রতি মোল।

কঠিন বস্তু ইস্পাতকে আঘাতের ফলে সৃষ্ট স্ফুলিঙ্গ বুনসেন বার্নারে দহন শুরু করার জন্য সক্রিয়করণ শক্তি প্রদান করে।

আরহেনিয়াস সমীকরণ এবং সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ

আরহেনিয়াস সমীকরণ (আরহেনিয়াস সমীকরণ, ইংঃ Arrhenius equation) কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি ধ্রুবকের (ইংঃ reaction rate constant) সাথে ঐ বিক্রিয়ার তাপমাত্রার সম্পর্ক স্থাপন করে। এই সমীকরণ থেকে কোন বিক্রিয়ার প্রয়োজনীয় সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ করা যেতে পারে।

পরম তাপমাত্রা তে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি ধ্রুবক এবং সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ হলে, আরহেনিয়াস সমীকরণ হবে[২],

(১)

যেখানে একটি ধ্রুবক এবং সার্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক।

এখন এই ১ নং সমীকরণের প্রাকৃতিক লঘুগুনক (natural logarithm) নিলে পাওয়া যাবে,

(২)

২ নং সমীকরনটিকে সাজিয়ে লিখলে,

(৩)

এটি (৩ নং সমীকরণ) একটি সরলরেখা্র সমীকরণ এর অনুরূপ। যেখানে । তাই কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া আরহেনিয়াস সমীকরণ মেনে চললে আমরা যদি ln(k) vs. (1/T ) গ্রাফ বানাই তাহলে একটি সরলরেখার গ্রাফ পাব। সেই সরলরেখার ঢাল (slope or gradient) থেকে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ করা যাবে। সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ হবে গুনিতক ঐ সরলরেখার ঢাল (সমীকরণ ৪)।[৩]

অবস্থান্তর অবস্থা

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক অণুগুলি প্রয়োজনীয় সক্রিয়ন শক্তি পেয়ে গেলে তাদের পুরাতন রাসায়নিক বন্ধনগুলি ভেঙ্গে ফেলতে শুরু করে এবং নতুন বন্ধন তৈরী হতে শুরু করে, এই মধ্যান্তরের অবস্থাকে অবস্থান্তর অবস্থা (ইংঃ transition state) বলে।[৪] ইহাকে অনেক সময় সক্রিয়নকৃত জটিল অবস্থা () বলে। প্রত্যেক রাসায়নিক বিক্রিয়া অবস্থান্তর অবস্থার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। অবস্থান্তর অবস্থায় হল কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার অণুগুলির সর্বোচ্চ শক্তির পরিমাণ।

ঋনাত্মক সক্রিয়ন শক্তি

কিছু কিছু ক্ষেত্রে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ ঋনাত্মক হয়। এসব ক্ষেত্রে পরিবেশ থেকে কোন শক্তি সরবরাহের প্রয়োজন হয় না। দুই বা ততোধিক পদার্থের বিক্রিয়ক অণুগুলিকে একটি বদ্ধ পাত্রের মধ্যে নিয়ে এলে তৎক্ষণাৎ বিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এই সব বিক্রিয়ায় কোন শক্তির বাধা থাকে না এবং বিক্রিয়ক অণুসকল স্বতস্ফূর্ত ভাবে বিক্রিয়া করে। এই সব বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা বাড়ালে বিক্রিয়ার গতি কমতে থাকে।

অনুঘটন ও সক্রিয়ন শক্তি

অনুঘটকের উপস্থিতিতে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ কমে যায়।

মূল পাতাঃ অনুঘটন

যে পদার্থ বিক্রিয়ার অবস্থান্তর অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ কমিয়ে বিক্রিয়ার গতি বাড়াতে সাহায্য করে তাদের অনুঘটক বলে।[৩] জৈব রসায়্নে একে উৎসেচক বলা হয়ে থাকে। অনুঘটক বিক্রিয়ার পরে অপরিবর্তিত থাকে। অনুঘটক বিক্রিয়া অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক এবং উৎপন্নজাত পদার্থের শক্তির পরিমানও অপরিবর্তিত রেখে শুধুমাত্র বিক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ