সিম্ফনি

সিম্ফনি (Symphony) একটি পশ্চিমা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি রূপ। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সম্মীলনে গঠিত এই ঘরানার সঙ্গীত সাধারণত অর্কেস্ট্রা-এর মাধ্যমে বাজানোর জন্য লেখা হয়। এই শব্দের অর্থ একত্রে ধ্বনিত করা। অর্কেস্ট্রার জন্য রচিত সোনাটা বা যন্ত্রবাদনকে সিম্ফনি বলে। এই পরিভাষাটি গ্রেকো-রোমান সভ্যতা থেকে নানা অর্থে প্রচলিত হয়ে আসছে। বর্তমান সময়ে আমরা সিম্ফনি বলতে যা বুঝি, এই প্রচলনটি ১৮ শতক থেকে চালু হয়েছে। সিম্ফনি একাধিক বর্তন বা খেয়াল দ্বারা রচিত হয়ে থাকে। তবে, সাধারণত চারটি মুভমেন্ট বা পর্যায়ে রচিত হয়। সিম্ফনি রচনা করার সময় বাদ্যযন্ত্র হিসেবে তার-জাতীয় (বেহালা, ভায়োলা, চেলো এবং ডাবল-ব্রাস ইত্যদি), বাঁশি-জাতীয় (সেক্সোফোন, ট্রাম্পেট, বাঁশি, নিউট্রাল-হর্ন, অফিক্লেইড ইত্যদি), ঘাতবাদ্য-জাতীয় (বেস ড্রাম, স্নেয়ার ড্রাম, জাইলোফোন, টিম্পানি, চাইম-বেল, গং, টাম্ব্যুরিন ইত্যাদি) এবং মাঝে মাঝে কন্ঠ-ও ব্যবহৃত হয়। সিম্ফোনি বাজানোর জন্য ৩০ থেকে ১০০ জন সঙ্গীতজ্ঞের প্রয়োজন হয়।

কোলনের ফিলহারমোনিতে গুস্তাভ মালারের অষ্টম সিম্ফোনির একটি প্রদর্শনী

ইতিহাস

সিম্ফোনি শব্দটি মূলত গ্রীক সিম্ফোনিয়া থেকে এসেছে, যার অর্থ "সম্মিলিত ঐকতান" এবং সিম্ফোনোস (আক্ষরিকভাবে বুঝায়, সুরেলা) যার অর্থ "কণ্ঠস্বর বা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গীতের কন্সার্ট"।[১] পূর্বে এই শব্দটি বহু অর্থে ব্যবহার করা হত, তবে পরবর্তীতে এই শব্দটি বিশেষ ধরনের সঙ্গীত বোঝাতেই ব্যবহার করা হয়।

গ্রেকো রোমান সভ্যতায় সিম্ফোনির অর্থ একতা বোঝানো হত। মধ্যযুগীয় কালে, ইউরোপে সিম্ফোনিয়া মূলত একটি ল্যাটিন শব্দ ছিল যার মানে হল একাধিক বাদ্যযন্ত্রের সম্মিলিতভাবে সুরের মিলন।[২] স্পেনের নিবাসী আর্চবিশপ ইসিদোরে দে সেভিয়্যি এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন যার অর্থ ছিল দ্বি-মস্তক বিশিষ্ট এক প্রকারের ঢোল। তবে, ১২ শতক থেকে ১৪ শতক পর্যন্ত, ফ্রান্সে সিম্ফোনিইয়া বলতে বোঝাত হার্ডি-গার্ডিকে।

হার্ডি-গার্ডি

অন্যদিকে, মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডে সিম্ফোনি বলতে বোঝানো হত ডালকিমের নামক এক তার জাতীয় যন্ত্রকে।

ডালকিমের

তাছাড়া, জার্মানরা স্পিনেটভির্জিনালকে ১৬ শতক থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত সিম্ফোনি বলে আখ্যায়িত করত।

স্পিনেট
ভির্জিনাল

একত্রে শব্দায়ন বোঝাতে সিম্ফোনি প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৭ শতকের দিকে। ইতালীয় সঙ্গীত রচয়িতা জোভানি গাব্রিয়েলিসিম্ফোনিয়া সেক্রাতে প্রথম পরিলক্ষিত হয়, যা ১৫৯৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।

১৭ শতকে, অধিকাংশ বারোক যুগ ধরে, সিম্ফোনি এবং সিম্ফোনিয়া শব্দগুলো বিশেষ ধরনের সঙ্গীর রচনাকে বোঝাত যা মূলত অপেরা, সনেট ও গণসংগীত উপস্থাপনে ব্যবহার করা হত। অপেরা সিম্ফনিয়া বা ইতালীয় মঞ্চ-সঙ্গীত-আবহতে ৩ ধরনের খেয়াল বিদ্যমান; দ্রুত, ধীর এবং নৃত্য-নিমিত্ত-দ্রুত। এই সকল ক্ষেত্রে সিম্ফোনি অগ্রদূত হিসেবে গন্য হত। সেই সময় সিম্ফোনি, স্থানভেদে ওভার্চার, সিম্ফোনি বা সিম্ফোনিয়ার নাম একই অর্থে ব্যবহার শুরু হয়।

১৭ শতক থেকে সিম্ফোনিতে বহু বাদ্যের সন্নিবেশ ঘটতে থাকে। তবে আধুনিক সিম্ফোনির মত, তৎকালীন সময়ে বিশেষ কোন বাদ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন ধরা-বাঁধা সুর রচনা ছিল না। এর মূল কারণ হল কোথাও এর সঙ্গীত-উপস্থাপন করা হলে সব ধরনের সঙ্গীতজ্ঞের প্রাপ্যতা অনুকূল ছিলনা। যেমন, ১৯ শতক থেকে ট্রাম্পেট জাতীয় বাদ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট সুর সন্নিবেশ করা শুরু হয় যা ১৭ শতকে সম্ভব ছিলনা, ফলে তার পরিবর্তে সিঙ্গেল চেলো বা হার্পিকর্ড বাজানো হত। সময়ের সাথে সাথে সিম্ফোনি পরিবেশন করার বাজেট বাড়তে থাকলে, সঙ্গীত রচয়িতাগণ বাদ্যযন্ত্রের নানাবিধ ব্যবহার-ও বাড়াতে থাকলেন।

১৮ শতক

১৯ শতক

২০ শতক

সিম্ফোনির অন্যান্য ক্ষেত্রে আধুনিক ব্যবহার

তথ্যসূত্র

  • Brown, Howard Mayer. 2001. "Symphonia". The New Grove Dictionary of Music and Musicians, second edition, edited by Stanley Sadie and John Tyrrell. London: Macmillan.
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ