হংকং-এর ইতিহাস

ইতিহাসের দিক

হংকং-এর ইতিহাস বলতে ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি ব্যবসায় বন্দরকে বুঝায়। প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার থেকে ধারণা করা হয় এই অঞ্চলে পুরা প্রস্তর যুগ থেকে বসতি ছিল এবং পরবর্তিতে কিন সাম্রাজ্যকালীন (২২১-২০৬ খ্রিস্টপূর্ব) চীনের সাম্রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। মৎসশিকার বা চাষের গ্রাম এবং লবণ উৎপাদনের অঞ্চল হিসেবে গোড়াপত্তন হয়, পরবর্তিতে হংকং একটি গুরুত্বপূর্ণ মুক্ত বন্দরে এবং অবশেষে একটি প্রধান আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।[১]

প্রাগৈতিহাসিক যুগ

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার থেকে ধারণা করা হয় ৩০ হাজারেরও বেশি সময় ধরে হংকং-এ মানুষের পদচারণা। ওয়াং তেই টাং এর অন্তর্গত সাই কুং-এ আদিম প্রস্তর যুগের পাথরের তৈরী সরঞ্জাম পাওয়া গিয়েছে। সাই কুংয়ে পাওয়া পাথরের সরঞ্জামগুলো সম্ভবত একটি পাথরের সরঞ্জাম তৈরীর স্থল থেকে পাওয়া গিয়েছে। বহির্মুখী দ্বীপ ও উপকূলীয় এলাকাগুলিতে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর খোদাইও পাওয়া গেছে, সম্ভবত ননব্যপ্রস্তরযুগের সাথে সেগুলি সম্পর্কিত। আদিম প্রস্তর যুগ থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ ফলাফলগুলি জানা যায় হংকং-এর সবচেয়ে প্রাচীন বসতিগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওয়াং তেই টাং (黃 地 峒)।

চীনের শাসনামল (২২১ খ্রিস্টপূর্ব - ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ)

১৮৬৬ সালে বাওয়ান কাউন্ট্রির ম্যাপ। এখানে দেখা যাচ্ছে যে হংকং এবং শেনঝেন, কিং সাম্র্যাজ্যের বাওয়ান কাউন্টির একটি অংশ হিসেবে ছিল

কিন রাজবংশের সময়ে (২২১ -২০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) এখনকার হংকংকে নিয়ে গঠিত অঞ্চলটি চীনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল এবং অঞ্চলটি প্রাচীন নানিয়ে রাজ্যের অধীনে (২০৩-১১১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) দৃঢ়ভাবে একত্রীকৃত ছিল। কিন রাজবংশের সময়, জিন রাজবংশের শাসনামলের আগ পর্যন্ত অঞ্চলটি প্যানুও প্রদেশের অধীনে শাসিত হয়েছিল।

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ইঙ্গিত করে যে হান সাম্রাজ্যের সময় (২০৬ খ্রিস্টপূর্ব - ২২০ খ্রিষ্টাব্দ) জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৫০-এর দশকে, পূর্ব হান সাম্রাজ্যে (২৫-২২০ খ্রিষ্টাব্দ) লেই চেং ইউকে মন্দির খনন করা হয় এবং প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রায়Lei Cheng Uk ২০০০ বছর আগে হংকংয়ে লবণের উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করেন, যদিও অকাট্য কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি। হান সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে মিং সাম্রাজ্য (১৩৬৮-১৬৪৪) পর্যন্ত তাই পো-এর সমুদ্র তাই পো হৈ ছিল চীনের প্রধান মুক্তা শিকার পোতাশ্রয়, দক্ষিণ হান (৯১৭-৯৭১) এর সময়ে এই কার্যক্রম সংকুচিত হয়ে আসে।

চিন সাম্রাজ্য এর সময় থেকে তাং সাম্রাজ্যের গোড়ার দিক পর্যন্ত হংকং বাওয়ান কাউন্ট্রি কর্তৃক শাসিত হয়ে ছিল। তাং সাম্রাজ্যের অধীনে কুয়াংতুং অঞ্চল একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে উদিত হয়েছিল। তুয়েন মান অঞ্চলটি বন্দর, নৌ ঘাঁটি, লবণ উৎপাদন কেন্দ্র এবং পরে মুক্তো শোষণের জন্য একটি ঘাঁটি হিসাবে কাজ করতো, যা এখন হংকং এর একটি নতুন রাজ্য। লানতাও দ্বীপও লবণ উৎপাদন কেন্দ্র ছিল, যেখানে সরকারের বিরুদ্ধে লবণ চোরাচালানকারীরা হাঙ্গামা করতো। তং রাজবংশের মাঝামাঝি সময়ে থেকে মিং রাজবংশ পর্যন্ত হং কং ডংগুয়ান কাউন্টি দ্বারা শাসিত ছিল।

১২৭৬ সালে মঙ্গোল আক্রমণের সময়, দক্ষিণাঞ্চলীয় সং রাজবংশের আদালত ফুচিয়েনে চলে যায়, তারপর লানতাও দ্বীপে এবং পরবর্তীতে বর্তমানের কাউলোন শহরে চলে যায়। সং সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট ঝাও বিং ১২৭৮ সালের ১০ মে মাত্র ৮ বছর বয়সে লানতাও দ্বীপের মাই ইও এর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। কাউলোনে সাং অং তৈ কর্তৃক এট ঘটনার স্মরণার্থ উৎসব হয়েছিল। ১২৭৯ সালের ১৯ মার্চ ওয়ামেনের যুদ্ধে তার পরাজয়ের পরে মউন্ট ওয়াতে (কুয়াংতুং এর আধুনিক ওয়ামেন শহর) শিশু সম্রাট তার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডুবে আত্মহত্যা করে। একজন বীরের নামে তুং চুং উপত্যকার নামকরণ করা হয়, যিনি সম্রাটের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। সম্রাটের একজন কর্মকর্তা হাও অং-কে আজও হংকং-এ উপাসনা করা হয়।

মঙ্গোলদের সময়ে হংকং এর জনসংখ্যার প্রথম বারের মত হঠাৎ বৃদ্ধি পায়, কারণ চীনা শরণার্থীরা এই এলাকায় প্রবেশ করেছিল। অনেক শরণার্থী যুদ্ধ এবং দুর্ভিক্ষের জন্য তারিত হয়ে এসেছিল। অন্যরা কর্মের সন্ধানে এসেছিল। কুয়াংতুং, ফুচিয়েন এবং চিয়াংশির হাও, তাং, পাং, লিউ এবং মান এই পাঁচ চীনা বংশধরেরা নতুন অঞ্চল্গুলোতে বসবাস শুরু করে এবং অবশেষে পুণ্টি ভাষী হয়ে ওঠে।

অভিবাসন এবং কৃষির বিকাশ সত্ত্বেও, এই অঞ্চল ছিল পাহাড়ী এবং একইসাথে নিষ্ফলা। মানুষকে জীবিকার জন্য নির্ভর করতে হত লবণ, মুক্তা এবং মৎস্য ব্যবসায়ের উপর। কিছু গোষ্ঠী দস্যু, প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী এবং বন্য পশুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য প্রাচীর বেস্টিত গ্রাম নির্মাণ করেছিল। চিং রাজবংশের চীনা জলদস্যু চেং পো তাসাই হংকং এর একজন কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। মিং রাজবংশের সময় হং কং জিনান কাউন্টি দ্বারা শাসিত হয়েছিল।

চিং সাম্রাজ্যের সময় হং কং জিনান কাউন্টির অধীনেই শাসিত হয়েছিল এবং ব্রিটিশদের উপনিবেশের পূর্ব পর্যন্ত এটি বহাল ছিল। সামরিক চৌকি এবং বাণিজ্যিক বন্দর হিসাবে হংকং অঞ্চলটি বিশ্বের মনোযোগ কাড়ে। কাংজি সম্রাট কর্তৃক অনুমোদিত বিখ্যাত পরিষ্করণ নীতির পরে অনেক হাক্কা জনতা চীনের অভ্যন্তর থেকে জিনান কাউন্টিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল, যার মধ্যে আধুনিক হংকং অন্তর্ভুক্ত ছিল।

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ সরকার নতুন অঞ্চলগুলো এবং নতুন কোওলনে উপনিবেশ স্থাপনের আগে পুন্টি, হাক্কা, টানকা এবং হক্কিয়েন জনতা বহু বছর ধরে হংকংয়ে স্থানান্তরিত হয়ে অবস্থান করছিল। তারা হংকং এর আদিবাসী বাসিন্দা। পুন্টি এবং হক্কিয়েন নতুন অঞ্চলগুলোতে বসবাস করতো, যেখানে টানক এবং হাক্কা উভয়ই নতুন অঞ্চলগুলোতে এবং হংকং দ্বীপে বসবাস করতো। হংকংয়ের উপরে ব্রিটিশদের বিবরণী থেকে জানা যায় "অদ্যাবধি অজ্ঞাত সময়" থেকে হংকংয়ে টানকা ও হোক্লোরা বসবাস করে আসছে।[২][৩] এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকাতে বর্ণিত আছে হংকং-এ হোক্লা ও টিনকা এর বসবাস "প্রাগৈতিহাসিক কাল" থেকে।[৪][৫][৬]

১৮৪১ সালের ২৬ জানুয়ারি যখন অধিকৃত কেন্দ্রগুলো ইউনিয়নের পতাকা উত্থাপিত হয়েছিল, তখন হংকং দ্বীপের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৭,৪৫০, বেশিরভাগই ছিল উপকূলবর্তী গ্রামে বসবাসকারী টানকা জেলে এবং হাক্কা চারকোল দহনকারী।[৭][৮] ১৮৫০ সালে তাইপিং বিদ্রোহের কারণে অনেক চীনা জনতা চীন থেকে হংকং-এ চলে আসতে চেয়েছিল। চীনের মূল ভূখণ্ডে বন্যা, টাইফুন এবং দুর্ভিক্ষের মতো ঘটনা কারণে দাঙ্গাহাঙ্গামারতদের পালাবার স্থান হিসেবে হংকং প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

ঔপনিবেশিক হংকং যুগ (১৮০০ - ১৯৩০)

ব্রিটেন ও চীনের মধ্যে হংকং সম্পর্কিত চুক্তি ও বৈঠক
তারিখচুক্তিফলাফলটিকা
২০ জানুয়ারি ১৮৪১চুয়েনপি সম্মেলনগ্রেট্ ব্রিটেন থেকে হংকং দ্বীপের প্রাথমিক স্বত্বত্যাগঅন্তর্ভুক্ত গ্রিন আইল্যান্ড এবং এপ লেই চাউ।
হংকং দ্বীপের স্বত্বত্যাগের আগে, এই অঞ্চলটি জিনান কাউন্টি কর্তৃক শাসিত হয়েছিল
২৯ আগস্ট ১৮৪২নানজিং চুক্তিহংকং দ্বীপের স্বত্বত্যাগ, গ্রেট্ ব্রিটেনের মুকুট উপনিবেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ
১৮ অক্টোবর ১৮৬০বেইজিং সম্মেলনকউলোনের স্বত্বত্যাগকউলোন উপদ্বীপের স্বত্বত্যাগের আগে গং সুয়েন চাউ সহ বাউন্ডারি স্ট্রিটের দক্ষিণ দিকের অঞ্চল জিনান কাউন্টি শাসন করেছিল
১ জুলাই ১৮৯৮দ্বিতীয় বেইজিং সম্মেলননতুন অঞ্চলগুলির ইজারাজিনান কাউন্টির নতুন কউলোন, লানতাও এবং দূরবর্তী দ্বীপগুলিসহ শেনঝেন নদীর দক্ষিণ দিক
১৮৮৮ সালের হংকং, কুয়াংচৌ এবং মাকাও এর জার্মান মানচিত্র
পিকিং চুক্তি

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য চীন থেকে চা আমদানির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। ব্রিটিশরা যখন ঘড়ি এবং হাত ঘড়ির মত বিলাসবহুল জিনিসপত্র রপ্তানি করে তখনও বাণিজ্যে ভীষণ ভারসাম্যহীনতা বিরাজমান ছিল। চীন ব্যপক পরিমাণে রূপার চাহিদা তৈরি করেছিল, যা বিপুল পরিমাণে পণ্য হিসেবে নিয়ে আসা ব্রিটিশদের জন্য দুরূহ ছিল। বাণিজ্য ভারসাম্য চীনে আফিম রপ্তানিতে মাধ্যমে এসেছিল, ব্রিটেনে আফিমের বৈধতা এবং যুক্তরাজ্যের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উৎপাদন[৯] এবং পরবর্তীতে ভারতের অনেক বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয়।

একজন চীনা কমিশনার লিন জেক্সু, রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে কুইং রাজ্যের আফিমের বাণিজ্য বিরোধী বক্তব্য প্রদান। প্রথম আফিম যুদ্ধ ১৮৩৯ থেকে ১৮৪২ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ১৮৪১ সালের ২৫ জানুয়ারি ব্রিটেন হংকং দ্বীপে দখল করে নেয় এবং এটি সামরিক ঘাটি হিসেবে ব্যবহার করে। চীন পরাজিত হয় এবং ১৮৪২ সালের ২৯ আগস্ট নানকিং চুক্তির মাধ্যমে হংকং বৃটেনের কাছে সমর্পণ করতে বাধ্য হয়। হংকং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ক্রাউন কলোনিতে পরিণত হয়।

খ্রিস্টান মিশনারিগণ হংকং-এ অনেক স্কুল ও গীর্জা স্থাপন করে। ১৮৬৫ সালে চার্চ মিশন সোসাইটি ওয়েস্ট পয়েন্টে অবস্থিত সেন্ট স্টিফেন'স আংলিকান চার্চ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০০ সালে লন্ডন মিশনারি সোসাইটি মিড লেভেলে অবস্থিত ইং ওয়া বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮৭ সালে লন্ডন মিশনারি সোসাইটি চীনের জন্য হংকং মেডিসিন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৮২৯ সালে সান ইয়াত-সেন প্রথম দুজন স্নাতকদের মধ্যে অন্যতম। কলেজটি হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের পথিকৃৎ ছিল, যা ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

হংকং কলেজ অব মেডিসিন ফর চাইনিজে পড়াশোনা করার সময় ইয়েন হক-লিং, চান জিউ-বাক ও ইয়াও লিট, সান ইয়াত-সেন, সহপাঠীদের নিয়ে কিং সাম্রাজ্যকে উৎখাত করার পরিকল্পনা প্রচার করতে শুরু করেন। কিংদের কাছে এই চার ছাত্র ডাকু হিসেবে পরিচিত ছিল। এই কলেজে পড়ার সময় সান সাই গির্জা (道濟會堂, ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন) লন্ডন মিশনারি উপস্থিত থাকতেন। সান ১৯১১ সালে চীনা বিপ্লবে নেতৃত্ব দেন, যা চীনকে সাম্রাজ্য থেকে প্রজাতন্ত্রে রূপান্তর করে।

১৮৯৯ সালের এপ্রিলে কাম টিনের অধিবাসীরা উপনিবেশিক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। তারা কট হিং ওয়াই-এ একটি প্রাচীরবদ্ধ গ্রামে নিজেদেরকে প্রতিহত করেছিল। ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনী বেশ কয়েকটি অসফল আক্রমণের পর তারা লোহার গেটটি ধ্বংস করে খুলতে সমর্থ হয়। তখন গেটটি প্রদর্শনীর জন্য লন্ডনে পাঠানো হয়। ১৯২৪ সালে টাং গোত্রের দাবী অনুসারে গেটটি শেষ পর্যন্ত ১৯২৫ সালে ১৬ তম গভর্নর স্যার র্যাজিনাল্ড স্টাব্স ফেরত পাঠায়।

১৮৬২ সালে প্রথম গ্যাস কোম্পানির পরে খুব দ্রুতই ১৮৯০ সালে প্রথম বৈদ্যুতিক কোম্পানি এসেছিল। রিকশাকে বাস, ফেরি, ট্রাম এবং বিমানের জন্য রাস্তা ছেড়ে দিতে হয়েছিল।[১০] প্রতিটি শিল্প বৃহত্তর রূপান্তর এবং বিকাশের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। ফ্রেডেরিক স্টুয়ার্টের প্রচেষ্টায় পশ্চিমা ধাঁচের শৈলীশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার অগ্রগতি সাধন করেছিলেন।[১১] পতনশীল কিং রাজবংশ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সময় চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে হংকং-কে পৃথক করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। প্রথম বড় পরিসরে ব্যাংক (এইচএসবিসি ব্যাংক) প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক শহরের বীজ উপ্ত হয়েছিল।[১২]

১৮৯৪ সালে তৃতীয় বারের মত বিউবনিক প্লেগের সংক্রমণ দেশব্যাপী ছড়িয়ে পরে। এটি পিক রিজার্ভেশন অর্ডিন্যান্স[১৩] তৈরির সাথে জাতিগত অঞ্চলবিভাজনের অছিলা হিসেবে এবং প্রথম হাসপাতালের গুরুত্ব উপলব্ধির অন্তরায় ছিল।

১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে উপনিবেশে সম্ভাব্য আক্রমণের ভয়, ৬০,০০০ চীনাকে প্রস্থান করতে বাধ্য হয়েছিল। যাইহোক, হংকং এর জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল এবং ১৯১৬ সালে জনসংখ্যা ৫৩০,০০০ থেকে ১৯২৫ সালে ৭২৫,০০ তে উন্নীত হয়েছিল। অথচ ১৯২০ এর দশক ও ১৯৩০-এর দশকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সংকট হংকংকে জাপান সাম্রাজ্যের সাথে কৌশলগত আক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে রাখা হয়েছিল।

কাউলোন এবং নতুন অঞ্চল ব্রিটিশদের ইজারা দেওয়া

১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে হংকং-এ ব্রিটিশরা তাদের মুক্ত বন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে দিন দিন খুব চিন্তিত হয়ে পরেছিল। এটি ছিল একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, যার বেষ্টিত এলাকা চীনা ননিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। ব্রিটিশরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে হংকংয়ের আশেপাশের কম উৎপাদনশীল জমির ইজারা দেওয়া হবে, যা দ্বীপটিকে আক্রমণের জন্য কম বিপজ্জনক করবে।

১৮৬০ সালে দ্বিতীয় অ্যামফিয়ার যুদ্ধের শেষে, যুক্তরাজ্যের কাউলোন উপদ্বীপের উপর একটি চিরস্থায়ী শুল্ক লাভ করে, যেখানে চীনের মূল ভূখণ্ড ও হংকং দ্বীপের মাঝে একটি সংকীর্ণ জলপ্রণালী ছিল। এই চুক্তিটি বেইজিং সম্মেলনের অংশ ছিল, যা এই বিরোধের অবসান ঘটায়।

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এবং চীনা সরকার পিকিং এর দ্বিতীয় সম্মেলন স্বাক্ষর করেন, যা হংকংয়ের পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলির জন্য "নিউ টেরিটরিস" নামে ৯৯ বছরের ইজারা চুক্তির অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইজারাটি প্রায় ২৫০ এর অধিক ছোট দ্বীপের উপরে ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণ প্রদান করেছিল। এর পরিবর্তে ৯৯ বছর পরে চীন দ্বীপপুঞ্জ আবার ফিরে পাবে এমন প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল।

১৯৮৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী জহো জিয়াং সিনো-ব্রিটিশ যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, যেখানে ব্রিটেন মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর শুধুমাত্র নতুন রাজ্য নয় বরং কউলোন এবং হংকংকেও ফিরে দেয়ার জন্য রাজি হয়। চীন "এক দেশ, দুই নীতি" শাসন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়, যার অধীনে পঞ্চাশ বছর হংকং এর নাগরিকরা পুঁজিবাদ এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে। যে স্বাধীনতা চীনের মুল ভূখণ্ডে নিষিদ্ধ।

১৯৯৭ সালের ১ জুলাই ইজারা শেষ হয়ে যায় এবং গ্রেট ব্রিটেন সরকার হংকং ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের কাছে নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে।

জাপানি দখল যুগ (১৯৪০ এর দশক)

জাপান ১৯৪১ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত হংকং দখল করে নিয়েছিল। এই নির্দিষ্ট সময় '৩ বছর এবং ৮ মাস' অর্থনীতিকে নিরূদ্ধ করে দিয়েছিল। পার্ল হারবার আক্রমণের আট ঘণ্টা পরে, ১৯৪১ সালের ৮ ডিসেম্বর শুরু হওয়া ব্রিটিশ, কানাডিয়ান, ভারতীয় এবং হংকং স্বেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা বাহিনী সাকা টাকাসি দ্বারা পরিচালিত জাপানী আক্রমণকে প্রতিহত করেছিল জাপান যুদ্ধের প্রথম দিনে আকাশ সীমায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে এবং প্রতিরক্ষামূলক বাহিনী ব্যপক সংখ্যায় ছিল। ব্রিটিশ এবং ভারতীয়রা জিন ড্রিনকার্স লাইন থেকে পিছিয়ে পড়ে এবং একইভাবে কাউলোনে ভারী গগনচারী গোলাবর্ষণ এবং কামানের গোলাগুলির বেড়াজাল পিছিয়ে পড়ে। হংকং দ্বীপে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলতেই থাকে। কানাডিয়ান উইনিপেগ গ্রেনেডিয়ার্স্রা ওয়াং নাই চং গ্যাপে প্রচন্ড প্রতিদ্বন্দ্বীতার মুখে পড়ে, যা দ্বীপের উত্তর ও নির্জন দক্ষিণাংশের মধ্যবর্তী অংশ ছিল।

১৯৪১ সালের ২৫ ডিসেম্বর স্থানীয়দের কাছে কালো বড়দিন হিসেবে চিহ্নিত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মার্ক আইচিসন ইয়াং ব্যক্তিগতভাবে পেনিনসুলা হোটেলের তৃতীয় তলায় জাপানি সদর দপ্তরে আত্মসমর্পণ করে। হংকংয়ের প্রথম জাপানি গভর্নর হন ইসোগাই রেনসুকে।

জাপানি দখলদারিত্বের সময়, উচ্চ-মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য বৈষম্য দৈনন্দিন জীবনে খুব স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। হংকং ডলার বহন হয়ে যায় অবৈধ, যা সাম্রাজ্যিক জাপানি সেনাবাহিনী প্রশাসনের দ্বারা জারিকৃত জাপানী সামরিক ইয়েন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল এবং যার কোন রিজার্ভ ছিল না। যদিও হংকংয়ের নারী নির্যাতনের উল্লেখ করার মত ঘটনা খুব কম ছিল, তবে কিছু প্রত্যক্ষদর্শী অনুযায়ী হাজার হাজার নারী ধর্ষণের শিকার হতে থাকতে পারে। জাপানী দখলদারিত্বের সাড়ে তিন বছরের মধ্যে আনুমানিক ১০,০০০ হংকং নাগরিককে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়, অন্যদিকে অনেকেই নির্যাতন, ধর্ষণ বা লুটপাট শিকার হয়।[১৪] এই সময়ের একটি বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ফিলিপ স্নো বলেন যে জাপানিরা সৈন্যদের খাদ্য সংরক্ষণের জন্য বেসামরিক নাগরিকদের রেশনের খাবার রেখে দিত, সাধারণভাবেই এই অনাহার থেকে চীনা মূল ভূখণ্ডে অনেকে দুর্ভিক্ষে এবং রোগ-শোকের কবলে পড়ে। কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় চীন ও জাপানের যুদ্ধের কারণে চীনের মূল ভূখণ্ডে পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি তখন হংকং-এ চলে এসেছিল।

১৯৪৫ এর শেষে হংকং যুগ্মভাবে ব্রিটিশ ও চীনা সৈন্য কর্তৃক মুক্ত হয়। হংকংয়ের জনসংখ্যা কমে ৬০০,০০০ এ দাঁড়ায়; প্রাক যুদ্ধের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও কম প্রায় ১৬ মিলিয়নে মানুষ খাদ্যাভাব ও অভিবাসনের অপ্রাতুলতা মুখে পড়ে। ১৯৪২ সালে চীনের কমিউনিস্ট বিপ্লবের কারণে হংকং-এ আরেকটবার জনসংখ্যার আরেকবার বিস্ফোরণ ঘটে। চীনের মুল ভূখণ্ড থেকে হাজার হাজার শরণার্থী হংকং-এ প্রবাসিত হয়েছিল এবং কোরীয় যুদ্ধের কারণে যুক্তরাস্ট্র চীনের মূল ভূখণ্ডে বাণিজ্যের নিষেধাজ্ঞা জারি না হওয়া পর্যন্ত এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সম্মুখগামী মহালম্ফ এর সময় আরও শরণার্থী এসেছিল।

জাপানি দখল পরবর্তি সময়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, বিশ্বজুড়ে উপনিবেশায়ন ভাঙতে শুরু করে। তবুও, ব্রিটেন হংকংকে কৌশলগত কারণে রেখেছিল। তার শাসন সংহত করার জন্য জনগণের প্রয়োজন মেটাতে সাংবিধানিক পরিবর্তন, ইয়াং প্ল্যান প্রস্তাব করা হয় যাতে উপনিবেশায়ন ভাঙনের মুখে পড়তে না হয়। চীনের অস্থিরতার কারণে এবং রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার ফলে সেসময় সেখানে যৎসামান্য পরিবর্তন এসেছিল, যা মূল ভূখণ্ডের এই পরিবর্তনের কারণে হংকংয়ে তার একটি প্রবাহ সৃষ্টি করেছিল।

আধুনিক হংকং

ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আধুনিক হংকং (১৯৫০ এর দশক থেকে ১৯৯৭)

১৯৫০ এর দশক

১৯৫০ এর দশকে ভিক্টোরিয়া, হংকং

চীনের মূল ভূখণ্ড বিশেষ কর সাংহাই থেকে আশা শরণার্থীরা বিশাল জনশক্তির সাথে সাথে যে দক্ষতা ও মূলধন এনেছিল, সেটি অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করেছিল। একই সময়ে, অনেক বিদেশি সংস্থাগুলো সাংহাই থেকে হংকং-এ তাদের অফিসের স্থান পরিবর্তন করে। অভূতপূর্ব উন্নয়নের সাথে সাথে হংকং স্থানীয় আড়ত থেকে শিল্প এবং উৎপাদনমুখী শহরে পরিণত হয়। প্রথম দিকে শিল্পকেন্দ্রে ছোট জায়গায় তৈরি করা যায় যেমনঃ বোতাম, কৃত্রিম ফুল, ছাতা, কাপড়, এনামেলওয়ার, পাদুকা, প্লাস্টিক এসব তৈরি করে দিনের বেশিভাগ সময় ব্যয় করত।

ক্রমবর্ধমান অভিবাসীদের আবাসনের জন্য সারা দেশ জুড়ে বিশাল আকারের শিবির গড়ে উঠেছিল। তবে শিবিরগুলি আগুন ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মুখে পড়েছিল, যা শেক কিপ মে ফায়ারের মত বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল। গভর্নর আলেকজান্ডার গ্রান্টহ্যাম আদর্শ হিসাবে "বহু বহুতল ভবন" পরিকল্পনার সংগে সহমত পোষণ করেন। এর ফলে আকাশচুম্বী দালানগুলোর সূত্রপাত ঘটেছিল। পাবলিক হাউজিংয়ের মৌলিক শর্তগুলি মধ্যে ছিল সাম্প্রদায়িক রান্নার সুবিধা, যেখানে কিছু পরিবার একটি জায়গায় রান্না করত। বড় পর্দার সিনেমায় প্রথাগত ক্যান্টোনিজ অপেরার ফলে জীবনের অন্যান্য দিক পরিবর্তিত হয়েছিল। পর্যটন শিল্প আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। উত্তর প্রান্ত পরিচিত পেয়েছিল "ক্ষুদ্র সাংহাই" (小上海) হিসেবে, অনেকেই মন থেকে এটিকে চীনের সাংহাই এর প্রতিস্থাপক হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছিল।[১৫]

১৯৬০ এর দশক

১৯৬০ এর দশকে কাউলোন শহর এবং ভিক্টোরিয়া, হংকং

উৎপাদন শিল্পটি জনসংখ্যার বড় অংশ নিয়োগে একটি নতুন দশকের সূচনা করেছিল। এই সময়কালটি হংকংয়ের অর্থনীতির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট বলে বিবেচনা করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আবাসন ব্যবসা নতুন করে গড়ে উঠেছিল এবং প্রথমবারের মতো বিশদ নির্দেশনা বা মূলনীতি জারি করা হয়েছিল। যদিও হংকংয়ের কম জিডিপি নিয়ে শুরু করেছিল, এটি টেক্সটাইল শিল্পকে অর্থনীতির উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে প্রযুক্ত করেছিল। চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব হংকং-কে একটি নতুন রাজনৈতিক পর্যায়ে হনিয়ে গিয়েছিল। ১৯৬৭ সালের দাঙ্গার মতো ঘটনাগুলির জন্য ঘরে তৈরি বোমা এবং বিশৃঙ্খলার দিয়ে রাস্তা পরিপূর্ণ হয়েছিল। পুলিশ এবং ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর বিস্ফোরণ বিশেষজ্ঞরা প্রায় আট হাজার ঘরে তৈরি বোমা নিষ্ক্রিয় করেছিল। প্রতি আটটি বোমার মধ্যে একটি ছিল প্রকৃত বোমা।[১৬]

লোকজন বাড়ির তুলনায় কারখানাগুলিতে বেশি সময় কাটানোয় পারিবারিক মূল্যবোধ এবং চীনা ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়েছিল। সময়ের অন্যতম একটি সমস্যা ছিল পানি সংকট এবং অত্যন্ত কম মজুরির সাথে দীর্ঘ কর্মঘণ্টা। ১৯৬৮ সালের হংকং ফ্লুর কারণে জনসংখ্যার ১৫% আক্রান্ত হয়েছিল।[১৭] সমস্ত সংগ্রামের ভেতর দিয়েই "মেড ইন হংকং" কে সস্তা নিম্ন মানের পণ্য থেকে উচ্চ মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে যেতে পেরেছিল।[১৮]

১৯৭০ এর দশক

১৯৭০ এর দশকে কাউলোন শহর এবং ভিক্টোরিয়া, হংকং

১৯৭০ এর দশকের শুরুর দিকে একই কাজের জন্য নারী ও পুরুষের সমান মজুরি এবং সমান সুবিধা পাওয়ায় দিতে উন্মুক্তভাবে ব্রিটিশ হংকং সরকার অস্বীকার করেছিল। হংকং চীনা সিভিল সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের 香港政府華員會 সভাপতি (১৯৬৫-৬৮) লেসলি ওয়াহ-লেউং চুং (鍾華亮, ১৯১৭-২০০৯)[১৯] পুরুষদের এবং মহিলাদের জন্য সমান বেতন প্রতিষ্ঠায় এবং বিবাহিত মহিলাদের স্থায়ী কর্মচারী হওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছিলেন। এর আগে, একজন মহিলার বিয়ে হয়ে গেলে তার চাকরি স্থায়ী থেকে অস্থায়ীতে পরিবর্তিত হয় যেত, এরই সাথে তিনি পেনশন সুবিধা হারাতেন। তাদের অনেকে চাকুরিও হারাতেন। যেহেতু সাবিকারা বেশিরভাগই ছিল মহিলা, অধিকারের এই উন্নতি বিবাহিত নারীদের সেবিকা পেশার জন্য অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।[২০][২১][২২][২৩][২৪][২৫][২৬][২৭]

১৯৭০ এর দশকে সরকার সরকারি আর্থিক সাহায্যকৃত শিক্ষা ছয় বছর থেকে নয় বছরে সম্প্রসারণ এবং হংকং-এ স্থানীয় উদ্যান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল।

মূল চীনা ভূখণ্ডের বাজার এবং ক্রমবর্ধমান মজুরি উত্তরের দেয় অনেক নির্মাতাকে উত্তরে নিয়ে এসেছিল। হংকং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি বাণিজ্যিক ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তার অবস্থানকে সংহত করেছিল। উচ্চ জীবন প্রত্যাশা, সাক্ষরতা, প্রতি-মাথাপিছু আয় এবং অন্যান্য সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ২০তম শতাব্দীর শেষ চার দশকের হংকং-এর কৃতিত্বের প্রমাণ দেয়। এছাড়া উচ্চ আয় কারণে বেসরকারি আবাসন ব্যবসা সূচনা লাভ করে আর এর নেতৃত্বে ছিল প্রথম আবাসন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাইকো সিং। এই সময়ে মধ্যে উচ্চ আবাসিক ভবন নির্মাণে একটি উথান দেখা যায়, অনেকের বাড়ি হংকংয়ের আকাশসীমা এবং দৃশ্যের অংশ হয়ে উঠেছিল।

পুলিশ বাহিনীর মধ্যে দুর্নীতি রুখতে ১৯৭৪ সালে মারি ম্যাকলেহস দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বাধীন কমিশন আইসিএসি প্রতিষ্ঠা করেন। দুর্নীতির পরিমাণ এত ব্যাপক ছিল যে অনেক পুলিশের আবেদনের করে প্রসিকিউশনের বিরোধিতা করেছিল। প্রথমদিকে পুলিশ বাহিনীর আইসিএসি প্রতি বিরোধিতা সত্ত্বেও, হংকং তার দুর্নীতি বিরোধী প্রচেস্টায় সফল হয়েছিল, অবশেষে বিশ্বের কম দূর্নীতিগ্রস্থ দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়।

১৯৮০ র দশকে ভিক্টোরিয়া, হংকং

১৯৮০-এর দশক

১৯৮০ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার আশা করেছিলেন যে পিআরসি সরকারের উন্মুক্ততা এবং মূল ভূখণ্ডে অর্থনৈতিক সংস্কারের ফলে ব্রিটিশ শাসন অব্যাহত থাকবে। চীন-ব্রিটিশ বৈঠকে এক যুগ্ম ঘোষণায় স্বাক্ষর করে এবং এর ফলে ডেং জিয়াওপিং এক দেশের দুই নীতির ধারণা বাস্তব রূপ পায়। রাজনৈতিক সংবাদ প্রচার মাধ্যমকে শাসন করছিল, যখন আবাসন ব্যবসা একটি বড় উত্থান ঘটেছিল। অর্থনৈতিক বিশ্বের তখন ত্রাস চলছিল, যা নীতি পরিবর্তনে এবং ব্ল্যাক সানডে সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূ্মিকা রেখেছিল।

হংকংয়ের সিনেমা আন্তর্জাতিক মানচিত্রে দারুণ সময় অতিবাহিত করেছিল। এ সময় বড় তারকাদের মধ্যে ছিল জ্যাকি চ্যান ও চা ইন-ফ্যাট। সংগীত বিশ্বে অনিতা মুই এবং লেসলি চেং মতো নতুন ক্যান্টপ তারকাদের দল দেখেছিল।

১৯৯০-এর দশক

১৯৯০ এর দশকে ভিক্টোরিয়া, হংকং

১৯৯০ সালের ৪ এপ্রিল হস্তান্তরের পর হংকং মৌলিক আইন আনুষ্ঠানিকভাবে হংকং এসএআর-এর ক্ষুদ্র-সংবিধান হিসাবে স্বীকৃত পায়। বেইজিং-এর সমর্থক গোষ্ঠী মৌলিক আইনকে স্বাগত জানায় এবং উল্লেখ করে এটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গণতান্ত্রিক আইনি ব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক দলগুলো এটিকে যথেস্ট গণতান্ত্রিক নয় বলে সমালোচনা করে। ১৯৯২ সালের জুলাইয়ে ক্রিস প্যাটেনকে ব্রিটিশ গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি সেই বছরের সাধারণ নির্বাচনে তার সংসদীয় আসন হারানোর পূর্বে প্যাটেন কনজারভেটিভ পার্টির সভাপতি ছিলেন। প্যাটেন গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রবর্তন করেন, যা বিধানিক কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, ফলে বেইজিং-এ পিআরসি সরকারের সাথে সম্পর্ক আরও তীব্র হয়ে উঠে। এটি পিআরসির জন্য যথেষ্ট বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, এটি মূল আইন লঙ্ঘনের মত করে দেখা হচ্ছিল। ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই হংকংকে যুক্তরাজ্য কর্তৃক গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ক্রিস প্যাটেনের সংস্কারের অধীনে নির্বাচিত পুরাতন আইন পরিষদ প্রাদেশিক আইন পরিষদ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়, যার সদস্যগণকে পিআরসি সরকার নিয়োগ দিয়েছিল। ডিসেম্বরে তুং চি ওয়া পিআরসির সরকার কর্তৃক নিযুক্ত সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন এবং হংকং-এর প্রধান নির্বাহী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

ব্রায়ান হুক উল্লেখ করেন যে ব্রিটিশরা অন্য উপনিবেশগুলিতে গৃহীত গণতান্ত্রিক পদ্ধতির দিকে এগিয়ে যাবে না। পরিবর্তে তারা পৌরসভা ও আইন পরিষদের মাধ্যমে একাধিক সংস্কারের প্রবর্তন করে। ফলে সিভিল সার্ভিসের সিনিয়র ঊর্ধ্বতন পদে ব্রিটিশদের আধিপত্য ছিল। শক্তিশালী ব্রিটিশ এবং চীনা ব্যবসায়িক সম্প্রদায় আরো পরিবর্তনের বিপক্ষে ছিল এবং গণতন্ত্রের বিকাশ চায় নাই, কারণ চীন স্বাধীনতা আন্দোলন প্রত্যাখ্যান করতে পারে। পণ্ডিতরা সম্মত হন যে ব্রিটিশ হংকং-এ একটি সুশৃঙ্খল ও দক্ষ পরিকাঠামো, একটি খুব ভাল শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তুলেছে এবং এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। যখন দায়িত্ব নেয় এইচকেএসআর (হংকং স্পেশাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিজিওন) এর প্রধান নির্বাহী তুং চি ওয়া উন্নতির ধারা বজায় রাখতে নীতি সচিবের পুরো দল পুনর্নির্বাচিত করেন।[২৮]

১৯৯৭ সালের পর অপরিবর্তিত১৯৯৭ সালের পর পরিবর্তন
  1. দীর্ঘ সময়ের কোন সাধারণ নির্বাচন না হওয়ার ব্রিটিশ অভ্যাস হংকংয়ের নাগরিকেরা অপরিবর্তিত রেখেছিল।
  2. ইংরেজি এখনও সব স্কুলের মধ্যে শেখানো হয়। যাই হোক অনেক স্কুল সমান্তরালভাবে ম্যান্ডারিন ক্যান্টোনিজ এবং ইংরেজির ভাষায় শিক্ষা দেয়।
  3. মূল ভূখণ্ডের সীমান্ত আগেই মতই চৌকি দেত্তয়া অব্যাহত আছে।
  4. হংকং আগের মতই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমনঃ আইওসি, এপেক এবং ডব্লুটিও এর সদস্য আছে।
  5. হংকং তার বিদেশী দেশ ও অঞ্চলগুলির সাথে নিজস্ব বিমানচালনা দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোচনা বজায় রাখে। হংকং এবং চীনের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে ফ্লাইটগুলি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট হিসাবে বিবেচনা করা হয় (বা চীনের মূল ভূখণ্ডে সাধারণত আন্তঃঞ্চলীয় ফ্লাইট হিসাবে পরিচিত)
  6. হংকং এসএআর পাসপোর্টধারীরা ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলিতে সহজেই প্রবেশ করতে পারে, যেখানে মূল ভূখণ্ডের নাগরিকরা সেই সুবিধা পায় না। মূল ভূখণ্ডের নাগরিকরা হংকংয়ে শুধুমাত্র পিআরসির সরকার থেকে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। ১৯৯৭ সালের পর অনেক সাবেক ঔপনিবেশিক নাগরিক এখনও ব্রিটিশ জাতীয় (বিদেশী) এবং ব্রিটিশ নাগরিক পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন।
  7. চীনের মূল ভূখণ্ডের তুলনায় এখানে বেশি রাজনৈতিক স্বাধীনতা রয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সহ।
  8. হংকংয়ের মোটরগাড়ির চলাচল চীনের মূল ভূখণ্ডের মতো নয়, এখানে বাম দিকে চলাচল করে। সর্বশেষ ঘানা (এছাড়াও একটি প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশ) ১৯৭৪ সালে বাম দিকে ট্র্যাফিক থেকে ডান হাত ট্রাফিকে পরিবর্তন করে।
  9. বৈদ্যুতিক প্লাগ (BS1363), টিভি সম্প্রচার (PAL-I) এবং যুক্তরাজ্যের অন্যান্য প্রযুক্তিগত মানগুলি এখনও হংকং-এ ব্যবহার করা হয়। তবে টেলিফোন কোম্পানি হংকংতে ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড (BS6312) টেলিফোন সকেট স্থাপন বন্ধ করে দেয়। চীনের মূল ভূখণ্ড ডিজিটাল টিভির মান হংকং-এর মত পরিগ্রহণ করেছিল।
  10. হংকং মূল ভূখণ্ড থেকে একটি পৃথক আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোড (+৮৫২) এবং টেলিফোন নম্বর পরিকল্পনাকে ধরে রেখেছে। হংকং এবং মূলভূমিগুলির মধ্যে থাকা কলগুলির জন্য এখনও আন্তর্জাতিক ডায়ালিং প্রয়োজন হয়।
  11. সাবেক ব্রিটিশ সামরিক কসরত, মার্চিং এবং হুকুমের ইংরেজি শব্দগুলি সব বেসামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সমস্ত শাস্ত্রীয় সেবাগুলিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। চীনের পিএলএ যোদ্ধারা (চীনের সশস্ত্র বাহিনী) হংকং-এ তাদের নিজস্ব বেধনিকা ও ম্যান্ডারিন ভাষায় হুকুম দিয়ে দেয়।
  12. হংকং এখনও ব্রিটিশ তারিখ পদ্ধতি ব্যবহার করে।
  13. রানী ভিক্টোরিয়া এবং কিং জর্জ এর মত ব্রিটিশদের সমস্ত মূর্তি রয়ে গিয়েছে।
  14. "কুইন্স রোড", "কিংস রোড" এই ধরনের রাস্তার নাম রয়ে গিয়েছে।
  1. হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী এখন ১২০০ সদস্যে বিশিস্ট একটি নির্বাচন কমিটি দ্বারা নির্বাচিত হয়, যারা প্রধানত পেশাগত খাত এবং হংকং-এ চীনা ব্যবসায়ীদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হয়।
  2. সব পাবলিক অফিস এখন পিআরসি এবং হংকং এসএআর এর পতাকা উড়ায়। কেন্দ্রীয় পতাকাটি শুধু ব্রিটিশ দূতাবাস এবং অন্যান্য ব্রিটিশ প্রাঙ্গণের বাইরে উড়ানো যায়।
  3. দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর প্রতিকৃতি হংকংয়ের টাকা, ডাকটিকিট এবং পাবলিক দপ্তর থেকে বিলুপ্ত করা হয়েছে।
  4. রয়েল হংকং ইয়ট ক্লাবের ব্যতিক্রম ছাড়া 'রয়্যাল' শিরোনাম প্রায় সব প্রতিষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
  5. 'ক্রাউন' এর আইনি সূত্র 'স্টেট' এর সূত্র দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। আর যেসব ব্যারিস্টার কুইনের কৌঁসুলি নিযুক্ত হয়েছিল, তারা বর্তমানে জ্যেষ্ঠ কৌঁসুলি হিসেবে পরিচিত।
  6. অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার এর পরিবর্তে গ্র্যান্ড বাউহিনিয়া মেডেল প্রবর্তনের সাথে সাথে ব্রিটিশ সম্মান ব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করার জন্য একটি স্থানীয় সম্মান ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল।
  7. রানির জন্মদিন এবং অন্যান্য ব্রিটিশ-অনুপ্রাণিত উপলক্ষের ছুটিগুলো পিআরসি জাতীয় দিবস এবং হংকং এসএআর প্রতিষ্ঠা দিবস দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়
  8. অনেক ব্রিটিশ শৈলী স্তম্ভ বক্সগুলি হংকংয়ের রাস্তা থেকে সরানো হয় এবং সিঙ্গাপুর শৈলীতে সবুজ হংকং পোস্ট বাক্স দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। কিছু উদাহরণ রয়ে গেছে, কিন্তু নতুন রং করা হয়েছে।
  9. ব্রিটিশ নাগরিকরা (বাসস্থান অধিকার ব্যতিত) হংকংয়ে ভিসা ছাড়াই অনধিক এক বছরের জন্য কাজ করতে সক্ষম ছিল; এই নীতি ১৯৯৭ সালের ১ এপ্রিল পরিবর্তন করা হয়।
  10. হংকং এর আঞ্চলিক সংগীত গড সেইভ দ্য কুইন থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের কুচকাওয়াজে পরিবর্তন করা হয়।
  11. মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ক্যান্টোনিজে পড়ানো বাধ্যতামূলক, যদি না শিক্ষা বিভাগের অনুমোদন হয়।[২৯] মাধ্যমিক শিক্ষা ইংরেজি মডেলের পাঁচ বছরের পড়াশোনা থেকে সরে গিয়ে চীনা মডেলে ২ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাট্রিকুলেশন এর সাথে ৩ বছরের নিম্ন মাধ্যমিক এবং সাথে আরও ৩ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা চালু করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা তিন বছর থেকে বাড়িয়ে চার করা হয়।
  12. ২০১২ সালে, ম্যান্ডারিন হংকংয়ে ক্যান্টোনেস এর পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হিসেবে ইংরেজির জায়গায় নিয়ে নেয়।
  13. হংকং-জুহাই-মাকাও সেতুর কাজ ২০০৯ সালে শুরু হয় এবং ২০১৭ সালের নভেম্বরে এর কাজ শেষ হয় (হস্তান্তরের ২০ বছরেরও বেশি সময় পরে)।

চীনা শাসনের অধীনে আধুনিক হংকং (১৯৯৭-এর পর থেকে বর্তমান)

২০০০ এর দশকে কাউলোনের উত্তর অংশ এবং ভিক্টোরিয়া, হংকং

নতুন সহস্রাব্দ একটি ঘটনাবহুল পরম্পরার ইঙ্গিত দিয়েছিল। জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যারা আগে থেকেই হস্তান্তরের বিরুদ্ধে ছিল, তারা সমন্বয় করে বসবাস করতে শুরু করে। ধারা ২৩ বিতর্কিত হয়ে ওঠে এবং সেসময় হংকংয়ের বিভিন্ন অংশে কম করে হলেও ৭৫০,০০০ সংখ্যক জনগণ (যেখানে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬,৮০০,০০০) দৃঢ়ভাবে এর বিরুদ্ধে অগ্রসর হয়। ২০০৩ সালে সরকার শ্বাসকস্টজনিত প্রাদুর্ভাবের জন্য কাজ করে। ৯০ এর শেষের দিকে আরও একটি স্বাস্থ্যগত সংকট, বার্ড ফ্লু মহামারী (H5N1) ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং এতে লক্ষ লক্ষ মুরগি এবং অন্যান্য গৃহপালিত পক্ষিসমূহ ধ্বংস হয়ে যায়। এই পক্ষি হত্যা গোটা বিশ্বের নজরে পড়েছিল। একই সময়ে, অর্থনীতি অচলাবস্থা সমন্বয় করার চেষ্টা চলছিল। অল্প সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক অবস্থা উত্তপ্ত হতে শুরু করে এবং প্রধান নির্বাহীর অবস্থান সাংস্কৃতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে ও ব্যবস্থাপক হিসেবে হুমকির মুখে পড়ে। হংকং ডিজনিল্যান্ড, লানতাও এই সময়ের মাঝেই চালু করা হয়। ২০০৯ সালে হংকং দেশব্যাপী আরেকটি ফ্লুর মুখে পড়েছিল, যার ফলে দুই সপ্তাহের জন্য স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

হকাউলোন, সুয়েন ওয়ান এবং ভিক্টোরিয়া প্রত্যেক জায়গায় আকশচুম্ব্বি অট্টালিকাকে সাথে নিয়ে হংকংয়ের আকশচুম্ব্বি অট্টালিকাগুলো বাড়তেই থাকে। ২০০৩ সালে নির্মিত ৪১৫ মিটার (১,৩৬২ ফুট) উঁচু ও ৮৮ তলা বিশিস্ট দুইটি দুটি আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থা কেন্দ্রকে ২০১০ সালে নির্মিত ৪৮৪ মিটার (১,৫৮৮ ফুট) উঁচু ও ১১৮ তলা বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রকে টপকে যায়। আরেকটি উল্লেখ করার মত অট্টালিকা হচ্ছে সুয়েন ওয়ান এর ৩২০ মিটার (১,০৫১ ফুট) উচ্চতা বিশিষ্ট লিনা টাওয়ার।[৩০]

হংকং-এর পতাকা
ব্রিটিশদের অধীনে থাকাকালীন হংকং-এর পতাকা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

আরো পড়ুন

  • Kam C. Wong, Policing in Hong Kong: History and Reform (CRC: Taylor and Francis, 2015)

প্রাথমিক সূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ