হাসপাতাল
হাসপাতাল বলতে এক ধরনের রোগী দেখার প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়। বর্তমানে হাসপাতাল বলতে এমন প্রতিষ্ঠানকে বোঝায় যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ ও সেবাকর্মীগণ প্রয়োজনীয় উপকরণের মাধ্যমে রোগীদের সেবা প্রদান করেন। অনেক সময়েই হাসপাতালে রোগীর দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার জন্য আবাসিক শয্যার ব্যবস্থাও থাকে। হাসপাতালসমূহ সরকারি, বেসরকারি (দাতব্য কিংবা মূনাফাভিত্তিক) অথবা বীমা প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। প্রাচীনকালে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ হাসপাতাল পরিচালনার কাজে নিয়মিত নিয়োজিত থাকতেন। বর্তমানে সারা বিশ্বে আনুমানিক ১.৭ মিলিয়ন + হাসপাতাল রয়েছে।
হাসপাতাল | |
---|---|
ইতিহাস
৪০০ খ্রিস্টাব্দে,চীনা বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ফা জিয়ান, ভারত ভ্রমণ করেন এবং নিরাময় প্রতিষ্ঠানের তথ্য নথিভুক্ত করেন।[২] খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে রচিত সিংহলি রাজপরিবারের প্রাচীন ইতিহাস মহাবংশ অনুসারে, শ্রীলঙ্কার রাজা পান্ডুকাভায়া হাসপাতালে (শিবিকসোত্তি-সালা) ছিলেন।[৩] সাসানিদ পারস্য সাম্রাজ্যের প্রথম শাপুর দ্বারা ২৭১ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর গুন্ডেশাপুরে হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাচীন গ্রীসে, নিরাময়কারী-দেবতা অ্যাসক্লেপিয়াসকে উৎসর্গ করা মন্দির, যা অ্যাসক্লেপিয়ন নামে পরিচিত, চিকিৎসা পরামর্শ, পূর্বাভাস এবং নিরাময়ের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত।[৪]রোমান সাম্রাজ্যে সামরিক ব্যারাকে ভ্যালেটুডিনারিয়া নামক সামরিক হাসপাতাল ছিল এবং দুর্গের মধ্যে সৈন্য ও দাসদের সেবা করত।
৩২৫ খ্রিস্টাব্দে নাইসিয়ার প্রথম কাউন্সিলের পর প্রতিটি ক্যাথেড্রাল শহরে একটি হাসপাতাল নির্মাণ শুরু হয়, যার মধ্যে রয়েছে কনস্টান্টিনোপলের সেন্ট স্যাম্পসন এবং আধুনিক তুরস্কের সিজারিয়ার বিশপ বেসিল। দ্বাদশ শতাব্দীতে, কনস্টান্টিনোপলে দুটি সুসংগঠিত হাসপাতাল ছিল, যেখানে পুরুষ ও মহিলা ডাক্তার কর্মরত ছিলেন। বিভিন্ন রোগের জন্য পদ্ধতিগত চিকিৎসা পদ্ধতি এবং বিশেষায়িত ওয়ার্ডের সুবিধা ছিল।
মিশরের কায়রোতে মানসুরি হাসপাতাল ছিল ,ইসলামী বিশ্বের প্রাচীনতম সাধারণ হাসপাতালটি বাগদাদে ৮০৫সালে হারুন আল-রশিদ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। ১০ শতকের মধ্যে, বাগদাদে আরও পাঁচটি হাসপাতাল ছিল, ১৫ শতকের মধ্যে দামেস্কে ছয়টি হাসপাতাল ছিল, এবং ১৫ শতকের শেষ নাগাদ শুধুমাত্র কর্ডোবায় ৫০ টি বড় হাসপাতাল ছিল।