আঙ্কারা
আঙ্কারা (তুর্কি: Ankara; /ˈæŋkərə/ ANG-kə-rə, /[অসমর্থিত ইনপুট: 'USalso']ˈɑːŋ-/ AHNG-kə-rə; তুর্কি: [ˈaŋkaɾa] (ⓘ))[ক] ঐতিহাসিকভাবে আঞ্চিরা ও অ্যাঙ্গোরা নামে পরিচিত,[১৩] এটি তুরস্কের রাজধানী। আনাতোলিয়ার মধ্য অংশে অবস্থিত এই শহরের জনসংখ্যা সদরে ৫১ লাখ ও আঙ্কারা প্রদেশে ৫৭ লাখ, ইস্তাম্বুলের পরে এটি তুরস্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
আঙ্কারা Ankara | |
---|---|
রাজধানী ও মেট্রোপলিটন পৌরসভা | |
ডাকনাম: তুরস্কের হৃদয় (তুর্কি: Türkiye'nin Kalbi) | |
তুরস্কের মধ্যে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৩৯°৫৫′৪৮″ উত্তর ৩২°৫১′০০″ পূর্ব / ৩৯.৯৩০০০° উত্তর ৩২.৮৫০০০° পূর্ব | |
দেশ | তুরস্ক |
অঞ্চল | মধ্য আনাতোলিয়া |
প্রদেশ | আঙ্কারা |
প্রতিষ্ঠাতা | মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক |
জেলা | ২৫ |
সরকার | |
• মেয়র | মানসুর ইয়াভাশ (সিএইচপি) |
• গভর্নর | ভাসিপ শাহিন |
আয়তন[১][২][৩][৪] | |
• রাজধানী ও মেট্রোপলিটন পৌরসভা | ২৪,৫২১ বর্গকিমি (৯,৪৬৮ বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ২,৭৬৭.৮৫ বর্গকিমি (১,০৬৮.৬৭ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৯৩৮ মিটার (৩,০৭৭ ফুট) |
জনসংখ্যা (৩১ ডিসেম্বর ২০২২)[৬] | |
• রাজধানী ও মেট্রোপলিটন পৌরসভা | ৫৭,৮২,২৮৫ |
• ক্রম | তুরস্কে দ্বিতীয় |
• পৌর এলাকা | ৫১,৮৭,৯৪৯[৫][৪] |
• পৌর এলাকার জনঘনত্ব | ১,৮৭৪/বর্গকিমি (৪,৮৫০/বর্গমাইল) |
• মহানগর জনঘনত্ব | ২৩৬/বর্গকিমি (৬১০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | আঙ্কারান |
সময় অঞ্চল | টিআরটি (ইউটিসি+৩) |
পোস্টকোড | ০৬xxx |
এলাকা কোড | ১ |
যানবাহন নিবন্ধন | ০৬ |
জিডিপি (প্রান্তিক) | ২০২১[৭] |
- মোট | ইউএস$ ৭৪.৮৩ বিলিয়ন |
- মাথা পিছু | ইউএস$ ১৩,০২০ |
এইচডিআই (২০১৮) | ০.৮৫৫[৮] – খুব উচ্চ |
ওয়েবসাইট | www www |
গালাতিয়ার প্রাচীন সেল্টিক রাজ্যে (২৮০–৬৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), ও পরবর্তীতে একই নামের রোমান প্রদেশের (২৫ খ্রিস্টপূর্ব–৭ম শতাব্দী) রাজধানী হিসেবে শাসিত এই শহর অনেক পুরানো যেখানে বিভিন্ন হাট্টীয়, হিট্টীয়, লিডীয়, ফ্রিজীয়, গালাতীয়, গ্রিক, পারসিক, রোমান, বাইজেন্টাইন ও উসমানীয় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান রয়েছে। শহরটিকে প্রথমে উসমানীয়রা আনাতোলিয়া এয়ালেত (১৩৯৩–১৫শ শতাব্দীর শেষের দিকে) এবং তারপর আঙ্কারা এয়ালেত (১৮২৭–১৮৬৪) ও আঙ্কারা ভিলায়েতের (১৮৬৭-১৯২২) রাজধানী করে তোলে। আঙ্কারার ঐতিহাসিক কেন্দ্র হলো একটি পাথুরে পাহাড়, এটি ১৫০ মিটার (৫০০ ফুট) উঁচু সাকারিয়া নদীর একটি উপনদী আঙ্কারা নদীর বাম তীরের উপরে অবস্থিত। পাহাড়টি আঙ্কারা কেল্লার ধ্বংসাবশেষের অবশেষ দ্বারা সাজানো। এর কিছু বহির্ভাগ টিকে থাকলেও শহর জুড়ে রোমান ও উসমানীয় স্থাপত্যের সুসংরক্ষিত উদাহরণ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো মনুমেন্টাম আঞ্চিরানামকে তুলে ধরা ২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের রোমের অগাস্টাসের মন্দির, এর শিলালিপিতে রেস গেস্টাই ডিভি অউগুস্তি লেখা আছে।[১৪]
২৩ এপ্রিল ১৯২০-এ আঙ্কারায় তুরস্কের মহান জাতীয় সভা প্রতিষ্ঠিত হয়, এটি তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তুর্কি জাতীয় আন্দোলনের সদর দপ্তরে পরিণত হয়েছিলো। উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর তুর্কি রাজধানী হিসেবে প্রাক্তন ইস্তাম্বুলের ভূমিকায় সফল হয়ে ২৯ অক্টোবর ১৯২৩ সালে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর আঙ্কারা নতুন তুর্কি রাজধানী হয়ে ওঠে। সরকার এর একটি বিশিষ্ট নিয়োগকর্তা হলেও আঙ্কারা তুরস্কের সড়ক ও রেলওয়ে নেটওয়ার্কের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্প শহর। অ্যাঙ্গোরা খরগোশ থেকে কাটা অ্যাঙ্গোরা উল, লম্বা কেশী অ্যাঙ্গোরা ছাগল (মোহায়ারের উৎস) ও অ্যাঙ্গোরা বিড়ালের নাম এই শহর থেকে এসেছে। এলাকাটি এর নাশপাতি, মধু ও মাস্কাট আঙ্গুরের জন্যও পরিচিত। তুরস্কের অন্যতম শুষ্ক অঞ্চলে অবস্থিত ও বেশিরভাগই স্তেপ গাছপালা দ্বারা বেষ্টিত (দক্ষিণ ঘেরের বনাঞ্চল ব্যতীত) হলেও প্রতিটি বাসিন্দার জন্য মাথাপিছু ৭২ বর্গমিটার (৭৭৫ বর্গফুট) সবুজ এলাকার পরিপ্রেক্ষিতে আঙ্কারা একটি সবুজ শহর হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।[১৫]
ইতিহাস
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজের পরাজয়ের পর, অটোমানের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল (আধুনিক ইস্তানবুল) এবং আনাতোলিয়ার বেশিরভাগ অংশ মিত্রদের দখলে ছিল, তুরস্কের কেন্দ্রীয় আনাতোলিয়ার মূল অংশটি ছেড়ে বাকী অংশ আর্মেনিয়া, ফ্রান্স, গ্রীস, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। এর প্রতিবাদ হিসেবে, তুর্কি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতা মোস্তফা কামাল আতাতর্ক ১৯২০ সালে অ্যাঙ্গোরায় তার প্রতিরোধ আন্দোলনের সদর দফতর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তুর্কির স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ের পর লাউসান চুক্তি (১৯২৩) দ্বারা সেভ্রে চুক্তির রহিত হয়, তুর্কি জাতীয়তাবাদীরা ১৯২৩ সালের ২৯ অক্টোবর অটোমান সাম্রাজ্যকে তুর্কি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে। এর কিছু দিন আগে, ১৯২৩ সালের ১৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাঙ্গোরা থেকে কনস্টান্টিনোপলে তুরস্কের নতুন রাজধানী স্থানান্তরিত করে এবং রিপাবলিকান কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছিলেন যে শহরের নাম আঙ্কারা।[১৬]
ভূগোল
আঙ্কারায় গরম-গ্রীষ্মকালীন ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু (কোপেন সিএসএ) বিরাজমান যা একটি গরম-গ্রীষ্মকালীন ভূমধ্যসাগরীয় মহাদেশীয় জলবায়ু (কোপেন ডিএসএ) অত্যন্ত নিকটবর্তী। ট্রিওয়ার্থ জলবায়ু শ্রেণীর বিন্যাস অনুসারে, আঙ্কারা মধ্য অক্ষাংশ প্রতিরক্ষা জলবায়ুর (বিএসকে) অন্তর্গত। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা এবং অভ্যন্তরীণ অবস্থানের কারণে, আঙ্কারা শীতকালে ঠান্ডা ও কিছুটা তুষারাবৃত এবং গ্রীষ্মকালে গরম ও শুষ্ক থাকে। গ্রীষ্ম ও বসন্তকালে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আঙ্কারা ইউএসডিএ হার্ডনেস জোন ৭বিতে অবস্থিত এবং এর বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৪০০ মিলিমিটারের (১৬ ইঞ্চি) তুলনায় বেশ কম, তবুও সারা বছর বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যায়। মাসিক গড় তাপমাত্রা জানুয়ারীতে ০.৩° ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩২.৫° ফারেনহাইট) থেকে জুলাই মাসে ২৩.৫° ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭৪.৩° ডিগ্রি ফারেনহাইট) থাকে এবং বার্ষিক গড় ১২.০২° ডিগ্রি সেলসিয়াস (৫৩.৬° ডিগ্রি ফারেনহাইট) থাকে।
জনসংখ্যা
১৯২৭ সালে আঙ্কারার জনসংখ্যা ছিল ৭৫,০০০ জন। ২০১৩ সালে আঙ্কারা প্রদেশের জনসংখ্যা ছিল ৫,০৪৫,০৮৩ জন।
১৯২৩ সালে আঙ্কারা যখন তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী হয়ে ওঠে, তখন এটি ভবিষ্যতের ৫০০,০০০ বাসিন্দাদের জন্য একটি পরিকল্পিত শহর হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল। ১৯২০-এর দশক, ১৯৩০-এর দশক ও ১৯৪০-এর দশকে শহরটি একটি পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল গতিতে বৃদ্ধি পায়। তবে, ১৯৫০-এর দশকের পর থেকে, শহরটির জনসংখ্যা কল্পনা থেকেও অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল, কারণ বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য মানুষকে উন্নত জীবনযাত্রার সন্ধানে গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে চলে যেতে বাধ্য করেছিল। ফলস্বরূপ, জেসেকানডু নামে অনেক অবৈধ বাড়ি শহরের চারপাশে নির্মিত হয়েছে, যার ফলে আঙ্কারার অপরিকল্পিত এবং অনিয়ন্ত্রিত নগরীর প্রাকৃতিক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে, কারণ পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যাপ্ত আবাসন দ্রুত পর্যায় তৈরি সম্বব হয়নি। যদিও তা নির্ভুলভাবে নির্মিত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই বিদ্যুৎ, চলমান জল এবং আধুনিক গৃহস্থালী সুবিধা রয়েছে।
রাজনীতি
আঙ্কারা তিনটি দলের একটি ট্রিপল যুদ্ধক্ষেত্র, যা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি), বিরোধী কামালবাদী কেন্দ্র-বাম রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) এবং জাতীয়তাবাদী সুদূর-ডান ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি) এর মধ্যে সংঘটিত হয়ে থাকে। আঙ্কারা প্রদেশটি ২৫ টি জেলায় বিভক্ত। আঙ্কারায় সিএইচপির প্রধান ও একমাত্র রাজনৈতিক ঘাঁটি কানকায়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত, যা শহরের সবচেয়ে জনবহুল জেলা। ২০০২ সাল থেকে কনকায়ায় সিএইচপি সর্বদা ৬০% থেকে ৭০% ভোট পেয়েছে, আঙ্কারার অন্যত্র এদের রাজনৈতিক সমর্থন খুব কম।
শিক্ষা
আঙ্কারায় তুরস্কের রাজধানী হওয়ায় বহু খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত।
- আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়
- টেড বিশ্ববিদ্যালয়
- বাসকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়
- বিলকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়
- গাজী বিশ্ববিদ্যালয়
আরও দেখুন
- অ্যাঙ্গোরা বিড়াল
- অ্যাঙ্গোরা ছাগল
- অ্যাঙ্গোরা খরগোশ
- আঙ্কারা সম্মতিপত্র
- আঙ্কারা অ্যারেনা
- আঙ্কারা কেন্দ্রীয় স্টেশন
- আঙ্কারা এসেনবোয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
- আঙ্কারা মেট্রো
- আঙ্কারা প্রদেশ
- আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়
- এটিও কংগ্রেসিয়াম
- আঞ্চিরার পুদিনা
- আঞ্চিরার লড়াই
- আঙ্কারার লড়াই
- আঞ্চিরার ক্লেমেন্ট
- আঞ্চিরার গেমেলাস
- আঙ্কারার ইতিহাস
- আঙ্কারা প্রদেশের হাসপাতালের তালিকা
- আঙ্কারার মেয়রের তালিকা
- আঙ্কারা প্রদেশের পৌরসংস্থার তালিকা
- আঙ্কারার জেলার তালিকা
- আঙ্কারার ব্যক্তিদের তালিকা
- আঙ্কারার সুউচ্চ ভবনসমূহের তালিকা
- আঞ্চিরার মার্সেলাসের তালিকা
- মনুমেন্টাল আঞ্চিরানাম
- আঞ্চিরার নাইলাস
- আঙ্কারার রোমান স্নানঘর
- আঞ্চিরার ধর্মসভা
- আঞ্চিরার থিওডোটাস (বিশপ)
- আঞ্চিরার থিওডোটাস (শহিদ)
- আঙ্কারার কালপঞ্জি
- আঙ্কারার চুক্তি (দ্ব্যর্থতা নিরসন)
- বিজয় স্মৃতিস্তম্ভ (আঙ্কারা)
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
- Baynes, T. S., সম্পাদক (১৮৭৮)। "Angora"। Encyclopædia Britannica। 2 (9th সংস্করণ)। New York: Charles Scribner's Sons। পৃষ্ঠা 45।
- চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১b)। "Ancyra"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ। 1 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 953।
- Parvis, Sarah (২০০৬)। Marcellus of Ancyra And the Lost Years of the Arian Controversy 325–345। New York: Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-928013-1।
আরোপণ
- এই নিবন্ধটি একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনে: চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Angora"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ। 2 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 40–41।
- এই নিবন্ধটি একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনে: Rockwell, William Walker (১৯১১)। "Ancyra"। চিসাম, হিউ। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ। 1 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস।
আরও পড়ুন
- Members of Staff of the Museum (২০০৬)। Guide book to The Museum of Anatolian Civilizations । Ankara: "The association for the support and encouragement of the Museum of Anatolian Civilizations." Dönmez offset (Printer)। আইএসবিএন 978-975-17-2198-3।