আফগানিস্তান জাতীয় ফুটবল দল

আফগানিস্তান জাতীয় ফুটবল দল (দারি: تیم ملی فوتبال افغانستان‎, ইংরেজি: Afghanistan national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম আফগানিস্তানের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আফগানিস্তান ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯৪৮ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৫৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৪১ সালের ২৫শে আগস্ট তারিখে, আফগানিস্তান প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; আফগানিস্তানের কাবুলে অনুষ্ঠিত আফগানিস্তান এবং ইরানের মধ্যকার উক্ত ম্যাচটি ০–০ গোলে ড্র হয়েছে।

আফগানিস্তান
দলের লোগো
ডাকনামখুরাসানের সিংহ
অ্যাসোসিয়েশনআফগানিস্তান ফুটবল ফেডারেশন
কনফেডারেশনএএফসি (এশিয়া)
প্রধান কোচআনুশ দস্তগির
অধিনায়কফারশাদ নুর
সর্বাধিক ম্যাচজহিব ইসলাম আমিরী (৫২)
শীর্ষ গোলদাতাবালাল আরেজু (৯)
মাঠগাজী স্টেডিয়াম
ফিফা কোডAFG
ওয়েবসাইটaff.org.af
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
তৃতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৫৮ অপরিবর্তিত (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১]
সর্বোচ্চ১২২ (এপ্রিল ২০১৪)
সর্বনিম্ন২০৪ (জানুয়ারি ২০০৩)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৭৯ হ্রাস ৩ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২]
সর্বোচ্চ৮৩ (আগস্ট ১৯৪১)
সর্বনিম্ন২১০ (নভেম্বর ২০১০)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
 আফগানিস্তান ০–০ ইরান 
(কাবুল, আফগানিস্তান; ২৫ আগস্ট ১৯৪১)
বৃহত্তম জয়
 ভুটান ১–৮ আফগানিস্তান 
(নতুন দিল্লি, ভারত; ৭ ডিসেম্বর ২০১১)
বৃহত্তম পরাজয়
 তুর্কমেনিস্তান ১১–০ আফগানিস্তান 
(আশখাবাদ, তুর্কমেনিস্তান; ১৯ নভেম্বর ২০০৩)
এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ
অংশগ্রহণ৩ (২০০৬-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচতুর্থ স্থান (২০১৪)
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
অংশগ্রহণ৭ (২০০৩-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (২০১৩)

১২,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট গাজী স্টেডিয়ামে খুরাসানের সিংহ নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন আনুশ দস্তগির এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় ফারশাদ নুর।

আফগানিস্তান এপর্যন্ত একবারও ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপেও আফগানিস্তান এপর্যন্ত একবারও অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়নি। এছাড়াও, এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে আফগানিস্তান এপর্যন্ত ৩ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ২০১৪ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে চতুর্থ স্থান অর্জন করা, যেখানে তারা অতিরিক্ত সময় শেষে মালদ্বীপের সাথে ০–০ গোলে ড্র করার পর পেনাল্টি শুট-আউটে ৮–৭ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। অন্যদিকে, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আফগানিস্তান অন্যতম সফল দল, যেখানে তারা ১টি (২০১৩) শিরোপা জয়লাভ করেছে।[৩]

জহিব ইসলাম আমিরী, ফয়সাল শায়েস্তাহ, জালালুদ্দিন শারিতিয়ার, বালাল আরেজু এবং খৈবর আমানির মতো খেলোয়াড়গণ আফগানিস্তানের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাস

১৯২২ সালে আফগানিস্তান জাতীয় ফুটবল দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৪ সালে দেশের প্রথম ফুটবল ক্লাব মাহমুদিয়ার গঠিত হয়। ১৯৪১ সালের ২৫শে আগস্ট তারিখে কাবুলে প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলায় ইরানের সাথে খেলে ০–০ ড্র করে।[৪] ১৯৪৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে তারা তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে লুক্সেমবার্গ দলের বিরুদ্ধে; উক্ত খেলায় তারা ৬–০ ব্যবধানে পরাভূত হয়। অতঃপর ১৯৪৮ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় আফগান দল।[৫]

২০০২ সালের পূর্বে ১৯৮৪ সালের এশিয়ান গেমসের বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করেছিল। ১৯৮৪ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দলটি ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রবেশের জন্য কোন আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেনি। তাছাড়া, সোভিয়েত যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ ও তালিবান শাসনামলে ১৯৯৬–২০০১ সালের মধ্যে ফুটবলে অংশগ্রহণে তারা নিরুৎসাহিত ছিল। ২০০২ সালে পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে ফিরে আসে দলটি। এশিয়ান গেমসে তারা দক্ষিণ কোরিয়ার মোকাবিলা করে ও ২–০ ব্যবধানে পরাজিত হয়।[৬] এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাদের ক্রমাগত পুণরুত্থান ঘটতে থাকে।

সাফল্যগাঁথা

২০১৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দলটি সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল ২০১১ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অংশগ্রহণ করা। এতে দলটি ভারত জাতীয় ফুটবল দলের কাছে পরাজিত হয়েছিল। অতঃপর আফগানিস্তানের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের সর্বোচ্চ সাফল্য আসে ২০১৩ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর তারিখে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারতের বিপক্ষে নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলায় ২–০ ব্যবধানে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো ও নতুন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাধারী হয় দলটি। এর ফলে তারা নগদ ৫০,০০০ মার্কিন ডলার পুরস্কার পায়। দলের গোলরক্ষক মানসুর ফাকিরিয়ার উক্ত আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়লাভ করেন।

র‌্যাঙ্কিং

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে আফগানিস্তান তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (১২২তম) অর্জন করে এবং ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ২০৪তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৮৩তম (যা তারা ১৯৪১ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ২১০। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
১২ জানুয়ারি ২০২৪ অনুযায়ী বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং[২]
অবস্থানপরিবর্তনদলপয়েন্ট
১৭৮  সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জ১০৭৮
১৭৯  আফগানিস্তান১০৭৩
১৮০  জিব্রাল্টার১০৫৮
১৮০  বেলিজ১০৫৮

প্রতিযোগিতামূলক তথ্য

ফিফা বিশ্বকাপ

ফিফা বিশ্বকাপবাছাইপর্ব
সালপর্বঅবস্থানম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগোম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগো
১৯৩০অংশগ্রহণ করেনিঅংশগ্রহণ করেনি
১৯৩৪
১৯৩৮
১৯৫০
১৯৫৪
১৯৫৮
১৯৬২
১৯৬৬
১৯৭০
১৯৭৪
১৯৭৮
১৯৮২
১৯৮৬
১৯৯০
১৯৯৪
১৯৯৮
২০০২
২০০৬উত্তীর্ণ হয়নি১৩
২০১০
২০১৪
২০১৮২৪
২০২২অনির্ধারিতঅনির্ধারিত
মোট০/২১১৪১০১০৪৫

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ