ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি হলেন সেই ব্যক্তি যিনি ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিত্ব এবং পরিচালনা করেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বদরবারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান প্রতিনিধি।[১] এই সংস্থাটি ইইউ অধিভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের সরকার প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাজনৈতিকভাবে পথপ্রদর্শন করে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতীক
ইউরোপের পতাকা
দায়িত্ব
ডোনাল্ড টাস্ক

১ ডিসেম্বর ২০১৪ থেকে
ইউরোপীয় কাউন্সিল
সম্বোধনরীতিমিস্টার প্রেসিডেন্ট
অবস্থাPresiding and chief administrative officer
এর সদস্যEuropean Council (non-voting)
বাসভবনইউরোপা ভবন
আসনব্রাসেলস, বেলজিয়াম
নিয়োগকর্তাইউরোপীয় কাউন্সিল
by qualified majority
মেয়াদকাল২.৫ বছর, একবার নবায়নযোগ্য
গঠনের দলিলTreaties of the European Union
পূর্ববর্তীChairman of the European Council
গঠন১ ডিসেম্বর ২০০৯
প্রথমহেরম্যান ভন রম্পুই
ওয়েবসাইটconsilium.europa.eu

১৯৭৫ সাল হতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধানের পদটি ছিল একটি আলঙ্কারিক পদ। সেসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানরা অর্ধবার্ষিক আবর্তনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

পরবর্তীতে, ২০০৭ সালে লিসবন চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চুক্তির ১৫নং অনুচ্ছেদে একজন পূরনাঙ্গ সভাপতি নিয়োগের ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়। সভাপতির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় আড়াই বছর, যা একবার নবায়বযোগ্য। একজন সভাপতিকে তার পদ থেকে অপসারণের জন্য ইউরোপীয় কাউন্সিলে দ্বিগুন সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন প্রয়োজন হয়।

লিসবন চুক্তি অনুসারে ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর তারিখে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রথম সভাপতি হিসেবে ইউরোপীয় পিপলস পার্টির রাজনীতিবিদ হেরম্যান ভন রম্পুইকে নির্বাচিত করা হয়। ২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর লিসবন চুক্তি কার্যকর হবার পরে ভন রম্পুই সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১২ সালের ৩১ মে পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।[২] পরবর্তীতে তার সভাপতিত্বকাল দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিতীয় এবং বর্তমান সভাপতি হিসেবে সাবেক পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর হতে ২০১৭ সালের ৩১ মে পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[৩] ২০১৭ সালের ৯ মার্চ তারিখে তিনি সভাপতি হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন, যার সময়কাল ২০১৭ সালের ১ জুন হতে ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।[৪]

ইউরোপীয় কাউন্সিল ২০১৯ সালের ২ জুলাই তারিখে ডোনাল্ড টাস্কের উত্তরসূরি হিসেবে চার্লস মিচেলকে নির্বাচিত করে। তিনি ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর হতে ২০২২ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ইউরোপীয় কাউন্সিলের তৃতীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।[৫]

ইতিহাস

১৯৬১ সালে সর্বপ্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নের (পরবর্তীতে ইউরোপীয় কাউন্সিল) সকল সরকার প্রধানগণ একটি অনানুষ্ঠানিক সভায় মিলিত হন। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম অনুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং তখন ফরাসি রাষ্ট্রপতি ভ্যালেরি গিসকারড দেস্তাই একে ইউরোপীয় কাউন্সিল হিসেবে নামকরণ করেন। অতীতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের সভাপতিত্ব পদ্ধতির উপরে ভিত্তি করে ইউরোপীয় কাউন্সিলে সভাপতি নির্ধারণ করা হতো। সে সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ছয় মাস মেয়াদে আবর্তনের মাধ্যমে সভাপতির দায়িত্ব লাভ করতো। ইউরোপীয় কাউন্সিল মূলত এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে গঠিত, ফলে সভাপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বা সরকার প্রধান এই কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[৬][৭][৮]

স্থায়ী পদ

ইউরোপীয় কনভেনশন দ্বারা প্রণীত ইউরোপীয় সংবিধানে "ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি"কে পূর্ণকালীন ও দীর্ঘ মেয়াদে সভাপতিত্ব প্রদানের রূপরেখা গ্রহণ করা হয়েছিল।[৯] কিন্তু সংবিধানটি অনুমোদনের সময় দুটি সদস্য রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তবে পরবর্তীতে লিসবন চুক্তির সময় ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিত্বের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা হয় এবং ২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর হতে স্থায়ী সভাপতি প্পদ্ধতিটি কার্যকর করা হয়।

প্রাথমিক পর্যায়ে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতির কার্যবিধি কেমন হবে সে বিষয়ে কোন পরিষ্কার ধারণা ছিল না। প্রথম সভাপতি তার উত্তরসূরিদের কার্যবিধির পরিষ্কার রূপরেখা প্রদান করবেন বলে সকলের প্রত্যাশা ছিল।[১০] একটি ধারণা ছিল যে কাউন্সিলের সভাপতি হয়তো চুক্তিতে বর্ণিত প্রশাসনিক দায়িত্বেগুলো কঠোরভাবে পালন করবেন এবং কাউন্সিলের সভার সভাপতিত্ব করার পাশাপাশি এর কাঠামো ও নীতিমালার সুচারুভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করবেন। যার ফলে আধা-অবসরপ্রাপ্ত নেতারা তাদের পেশার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে আকর্ষিত হবে এবং সংস্থাগুলোকে ক্ষমতা প্রদান না করে বরং কমিশনের হাতে অধিকাংশ কাজ ছেড়ে দেওয়া হবে।[১১] তবে আরেকটি ধারণা ছিল যে কাউন্সিলের সভাপতি খুবই সক্রিয় হবেন এবং কাউন্সিলের বাইরেও এর বিষয়ে কথা বলবেন। তার অফিসটি খুব দ্রুতই ইউরোপের সভাপতির আসলে গঠন করা হবে। তাকে প্রায়শই বিশ্ব দরবারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য কথা বলতে দেখা যাবে, যা প্রথম ধারনার সম্পূর্ণ বিপরীত। এই পদে অসীন ব্যক্তিরা অনন্যসাধারণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন বলে প্রত্যাশা ছিল।[৯] ভন রম্পুইয়ের নিয়োগ প্রাক্তন সভাপতিত্ব পদ্ধতিটি পুনরায় দেখার একটি আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত করেছে।

লিসবন চুক্তিতে কাউন্সিলের সভাপতি নিয়োগের পদ্ধতি সংজ্ঞায়িত করা হয়নি; যার ফলে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রার্থীর নাম সভাপতি পদের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করা হয়। ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর লিসবন চুক্তি বিষয়ক সর্বশেষ ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভায় ফরাসি রাষ্ট্রপতি নিকোলা সার্কোজি একাধারে টনি ব্লেয়ার, ফিলিপ গঞ্জালেজ ও জিয়ান-ক্লাউড জাংকারের নাম উপস্থাপন করেন এবং তিনজনকেই যোগ্য প্রার্থী হিসেবে প্রশংসা করেন।[১২] যার ফলে কাউন্সিলের সাম্ভাব্য সভাপতি নিয়ে জল্পনা কল্পনার সুত্রপাত হয়। টনি ব্লেয়ার সভাপতিত্বের দৌড়ে দীর্ঘ সময় যাবত সামনের সাড়িতে ছিলেন। তবে, তিনি ছিলেন ইউরো অঞ্চল এবং শেহেনজেন অঞ্চলের বাইরের একটি বৃহত রাষ্ট্র থেকে আগত প্রার্থী। এছাড়াও ইউরোপকে বিভক্তকারী ইরাক যুদ্ধে প্রবেশকারী এক নেতা হওয়ার কারণে তিনি বড় আকারের বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। অন্যান্য নেতাদের মধ্যে জাংকার স্বল্পমাত্রায় বিরধিতার সম্মুখীন হন, যার ফলে তার প্রার্থিতাও বাতিল হয়ে যায়।

প্রথম পূর্ণকালীন সভাপতি

২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর তৎকালীন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী হেরম্যান ভন রম্পুইকে ইউরোপীইয় কাউন্সিলের প্রথম পূর্ণকালীন সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরে এই নিয়োগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।[১৩] ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের মতে ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর ব্রাসেলসে শীর্ষ সম্মেলনে ২৭ জন ইইউ নেতার তার প্রতি সমর্থন ছিল। ব্রাউন ভন রম্পুইয়ের প্রশংসা করেন এবং বলেন রম্পুই একজন ঐকমত্য প্রতিষ্ঠাকারী, যিনি কয়েক মাসের অনিশ্চয়তার পরে নিজের দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে সক্ষম হয়েছেন।[১৪]

দায়িত্ব গ্রহণের পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভন রম্পুই মন্তব্য করেনঃ আলাপ আলোচনা এবং দর কষাকষির ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই বিজয়ী হওয়া উচিত। কোন আলোচনার শেষে যদি একটি পক্ষ পরাজিত হয় তবে সেটিকে একটি ভালো আলোচনা হিসেবে উপস্থাপন করা যায় না। আমি প্রত্যেকের আগ্রহ এবং সংবেদনশীলতাকে বিবেচনায় রাখবো। আমাদের ঐক্যবদ্ধতাই আমাদের শক্তি, আমাদের বৈচিত্রতাই হলো আমাদের সম্পদ। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বতন্ত্রতার উপরে জোর দেন।[১৫]

ভ্যান রম্পুয়ের প্রথম কাউন্সিলের সভাটি ছিল একটি অনানুষ্ঠানিক সমাবেশ। পার্শ্ববর্তী জাস্টাস লিপ্সিয়াস ভবনে অনুষ্ঠানিক সমাবশের আয়োজন না করে বরং লিওপোল্ড পার্কের সল্ভে পাঠাগারে এই অনাড়ম্বর সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ইউরোপ দীর্ঘ মেয়াদে যেসকল কাঠামোগত অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সেসবের প্রতি আলোকপাত করতে সভাটির আয়োজন করা হয়েছিল। যদিও উক্ত সভায় গ্রীসের অর্থনৈতিক সংকটের বিষয়টি অধিক গুরুত্ব পায়।

দায়িত্ব এবং ক্ষমতা

২০০৯ সালের পূর্বে

২০০৯ সালের পূর্বে যে রাষ্ট্র ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিত্ব লাভ করতো, সেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতেন। সভাপতির পদটি আবর্তনের মাধ্যমে প্রতি ছয় মাস অন্তর পরিবর্তন করা হতো। যার ফলে প্রতি বছর দুইজন নতুন সভাপতি ইউরোপীয় কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করতেন। কার্যালয়ে সভাপতি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে ক্ষমতার তেমন কোন পার্থক্য ছিল না।

সেসময়ে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভা আহবান এবং তাতে সভাপতিত্ব করা ব্যতীত সভাপতি পদটির অন্য কোন নির্বাহী ক্ষমতা ছিল না। সেদিক থেকে সভাপতি পদটির ক্ষমতা মোটেও একজন রাষ্ট্রপ্রধানের পদের সমতুল্য ছিল না। তবে কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে একজন সভাপতি বহির্বিশ্বে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতিনিধিত্ব করতেন। এছাড়াও তৎকালীন সভাপতিরা প্রতিটি সম্মেলনের পরে এবং তাদের মেয়াদকালের শুরুতে ও শেষে ইউরোপীয় সংসদে প্রতিবেদন দাখিল করতেন।[১৬][১৭]

২০০৯ সালের পরবর্তী সময়ে

প্যারানাল মানমন্দিরে ভ্রমণকালে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি হেরম্যান ভন রম্পুই[১৮]

২০০৯ সালের পরবর্তী সময়ে বর্তমানে সভাপতির ভূমিকা মূলত রাজনৈতিক। এছাড়াও সভাপতির মূল দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বিভিন্ন কার্যসম্পাদন, সভা আয়োজন ও তাতে সভাপতিত্ব করা, কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং প্রতিটি সভার পরে ইউরোপীয় সংসদে প্রতিবেদন দাখিল করা। এছড়াও কাউন্সিলের সভাপতি তার পর্যায় ও সক্ষমতা অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কিত বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতিগুলো বাহ্যিকভাবে তুলে ধরবেন এবং এতে করে ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধিদের সাথে যেন কোন ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।[১৯] মূলত বৈদেশিক নীতির পাশাপাশি বেশ কিছু বিষয়ে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি ও উচ্চ প্রতিনিধিদের ভূমিকা প্রায় একই ধরনের। যার ফলে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি বাস্তবে কতটুকু প্রভাবশালী সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। কাউন্সিলের বিভিন্ন কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত লোকবল এবং সম্পদের অভাব রয়েছে। এছড়াও কোন মন্ত্রিসভা না থাকায় কাউন্সিলের সভাপতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের "খেলার পাত্র" হয়ে উঠতে পারেন বলে সংশয় রয়েছে।[২০]

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষস্থানীয় পদগুলোর দায়িত্ব ঠিক কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে অতীতে অস্পষ্টতা ছিল, যার ফলে বিভিন্ন সমালোচনার সূত্রপাত হয়। ফলে লিসবন চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষস্থানীয় পদগুলির পুনর্গঠন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে দায়িত্বরত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদুত আন্দ্রি ভেসেলোভস্কি বর্তমান গঠন কাঠামোর প্রশংসা করেন এবং ইউনিয়নের শীর্ষ পদগুলোর দায়িত্ব কেমন হবে সেটা পরিষ্কার করেন। তার মতেঃ ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের "সরকার" হিসেবে দায়িত্বপালন করেন; অপরদিকে, ইউরোপীয় কাউন্সিলে সভাপতি হলেন মূলত একজন "কৌশলবিদ"। উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ "দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক"কে বিশেষায়িত করেছেন, অপরদিকে ইউক্রেনের সাথে উন্মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির মতো বিভিন্ন প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে কাজ করা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্ধন এবং প্রতিবেশিনীতি সংক্রান্ত ইউরোপীয় কমিশনারের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সভাপতির দায়িত্ব হলো ইউনিয়নের মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখা।[২১]

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি ইউনিয়নের আর্থিক নীতিতেও তার প্রভাব বিস্তার করেছেন, যা ছিল আবর্তন পদ্ধতির সভাপতিদের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। যদিও আবর্তন পদ্ধতিতে নির্বাচিত সভাপতিদের ক্ষমতা পূর্বের পরিকল্পনার তুলনায় অধিক মাত্রায় হ্রাস করা হয়েছিল।[২২] বর্তমান দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরকে লিসবন চুক্তির মাধ্যমে প্রবর্তিত বিভিন্ন পরিবর্তনগুলো সংযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারিক বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০১০ সালের প্রথম আবর্তিত সভাপতি হওয়ার সময় স্পেনের রাষ্ট্রপতি ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতির মূখ্য পদটির বিরোধিতার একটি ব্যর্থ চেষ্টা করেন,[২৩] ঐ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দুর্বল তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পৃক্ত আবর্তনকারী বেলজিয়ান সভাপতি আরেক বেলজিয়ান রাজনীতিবিদ হেরম্যান ভন রম্পুইয়ের কোন বিরোধিতা করেননি। বেলজিয়ান আবর্তনকারী সভাপতি ঘোষণা করেন তারা একাধারে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি উভয় পদই গ্রহণ করবেন।[২৪] যার ফলে ইউরোপীয় কাউন্সিল এবং বৈদেশিকনীতি উভয়েরই আরো সম্মিলিত চরিত্র প্রকাশ পাবে বলে আশা করা যায়।

কার্যালয়ের বিশেষ ক্ষমতা

২০০৯ সালে ইউরপীয় ইউনিয়নের বাজেটের খসড়ার অংশ হিসাবে ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে স্থায়ী সভাপতির বেতন ও সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছিল। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় যে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতির ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতির অনুরূপ সুযগ-সুবিধা ভোগ করা উচিত এবং তার মূল বেতন হবে ইউরোপীয় বেসামরিক চাকুরীর সর্বোচ্চ গ্রেডের ১৩৮%। যার পরিমাণ প্রতি মাসে প্রায় ২৪,৮৭৪.৬২ ইউরো (পরিবারিক ও অন্যান্য ভাতা ব্যতীত)।[২৫][২৬][২৭]

সভাপতিকে দেওয়া হয় একজন ব্যক্তিগত চালকসহ একটি গাড়ি এবং ২০ জন নিবেদিত কর্মী। সভাপতির জন্য প্রতীকী সরকারি আবাসনের কোন ব্যবস্থা নেই, তবে তিনি আবাসন ভাতা পান। একইভাবে শুধুমাত্র প্রতীকী হওয়ায় সভাপতির জন্য ব্যক্তিগত বিমানের ধারনাটিও প্রত্যাখ্যাত হয়। একজন কূটনৈতিক মন্তব্য করেন যে, ইউরোপীয় কমিশন এবং কাউন্সিলের সভাপতিদের মধ্যে সুযগ-সুবিধার তারতম্য করা হলে তা তাদের দুজনের মধ্যে বৈরিতা রাড়িয়ে তুলতে পারে।[২৮]

ইউরোপিয় কমিশনের সভাপতির তুলনায় ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতির সুযোগ-সুবিধা বেশি হবার সম্ভবনা দেখা দিলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ২০০৯ সালের বাজেট প্রত্যাখ্যানের হুমকি দেয়। বেতন ভাতা সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিকে সেসময় কাউন্সিলের সভাপতি পদটিকে আরো শক্তিশালী করা প্রতীকী সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল, যা পার্লামেন্টের ব্যায় বহুলাংশে বৃদ্ধি করতো। কাউন্সিলের অভ্যন্তরীণ কেউ কেউ ৬০ জন কর্মী রাখার দাবী করেন। সেসময় সাংবিধান বিষয়ক কমিটি ইঙ্গিত প্রদান করে যে কাউন্সিল এবং পার্লামেন্ট পরস্পরের বাজেটে হস্তক্ষেপ করবে না এই সংক্রান্ত ভদ্রলোকের চুক্তি তুলে দিতে পারে।[২৯]

সভাপতির মন্ত্রিসভা

লিসবন চুক্তি অনুসারে ইউরোপীয় কাউন্সিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি পৃথক সংস্থা, তবে কাউন্সিলের নিজস্ব প্রশাসন নেই। ইউরোপীয় কাউন্সিল এবং তার সভাপতি উভয়ের জন্যই প্রশাসনিক সহযোগিতা প্রদান করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিলের সাধারণ সচিবালয়। যদিও কাউন্সিলের সভাপতির ঘনিষ্ট উপদেষ্টাদের নিয়ে একটি ব্যক্তিগত কার্যালয় (মন্ত্রিপরিষদ) রয়েছে। ভন রম্পুই তার প্রথম প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে ব্যারন ফ্রেন্স ভন দায়েলে'কে নিযুক্ত করেন। ব্যারন পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো'তে বেলজিয়ান দূত হিসেবে দায়িত্ব করেন। এছাড়াও তার বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা ছিল। ২০১২ সালের শরতে তার অবসর গ্রহণের পরে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেলজিয়ামের প্রাক্তন সহকারী কর্মকর্তা এবং বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী ভারহোফস্টাডেটের প্রাক্তন মুখপাত্র, দিদিয়ের সিউস ব্যারনের স্থলাভিষিক্ত হন। এছাড়াও ভন রম্পুইয়ের দলে ছিলেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির প্রাক্তন মন্ত্রী রিচার্ড কর্বেট এবং রম্পুইয়ের দীর্ঘকালীন প্রেস কর্মকর্তা ডির্ক ডি বেকার। ডোনাল্ড টাস্কের মন্ত্রিপরিষদের প্রধান হলেন পিওতর সেরাফিন।

গণতান্ত্রিক আজ্ঞা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর জাতীয় নেতাদের ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাংসদ অথবা জাতীয় সাংসদদের কাছে জবাবদিহিতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে তারা ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিকে কতটা সহায়তা করবেন সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।[২০] আবর্তন পদ্ধতিতে সভাপতি নির্ধারণের সময় সভাপতিরা শুধুমাত্র তাদের সদস্য দেশগুলোর ম্যান্ডেট পেতেন। তবে নতুন স্থায়ী সভাপতি নির্বাচন ব্যবস্থায় একজন সভাপতি ইউরোপীয় কাউন্সিলের সকল সদস্যের ভোটে নির্বাচিত হন। [৩০]

সরাসরি সভাপতি নির্বাচনের ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত প্রদান করা হয়। যেমন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বর্তমানে বুন্দেস্ট্যাগের প্রধান ভলগ্যাং শ্যুবল[৩১] সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতিকে ম্যান্ডেট প্রদানের ব্যাপারে মতপ্রকাশ করেন। যা ইউরোপীয় কাউন্সিলে পদটির ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শক্তিশালী নেতৃত্ব নিশ্চিত করবে। এছাড়াও এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গণতান্ত্রিক বৈধতা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। যদিও এটি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট অথবা কমিশনের সাম্ভব্য ম্যান্ডেটের সাথে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিকে ম্যান্ডেট দেওয়ার মাধ্যমে সংসদীয় পদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতিতে ইউনিয়ন পরিচালনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়।[৩০]

কমিশনের সাথে সম্পর্ক

লিসবন চুক্তির ভাষাগত অস্পষ্টতার কারণে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি ভন রম্পুই এবং ইউরোপীয় কমিশনের সাবেক সভাপতি ব্যারোসো'র মধ্যে প্রতিযোগিতা নিয়ে মতবিরোধ ও উদ্বেগ সৃষ্টি ছিল। কিছু ক্ষেত্রে ভন রম্পুইকে একজন কৌশল্বিদ এবং ব্যারোসোকে সরকার প্রধান হিসেবে বর্ণনা করা হয়। আর্থিক নীতির ক্ষেত্রে ভন রম্পুই ইউরোপীয় কাউন্সিলে সামগ্রিক কৌশল নিয়ে কাজ করেন এবং কমিশন উক্ত কৌশলগুলো বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে। নিয়মিত সাপ্তাহিক সাক্ষাৎ হওয়া সত্ত্বেও কাউন্সিল এবং কমিশনের দুটি সরবোচ্চ পদের কার্যবিধি সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত না থাকার ফলে সভাপতিদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিদ্যমান ছিল।[২১][৩২][৩৩]

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি সাধারণত একইসাথে কোন সদপ্য রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর মতো জাতীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন না; তবে কোন সভাপতি একইসাথে উভয় পদে দায়িত্বপালন করলে সে বিষয়ে কোন বিশি নিষেধ নেই। একজন ব্যক্তি ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করার পাশাপাশি একাধারে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য অথবা ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এটি ইউরোপীয় কাউন্সিলকে একই সাথে কাউন্সিলের সভাপতি এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উভয় ভূমিকায় একজন ব্যক্তিকে নিযুক্ত করার ক্ষমতা দেয়, ফলে ইউনিয়নের জন্য সামগ্রিকভাবে একক সভাপতি ধারণার সৃষ্টি করে।[৯]

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি পদটি সৃষ্টি হবার পরে কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি ভন রম্পুই এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রাক্তন সভাপতি ব্যারোসো পরস্পরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হন। সেসময় কমিশনের সাধারণ ক্ষমতাগুলো কাউন্সিলের দিকে ঝুকে পড়ায় রম্পুই কিছুটা লাভবান হন, যদিও কমিশনের সভাপতি ব্যারোসো'ই মূল ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। পূর্বের মতো সেসময়েও আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে তারা উভযয়েই একই সময়ে যাওয়ার অনুশীলন চালিয়ে যেতে থাকেন। ২০১৪ সালে ব্যারোসো'র অবসর গ্রহণের পরবর্তী সময়ে শীর্ষ পদ দুটিকে একত্রিত করার মাধ্যমে এই জটিল সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কিছু মতামত গৃহীত হয়। অপরদিকে কিছু সদস্য রাষ্ট্র এই ধরনের উচ্চ পর্যায়ের পদ সৃষ্টির বিরোধিতা করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।[৩৩]

অনেকে মনে করেন যে ইউরোপীয় কাউন্সিল এবং কমিশনের সভাপতির পদদুটিকে সংযুক্ত করা না হলে তা ভবিষ্যতে এই দুইটি কার্যালয়ের মধ্যে সহাবস্থান ও লড়াইয়ের সূত্রপাত করতে পারে। এই পদ্ধতিকে অনেকটা ফরাসি রাজনৈতিক মডেলের সাথে তুলনীয়, যেখানে রাষ্ট্রপতি (ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি) এবং প্রধানমন্ত্রী (ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি)। কাউন্সিলের সভাপতির হাতে কোন কার্মিক ক্ষমতা থাকে না; যেমনঃ কমিশনের সভাপতিকে সরাসরি নিয়োগ বা পদচ্যুত করা অথবা পারলামেন্টকে ভেঙ্গে দেবার মতো ক্ষমতা কাউন্সিলের সভাপতির নেই। সুতরাং বলা যেতে পারে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতির পদটি মর্যাদাবান তবে ক্ষমতা সীমিত; অপরদিকে, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতির পদটির ক্ষমতা বেশি হলেও মর্যাদা কাউন্সিলের সভাপতির তুলনায় কম।[৩৪] অনেকে মনে করেন যে, কাউন্সিলের সভাপতি যদি ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট দ্বারা আরো শক্তিশালি হন তাহলে সমস্যা আরো ঘনীভূত হবে।[৩০]

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিদের তালিকা

আবর্তনশীল সভাপতি

সালসময়কালপদাসীনইউরোপীয় দলState
১৯৭৫জানুয়ারি-জুনলিয়াম কোসগ্রেভইউরোপীয় পিপলস পার্টি  আয়ারল্যান্ড
জুলাই-ডিসেম্বরআলদো মোরোইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ইতালি
১৯৭৬জানুয়ারি-জুনGaston Thornলিবারেল এন্ড ডেমোক্র্যাটিক গ্রুপ  লুক্সেমবুর্গ
জুলাই-ডিসেম্বরJoop den Uylইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  নেদারল্যান্ড
১৯৭৭জানুয়ারি-জুনজেমস ক্যালাহানইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  যুক্তরাজ্য
জুলাই-ডিসেম্বরLeo Tindemansইউরোপীয় পিপলস পার্টি  বেলজিয়াম
১৯৭৮জানুয়ারি-জুনAnker Jørgensenইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ডেনমার্ক
জুলাই-ডিসেম্বরHelmut Schmidtইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  পশ্চিম জার্মানি
১৯৭৯জানুয়ারি-জুনValéry Giscard d'Estaingইউরোপীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এন্ড রিফর্ম পার্টি  ফ্রান্স
জুলাই-ডিসেম্বরজ্যাক লিঞ্চইউরোপীয় প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটস  আয়ারল্যান্ড
ডিসেম্বরCharles Haugheyইউরোপীয় প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্রাটস
১৯৮০জানুয়ারি-জুনFrancesco Cossigaইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ইতালি
জুলাই-ডিসেম্বরপিয়েরে ওয়ের্নারইউরোপীয় পিপলস পার্টি  লুক্সেমবুর্গ
১৯৮১জানুয়ারি-জুনDries van Agtইউরোপীয় পিপলস পার্টি  নেদারল্যান্ড
জুলাই-ডিসেম্বরমার্গারেট থ্যাচারস্বতন্ত্র  যুক্তরাজ্য
১৯৮২জানুয়ারি-জুনWilfried Martensইউরোপীয় পিপলস পার্টি  বেলজিয়াম
জুলাই-সেপ্টেম্বরAnker Jørgensenইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ডেনমার্ক
সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বরPoul Schlüterইউরোপীয় পিপলস পার্টি
১৯৮৩জানুয়ারি-জুনহেলমুট কোলইউরোপীয় পিপলস পার্টি  পশ্চিম জার্মানি
জুলাই-ডিসেম্বরAndreas Papandreouইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  গ্রীস
১৯৮৪জানুয়ারি-জুনফ্রঁসোয়া মিতেরঁইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ফ্রান্স
জুলাই-ডিসেম্বরGarret FitzGeraldইউরোপীয় পিপলস পার্টি  আয়ারল্যান্ড
১৯৮৫জানুয়ারি-জুনBettino Craxiইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ইতালি
জুলাই-ডিসেম্বরJacques Santerইউরোপীয় পিপলস পার্টি  লুক্সেমবুর্গ
১৯৮৬জানুয়ারি-জুনRuud Lubbersইউরোপীয় পিপলস পার্টি  নেদারল্যান্ড
জুলাই-ডিসেম্বরমার্গারেট থ্যাচারস্বতন্ত্র  যুক্তরাজ্য
১৯৮৭জানুয়ারি-জুনWilfried Martensইউরোপীয় পিপলস পার্টি  বেলজিয়াম
জুলাই-ডিসেম্বরPoul Schlüterইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ডেনমার্ক
১৯৮৮জানুয়ারি-জুনহেলমুট কোলইউরোপীয় পিপলস পার্টি  পশ্চিম জার্মানি
জুলাই-ডিসেম্বরAndreas Papandreouইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  গ্রীস
১৯৮৯জানুয়ারি-জুনFelipe Gonzálezইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  স্পেন
জুলাই-ডিসেম্বরফ্রঁসোয়া মিতেরঁইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ফ্রান্স
১৯৯০জানুয়ারি-জুনCharles Haugheyইউরোপীয়ান ডেমোক্র্যাটিক এলায়েন্স  আয়ারল্যান্ড
জুলাই-ডিসেম্বরGiulio Andreottiইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ইতালি
১৯৯১জানুয়ারি-জুনJacques Santerইউরোপীয় পিপলস পার্টি  লুক্সেমবুর্গ
জুলাই-ডিসেম্বরRuud Lubbersইউরোপীয় পিপলস পার্টি  নেদারল্যান্ড
১৯৯২জানুয়ারি-জুনAníbal Cavaco Silvaইউরোপীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এন্ড রিফর্ম পার্টি  পর্তুগাল
জুলাই-ডিসেম্বরজন মেজরস্বতন্ত্র  যুক্তরাজ্য
১৯৯৩জানুয়ারিPoul Schlüterইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ডেনমার্ক
জানুয়ারি-জুনPoul Nyrup Rasmussenইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল
জুলাই-ডিসেম্বরJean-Luc Dehaeneইউরোপীয় পিপলস পার্টি  বেলজিয়াম
১৯৯৪জানুয়ারি-জুনAndreas Papandreouইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  গ্রীস
জুলাই-ডিসেম্বরহেলমুট কোলইউরোপীয় পিপলস পার্টি  জার্মানি
১৯৯৫জানুয়ারি-মেফ্রঁসোয়া মিতেরঁইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ফ্রান্স
মে-জুনজাক শিরাকস্বতন্ত্র
জুলাই-ডিসেম্বরFelipe Gonzálezইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  স্পেন
১৯৯৬জানুয়ারি-মেলামবের্তো দিনিইউরোপীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এন্ড রিফর্ম পার্টি  ইতালি
মে-জুনরোমানো প্রদিইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল
জুলাই-ডিসেম্বরজন ব্রুটনইউরোপীয় পিপলস পার্টি  আয়ারল্যান্ড
১৯৯৭জানুয়ারি-জুনউইম ককইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  নেদারল্যান্ড
জুলাই-ডিসেম্বরJean-Claude Junckerইউরোপীয় পিপলস পার্টি  লুক্সেমবুর্গ
১৯৯৮জানুয়ারি-জুনটনি ব্লেয়ারইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  যুক্তরাজ্য
জুলাই-ডিসেম্বরভিক্টর ক্লিমাইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  অস্ট্রিয়া
১৯৯৯জানুয়ারি-জুনগেরহার্ড শ্রোয়েডারইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  জার্মানি
জুলাই-ডিসেম্বরPaavo Lipponenইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  ফিনল্যান্ড
২০০০জানুয়ারি-জুনআন্তোনিও গুতেরেসইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  পর্তুগাল
জুলাই-ডিসেম্বরজাক শিরাকইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ফ্রান্স
২০০১জানুয়ারি-জুনজোরান পের্শোনইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  সুইডেন
জুলাই-ডিসেম্বরGuy Verhofstadtইউরোপীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এন্ড রিফর্ম পার্টি  বেলজিয়াম
২০০২জানুয়ারি-জুনJosé María Aznarইউরোপীয় পিপলস পার্টি  স্পেন
জুলাই-ডিসেম্বরAnders Fogh Rasmussenইউরোপীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এন্ড রিফর্ম পার্টি  ডেনমার্ক
২০০৩জানুয়ারি-জুনCostas Simitisইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  গ্রীস
জুলাই-ডিসেম্বরসিলভিও বেরলুসকোনিইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ইতালি
২০০৪জানুয়ারি-জুনBertie Ahernইউনিয়ন ফর ইউরোপ অব দ্যা নেশনস  আয়ারল্যান্ড
জুলাই-ডিসেম্বরJan Peter Balkenendeইউরোপীয় পিপলস পার্টি  নেদারল্যান্ড
২০০৫জানুয়ারি-জুনJean-Claude Junckerইউরোপীয় পিপলস পার্টি  লুক্সেমবুর্গ
জুলাই-ডিসেম্বরটনি ব্লেয়ারইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  যুক্তরাজ্য
২০০৬জানুয়ারি-জুনWolfgang Schüsselইউরোপীয় পিপলস পার্টি  অস্ট্রিয়া
জুলাই-ডিসেম্বরMatti Vanhanenইউরোপীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এন্ড রিফর্ম পার্টি  ফিনল্যান্ড
২০০৭জানুয়ারি-জুনআঙ্গেলা মের্কেলইউরোপীয় পিপলস পার্টি  জার্মানি
জুলাই-ডিসেম্বরJosé Sócratesইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দল  পর্তুগাল
২০০৮জানুয়ারি-জুনJanez Janšaইউরোপীয় পিপলস পার্টি  স্লোভেনিয়া
জুলাই-ডিসেম্বরনিকোলা সার্কোজিইউরোপীয় পিপলস পার্টি  ফ্রান্স
২০০৯ঞ্জানুয়ারি-মেMirek Topolánekএলায়েন্স অব ইউরোপীয়ান কন্সারভেটিভস এন্ড রিফরমিস্টস  চেক প্রজাতন্ত্র
মে-জুনJan Fischerস্বতন্ত্র
ঞ্জুলাই-নভেম্বরফ্রেদ্রিক রাইনফেল্‌ৎইউরোপীয় পিপলস পার্টি  সুইডেন

স্থায়ী সভাপতি

ছবিনাম
(জন্ম-মৃত্যু)
দেশঅফিসে সময়কালইউরোপীয় রাজনৈতিক দলজাতীয় রাজনৈতিক দল
হেরম্যান ভন রম্পুই
(জন্ম ১৯৪৭)
 বেলজিয়াম১ ডিসেম্বর ২০০৯৩০ নভেম্বর ২০১৪[৩৫]

ইউরোপীয় পিপলস পার্টিCD&V
হেরম্যান ভন রম্পুই ২০০৮ হতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইউরোপীয় কাউন্সিলে প্রথম স্থায়ী সভাপতি।রম্পুই ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক প্রশাসনকে সংশোধন, এবং ইউরোপীয় স্থিতিশীলতা ব্যবস্থার (ইএসএম) চুক্তির খসড়া সংশোধনের বিষয়ে একটি টাস্কফোর্স পরিচালনা করেন। তিনি বৃহত্তর অর্থনৈতিক একীকরণের সমর্থক ছিলেন, কিন্তু ইইউতে তুরস্কের যোগদানের বিরোধী ছিলেন।
ডোনাল্ড টাস্ক
(জন্ম ১৯৫৭)
 পোল্যান্ড১ ডিসেম্বর ২০১৪[৩৬]দ্বিতীয় মেয়াদে ২.৫ বছরের সময়কাল শেষ হয়
৩০ নভে
ম্বর ২০১৯
ইউরোপীয় পিপলস পার্টিসিভিক প্ল্যাটফর্ম
২০০৭ হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৃতীয় প্রজাতান্ত্রিক পোল্যান্ডে সর্বাধিক সময়ব্যাপী দায়িত্ব পালনকারী সরকার প্রধান। টাস্কের রাজনৈতিক দল সিভিক প্লাটফর্ম ২০১১ সালের সংসদীয় নির্বাচনে জয় লাভ করে। ফলে তিনিই প্রথম পোলিশ প্রধানমন্ত্রী যিনি সাম্যবাদের পতনের পরে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নিরবাচিত হন।
চার্লস মিচেল
(জন্ম ১৯৭৫)
 বেলজিয়াম১ ডিসেম্বর ২০১৯৩১ মে ২০২২এলায়েন্স অব লিবারেলস এন্ড ডেমোক্র্যাটস ফর ইউরোপ পার্টিএমআর
২০১৪ সাল হতে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ