ইন্টেল কর্পোরেশন

ইন্টেল কর্পোরেশন একটি আমেরিকান বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি এবং আয়ের উপর নির্ভর করে এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেমিকন্ডাক্টর চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান[২]। এটি মাইক্রোপ্রসেসরের এক্স৮৬ সিরিজের আবিষ্কারক, প্রসেসরটি বেশিরভাগ পারসোনাল বা ব্যক্তিগত কম্পিউটারে দেখা যায়। ইন্টেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জুলাই ১৮, ১৯৬৮ সালে ইন্টিগ্রেটেড ইলেক্ট্রনিক্স কর্পোরেশন (কেউ কেউ ইন্টিগ্রেটেডকে ইন্টিলিজেন্স মনে করে থাকে) হিসেবে। ইন্টেল কম্পিউটার প্রসেসর তৈরির পাশাপাশি আরো তৈরী করে মাদারবোর্ড চিপসেট, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কন্ট্রোলার, ইন্ট্রিগ্রেটেড সার্কিট, ফ্ল্যাস মেমোরি, গ্রাফিক্স কার্ড, সংযুক্ত প্রসেসর এবং অন্যান্য আরো অনেক কিছু যা কম্পিউটার এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়। এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন সেমিকন্ডাক্টরের অগ্রগামী রবার্ট নয়েস এবং গর্ডন মুর এবং এন্ড্রু গুভ। ইন্টেল আধুনিক প্রযুক্তি চিপ নকশা এবং উৎপাদন করায় সমর্থ। যদিও শুরুতে ইন্টেল শুধু মাত্র ইন্জিনিয়ার এবং প্রযুক্তিবিদদের কাছে পরিচিত ছিল, কিন্তু ১৯৯০ দশকের বিজ্ঞাপন "ইন্টেল ইনসাইড" এটাকে এবং এটার "পেন্টিয়াম" প্রসেসরকে ঘরে ঘরে পরিচিত করে তোলে।

ইন্টেল করপোরেশন
প্রাক্তন নামএন এম ইলেকট্রনিকস (১৯৬৮)
ধরনপাবলিক
আইএসআইএনUS4581401001
শিল্পসেমিকন্ডাক্টর
প্রতিষ্ঠাকাল১৮ জুলাই ১৯৬৮; ৫৫ বছর আগে (1968-07-18)
প্রতিষ্ঠাতাগণগরডন ম্যুর
রবার্ট নয়স
সদরদপ্তরসান্টা ক্লারা, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
বাণিজ্য অঞ্চল
বিশ্বব্যাপী
প্রধান ব্যক্তি
গরডন ম্যুর
(ইমিরেটাস চেয়ারম্যান)
ওমর ইশরাক
(চেয়ারম্যান)
রবার্ট এইচ. সোয়ান
(অস্থায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা)
পণ্যসমূহসেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট
মাইক্রোপ্রসেসর
ইন্টিগ্রেটেড জিপিইউ
সিস্টেম অন চিপ
মাদারবোর্ড চিপসেট
নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কন্ট্রোলার
মডেম
মুঠোফোন
সোলিড স্টেট ড্রাইভ
ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ চিপসেট
ফ্ল্যাশ মেমরি
যানবাহন স্বয়ংক্রিয়করণ সেন্সর
আয়বৃদ্ধি US$৭,১৯০ কোটি (২০১৯)[১]
সুদ ও করপূর্ব আয়
বৃদ্ধি US$২,২০০ কোটি (২০১৯)[১]
নীট আয়
বৃদ্ধি US$২,১০০ কোটি (২০১৯)[১]
মোট সম্পদবৃদ্ধি US$১৩,৬৫০ কোটি (২০১৯)[১]
মোট ইকুইটিবৃদ্ধি US$৭,৭৫০ কোটি (২০১৯)[১]
কর্মীসংখ্যা
১,১০,৮০০ (২০২০)[১]
ওয়েবসাইটwww.intel.com

ইন্টেল ছিল প্রথমদিকের স্ট্যাটিক র‍্যাম এবং ডায়নামিক র‍্যামের স্মৃতির উন্নয়নকারী এবং এটাই তাদের ব্যবসাকে ১৯৮১ সাল পযর্ন্ত পরিচিতির মাধ্যম ছিল। যখন ইন্টেল প্রথম বাণিজ্যিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ বানায় ১৯৭১ সালে, এটা তাদের প্রধান ব্যবসায় তখনও পরিনত হয়নি কারণ তখনও পারসোনাল বা ব্যক্তিগত কম্পিউটার জনপ্রিয় হয়নি। ইন্টেল ১৯৯০ দশকে, নতুন মাইক্রোপ্রসেসরের উপর ব্যাপক বিনিয়োগ করে কম্পিউটার শিল্পের চাহিদা পূরণ এবং উৎসাহদানের লক্ষ্যে। এই সময়েই ইন্টেল মাইক্রোপ্রসেসরের চিপের প্রভাবশালী সরবরাহকারী হিসেবে এবং জানা যায় আক্রমণাত্মক এবং কোন কোন সময় বেআইনি কৌশল গ্রহণকারী হিসেবে এটার বাজার ধরে রাখার জন্য। বিশেষভাবে, এএমডি এবং মাইক্রোসফটের সাথে প্রতিযোগিতা হয় পিসি শিল্প করায়ত্ত করতে[৩][৪]। ২০১০ সালের মিলওয়ার্ড ব্রাউন অপটিমর রেংকিংয়ে বিশ্বের ১০০ শক্তিশালী ব্র্যান্ড এর মধ্যে এর অবস্থান ছিল ৪৮তম[৫]

ইন্টেল ইলেক্ট্রিকাল ট্রান্সমিশন এবং প্রজন্মে গবেষণা শুরু করেছে[৬][৭]। ইন্টেল সম্প্রতি ৩ মাত্রার ট্রানজিস্টরের নমুনা দেখিয়েছে, যেটা কার্যক্ষমতা এবং শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করবে[৮] ইন্টেল তাদের ২২ ন্যানোমিটার প্রযুক্তির প্রসেসরে ব্যাপকভাবে ত্রিমাত্রিক ট্রানজিস্টর ব্যবহার করবে, যা ট্রাই গেট ট্রানজিস্টর নামে পরিচিত।[৯]

কর্পোরেট ইতিহাস

উৎপত্তি

ইন্টেলের মূল ভবন, সান্টা ক্লারা, ক্যালিফোর্নিয়া, আমেরিকা

ইন্টেল স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালে মাউন্টেন ভিউ, ক্যালিফোর্নিয়ায়। গর্ডণ ই. মুর (একজন রসায়নবিদ এবং পদার্থবিদ) এবং রবার্ট নয়েস (পদার্থবিদ এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের সহকারী উদ্ভাবক) যখন "ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর" ছেড়ে যান তখন তারা এটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর এর তৃতীয় চাকুরীজিবী ছিল এ্যন্ডি গ্রুভ[১০], একজন রাসায়নিক কারিগর যিনি এই কোম্পানিকে পরিচালনা করেন ১৯৮০ এর দশকের বেশিরভাগ এবং ১৯৯০ এর দশকের সময় যখন ইন্টেল উন্নতিলাভ করেছিল।প্রথমদিকে মুর এবং নয়েচ চেয়েছিলেন কোম্পানির নাম রাখা হবে "মুর নয়েচ"[১১]| কিন্তু এটি শুনতে প্রায় "মোর নয়েজ" এর মত শোনায় এবং ইলেক্ট্রনিক পণ্যের নামের সাথে মিলে না বিধায় এটি বাধ দেয়া হয়। এরপর প্রায় একবছর যাবৎ এনএম ইলেক্ট্রনিকস নামটি ব্যবহার করা হয় ইন্টেল নামটি দেয়ার আগে। এটি এসেছে ইন্টিগ্রেটেড ইলেক্ট্রনিকস থেকে সংক্ষেপে "ইন্টেল"[১২]। তখন ইন্টেল নামটি একটি হোটেল চেইনের জন্য ট্রেডমার্ক ছিল এতেকরে ইন্টেলকে তাদের নামের অধিকার ক্রয় করতে হয়[১৩]

প্রথমদিকের ইতিহাস

প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই, ইন্টেল তাদের আলাদা করতে সক্ষম হয় তাদের সেমিকন্ডাক্টর তৈরীর ক্ষমতা দিয়ে। এদের প্রাথমিক পণ্য ছিল স্ট্যাটিক র‍্যানডম একসেস মেমোরি চিপ। ১৯৭০ দশকে ইন্টেলের ব্যবসা বেড়ে যায় যখন তারা তাদের উৎপাদন এবং প্রসারন করতে সক্ষম হয়। তারা আরো বেশি করে নানা পণ্য তৈরী করতে শুরু করে, এখনও তারা বিভিন্ন মেমোরি যন্ত্রাংশে রাজত্ব করছে। ১৯৭১ সালে যখন ইন্টেল তাদের প্রথম বাণিজ্যিক প্রসেসর তৈরী করে এবং প্রথমদিকের মাইক্রোকম্পিউটারগুলোর একটি তৈরী করে ১৯৭২ সালে কিন্তু তখনও ১৯৮০ দশকের শুরুর দিকে এটি শুধু ডাইনামিক র‍্যানডম একসেস মেমোরি চিপ বানাত। ১৯৮৩ সালের দিকে জাপানি উৎপাদকরা সেমিকন্ডাক্টর তৈরী করতে শুরু করে এতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়। এতে করে ইন্টেলের আয় কমতে থাকে এবং তখনকার পারসোনাল কম্পিউটারে (আইবিএম পারসোনাল কম্পিউটার) সাফল্যে সিইও গ্রুভ কোম্পানির দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন মাইক্রোপ্রসেসরে। তাদের ব্যবসায়িক মৌলিক দিকও পরিবর্তন করেন।

১৯৮০ দশকের শেষের দিকে তার এই সিদ্ধান্ত সফল প্রমাণিত হয়। মাইক্রোপ্রসেসর সরবরাহকারী হিসেবে তাদের প্রতিষ্ঠান তখন সৌভাগ্যের অধিকারী হয় পারসোনাল কম্পিউটার বাজারে এবং ১০ বছর জুড়ে পিসি শিল্পে তারা নজিরবিহিন আয় এবং হার্ডওয়্যার সরবরাহ করে। ১৯৯১ সালে তাদের শুরু করা "ইন্টেল ইনসাইড" বাজারজাতকরন প্রোগ্রাম তাদের ভোক্তাদের বিশ্বস্ত এবং সংযুক্ত করে সাফল্য ত্বরান্বিত করে। এতে করে তাদের তৈরী করা পেন্টিয়াম প্রসেসর ঘরে ঘরে পৌছায়।

ইন্টেলের পুরনো বছরগুলোর কার্যক্রম একটি ডকুমেন্টারী ফিল্মে দেখা যাবে নাম "সামথিং ভেনচারড"।

চাহিদা কমে যাওয়া এবং আধিপত্য বিস্তারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা

২০০০ সালের পর, প্রসেসরের চাহিদা হ্রাস পায়। প্রতিযোগিরা, বিশেষ করে এএমডি শেয়ার বাজারের বড় অংশ অধিগ্রহণ করে। শুরুতে কম ক্ষমতার এবং মধ্যম ক্ষমতার প্রসেসর এবং ধীরে ধীরে পুরো পণ্যের বাজার এবং মূল বাজারে ইন্টেলের অবস্থান আশঙ্কাজনকহারে কমে যায়।[১৪] ২০০০ দশকের প্রথমদিকে,শুধু সেমিকন্ডাক্টরে নজর না দিয়ে কোম্পানীর সিইও ক্রেইগ ব্যারেট চেষ্টা করেছিলেন কোম্পানীর ব্যবসাকে বিস্তৃত করতে। কিন্তু এইসব প্রচেষ্টার কিছু মাত্র সাফল্য এনেছিল।

১৯৮৪ সালে যখন, ইন্টেল এবং সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন সেমিকন্ডাক্টর চিপ প্রোটেকশন এক্ট তৈরী করার উদ্যোগ নেয়।[১৫] তার আগ পযর্ন্ত ইন্টেল কিছু বছর মামলায় জড়িত ছিল। কারণ আমেরিকার আইন, ইন্টেলের মাইক্রোপ্রসেসরের নকশার ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইট প্রথমাবস্থয় চিহ্নিত করতে পারেনি। ১৯৮০ দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৯০ দশকের প্রথমদিকে আইনটি পাশ হয়। তখন ইন্টেল অভিযুক্ত করে সেইসব কোম্পানিদের যারা ৮০৩৮৬ সিপিইউ[১৬] চিপের প্রতিযোগী তৈরী করতে চেয়েছিল। যদিও তারা মামলাটি হেরে যায়।[১৬]

২০০৫ সালে, সিইও পল ওটেলিনি কোম্পানীকে পুনরায় সাজায় এবং কোম্পানীর নজর কোর প্রসেসর এবং চিপসেট (বিভিন্ন প্লাটফর্মে) ব্যবসায় নিবদ্ধ করে। যেটার কারণে তাদের ২০,০০০ নতুর কর্মীর নিয়োগ দিতে হয়। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে আয় কমে যায় ইন্টেলের এবং তারা নতুনভাবে কোম্পানি গঠন করে। ফলে ২০০৬ সালের জুলাইতে ১০,৫০০ অথবা মোট কর্মীদের ১০% কর্মী সাময়িক ছাটাই করা হয়।

পুনরুত্থান

বাজারে নিজস্ব অবস্থান হারিয়ে ইন্টেল তার পুরনো শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে নতুন পণ্যের মডেল উন্নয়ন করা শুরু করে।[১৭] যেটা "টিক-টক মডেল" হিসেবে জানা যায়, এই উদ্যোগটি বার্ষিক নতুন মাইক্রোআর্কিটেকচার প্রবর্তন এবং প্রক্রিয়া প্রবর্তন উপর ভিত্তি করে করা হয়।

২০০৬ সালে, ইন্টেল পি৬ এবং নেটব্রাষ্ট পণ্য উৎপাদন করে যার সাইজ ছিল ৬৫ এনএম(ন্যানোমিটার) । এক বছর পরে এটা কোর মাইক্রোআর্কিটেকচার উন্মোচন করে বিস্তৃতভাবে।[১৮] এটা প্রসেসরের কার্যক্ষমতা এত বাড়িয়ে দেয় যে ইন্টেল তার শীর্ষ স্থান দখল অভিযানে এগিয়ে আসতে সক্ষম হয়।[১৯][২০] ২০০৮ সালে, ইন্টেল আরেকটি পেনরিন মাইক্রোআর্কিটেকচার বাজারে আনে, যেটাতে ৬৫ ন্যানোমিটার এর জায়গায় ৪৫ ন্যানোমিটার ব্যবহার করা হয়। এবং তার পরের বছরই তারা বাজারে ছাড়ে নিহালেম আর্কিটেকচার যাতে সিলিকনের আকার করা হয় ৩২ ন্যানোমিটার প্রক্রিয়ায়। এটি বাজারে সফলতার সাথে প্রবেশ করে এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ইন্টেলই প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর কর্পোরেশন নয় যারা এটা প্রথম করছে। উদাহরণসরূপ ১৯৯৬ সালের দিকে গ্রাফিক্স চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়াকেও একই সমস্যায় পড়তে হয়।

এক্সমাপের প্রসেসর বিক্রয় ব্যবসা

২০০৬ সালের জুনের ২৭ তারিখে ইন্টেলের এক্সস্কেল সম্পদ বিক্রয় ঘোষণা করা হয়। ইন্টেল এক্সস্কেল প্রসেসর ব্যবসা মারভেল টেকনোলজি গ্রুপের কাছে বিক্রয় করতে সম্মত হয় প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারে। এর কারণ ইন্টেলের এক্স৮৬ কোর এবং সার্ভার ব্যবসায়ে নিয়োজিত হওয়া এবং এর কাজ শেষ হয় ২০০৬ সালের ৯ই নভেম্বরে।[২১]

অর্জন

২০১০ সালের অগাষ্ট মাসে, ইন্টেল ঘোষণা করে দুটো প্রধান অর্ন্তভুক্তিকরণ। ১৯শে অগাষ্ট, ইন্টেল ঘোষণা করে তার ম্যাকআফি (একটি কম্পিউটার সিকিউরিটি টেকনোলজি কোম্পানি) কেনার পরিকল্পনা করছে। তারা প্রায় ৭·৬৮ বিলিয়ন ডলারে কেনার পরিকল্পনা করে এবং তারা ঘোষণা করে যদি চুক্তিটি সম্পাদিত হয় তবে নতুন পণ্য বের করা হবে ২০১১ সালের আগে।[২২]

এই ঘোষণার দুই সপ্তাহ হওয়ার আগেই, কোম্পানী ঘোষণা করে ইনফাইনিওন টেকনোলজি(একটি তারবিহীন পণ্যের ব্যবসা) কিনে নেয়ার কথা।[২৩] তারা ইনফাইনিওনের পণ্য ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, নেটবুক, টেবল্যাট এবং কম্পিউটার পণ্যে ব্যবহার এবং একই সাথে ইন্টেলের সিলিকন চিপে ওয়্যারলেস মডেম সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেয়।[২৪] ইন্টেল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন রেগুলেটরি'র কাছ থেকে ম্যাকআফি কেনার অণুমতি পায় ২০১১ সালের ২৬শে জানুয়ারি। ইন্টেল তাদের পণ্যের সমস্ত দরকারি তথ্য নিরাপত্তা ফার্মটিকে প্রয়োজনমত দিতে সম্মত হয় যেটা নিরাপত্তা ফার্মটি ইন্টেলের চিপ এবং পারসোনাল কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারবে।[২৫]

এতে করে ইন্টেলের কর্মীর সংখ্যা দাড়ায় প্রায় ৯০,০০০ যাতে ১২,০০০ সফটওয়্যার ইন্জ্ঞিনিয়ার রয়েছে।[২৬] ২০১১ সালের মার্চে, ইন্টেল সিসডিসফট (একটি কাইরো ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান)বেশিরভাগ কিনে নেয়।[২৭]

প্রসারণ

ফেব্রুয়ারি ২০১১: কোম্পানী নতুন একটি মাইক্রোপ্রসেসর তৈরী করবে আরিজোনা, চেন্ডলারে যেটা ২০১৩ সাল নাগাদ শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং খরচ হচ্ছে প্রায় ৫ বিলিয়ন। এগুলোতে ৪০০০ কর্মীর প্রয়োজন হবে। কোম্পানির তিন ভাগ পণ্য উৎপাদিত হয় ইউনাইটেড স্টেটসে। যদিও তিনভাগ আয় হয় বিদেশ থেকে।[২৮][২৯]

এপ্রিল ২০১১: এটি স্মার্টফোন উৎপাদন করবে জিটিই কর্পোরেশনের সাথে একত্রিত হয়ে, চায়নার বাজারে হবে এর পাইলট প্রজেক্ট কারণ সেখানে রয়েছে মোবাইল ফোনের এআরএম প্রসেসরের আদিপত্য। স্মার্টফোনগুলো ইন্টেল এটম প্রসেসরের ভিত্তিতে তৈরী করা হবে।[৩০]

পণ্য এবং বাজারের ইতিহাস

এসর‍্যাম এবং মাইক্রোপ্রসেসর

কোম্পানির প্রথম পণ্য ছিল শিপ্ট রেজিস্টার মেমোরি এবং র‍্যাম ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট এবং ডির‍্যাম, এসর‍্যাম এবং রম ইত্যাদিতে ইন্টেল ১৯৭০ এর দশকে প্রতিযোগী হিসেবে প্রচন্ডরকম বেড়ে উঠে। একইসাথে, ইন্টেলের কারিগর মার্চিয়ান হপ, ফেডরিকো ফেজিন, স্টানলে মেঝর এবং মাসোটোসি শিমা ইন্টেলের প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কার করেন। এটি বিজিকমের (একটি জাপানি কোম্পানি) ক্যালকুলেটরের আসিক বা এএসআইসি পরিবর্তে এর উন্নয়ন হয় এবং পরিবর্তিত হয়। ইন্টেল ৪০০৪ বাজারে ছাড়া হয় নভেম্বরের ১৫, ১৯৭১ সালে। যদিও মাইক্রোপ্রসেসর ইন্টেলের প্রধান ব্যবসা হয়নি ১৯৮০ এর দশকের মাঝামাঝি পযর্ন্ত।[৩১]

ডির‍্যাম থেকে মাইক্রোপ্রসেসর

১৯৮৩ সালে, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সূর্যোদয়ের যুগে, ইন্টেলের মুনাফা চাপের মুখে পড়ে জাপানি মেমোরি চিপের কারণে, এবং তখনই কোম্পানীর প্রধান এন্ডি গ্রুভ কোম্পানীর নজর শুধু মাত্র মাইক্রোপ্রসেসরে নিযুক্ত করে। গ্রুভ এই ব্যপারটি ওনলি দ্যা প্যারনয়েড সারভাইব বইতে উল্লেখ্য করেন। তার পরিকল্পনার মূল উপাদান হল সংস্কার, তারপর বিবেচ্য সংস্কারগুলো, যাতে করে সাফল্য পাওয়া জনপ্রিয় ৮০৮৬ মাইক্রোপ্রসেসরের একমাত্র উৎস হওয়া যায়।

তখন থেকেই, ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট খুব বেশি আস্থার ছিল না একমাত্র সরবরাহকারীদের কাছে, কিন্তু গ্রুভ প্রসেসরের উৎপাদন করে তিনটি ভিন্ন ভোগৌলিক এলাকায় এবং প্রতিযোগীদেরকে যেমন জিলগ এবং এএমডিকে চিপের নকশার লাইসেন্স দেয়া বন্ধ করে। যখন পিসি শিল্প বৃদ্ধি পায় ১৯৮০র দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৯০র দশকে ইন্টেল ছিল প্রধান লাভজনক প্রতিষ্ঠান।

ইন্টেল, এক্স৮৬ প্রসেসর, এবং আইবিএম পিসি

ইন্টেল ৮৭৪২ প্রসেসরের ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, একটি ৮-বিটের মাইক্রোকন্ট্রোলার এতে আছে ১২মেগাহাটর্জের সিপিইউ, ১২৮ বাইট র‍্যাম, ২০৪৮ বাইট ইপিরম এবং ইনপুট/আউটপুট

ইন্টেলে ৪০০৪ এবং এর সিরিজ ৮০০৮ ও ৮০৮০ কখনোই বড় লাভজনক আয়কারী মাইক্রোপ্রসেসর ছিল না, যদিও মাইক্রোপ্রসেসর গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যখন প্রসেসর ৮০৮৬ এবং তার আরেকটি ভার্সন ৮০৮৮ তৈরী হয় ১৯৭৮ সালে তখন ইন্টেল এগুলো বাজারজাত এবং ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য বিক্রয়ের পরিকল্পনা হাতে নেয় যার নাম ছিল "অপারেশন ক্র্যাশ"।

আইবিএম তাদের প্রথম ব্যক্তিগত কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে ১৯৮১ সালে, এবং এটি দ্রুতই সাফল্য অজর্ন করে। ১৯৮২ সালে, ইন্টেল তৈরী করে ৮০২৮৬ মাইক্রোপ্রসেসর, যেটি দুই বছর পরে, আইবিএমের পিসি/এটিতে ব্যবহার করা হয়। "কম্প্যাক" প্রথম আইবিএমের পিসির ক্লোন উৎপাদক, ১৯৮৫ সালে উৎপাদন করে একটি ডেস্কটপ সিস্টেম যা ৮০২৮৬ প্রসেসর দিয়ে তৈরী। এবং ১৯৮৬ সালে আরো দ্রুততম প্রসেসর ৮০৩৮৬ দিয়ে তৈরী করে, যা আইবিএমকে পেছনে ফেলে দেয় দ্রুততার দৌড়ে এবং প্রতিযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আর ইন্টেলও এভাবে প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে উঠে আসে।

১৯৭৫ সালে কোম্পানীটি একটি প্রজেক্ট শুরু করেছিল যার উদ্দেশ্য ছিল ৩২-বিটের মাইক্রোপ্রসেসর তৈরী করা সেটি তারা বের করে ১৯৮১ সালে যার নাম ছিল ইন্টেল আইএপিএক্স ৪৩২। কিন্তু এই প্রজেক্টি এতটাই আধুনিক এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ছিল সেইসময় তা উল্লেখিত ক্ষমতায় কার্যকর করা সম্ভব হয়নি এবং বাজারেও তা সফল হয়নি। তাই ইন্টেল এক্স৮৬ ৩২-বিটের পরিবর্তে বাজারজাত করতে শুরু করে।[৩২][৩৩]

৩৮৬ মাইক্রোপ্রসেসর

এই সময়ে এন্ডি গ্রুভ ডির‍্যাম থেকে কোম্পানীর দৃষ্টি নিবদ্ধ করান মাইক্রোপ্রসেসরে। তার ধারণা ছিল মাইক্রোপ্রসেসরের(৩৮৬) "সিঙ্গেল-সোর্স" বা "একমাত্র-পরিবেশক" হওয়া। এর আগে ইন্টেল মাইক্রোপ্রসেসর নাম মাত্র উৎপাদন করত এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা হয় উৎপাদন বিঘ্নিত বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেত। এতে করে ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ বিঘ্নিত হত। এই অবস্থায় ভোক্তারা সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উৎপাদকদের চিপ ব্যবহার করত। ৮০৮০ এবং ৮০৮৬ সিরিজের মাইক্রোপ্রসেসর বিভিন্ন কোম্পানী দ্বারা প্রস্তুত হয়েছিল এর মধ্যে এএমডি উল্লেখ্যযোগ্য। গ্রুভ সিদ্ধান্ত নেন অন্য প্রস্তুতকারকদের ৩৮৬ এর নকশার অণুমতি না দেয়ার এবং তিনি তিনটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় (সান্তা ক্লারা; ক্যলির্ফোনিয়া, হিলসবোরো; ওলিগণ, পনিক্স; আরিজোনা) উৎপাদনের পরিকল্পনা নেন আর ভোক্তাদের নীরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের নিশ্চয়তা দেন। কমপেক ডেস্কপ্রো ৩৮৬ সফল হলে, ৩৮৬ হয় সিপিইউ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম, এবং ইন্টেলই হয় তার একমাত্র বিশেষ সরবরাহকারী। এই ব্যবসায়িক সফলতা ও লাভের ফলে ইন্টেল আরো উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন চিপ তৈরীতে মনোযোগ নিবদ্ধ করে। এতে করে ইন্টেল মাইক্রোপ্রসেসর চিপ ব্যবসায় নিজেদেরকে শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

৪৮৬, পেন্টিয়াম এবং ইটানিয়াম

ইন্টেল ৪৮৬ মাইক্রোপ্রসেসর ছাড়ে ১৯৮৯ সালে এবং ১৯৯০ সালের মধ্যেই দ্বিতীয় নকশার দল গঠন করে, নকশার কোড নাম হয় "পি৫" এবং "পি৬" পি৫ প্রথমে চেনা হত অপারেশন বাইসাইকেল নামে যা প্রসেসরের সাইকেলের উপর নির্ভর করে রাখা হয়। পি৫ ১৯৯৩ সালে বাজারে ছাড়া হয় ইন্টেল পেন্টিয়াম নামে। নামটি রাখা হয় রেজিষ্টার করার সমস্যার কারণে কারণ নম্বর রেজিষ্টার করা বেশ কঠিন। ১৯৯৫ সালে পি৬ যা ছিল পেন্টিয়াম প্রো ছাড়া হয় এবং ১৯৯৭ সালে সেটা উন্নত করে পেন্টিয়াম ৩ করা হয়।

সান্তা ক্লারায় চিপ নকশার দল ১৯৯৩ সালে এক্স৮৬ আর্কিটেকচার যার কোড নাম পি৭ নকশা উন্নয়ন করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রথমবারের চেষ্টা পরের বছর গড়ায়। পরে হিউলেট-প্যাকার্ড ইন্জ্ঞিনিয়ারদের সাথে ইন্টেল মিলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই উদ্যোগ আবার পুনরুজ্জিবিত করা হয় যদিও ইন্টেল প্রাথমিক নকশার দ্বায়িত্ব নেয়। ফলাফলে আইএ-৬৪ যা ৬৪ বিটের একটি আর্কিটেকচার (ইটানিয়াম) শেষ পযর্ন্ত বাজারে আসে ২০১১ সালের জুনে। কিন্তু ইটানিয়ামের কর্মক্ষমতা আশানুরুপ হয়নি। এটি এএমডির সাথে এক্স৮৬ আর্কিটেকচার তুলনায় নিম্নমান প্রমাণিত হয়। ২০০৯ সাল পযর্ন্ত ইটানিয়াম উন্নয়ন করা হয় এবং বাজারে রাখা হয়।

হিলসবোরোর দল উইলমেট প্রসেসরের (কোড নাম পি৬৭ এবং পি৬৮) নকশা করে যেটা বাজারজাত করা হয় পেন্টিয়াম ৪ নামে।

সুপার কম্পিউটার

ইন্টেলের বৈজ্ঞানিক কম্পিউটার বিভাগ ১৯৮৪ তে গঠন করা হয় জাসটিন রেটনারের মাধ্যমে। যাতে নকশা এবং উৎপত্তি করা যায় প্যারালাল কম্পিউটার মাইক্রোপ্রসেসরের ভিত্তিতে যেগুলো হাইপারকিউব টপোলজিতে যুক্ত থাকবে।[৩৪] ১৯৯২ সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ইন্টেল সুপারকম্পিউটিং সিস্টেম ডিভিশন এবং আইর‍্যাপ (iWarp) আর্কিটেক্সার এর আওতায় নেয়া হয়।[৩৫] এই বিভাগ নকশা করেছে অনেক সুপারকম্পিউটার সিস্টেমের যেমন ইন্টেল আইপিএসসি/১, আইপিএসসি/২, আইপিএসসি/৮৬০, প্যারাগণ এবং এএসসিআই রেড।

এ্যপলের সাথে অংশীদারী

৬ই জুন, ২০০৫ এ্যপলের সিইও স্টিভ জবস ঘোষণা করেন যে এ্যপল তাদের পাওয়ারপিসি তে ইন্টেলের এক্স৮৬ ব্যবহার করবে, কারণ ভবিষ্যতের পাওয়ারপিসির কার্যক্ষমতা এ্যপলের চাহিদাকে মেটাতে পারছিল না। প্রথম ম্যাক/ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার যেটাতে ইন্টেলের প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে ঘোষণা করা হয় ১০ই জানুয়ারি, ২০০৬ এবং এ্যপল আগস্ট পযর্ন্ত ইন্টেল প্রসেসর দ্বারা ম্যাকের জন্য ব্যবহারকারীরা সাড়া দেয়। এ্যপলের এক্সসার্ভ সার্ভার ইন্টেলের এক্সইওন প্রসেসর দ্বারা হালনাগাদ বা উন্নয়ন করা হয়।[৩৬]

কোর ২ ডুয়ো বিজ্ঞাপনী বিরোধ

২০০৭ সালে কোম্পানিটি এর কোর ২ ডুয়ো প্রসেসরের জন্য একটি ছাপানো বিজ্ঞাপন ছাড়ে যাতে ছয়জন আফ্রিকান (কালো চামড়া) দৌড়বিদ একজন ককেশিয়ান (সাদা চামড়া) পুরুষের কাছে মাথা নত করে আছে(আসলে ছবিটি নেয়া হয়েছিল দৌড়খেলার মাঠ থেকে) একটি অফিসে। ন্যান্সি ভ্যগত, ইন্টেলের মার্কেটিং ভাইস প্রসিডেন্টের মতে, সাধারণ মানুষ এই বিজ্ঞাপনটিকে "মূখর্তা এবং অপমানসূচক" হিসেবে নিয়েছে।[৩৭] খুব দ্রুত এর প্রচারণা ঘুটিয়ে নেয়া হয় এবং বেশ কিছু কর্মকর্তা প্রকাশ্যে ক্ষমা চায় তাদের কর্পোরেট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।[৩৮]

ক্লাসমেট পিসি

ইন্টেলের ক্লাসমেট পিসি হচ্ছে ইন্টেল কোম্পানীর প্রথম সবচেয়ে কমদামি নোটবুক।

কর্পোরেট কার্যাবলী

২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে, ইন্টেলের ছিল প্রায় ১,০০,০০০ জন কর্মচারী এবং ২০০ সহয়তাকেন্দ্র বিশ্ব জুড়ে। ২০০৫ সালের আয় ছিল ৩৮.৮ বিলিয়ন এবং ফরচুন ৫০০ এ এর অবস্থান ছিল ৪৯ তম। আমেরিকান স্টক ইক্সচেঞ্জ এনএএসডিএকিউ এ এটার স্টক চিহ্ন হল আইএসটিসি। ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে এর প্রথমদিকের ভোক্তা ছিল এইচপি এবং ডেল

নেতৃত্ব এবং কর্পোরেটের গঠন

রবার্ট নয়েস ছিল ইন্টেলের সিইও যখন এটা প্রতিষ্ঠা করা হয় (১৯৬৮ সালে), এতে যোগ দেয় এর যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর (১৯৭৫ সালে। এন্ডি গ্রুভ কোম্পানীর প্রধান হয় ১৯৭৯ সালে এবং সিইও হয় ১৯৮৭ সালে যখন গর্ডন মুর হয় চেয়্যারম্যান। ১৯৯৮ সালে, গ্রুভ গর্ডন মুর এবং ক্রেইগ বেরেট (তখন কোম্পানীর প্রধান) কে নিয়ে সফল হন এবং অব্যাহতি নেন। ১৮ই মে ২০০৫ সালে, বেরেট অব্যাহতি নেয়ার আগে পল ওটেলিনির কাছে কোম্পানীর দায়দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। পল ওটেলিনি ছিলেন কোম্পানীর প্রধান এবং ইন্টেলের নকশার ডিজাইন এর দায়িত্বে ছিলেন যেটা আইবিএম পিসিতে ব্যবহার করা হয়। বোর্ড অব ডিরেক্টরস'রা ওটেলিনি কে সিইও নির্বাচন করেন, এবং বেরেটকে গ্রুভের জায়গায় পরিবর্তন করেন যিনি চেয়্যারম্যান ছিলেন। গ্রুভ যদিও চেয়্যারম্যান হিসেবে অব্যাহতি নেন তবুও কোম্পানীর একজন বিশেষ উপদেশদাতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালের মে মাসে, বেরেট চেয়্যারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেন এবং জেন শ নতুন চেয়্যারম্যান নির্বাচিত হন।

বোর্ড অব ডিরেক্টরদের বর্তমান সদস্য হল ক্রেইগ বেরেট, চারলিন বার্শেফস্কি, সুসান ডেকার, জেমস গাজি, রিড হানডট, পল ওটেলিনি, জেমস প্লামার, ডেবিড পট্রাক, জেন শ, জন থ্রনটন এবং ডেবিড ইওফি।[৩৯]

একটি স্কুলের অর্থায়ন

নিউ মেক্সিকোর রিও রেনচোতে ইন্টেল হল প্রধান নেতৃত্বস্থানীয় চাকুরিদাতা।[৪০] ১৯৯৭ সালে, সানডোভাল কাউন্টি এবং ইন্টেল কর্পোরেশনের যৌথ অংশীদারি অর্থায়নে রিও রেনচো উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।[৪১][৪২]

অর্থায়ন

ইন্টেল শেয়ারের দাম, নভেম্বর ১৯৮৬ – নভেম্বর ২০০৬

ইন্টেলের বাজার মূলধন ১২২.৪১ বিলিয়ন ডলার (২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ অনুযায়ী), এটি কেনাবেচা করে এনএএসডিএকিউ দ্বারা যেখানে তাদের চিহ্ন আইএনটিসি। আরো যেসব চিহ্ন দিয়ে শেয়ার কেনাবেচা হয় সেগুলো হল- ডো জনস ইন্ডাসট্রিয়াল এভারেজ, এসএন্ডপি ৫০০, এনএএসডিএকিউ-১০০, রাসেল ১০০০ ইন্ডেক্স, রাসেল ১০০০ গ্রোথ ইন্ডেক্স, এসওএক্স এবং জিএসটিআই সফটওয়্যার ইন্ডেক্স।২০০৮ সালের ১৫ই জুলাই, ইন্টেল ঘোষণা করে তারা কোম্পানীর ইতিহাসে সবোর্চ্চ আয় করে ২০০৮ সালে।[৪৩]

সনিক লোগো

বিখ্যাত D♭  D♭  G♭  D♭  A♭ জিঙ্গেল, সনিক লোগো, অডিও সনিক লোগো তৈরী করা হয়েছিল মিউসিখভারনিউগান(Musikvergnuegen) দ্বারা এবং লিখেছিলেন ওয়াল্টার ওয়্যারজোয়া (১৯৮০র দশকের অস্ট্রিয়ান ব্যান্ড এডেলউইসের)।[৪৪] ইন্টেলের পেন্টিয়াম ৩, ৪ এবং কোর প্রসেসরগুলোর শুরুতে (প্রত্যেকটির) সনিক লোগোতে এবং সুরে পরিবর্তন আনা হয়েছিল কিন্তু এখনো জিঙ্গেলটি ব্যবহার করা হয়।

আইটি ব্যবস্থাপক ৩:অদৃশ্য শক্তিরা

আইটি ব্যবস্থাপক ৩:অদৃশ্য শক্তিরা একটি ওয়েব ভিত্তিক সিমুলেশন গেম যা ইন্টেলের তৈরী। এই খেলায় আপনি একটি কোম্পানীর আইটি শাখা ব্যবস্থাপনা করতে পারবেন। এই খেলার উদ্দেশ্য হল প্রযুক্তি এবং দক্ষতা ব্যবহার করে ছোট ব্যবসা থেকে ব্যবসায়কে বিশ্বজুড়ে সম্প্রসারণ করা।

ধর্মীয় বিরোধ

ইসরাইলে নিয়োজিত ইন্টেলের অফিস শনিবার অর্থোডক্স জিউদের প্রতিবাদ/বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়। কিন্তু কোন ধরনের ধংসাত্মক কর্মকাণ্ড সংঘঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।[৪৫] ২০০৯ সালের ডিসেম্বরের কিছু কর্মীদের (যারা ওভার টাইম করছিল শাবাটের দিন) খবর অনুযায়ী, ইসরাইলে ইন্টেলের অবস্থা অপরিবর্তিত ছিল।

প্রতিযোগিতা

১৯৮০ দশকে পুরো বিশ্বে, সেমিকন্ডাক্টর বিক্রয়কারীদের মধ্যে প্রথম দশজনের একজন ছিল। ১৯৯১ সালে, ইন্টেল চিপ প্রস্তুতকারক হিসেবে আয়ের দিক থেকে সবচেয়ে বড় কোম্পানী ছিল এবং তখন থেকেই তার অবস্থান ধরে রাখে। অন্য শীর্ষ সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানী হল এএমডি, স্যামসাং, টেক্সাস ইস্ট্রুমেন্টস, তোসিবা এবং এসটিমাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স।

পিসি চিপ সেটের প্রতিযোগীরা হল এএমডি, ভায়া টেকনোলজিস, সিস এবং এনভিডিয়া। ইন্টেলের নেটওর্য়াক যন্ত্রসমূহের প্রতিযোগীরা হল ফ্রিস্কেল, ইনফেনিয়ন, ব্রডকম, মার্ভেল টেকনোলজি গ্রুপ এবং এএমসিসি। ফ্ল্যাস মেমোরি যন্ত্রসমূহের প্রতিযোগীরা হল স্প্যানশন, স্যামসাং, কিউমন্ডা, তোশিবা, এসটিইলেক্ট্রনিক্স এবং হাইনিক্স।

এক্স৮৬ প্রসেসর বাজারে, একমাত্র প্রধান প্রতিযোগি হল এএমডি, যার সাথে সম্পূর্ণ ক্রস লাইসেন্সিং চুক্তি ছিল ১৯৭৬ থেকে। যাতে উল্ল্যেখ ছিল, প্রত্যেক অংশীদার অন্য পেটেন্ট করা প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে কোন প্রকার জরিমানা ছাড়া কিছু সময়ের জন্য।[৪৬] এই চুক্তি বাতিল হয় যখন এএমডি দেউলিয়া হয় একটি ঘটনায়।[৪৭] কিছু ছোট ছোট প্রতিযোগী যেমন ভায়া এবং ট্রান্সমেটা কম ক্ষমতার এক্স৮৬ প্রসেসর তৈরী করে থাকে কম ক্ষমতার কম্পিউটার এবং কিছু বহন উপযোগী যন্ত্রপাতির জন্য।

প্রতিযোগিতা রহিত করার দাবিসমূহ

জাপান

২০০৫ সালে, স্থানীয় বাণিজ্য মেলা কমিশন (Fair Trade Commission) ইন্টেলের জাপানি আইন এন্টিমনোপলি ভাঙ্গার প্রমাণ পায়। কমিশনটি ইন্টেলকে তাদের ছাড় উঠিয়ে নিতে বলে যা এএমডির বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক। আইনি ঝামেলা এড়াতে ইন্টেল তাদের নির্দেশ মেনে নেয়।[৪৮][৪৯][৫০][৫১]

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন

২০০৭ সালের জুলাইয়ে, ইউরোপিয়ান কমিশন ইন্টেলকে এন্টি-কম্পিটিটিভ প্রাকটিস বা প্রতিযোগিতা রহিত করার জন্য অভিযুক্ত করে বিশেষত এএমডির বিরুদ্ধে।[৫২] অভিযোগটি দেখতে হলে দেখতে হবে পেছনের দিকে, ২০০৩ সালে, কম্পিউটার প্রস্তুতকারকদেরকে তাদের পছন্দমত দামে ইন্টেলের চিপ কেনার সুযোগ দেয় এবং প্রস্তুতকারকদের এএমডি চিপ দিয়ে বানানো কম্পিউটার যাতে দেরিতে অথবা বাতিল করে দেয়ার জন্য টাকা দেয় ইন্টেল। একইসাথে সরকারী প্রতিষ্ঠান বা সরকার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ দামের চেয়ে কমদামে চিপ সরবরাহ করে তারা।[৫৩] ইন্টেলের দাবি ছিল এগুলো অযৌক্তিক এবং মিথ্যা বরং তারা ভোক্তার সহায়ক বাজার তৈরী করেছে।[৫৪] জেনারেল কাউন্সিল ব্রুস সয়েল দাবি করেন, কমিশন কিছু তথ্যসংক্রান্ত অণুমানে ভুল বুঝেছে যাতে দাম এবং উৎপাদন খরচ ছিল।[৫৫]

২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ইন্টেল মন্তব্য করে এর মিউনিখ অফিসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন রেগুলেটর অভিযান চালিয়েছে। ইন্টেল রির্পোট দেয় এটা তদন্তকারীদের সাহায্য করছিল।[৫৬] ইন্টেলের বার্ষিক আয়ের ১০% পর্যন্ত জরিমানা কাটা হয়।[৫৪] একই সময়ে এএমডি একটি ওয়েবসাইট ছেড়ে অভিযোগের পক্ষে জোরদার দাবি জানায়।[৫৭][৫৮] ২০০৮ এর জুনে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নতুন জরিমানা ধার্য করে ইন্টেলের বিরুদ্ধে।[৫৯] ২০০৯ সালের মে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রমাণ পায় যে ইন্টেল প্রতিযোগিতা রহিত করায় জড়িত ছিল এবং সাথে সাথে ১.৪৪ বিলিয়ন জরিমানা ধার্য করে। তারা প্রমাণ পায় ইন্টেল তাদের চিপ ব্যবহারের জন্য এসার, ডেল, এইচপি, লেনোভো এবং এনইসিকে[৬০] অর্থ প্রদান এবং অন্যান্য কোম্পানির ক্ষতি সাধনের জন্য যাতে এএমডিও রয়েছে।[৬০][৬১][৬২] ইউরোপিয়ান কমিশন বলে যে, ইন্টেল তাদের মার্কেট বজায় রাখতে প্রতিযোগীদের হটাতে ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ করছিল যা ইউ এন্টিট্রাস্ট নিয়মকে সম্পূর্ণ ভঙ্গ করেছে।[৬০] জরিমানার সাথে ইন্টেলকে বলা হয় যাতে সবধরনের বেআইনি কাজ বন্ধ করতে।[৬০] ইন্টেল জানায় তারা এর বিরুদ্ধে আপিল করবে।[৬০]

দক্ষিণ কোরিয়া

২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে, দক্ষিণ কোরিয়া রেগুলেটরস ইন্টেলকে অভিযুক্ত করে এন্টিট্রাস্ট আইন ভাঙ্গার দায়ে। তদন্তকাজ শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, যখন কর্মকর্তারা ইন্টেলের দক্ষিণ কোরিয়ান অফিসে অভিযান চালায়। যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, এর বার্ষিক বিক্রয়ের ৩% জরিমানা করা হবে।[৬৩] ২০০৮ সালের জুনে, ন্যায্য বাণিজ্য কমিশন ইন্টেলকে ২৫.৫ মিলিয়ন জরিমানা দিতে বলে। অভিযোগ করা হয়, ইন্টেল তার বিশাল ব্যবসায়িক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে কোরিয়ান কম্পিউটার প্রস্তুতকারকদের কে টাকা দিয়েছিল এই শর্তে যে তারা এএমডি থেকে পণ্য কিনবে না।[৬৪]

যুক্তরাষ্ট্র

নিউ ইয়র্ক ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে ইন্টেলের এটা দেখতে যে তারা মাইক্রোপ্রসেসরের দাম এবং বিক্রয়ে এন্টিট্রাস্ট আইন ভঙ্গ করছে কিনা।[৬৫] ২০০৮ সালের জুনে, ফেডারেল ট্রেড কমিশন একই ভাবে তদন্ত শুরু করে ইন্টেলের বিরুদ্ধে।[৬৬] ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ফেডারেল ট্রেড কমিশন ঘোষণা করে এটি ইন্টেলের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে।[৬৭][৬৮][৬৯][৭০]

২০০৮ সালের নভেম্বরে, দুই বছরের তদন্তের পথ ধরে, নিউ ইয়র্কের এটর্নি জেনারেল এন্ড্রু কুমো ইন্টেলকে অভিযুক্ত করে ঘুষ এবং অন্য কোম্পানিকে বাধ্য করার দায়ে। এতে দাবি করা হয়, ইন্টেল কম্পিউটার প্রস্তুতকারকদের তাদের চিপ প্রতিযোগীদের চাইতে বেশি কেনার জন্য এবং টাকা তুলে নেয়ার হুমকি দেয় যদি তারা প্রতিযোগিদের সাথে একত্র হয়ে বা কাছাঁকাছি হয়ে কাজ করে কিন্তু ইন্টেল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে।[৭১]

২০১০ সালের জুলাইয়ের ২২ তারিখ, ডেল সম্মত হয় ইউ. এস সিকিউরিটিস এবং ইক্সচেঞ্জ কমিশনের সাথে বোঝাপড়া করতে যেখানে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা ধার্য করা হয়েছিল কারণ ডেল তার বিনিয়োগকারীদের হিসাবরক্ষনের সঠিক তথ্য প্রকাশ করত না। বিশেষ করে, সিইসি জরিমানা করে ২০০২-২০০৬ পযর্ন্ত সময়কে, যেসময় ডেলের ইন্টেলের সাথে চুক্তি হয়েছিল রিবেট পাওয়া নিয়ে এএমডির চিপ ব্যবহার না করার শর্তে। এইসব রিবেট বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রকাশ করা হত না। কিন্তু কোম্পানীর আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বিনিয়োগকারীদের চাহিদা মেটানোতে ব্যবহার করা হত। সিইসি বলে যে, ২০০৭ সালের প্রথম তিন মাসে, ৭০% অপারেটিং আয় পেয়ে থাকে। ডেল ২০০৬ সালে এএমডিকেও সরবরাহকারী হিসেবে নেয়, এতে করে ইন্টেল তাদের রিবেট দেয়া বন্ধ করে দেয়, এতে করে ডেলের আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে।[৭২][৭৩][৭৪]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ