ঈশ্বরবাদ

কোনো ধর্ম ছাড়াই ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস

ঈশ্বরবাদ বা যৌক্তিক একেশ্বরবাদ (ইংরেজি: Deism) হল একটি দার্শনিক অবস্থান যা ধর্মীয় জ্ঞানের উৎস হিসেবে ধর্মগ্রন্থের অবতরণ এবং ঐশ্বরিক প্রতিনিধিদের প্রত্যাখ্যান করে এবং একইসাথে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, প্রাকৃতিক জগৎকে পর্যবেক্ষণ করা এবং তার কার্যকারণ বিশ্লেষণই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একক সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব নির্ধারণের জন্য যথেষ্ট ।[১][২][৩][৪][৫] এটি এমন একটি বিশ্বাস যাতে বলা হয়, ঈশ্বর অবশ্যই আছেন কিন্তু তিনি মানুষকে কোনো কাজের নির্দেশ দেন না । ঈশ্বরবাদে আরও বলা হয় যে, মানুষের উচিত যুক্তি এবং কারণের উপর নির্ভর করা, পবিত্র ধর্মগ্রন্থভিত্তিক কোন ধর্মের উপর নয়। যারা ঈশ্বরবাদের অনুসরণ করে তাদের ঈশ্বরবাদী বলা হয়।

টমাস পেইন ছিলেন একজন প্রখ্যাত ঈশ্বরবাদী যিনি দ্য এজ অফ রিজন নামক বইটি লেখেন।

ঈশ্বরবাদীগণ বিশ্বাস করেন যে কোন এক শাশ্বত শক্তি বিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন। তবে তারা বিশ্বাস করে না যে, বিশ্বের সৃষ্টি কোন আকস্মিক ঘটনার ফলে ঘটেছে । তারা সাধারণত অলৌকিকতার মত অতিপ্রাকৃত ঘটনাগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে। যেমন ভূত, জিন, জাদু ইত্যাদি। তারা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বর বিশ্ব পরিচালনায় প্রাকৃতিক নীতির ব্যবস্থা করে রেখেছেন এবং সেগুলোতে তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত হন না । ঈশ্বরবাদীগণ কুরআনবাইবেলের মত ধর্মগ্রন্থগুলোকে ঈশ্বরের রচিত নয় বরং মানব রচিত বলে মনে করেন।

ইতিহাসের বিখ্যাত ঈশ্বরবাদীদের মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি থমাস জেফারসন,[৬] মার্কিন রাজনৈতিক নেতা ও বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, বিখ্যাত ফরাসি বিজেতা নেপোলিয়ন,ফরাসি লেখক ও দার্শনিক ভলতেয়ার,[৬] ব্রিটিশ দার্শনিক টমাস পেইন, এবং অভিনেতা মার্লোন ব্র্যান্ডো অন্যতম।

ধ্রুপদী ঈশ্বরবাদের ইতিহাস

ঈশ্বরবাদের আবির্ভাবের ঐতিহাসিক পটভূমি

প্রাচীন সময় থেকে ঈশ্বরবাদী চিন্তাধারা বিদ্যমান ছিল। প্রাচীন গ্রিকদের মধ্যে হেরাক্লিটাস একটি প্রতীক ও যৌক্তিক রীতির ধারণা করেন এবং বলেন, "জ্ঞান, যা দ্বারা সকল বিষয়ে সকল কিছু চালিত হয়" তা "ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত উভয় ক্ষেত্রেই তা জিউস (ঈশ্বর)" বলে গণ্য হত। প্লাতোর বিবেচনায় ঈশ্বর হলেন স্থপতি। প্রাচীন গ্রিসের বাইরে অনেক সংস্কৃতিতে সম্মানের সহিত ঈশ্বরবাদ সম্পর্কিত কিছু মতবাদ রয়েছে। যাই হোক, "ঈশ্বরবাদ" শব্দ দিয়ে বর্তমানে যা বুঝানো হয় তা ১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপে, বিশেষ করে ব্রিটেনে, প্রাকৃতিক ধর্মতত্ত্ব বা মুক্তচিন্তার আন্দোলন বুঝাতে ব্যবহৃত হত।[৭]

ঈশ্বরবাদের পূর্বসূচনা

বাইবেলের সমালোচনা বিষয়ক প্রারম্ভিক লেখনীতে, যেমন টমাস হবসের লেভিয়াথানস্পিনোজার থিওলজিকো-পলিটিকাল ট্রিটিজ, এবং অন্যান্য অল্প-পরিচিত লেখক, যেমন রিচার্ড সিমন, ও আইজাক লা পেইরেরের লেখনী সমালোচনামূলক ঈশ্বরবাদের উন্নয়নের ভিত শক্ত করেছে।

ঈশ্বরবাদের গুরুত্বপূর্ণ পূর্বসূচনা ছিল চারবারির প্রথম লর্ড এডওয়ার্ড হারবার্টের (মৃ. ১৬৪৮) লেখনী। তাকে "ইংরেজি ঈশ্বরবাদের জনক" বলা হয়, এবং তার বই দে ভেরিতেত (সত্যে, যা বহিঃপ্রকাশ, সম্ভাব্যতা, ও মিথ্যা থেকে ভিন্ন) (১৬২৪) ছিল ঈশ্বরবাদ সম্পর্কিত প্রথম প্রধান লেখনী।[৮][৯]

ধর্ম লোকে হারবার্ট পাঁচটি বিষয় বিশ্বাস করতেন[১০]

  • একজন প্রধান ঈশ্বর রয়েছেন।
  • তার উপাসনা করতে হবে।
  • ধর্ম ও ধার্মিকতা স্বর্গীয় উপাসনার প্রধান অংশ
  • আমাদেরকে আমাদের পাপের জন্য দুঃখিত হতে হবে এবং পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।
  • স্বর্গীয় ঈশ্বর ইহকালে ও পরকালে পুরস্কার ও শাস্তির বিধান করেন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ