উপসাগরীয় যুদ্ধ
পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধের সূচনা ২ আগস্ট, ১৯৯০ সালে। ১৯৯১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম নামে সমধিক পরিচিত এই যুদ্ধের সংঘটিত হয় ইরাক এবং ৩৪টি দেশের জাতিসংঘ অনুমোদিত যৌথ বাহিনীর মধ্যে। ১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে ইরাকের কুয়েত আগ্রাসন এবং কুয়েতি ভূ-খন্ড দখলের প্রেক্ষতে ইরাকি বাহিনীর হাত থেকে কুয়েতকে মুক্ত করাই ছিল এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য।
উপসাগরীয় যুদ্ধ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
কোয়ালিশন বাহিনী : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কুয়েত যুক্তরাজ্য সৌদি আরব ফ্রান্স কাতার সংযুক্ত আরব আমিরাত ওমান পাকিস্তান যুদ্ধ সমর্থনে অন্যান্য বাহিনী : বাংলাদেশ | ইরাক যুদ্ধ সমর্থনে অন্যান্য বাহিনী : ইয়েমেন | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
জর্জ হারবার্ট ওয়াকার বুশ ন্ররম্যান শোয়ার্জকফ খালিদ বিন সুলতান[২][৩] পিটার ডি লা বিলিয়ের জন মেজর মার্গারেট থ্যাচার ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ শাহাবুদ্দিন আহমেদ | সাদ্দাম হোসেইন | ||||||
শক্তি | |||||||
৯৫৬,৬০০[৪] ১,৮২০ ফাইটার (১,৩৭৬ মার্কিন, ১৭৫ সউদি, ৬৯ ব্রিটিশ , ৪২ ফরাসি) ৩,৩১৮ ট্যাংক ৮ এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ২ টি ব্যাটলশিপ ২০ টি ক্রুইজার ২০ টি ডেস্ট্রয়ার ৫ ডুবোজাহাজ[৫] | ২,৬০,০০০ ৬৪৯ ফাইটার ২০০০ ট্যাংক (প্রধানত টি-৭২) [৫] | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
৩৫৮ জন নিহত, ৭৭৬ জন আহত, ৪১ জন যুদ্ধবন্দি (হতাহত কুয়েতির সংখ্যা অজানা) | আনুমানিক ২,০০০,০০০ (সাধারণ জনগন সহ)(নিচে দেখুন), ৮০,০০০ জন যুদ্ধবন্দি,[৬] ৭৫,০০০ আহত |
এই যুদ্ধটি আরও কিছু নামে পরিচিত । যেমন : পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ (Persian Gulf War), প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ (First Gulf War), কুয়েত যুদ্ধ (Kuwait War) ইত্যাদি। ১৯৯০ সালের ২ আগস্ট ইরাকের সেনাবাহিনী কুয়েত দখল করা শুরু করলে বিভিন্ন দেশ তার নিন্দা জানায়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইরাকের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ সৌদি আরবে সেনা মোতায়েন করেন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোকেও তাদের সেনা পাঠাতে অনুরোধ করেন।
শব্দতত্ত্ব
নিচে উল্লিখিত নামগুলো যুদ্ধটিকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হয়েছেঃ
• পশ্চিমা দেশগুলোতে "Gulf War","Kuwait Invasion", এবং "পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ" ( ইংরেজিতে "Persian Gulf War") বহুল ব্যবহৃত নাম। এই নামগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ জনপ্রিয় ঐতিহাসিক এবং সাংবাদিক ব্যবহার করেছেন। এই নামগুলো ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এগুলো অন্তত তিনটি যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে।
•কুয়েত এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ যেমন সৌদি আরব, বাহরাইন, মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত একে কুয়েতের স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করে।
•ফ্রান্স এবং জার্মানিতে এই যুদ্ধ War of Kuwait এবং Second Gulf War হিসেবে পরিচিতি পায়।
•ইরাক একে বলে The mother of all battles.
•অন্যান্য নাম যেমন Iraq-Kuwait conflict এবং U.N.-Iraq conflict ব্যবহৃত হতো ।
অপারেশন গুলোর নাম
যৌথ বাহিনীর বিভিন্ন দেশ যুদ্ধে নিজেদের চালানো বিভন্ন অপারেশনের বিভিন্ন নাম দিয়েছিল। তবে কখনো কখনো এই নামগুলো ভুলভাবে সমগ্র যুদ্ধটিকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছিল, বিশেষতঃ যুক্তরাস্ট্র পরিচালিত অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম।
পটভূমি
উপসাগরীয় যুদ্ধের আগে ইরাক এবং ইরানের মধ্যে যুদ্ধ ছিল প্রায় আট বছর ধরে(১৯৮০-৮৮)। এই যুদ্ধে ইরাক এবং ইরান উভয় দেশেরই সামরিক এবং অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়তে হয়। এতে করে ইরাকের ঘাড়ে অনেক ঋণ জমে যায়। ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন মনে করতেন যদি কুয়েত আক্রমণ করে কুয়েতের ভূগর্ভে মজুতকৃত তেলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে আনা যায় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে তারাই হর্তাকর্তা হয়ে উঠবে। তাই সাদ্দাম হোসেন প্রায় দশ লাখের বিশাল সামরিক বহর নিয়ে কুয়েত াআক্রমণ করে। তখন সৌদি আরবও ইরাক কর্তৃক আক্রমণের ভয়ে ছিল। আর এই যুদ্ধের বিষয়টি পশ্চিমাদের কাছে মোটেও ভালো ঠেকে নি। তাই জাতিসংঘ ইরাকের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। অন্য দিকে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার প্রশাসন মনে করতে লাগলেন যদি ইরাক কুয়েত দখল করে এবং তার তেল ভান্ডারের মালিক হয়ে যায় তাহলে পুরো বিশ্বের মোট জ্বালানির ২০% ইরাকের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে এবং ইরাক খুবই শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হবে। যা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য মোটেও সুখকর নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও ৩৪টি দেশ মিলে কোয়ালিশন ফোর্স গঠন করে এবং ইরাককে শান্তি চুক্তিতে বাধ্য করে। আর তখনই যুক্তরাষ্ট্র সর্বপ্রথম সৌদি আরবে সৈন্য মোতায়েন করে এবং এখনো সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল ঘাঁটি রয়েছে। কোয়ালিশন ফোর্সের কাছে ইরাক পরাজিত হয়।
কুয়েতে আক্রমণ
Invasion of Kuwait | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: the Gulf War and the Persian Gulf Conflicts | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
Iraq | Kuwait | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
Saddam Hussein | Jaber III | ||||||
শক্তি | |||||||
88,000[৮][৯][১০] | Kuwaiti Army 16,000[১১] | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
39 aircraft (est.). 295 killed, 361 wounded ≈120 tanks and other armored vehicles[১৩] 4 ships sunk | 57 aircraft lost,[১৪] 4,200 killed, 12,000 captured ≈200 tanks destroyed/captured 850+ other armored vehicles destroyed/captured[১৫][১৬][১৭][১৮] 17 ships sunk, 6 captured[১৯][২০][২১] |
ভারতীয়দের আকাশপথে উদ্ধার
কুয়েত ইনভেশন পর, ১৩ আগস্ট,১৯৯০ থেকে ২০ অক্টোবর,১৯৯০-এ কুয়েত থেকে ভারতীয়দের ১৯৯০ আকাশপথে উদ্ধার করা হয় । এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বেসামরিক বিমান দ্বারা ১৭০,০০০ জন মানুষ খালি করা হয় এবং ৫০০ মানুষ একটি জাহাজ মাধ্যমে পাঠানো হয় ।
কোয়ালিশন বাহিনীতে বিভিন্ন দেশের সৈন্য সংখ্যা | ||
---|---|---|
দেশ | সৈনিক সংখ্যা | মন্তব্য/উল্লেখযোগ্য ঘটনা |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৫৭৫,০০০ - ৬,৯৭,০০০ | অপারেশন ডেজার্ট শিল্ড ব্যাটল অব খাফজি ব্যাটল অব ৭৩ ইস্টিং ব্যাটল অব Al বুসায়াহ ব্যাটল অব ফেইজ লাইন বুলেট ব্যাটল অব মদিনা রিজ ব্যাটল অব ওয়াদি আল বাতিন ব্যাটল অব নরফোক অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
সউদি আরব | ৫২,০০০ - ১০০,০০০ | অপারেশন ডেজার্ট শিল্ড ব্যাটল অব খাফজি অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
যুক্তরাজ্য | ৪৩,০০০ - ৪৫,৪০০ | অপারেশন ডেজার্ট শিল্ড অপারেশন গ্রান্ডবাই অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
মিশর | ৩৩,৬০০ - ৩৫,০০০ | অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
ফ্রান্স | ১৮,০০০ | অপারেশন ডাগুয়েট |
সিরিয়া | ১৪,৫০০ | অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
মরোক্কো | ১৩,০০০ | |
কুয়েত | ৯,৯০০ | অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
ওমান | ৬,৩০০ | অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
পাকিস্তান | ৪,৯০০ - ৫,৫০০ | |
সংযুক্ত আরব আমিরাত | ৪,৩০০ | অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
কাতার | ২,৬০০ | ব্যাটল অব খাফজি |
বাংলাদেশ | ২,২০০ | অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠন |
কানাডা | ২,০০০ | অপারেশন ফ্রিকশন |
অস্ট্রেলিয়া | ১,৮০০ | |
ইটালি | ১,২০০ | |
নেদারল্যান্ডস | ৬০০ | |
নাইজার | ৬০০ | |
সেনেগাল | ৫০০ | |
স্পেন | ৫০০ | |
বাহরাইন | ৪০০ | |
বেলজিয়াম | ৪০০ | |
আফগানিস্তান | ৩০০ | |
আর্জেন্টিনা | ৩০০ | |
চেকোস্লাভাকিয়া | ২০০ | অপারেশন ডেজার্ট শিল্ড অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম |
গ্রিস | ২০০ | |
পোল্যান্ড | ২০০ | অপারেশন সাইমুম |
দক্ষিণ কোরিয়া | ২০০ | |
ডেনমার্ক | ১০০ | |
হাংগেরি | ৫০ | |
নরওয়ে | ২৮০ |