এয়ারবাস এ৩২০ পরিবার

ইউরোপীয় বিমান পরিবার

এয়ারবাস এ৩২০ পরিবার বলতে এয়ারবাস দ্বারা প্রস্তুত একধরনের ন্যারোবডি বিমানকে বোঝায়। মার্চ ১৯৮৪-এ এ৩২০ চালু হয়েছিল, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭-এর প্রথম উড়ান সম্পন্ন হয়েছিল এবং এয়ার ফ্রান্স এর প্রথম ব্যবহার করেছিল। এই পরিবারের প্রথম সদস্যের পরে এল বড় এ৩২১ (জানুয়ারি ১৯৯৪-এ প্রথম বিতরণ করা হয়েছিল), ছোট এ৩১৯ (এপ্রিল ১৯৯৬) এবং আরও ছোট এ৩১৮ (জুলাই ২০০৩)। সাধারণত ফ্রান্সের তুলুজ ও জার্মানির হামবুর্গে বিমানটির চূড়ান্ত নির্মাণ সম্পন্ন হয়। তবে ২০০৯ সাল থেকে চীনের থিয়েনচিন এবং এপ্রিল ২০১৬ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামাতেও এর চূড়ান্ত নির্মাণ সম্পন্ন হয়।

  • এ৩২০ পরিবার
  • এ৩১৮/এ৩১৯/এ৩২০/এ৩২১
উড্ডয়নের সময় একটি জেটস্টার এ৩২০: এক নিচু পাখার বিমান যার টার্বোফ্যান দুটো ডানার নিচে অবস্থিত।
ভূমিকান্যারোবডি জেট বিমান
উৎস দেশবহুজাতিক[ক]
নির্মাতাএয়ারবাস
প্রথম উড্ডয়ন২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭
প্রবর্তন১৮ এপ্রিল ১৯৮৮ (এয়ার ফ্রান্স)[১]
অবস্থাসক্রিয়
মুখ্য ব্যবহারকারীআমেরিকান এয়ারলাইন্স[খ]
নির্মিত হচ্ছে
  • ১৯৮৬–২০২১ (এ৩২০সিও পরিবার)[৩]
  • ২০১২–বর্তমান (এ৩২০নিও পরিবার)
নির্মিত সংখ্যা১১,২৬৩ ডিসেম্বর ২০২৩-এর হিসাব অনুযায়ী[৪]
রূপভেদ
উদ্ভূত বিমানএয়ারবাস এ৩২০নিও পরিবার

এই দ্বৈত-ইঞ্জিন বিমানের প্রস্থচ্ছেদে পাশাপাশি ছয়টি ইকোনমি আসন বর্তমান এবং সেখানে হয় সিএফএম৫৬ কিংবা আইএই ভি২৫০০ টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। অবশ্য এ৩১৮ বিমানে সিএফএম৫৬ কিংবা পিডব্লিউ৬০০০ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। এই পরিবার প্রথমবার কোনো উড়োজাহাজে ডিজিটাল ফ্লাই-বাই-ওয়াইয়ার ও সাইড-স্টিক ফ্লাইট কন্ট্রোলার ব্যবহার করেছে। এর বিভিন্ন রূপভেদের সর্বোচ্চ আকাশারোহণ ওজন ৬৮–৯৩.৫ টন (১,৫০,০০০–২,০৬,০০০ পাউন্ড), এবং এদের রেঞ্জ ৫,৭৪০–৬,৯৪০ কিলোমিটার (৩,১০০–৩,৭৫০ নটিক্যাল মাইল)।

৩১.৪ মিটার (১০৩ ফুট) দীর্ঘ এ৩১৮ বিমান সাধারণত ১০৭ থেকে ১৩২ জন যাত্রীদের ধারণ করতে পারে। ১২৪–১৫৬ অসনবিশিষ্ট এ৩১৯ বিমানের দৈর্ঘ্য ৩৩.৮ মি (১১১ ফু)। এ৩২০ বিমানের দৈর্ঘ্য ৩৭.৬ মি (১২৩ ফু) এবং এটি ১৫০ থেকে ১৮৬ জন যাত্রীদের ধারণ করতে পারে। ৪৪.৫ মি (১৪৬ ফু) দীর্ঘ এ৩২১ বিমানে ১৮৫ থেকে ২৩০টি আসন বর্তমান। এয়ারবাস কর্পোরেট জেট হচ্ছে এর বিজনেস জেট রূপ।

ডিসেম্বর ২০১০-এ এয়ারবাস ইঞ্জিন বদল করে এ৩২০নিও পরিবারের কথা ঘোষণা করেছিল এবং জানুয়ারি ২০১৬-এ লুফ্‌টহানজার সঙ্গে এর পরিষেবা চালু হয়েছিল। এখানে "নিও" কথাটির অর্থ "নিউ ইঞ্জিন অপশন" বা "নতুন ইঞ্জিন বিকল্প"। আরও দক্ষ টার্বোফ্যান ও শার্কলেট সহ বিভিন্ন উন্নতিসাধনের জন্য এই বিমানের জ্বালানি অর্থনীতি ১৫% পর্যন্ত আরও ভাল। আগেকার এ৩২০ বিমানগুলিকে "এ৩২০সিও" বলা হয়, যেখানে "সিও" কথাটির অর্থ "কারেন্ট ইঞ্জিন অপশন" বা "বর্তমান ইঞ্জিন বিকল্প"।

আমেরিকান এয়ারলাইন্স হচ্ছে বৃহত্তম এ৩২০ পরিচালক, যার বহরে ৪৬৯টি এ৩২০ বিমান রয়েছে।[খ] অক্টোবর ২০১৯-এ এ৩২০ পরিবার বোয়িং ৭৩৭ পরিবারকে ছাপিয়ে সবচেয়ে বেশি বিক্রয় হওয়া উড়োজাহাজে পরিণত হয়েছিল। ডিসেম্বর ২০২৩-এর হিসাব অনুযায়ী, মোট ১৮,৪৬০টি এ৩২০ বিমান অর্ডার করা হয়েছিল এবং ১১,২৬৩টি বিমান পাঠানো হয়েছিল, যার মধ্যে ১০,৫৬২টি বিমান পরিষেবায় ব্যবহৃত হয়েছিল এবং এর পরিচালকের সংখ্যা ৩৫০। বৈশ্বিক এ৩২০ বহর মোট ১৬.৭ কোটির বেশি উড়ান এবং ৩০.৭ কোটির বেশি ব্লক আওয়ার সম্পন্ন করেছিল।

কাঠামো

এয়ারবাস এ৩২০ হচ্ছে একধরনের নিচু পাখার বিমান, যার দুটি টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ও একটি কনভেনশনাল টেল বর্তমান।

এয়ারবাস এ৩২০ পরিবার হচ্ছে একধরনের ন্যারোবডি একক আইল বিমান, যার একটি সংকোচনযোগ্য ত্রিচক্র ল্যান্ডিং গিয়ার বর্তমান। এটি ডানার দুই পাইলনে বসানো টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। ১৯৭০-এর দশকের জ্বালানি সংকটের পর এয়ারবাস তার এ৩২০ বিমানের ভ্রমণ জ্বালানি মূল্য কমানোর প্রয়োজন বোধ করেছিল। এর জন্য সে সংকর প্রাথমিক গঠন, জ্বালানি ব্যবহার করে ভারকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ, গ্লাস ককপিট ও দুই ক্রুবিশিষ্ট ফ্লাইট ডেক গ্রহণ করেছিল।

এয়ারবাস দাবি করেছে যে বোয়িং ৭৩৭-৩০০ বিমান ৩৫% আরও জ্বালানি দহন করে এবং ভি২৫০০ দ্বারা চালিত এ৩২০ বিমানের তুলনায় এর আসন অনুযায়ী পরিচালন মূল্য ১৬% বেশি।[৫] ১৫০টি আসনবিশিষ্ট একটি এ৩২০ বিমান লস এঞ্জেলেসনিউ ইয়র্ক শহরের মধ্যে ৩,৯৮৪ কিমি (২,১৫১ নটিক্যাল মাইল) দূরত্ব অতিক্রম করতে ১১.৬০৮ কেজি জেট জ্বালানি দহন করে, কিংবা ০.৮ কেজি/লিটার জ্বালানি আসন পিছু ২.৪৩ লিটার/১০০ কিমি হারে দহন করে।[৬] এর ডানা লম্বা ও পাতলা এবং প্রতিযোগী বোয়িং ৭৩৭ ও ম্যাকডনেল ডগলাস এমডি-৮০ বিমানের তুলনায় উচ্চ অ্যাসপেক্ট রেশিওর জন্য এর বায়ুগতীয় দক্ষতা তুলনায় বেশি।

এয়ারফ্রেম

এয়ারবাস এ৩২০ বিমানের প্ল্যানফর্ম দৃশ্য, যেখানে ১০.৩ অ্যাসপেক্ট রেশিও ও ২৫° বক্রতা দৃশ্যমান। এখানে ফ্ল্যাপগুলো আংশিক প্রসারিত।

এয়ারবাস এ৩২০ পরিবার হচ্ছে একধরনের নিচু পাখার ক্যান্টিলিভার মনোপ্লেন। এর বিমানপুচ্ছে একক উল্লম্ব স্টেবিলাইজার ও রাডার রয়েছে। এর ডানার বক্রতা ২৫ ডিগ্রি। একই ধরনের অন্যান্য উড়োজাহাজের তুলনায় এ৩২০ বিমানে আরও প্রশস্ত একক-আইল কেবিন এবং আরও বড় ওভারহেড বিন বর্তমান, যার বহিঃস্থ ব্যাস ৩.৯৫ মিটার (১৫৬ ইঞ্চি)।[৭] এর তুলনায় বোয়িং ৭৩৭ বা ৭৫৭ বিমানের ব্যাস ৩.৮ মিটার (১৪৮ ইঞ্চি)। এ৩২০ বিমানের কার্গো হোল্ড ইউনিট লোড ডিভাইস কন্টেনার ধারণ করতে পারে।

এ৩২০ বিমানের এয়ারফ্রেম সংকর পদার্থ ও অ্যালুমিনিয়াম সংকর ধাতু দ্বারা গঠিত, যা বিমানটির ওজন হ্রাস করে। এছাড়া, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমানোর জন্য বিমানটির মোট অংশের সংখ্যা কমানো হয়েছে।[৮] কাসা নামক এক সংস্থা এর পুচ্ছ তৈরি করে, যার প্রায় পুরোটাই সংকর পদার্থ দিয়ে তৈরি। এই একই সংস্থা এলিভেটর, প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার দরজা ও পিছনের ফিউসেলাজ অংশ তৈরি করে।[৯]

ফ্লাইট ডেক

এ৩২০ বিমানের গ্লাস ককপিটে ফ্লাই-বাই-ওয়াইয়ার কন্ট্রোল বর্তমান।

এ৩২০ বিমানের ফ্লাইট ডেকে সম্পূর্ণ গ্লাস ককপিট বর্তমান, যেখানে আগেকার উড়োজাহাজে সংকর ককপিট ব্যবহার করা হতো। এছাড়া এতে সাইড-স্টিক কন্ট্রোলারসহ ইলেকট্রনিক ফ্লাইট ইনস্ট্রুমেন্ট সিস্টেম (ইএফআইএস) বর্তমান। এ৩২০ বিমানে ইলেকট্রনিক সেন্ট্রালাইজড এয়ারক্রাফট মনিটর (ইসিএএম) আছে, যা ফ্লাইট ক্রু-দের বিমানের সমস্ত ব্যবস্থার অবহিতি দেয়। এখনকার একমাত্র অ্যানালগ যন্ত্রপাতি হচ্ছে রেডিওম্যাগনেটিক ইন্ডিকেটর ও ব্রেক প্রেশার ইন্ডিকেটর।

২০০৩ সাল থেকে এ৩২০ বিমানের ফ্লাইট ডেকে আগেকার ক্যাথোড রশ্মি নল (সিআরটি) ডিসপ্লের জায়গায় তরল স্ফটিক ছবির পর্দা (এলসিডি) ইউনিট ব্যবহার করা হয়েছে। এলসিডি ইউনিটের মধ্যে প্রধান ডিসপ্লে ও আপৎকালীন কৃত্রিম দিগন্তরেখা অন্তর্গত, যেখানে আগে অ্যানালগ ডিসপ্লে ছিল।[১০]

এয়ারবাস আগেকার এ৩২০ বিমানগুলোকে হালনাগাদ অবস্থায় রাখার জন্য ইন-সার্ভিস এনহানসমেন্ট প্যাকেজ নামক এক এভিওনিক্স আপগ্রেড প্রদান করে।[১১] এছাড়া ডিজিটাল হেডআপ ডিসপ্লে উপলব্ধ।[১২]

এ৩২০ বিমান আগেকার এ৩১০ বিমানের "অন্ধকার ককপিট" বজায় রেখেছে, যেখানে সিস্টেমটি চলাকালীন ইন্ডিকেটর বন্ধ থাকে এবং ইন্ডিকেটরটি চালু হলে ফ্লাইট ক্রু-দের সিস্টেমে ত্রুটি সম্পর্কে অবহিতি করে। এ৩১০ হচ্ছে প্রথম ওয়াইডবডি বিমান যা কোনো ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াই চালানো যায়। এর নকশা এয়ারবাসের প্রথম সিইও অঁরি জিগলারের পুত্র বের্নার জিগলার দ্বারা প্রভাবিত।[১৩]

ইঞ্জিন

এ৩২০সিও পরিবারে ব্যবহৃত টার্বোফ্যান ইঞ্জিনের মধ্যে সিএফএম ইন্টারন্যাশনালের সিএফএম৫৬ এবং ইন্টারন্যাশনাল এরো ইঞ্জিনসের (আইএই) ভি২৫০০ উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির পিডব্লিউ৬০০০ ইঞ্জিন কেবল এ৩১৮ বিমানের জন্য ব্যবহার করা হতো।[১৪] অন্যদিকে, এ৩২০নিও পরিবার সিএফএম ইন্টারন্যাশনালের লিপ-১এ কিংবা প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির পিডব্লিউ১০০০জি ইঞ্জিন ব্যবহার করে।

রূপভেদ

এয়ারবাস এ৩২০ পরিবার

এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের বিভিন্ন বিমানের নকশা একইরকম হলেও তাদের যাত্রী ধারণক্ষমতা এ৩১৮ বিমানে ১০০[১৫] থেকে এ৩২১ বিমানে ২২০ পর্যন্ত বিস্তৃত।[১৬] এই বিমানগুলোর প্রতিযোগী হচ্ছে বোয়িং ৭৩৭, ৭৫৭ ও ৭১৭। যেহেতু এই চার রকমের এ৩২০ বিমানের ফ্লাইট ডেক একইরকম, সেহেতু এইসব বিমানের বিমানচালকের টাইপ রেটিং একই। বর্তমানে সমস্ত রূপভেদের কর্পোরেট জেট রূপ বর্তমান। এ৩১৯ বিমানের অপর রূপভেদ এ৩১৯এলআর তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, এ৩১৯ এমপিএ বিমানের মতো সামরিক রূপভেদও বর্তমান।[৪]

কারিগরি পরিভাষায় "এ৩২০" বলতে কেবল সেই আসল মাঝারি আকারের বিমানকেই বোঝায়, কিন্তু চলতি ভাষায় এটি অনেকসময় এ৩১৮/এ৩১৯/এ৩২০/এ৩২১ পরিবারের যেকোনো একটি বিমানকে বোঝায়। ২০০৪ সালে ইএএসএ ও ২০০৬ সালে এফএএ সমস্ত রূপভেদকে ইটপ্স[গ] সীলমোহর দিয়েছিল।[১৭]

এ৩১৮

৩১.৪৪ মি (১০৩.১ ফুট) দীর্ঘ এ৩১৮ বিমান এই পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য।

এয়ারবাস এ৩১৮ বিমান এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য। এ৩১৮ বিমান সর্বোচ্চ ১৩২টি যাত্রী বহন করতে পারে এবং এর সর্বোচ্চ রেঞ্জ ৩,১০০ নটিক্যাল মাইল (৫,৭০০ কিমি)। ২০০৩ সালে ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্সের সাথে এই বিমানের পরিষেবা শুরু হয়েছিল। এই বিমানটির টাইপ রেটিং অন্যান্য এ৩২০ পরিবারের সদস্যের অনুরূপ, যার ফলে বিদ্যমান এ৩২০ পরিবারের বিমানচালকরা অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াই এই বিমান চালাতে পারে। এটি স্টিপ অ্যাপ্রোচ পরিচালনার জন্য ইউরোপীয় বিমান চালনা নিরাপত্তা সংস্থার কাছ থেকে ছাড়পত্র পাওয়া সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক বিমান, যার ফলে এটি লন্ডন সিটি বিমানবন্দরের মতো বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা দিতে পারে। এ৩২০ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের তুলনায় এ৩১৮ খুব কম সংখ্যায় বিক্রয় হয়েছে এবং ৩১ অক্টোবর ২০১৫ (2015-10-31)-এর হিসাব অনুযায়ী কেবল ৮০টি এ৩১৮ বিমানের ফরমাশ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে এ৩১৮ বিমানের লিস্ট মূল্য US$৭৭.৪ মিলিয়ন।[১৮]

এ৩১৯

রূপান্তর

এয়ারবাস আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম

২০২০ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) ১০,৫০০ কোটি (US$ ১.২৮ বিলিয়ন) খরচে ৬টি এয়ার ইন্ডিয়া এ৩২০ বিমানকে এয়ারবোর্ন আর্লি আর্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল বিমানে রূপান্তর করার প্রস্তাবকে অনুমোদিত করেছিল। ভারতীয় বায়ুসেনার ভারত দ্বারা নির্মিত দুটি নেত্র বিমান এবং ইসরায়েল ও রাশিয়া দ্বারা নির্মিত ফালকন বিমানগুলোর পরিপূরক হিসাবে এই এ৩২০ বিমানগুলোকে রূপান্তর করা হবে।[১৯]

পরিচালনা

আমেরিকান এয়ারলাইন্স এয়ারবাস এ৩২০ বিমানের সবচেয়ে বড় পরিচালক।

ডিসেম্বর ২০২৩-এর হিসাব অনুযায়ী, ৩৫০-এর বেশি সংস্থা ১০,৫৬২টি এ৩২০ পরিবারের বিমান বাণিজ্যিক পরিষেবায় ব্যবহার করছিল। এই বিমানের পাঁচটি সবচেয়ে বড় পরিচালক হচ্ছে আমেরিকান এয়ারলাইন্স (৪৬৯টি এ৩২০ বিমান), চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স (৩৮২টি এ৩২০ বিমান), ইজিজেট (৩৪২টি এ৩২০ বিমান), চায়না সাদার্ন এয়ারলাইন্স (৩২০টি এ৩২০ বিমান) ও ইন্ডিগো (৩০২টি এ৩২০ বিমান)। পরিচালিত এ৩২০ পরিবারের বিমানের মধ্যে ৫৯টি এ৩১৮ বিমান, ১,৩৫২টি এ৩১৯ বিমান (১,৩৩৫টি সিও + ১৭টি নিও), ৬,১৮৩টি এ৩২০ বিমান (৪,২৮৫টি সিও + ১,৮৯৮টি নিও) এবং ২,৯৬৮টি এ৩২১ বিমান (১,৭২০টি সিও + ১,২৪৮টি নিও)। ৭০১টি এ৩২০সিও পরিবারের বিমান, যার মধ্যে ২১টি এ৩১৮ বিমান, ১৪৯টি এ৩১৯ বিমান, ৪৬৭টি এ৩২০ বিমান এবং ৬৪টি এ৩২১ বিমান, অবসরপ্রাপ্তি বা বিনাশের মাধ্যমে পরিষেবা থেকে বহির্ভূত।[৪]

আগস্ট ২০২৩-এর হিসাব অনুযায়ী, বিগত ১২ মাসে বৈশ্বিক এ৩২০ বহরের কর্মক্ষম নির্ভরযোগ্যতা ৯৯.৭ শতাংশ এবং পরিষেবা শুরু থেকে এই বিমানগুলো মোট ১৬.৭ কোটির বেশি উড়ান এবং ৩০.৭ কোটির বেশি ব্লক আওয়ার সম্পন্ন করেছিল।[২০]

এয়ার ফ্রান্স, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্স একমাত্র বিমানসংস্থা যারা এ৩২০সিও পরিবারের সমস্ত রূপভেদ ব্যবহার করেছে।[৪] মিডল ইস্ট এয়ারলাইন্স দুটি মাইলস্টোন বিমান লাভ করেছিল। প্রথমটি হচ্ছে ম্যানুফ্যাকচারার সিরিয়াল নম্বর (এমএসএন) ৫,০০০ সহ একটি এ৩২০সিও বিমান, যা ২০ জানুয়ারি ২০১২-এ লাভ করেছিল।[২১] আট বছর পর, ৯ অক্টোবর ২০২০-এ এই বিমানসংস্থা এমএসএন ১০,০০০ সহ এ৩২১নিও বিমান লাভ করেছিল।[২২][২৩] ডিসেম্বর ২০২২-এ ৩৩০-এর বেশি বিমানসংস্থা ১০,০০০-এর বেশি এ৩২০ পরিবারের বিমান ব্যবহার করেছিল, যারা মোট ১৫.৮ কোটি উড়ান সম্পন্ন করেছিল এবং বায়ুতে মোট ২৯.২ কোটি ঘণ্টা সময় অতিক্রম করেছিল।[৪][২০]

প্রতিযোগিতা

এ৩২০ পরিবারের (পিছনে) প্রধান প্রতিযোগী বোয়িং ৭৩৭ নেক্সট জেনারেশন (সামনে)।

বোয়িং ৭৩৭ ক্লাসিক (-৩০০/-৪০০/-৫০০) ও ম্যাকডনেল ডগলাস এমডি-৮০/৯০ পরিবারের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য এ৩২০ পরিবার তৈরি করা হয়েছিল। পরে দুই দশক ধরে এ৩২০ পরিবারকে বোয়িং ৭৩৭ নেক্সট জেনারেশন (-৬০০/-৭০০/-৮০০/-৯০০) ও বোয়িং ৭১৭ বিমানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, এ৩২০ পরিবারকে এমব্রেয়ার ও বম্বার্ডিয়ার বিমানের সাথেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল। এমব্রেয়ার ই-১৯৫ এ৩১৮ বিমানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং এ৩১৮/এ৩১৯ বিমানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বম্বার্ডিয়ার তার সিসিরিজ বিমান তৈরি করেছিল।[২৪]

৩১ ডিসেম্বর ২০১৮-এর হিসাব অনুযায়ী, ১৯৮৮-এর শুরুতে ছাড়পত্র প্রদান/প্রথম বিতরণের সময় থেকে এয়ারবাস ৮,৬০৫টি এ৩২০ পরিবারের বিমান বিতরণ করেছে এবং তার কাছে এই বিমানের জন্য আরও ৬,০৫৬টি ফরমাশ রয়েছিল।[৪] এর তুলনায় বোয়িং ১৯৬৭-এর শেষ থেকে ১০,৪৪৪টি ৭৩৭ পরিবারের বিমান বিতরণ করেছে, এবং মার্চ ১৯৮৮ থেকে ৮,৯১৮টি ৭৩৭ পরিবারের বিমান বিতরণ করেছে।[২৫][২৬] বোয়িঙের কাছে এই বিমানের জন্য আরও ৪,৭৬৩ ফরমাশ রয়েছিল।[২৬]

সেপ্টেম্বর ২০১৮-এ ৭,২৫১টি এ৩২০সিও বিমান পরিষেবারত এবং এয়ারবাস ২০২২ পর্যন্ত ৩,১৭৪টি এ৩২০নিও বিমান বিতরণ করার আশা করেছিল। এর তুলনায় সেপ্টেম্বর ২০১৮-এ ৬,৭৫৭টি ৭৩৭এনজি বিমান পরিষেবারত এবং বোয়িং ২০২২ পর্যন্ত ২,৯৯৯টি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান বিতরণ করার আশা করেছিল। কম খরচের স্টার্টআপের মধ্যে এ৩২০ বিমান খুব ভালই বিক্রয় হয়েছিল এবং নিজের পছন্দমতো ইঞ্জিন বাছাই করার সুবিধার জন্য বিমানসংস্থা ও ইজারাদারদের কাছে এ৩২০ পরিবারের বিমান সিঙ্গল-সোর্সড ৭৩৭ পরিবারের বিমানের তুলনায় আরও আকর্ষণীয় হয়ে গিয়েছিল।

এ৩২০নিও বিমানের ছয় মাসের হেডস্টার্টের ফলে বোয়িং তার ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান ঘোষণা করার আগেই এয়ারবাস তার এ৩২০নিও বিমানের জন্য ১,০০০টি ফরমাশ সংগ্রহ করতে পেরেছিল। ৩:১ অনুপাতে এ৩২১ বিমানের বিক্রয় ৭৩৭-৯০০ বিমানকে ছাপিয়ে গিয়েছে, এবং বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানের তুলনায় এয়ারবাস এ৩২১নিও বিমান প্রাধান্য লাভ করছে।[২৭]

দুর্ঘটনা

এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের বিভিন্ন বিমান ১৮০টি প্রধান বিমান চালনা দুর্ঘটনার শিকার,[২৮] যার মধ্যে ৩৮টি হাল লস দুর্ঘটনা অন্তর্গত।[২৯] এর মধ্যে ১৭টি মারাত্মক হাল লস দুর্ঘটনায় মোট ১৫০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।[৩০] এছাড়া, এ৩২০ পরিবার ৫০টি এমন দুর্ঘটনা অনুভব করেছিল যেখানে একাধিক ফ্লাইট ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।[৩১]

২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, এয়ারবাস এ৩২০ পরিবার প্রতি দশ লাখ আকাশারোহণে ০.১২টি মারাত্মক হাল লস দুর্ঘটনা এবং ০.২৬টি মোট হাল লস দুর্ঘটনা অনুভব করেছিল।[৩২]

সাধারণ বৈশিষ্ট্য

আরও দেখুন

  • এয়ারবাস ও বোয়িঙের মধ্যে প্রতিযোগিতা
সম্পর্কিত উন্নয়ন
তুলনাযোগ্য ভূমিকার বিমান, কনফিগারেশন এবং যুগ

সম্পর্কিত তালিকা
  • বিমানের তালিকা

টীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ