গৌর

স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতিভুক্ত বনগরু

গৌর (Bos gaurus) বা বনগরু (বা ভারতীয় বাইসন) বিশ্বের বৃহত্তম গরু জাতীয় প্রাণী। এরা দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। গত তিন প্রজন্মে এই প্রজাতির পরিসরের কিছু অংশে ৭০% এর বেশি জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় ১৯৮৬ থেকে আইইউসিএন লাল তালিকায় প্রজাতিকে সংকটাপন্ন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ভালোভাবে সুরক্ষিত এলাকাগুলোয় জনসংখ্যার গতিধারা স্থিতিশীল এবং কিছু পূর্ব উপেক্ষিত এলাকায় পুনঃবৃদ্ধি পাচ্ছে।[১]

গৌর
ষাঁড়জাতের বনগরু
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ:প্রাণী জগৎ
পর্ব:কর্ডাটা
শ্রেণী:স্তন্যপায়ী
বর্গ:সেটার্টিওডাক্টাইলা
পরিবার:বোভিডি
উপপরিবার:বোভিনি
গণ:Bos
প্রজাতি:B. gaurus
দ্বিপদী নাম
Bos gaurus
বর্তমান পরিসর

গৌর বন্য গরুর সবচেয়ে উঁচু প্রজাতি।[২] মালয় বনগরুকে সেলাদুং এবং বর্মী বনগরুকে পাইউং বলা হয়।[৩] গৌরের গৃহপালিত জাতকে গয়াল বা মিঠুন বলে।[৪]

বৈশিষ্ট

উঁচু শৈলশিরা বিশিষ্ট গৌর
বনগরুর শিঙের ম্যাপ

গৌর প্রজাতিটি অতি শক্তিশালী ও ব্যাপক গঠনের হয়ে থাকে। কপালে শিঙের মাঝখান দিয়ে থাকে একটি উঁচু উত্তল সেতুবন্ধ, যা সামনের দিকে নুয়ে যায় এবং মাথার উপরিভাগের পার্শ্বদেশে একটি গভীর ঢালা সৃষ্টি করে। পৃষ্ঠদেশে একটি লক্ষণীয় সেতুবন্ধ বা শৈলশিরা আছে। কানগুলো হয় বিশালাকারের। লেজ লম্বায় হাঁটুর হাড্ডি মাত্র পৌঁছায় এবং বয়স্ক ষাঁড়জাতে পিঠের পশম খুব পাতলা হয়ে যায়।

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ গৌরের রং হয় গাঢ় বাদামি, অতি বয়স্করা হয় কালো বর্ণের। মাথার উপরিভাগ, চোখের ওপর থেকে গর্দান পর্যন্ত, ছাইরঙা ধূসর বর্ণ কিংবা কখনও নোংরা শ্বেতবর্ণের হয়ে থাকে। শুণ্ড ফ্যাকাশে রঙের এবং পায়ের নিম্নভাগ খাঁটি সাদা কিংবা হলদেটে।

বিস্তার ও আবাসস্থল

মালয় বনগরু বা সেলাডুঙ
একটি জাতীয় উদ্যানে ষাঁড় গৌর
বন্দিপুর জাতীয় উদ্যানে ভারতীয় গৌর

গৌর ঐতিহাসিকভাবেই ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, চীন, থাইল্যান্ড, মালয় উপদ্বীপ, মায়ানমার (বর্মা), ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালের (দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মূলভূখন্ড) স্থানীয়। বর্তমানে এদের পরিসর গুরুতরভাবে বিচ্ছিন্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং শ্রীলঙ্কায় এরা আঞ্চলিকভাবে বিলুপ্ত।[১]

বাস্তুসংস্থান ও আচরণ

ভোজন

প্রজনন

গৌর প্রায় ২৭৫ দিন (প্রায় নয় মাস, গৃহপালিত গরুর চেয়ে কিছু দিন কম) গর্ভধারণের পর একটি (বা কখনও দুটি) বাছুর প্রসব করে। ৭ থেকে ১২ মাস পর বাছুরদের মায়ের দুগ্ধপান ছাড়ানো হয়। দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বছরে গৌর যৌনতা প্রাপ্ত হয়। সাড়া বছর জুড়েই বংশবৃদ্ধি হয়, তবে ডিসেম্বর এবং জুনে তা বেড়ে যায়। বন্দি অবস্থায় একটি বনগরুর আয়ুকাল ৩০ বছর হয়ে থাকে।[৫]

প্রাকৃতিক শিকারকারী প্রাণী

প্রাণীটির দুরূহ আকৃতি ও শক্তির সুবাদে মানুষ ব্যতীত গৌর শিকারকারী প্রাণী খুব অল্প। অসতর্ক বাছুর বা অসুস্থ প্রাণীদের ওপর কখনও চিতাবাঘ এবং রামকুত্তা বা ঢোলের দল আক্রমণ করে। তবে শুধু বাঘ বা লোনাপানির কুমিরদেরই একটি পূর্ণবয়স্ক বনগরু মেরে ফেলার খবর পাওয়া গেছে। তবে সাম্প্রতিককালে গৌর এবং লোনাপানির কুমির দুই প্রজাতির পরিসর হ্রাস পাওয়ায় তাদের আবাসস্থল কদাপি মিলে এবং একটি কুমিরকে সুস্থ-সবল ষাঁড়জাতের ওপর আক্রমণের জন্যে দৈহিকভাবে পূর্ণবয়স্ক হতে হবে।[৬][৭][৮]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ