দেবতা

প্রাকৃত বা অতিপ্রাকৃত শক্তি

দেবতা ধারণাটি বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্নভাবে পাওয়া যায়। সাধারণত দেবতা হল একটি প্রাকৃত বা অতিপ্রাকৃত শক্তি যা স্বর্গীয় বা পবিত্র বলে বিবেচিত।[১] একেশ্বরবাদী ধর্মে শুধুমাত্র একজন দেবতা গ্রহণ করা হয় এবং তাকে প্রাধান্য দিয়ে ঈশ্বর বা প্রভু ডাকা হয়,[২][৩] বহু-ঈশ্বরবাদী ধর্মে একাধিক দেবতাকে গ্রহণ করা হয়,[৪] এবং এক-ঈশ্বরবাদী ধর্মে একজনকেই উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং অন্য কাউকে তার সমকক্ষ কেউ নয়।ঈশ্বর কোখনো সৃষ্টি হয় না। তিনি স্পষ্ট নয় তিনি মুখাপেক্ষী নন, কিন্তু সৃষ্টি মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেননি।

নয়। সমান মর্যাদা দেওয় নাা হয়।[৫][৬] কিছু অ-ঈশ্বরবাদী ধর্মে সকল প্রধান সৃষ্টিকারী দেবতাকে অস্বীকার করা হয় কিন্তু কিছু দেবতা, যা জন্ম নেয়, মৃত্যু বরণ করে এবং পুনঃজন্ম লাভ করে তাদের গ্রহণ করে।[৭]

দেবতা

প্রাগৈতিহাসিক

পণ্ডিতগণ শ্বরদের সম্ভাব্য অস্তিত্ব সম্পর্কে বলেন তা মূলত প্রাগৈতিহাসিক যুগের লিপি এবং প্রাগৈতিহাসিক শিল্প, যেমন গুহায় চিত্রকর্ম, থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু কেন এই নকশা ও চিত্র আঁকা হয়েছিল বা কেন এইগুলো তৈরি করা হয়েছিল এই বিষয়টি অস্পষ্ট।[৮] কিছু খোদাই ও নকশায় প্রাণী, শিকারি বা বিভিন্ন রীতিনীতি পাওয়া যায়। ইউরোপে ভেনাস অফ উইলেন্ডর্ফ নামের একটি নারীর প্রতিমূর্তি পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় এটি খ্রিস্টপূর্ব ২৫,০০০ অব্দ সময়কালের এবং এটিকে প্রাগৈতিহাসিক স্বর্গীয় নারীর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।[৯]

একেশ্বরবাদ

একেশ্বরবাদী ধর্মে ঈশ্বর হলেন সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান, সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপী এবং শাশ্বত।[১০][১১][১২] ঐতিহাসিকভাবে, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে একেশ্বরবাদী ঈশ্বরকে বিভিন্ন ভাবে ধারণ করে আসছে। একেশ্বরবাদী ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান, সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপী এবং শাশ্বত নাও হতে পারে।[১৩][১৪][১৫]

ইসলাম ধর্ম

ইলাহ আরবি শব্দের বাংলা অর্থ হল দেবতা। ইসলাম ধর্মে একেশ্বরবাদী ঈশ্বরের নাম হল আল্লাহ, যার অর্থ হল সুনির্দিষ্ট একক ঈশ্বর। মুসলমানদের বিশ্বাসের প্রথম বাক্যাংশ হল "আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নাই"।[১৬] ইসলাম কঠোরভাবে একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং কালিমায় বলা হয়, "আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, এবং মুহাম্মাদ তার প্রেরিত বার্তাবাহক"।[১৭]

ইহুদি ধর্ম

ইহুদি ধর্মে এক ঈশ্বরের কথা বলা আছে। তবে তিনি বিমূর্ত নন, বরং তিনি ইহুদিদের ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে আত্মপ্রকাশ করেন, বিশেষ করে প্রস্থান ও নির্বাসনের সময়।[১৮]

খ্রিস্টান ধর্ম

খ্রিস্টান ধর্ম একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং সকল মূলধারার ধর্মসভা ও ধর্মসম্প্রদায় পবিত্র ত্রিত্ব মতবাদ গ্রহণ করেছেন।[১৯]

বহু-ঈশ্বরবাদ ও এক-ঈশ্বরবাদ

বৌদ্ধ দেবতা

বৌদ্ধ পুরাণে, দেবগণ বৌদ্ধ সৃষ্টিতত্ত্বের কোথাও সুখে জীবনযাপন করছে। তারা মরণশীল (সংসারের অংশ) এবং অসংখ্য। ইষ্টদেবতারাও দেবতা হিসেবে বিবেচিত, যদিও যিদম এই শব্দ দিয়ে যা বুঝায় তা থেকে ভিন্ন।[২০]

বৌদ্ধ ধর্মে কোন সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করা হয় না। তবে দেবতাবৃন্দ বৌদ্ধ সৃষ্টিতত্ত্ব, জন্ম, ও সংসার মতবাদের অপরিহার্য উপাদান। স্বর্গীয় ঈশ্বর (দেব, দেবতাবৃন্দ) বৌদ্ধ ধর্ম বিভিন্ন লোকভূমি বিদ্যমান এবং এই লোকভূমিসমূহকে ছাব্বিশ ভাগে ভাগ করা হয়।[২১]

হিন্দু দেবতা

হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর সম্পর্কিত মতবাদ একেশ্বরবাদ, বহু-ঈশ্বরবাদ, এক-ঈশ্বরবাদ, নিমিত্তপদনেশ্বরবাদ, সর্বেশ্বরবাদঅদ্বৈতবাদে ভিন্ন হয়ে থাকে।[২২][২৩] তবে হিন্দুধর্মের প্রাচীন বেদ গ্রন্থে দেবতাদের দেব ও দেবী বলে উল্লেখ রয়েছে।[২৪] এই নাম গুলোর অর্থ হল স্বর্গীয় এবং এমন সবকিছু যা ভালো।[২৫]

গ্রিক দেবতা

প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায় ধর্মীয় বিশ্বাস ও পুরাণের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকজন দেবতা ছিলেন, নারীবাচক এবং পুরুষবাচক উভয়ই।[২৬] তাদের আধুনিক যুগের পূর্ব পর্যন্ত ভক্তি করা হত। গ্রিক দেবতাদের অনেকজন আবার রোমান দেবতাদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।[২৭] গ্রিক ধর্ম ছিল বহু-ঈশ্বরবাদী ধর্ম, কিন্তু কোন কেন্দ্রীয় উপাসনালয় বা পবিত্র গ্রন্থ ছিল না। এই দেবতাবৃন্দ সম্পূর্ণ পুরাণের সাথে সম্পর্কিত ছিল এবং তাদের মধ্যে প্রাকৃতিক বিষয়াদির ক্ষমতা ও মানব আচরণের বহিঃপ্রকাশ ছিল।[২৬][২৭]

অনেক গ্রিক দেবতা প্রাচীন ইন্দো-ইউরোপীয় রীতি থেকে নেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, দেবীদের মধ্যে গ্রিক ভোরের দেবী ঈওস, যা ইন্দো-ইউরোপীয়তে ঊষা রোমান অরোরা, লাটভিয়ায় আউসেক্লিস; এবং দেবতাদের মধ্যে গ্রিক দেবতাদের প্রধান জিউস, যা লাতিনে দিউস, প্রাচীন জার্মানে জিও, ইন্দো-ইউরোপীয়তে দায়াউস[২৮] গ্রিক পুরাণে দ্বাদশ অলিম্পিয়ান ছিলন আফ্রোদিতি, অ্যাপোলো, অ্যারিস, আর্টেমিস, অ্যাথেনা, ডিমেটার, হেফাস্টাস, হেরা, হার্মিস, হেস্তিয়া, পসাইডন, ও জিউস। এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেবতা ছিল দিওনিসাস, হেডেস, ও হেরাক্লিস।[২৭]

রোমান দেবতা

রোমান এবাদতমণ্ডলীতে অনেক দেবতা ছিল, গ্রিক ও গ্রিকের বাইরে উভয়ই।[২৭] পুরাণ ও খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীর ইউরোপীয় শিল্পকলায় আরো বিখ্যাত দেবতাদের পাওয়া যায়, যাদের গ্রিক দেবতাদের সাথে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। এই দেবতাদের মধ্যে ছয়জন দেবতা ও ছয়জন দেবী ছিলেন। তারা হলেন: ভেনাস, অ্যাপোলো, মার্স, ডায়ানা, মিনের্ভা, সেরিস, ভলকান, জুনো, মার্কারি, ভেস্টা, নেপচুন, জুপিটার (জোভ, জিউস); এছাড়া বাচ্চু, প্লুটো ও হারকিউলিস।[২৯]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ